পরিচ্ছেদঃ ৩৪. হাসসান ইবনু সাবিত (রাযিঃ) এর ফযীলত
৬২৮৯-(১৫৭/২৪৯০) আবদুল মালিক ইবনু শু’আয়ব ইবনু লায়স (রহঃ) ..... ’আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরায়শদের বিপক্ষে তোমরা বিদ্রুপ কবিতা তৈরি কর। কারণ, তা তাদের বিপক্ষে তীর ছোড়ার চেয়ে সর্বাধিক শক্তিশালী। তারপর তিনি ’আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহাহ (রাযিঃ) এর নিকট জনৈক লোককে পাঠালেন। তিনি তাকে বললেন, ওদের বিপক্ষে বিদ্রুপ করে কবিতা তৈরি কর। অতঃপর তিনি ব্যঙ্গাত্মক কবিতা রচনা করলেন। কিন্তু তাতে তিনি সম্ভষ্ট হলেন না। তখন তিনি কা’ব ইবনু মালিককে ডেকে পাঠালেন। তারপর তিনি হাসসান ইবনু সাবিতের নিকট এক ব্যক্তি প্রেরণ করলেন। সে যখন তার নিকট গেল তখন হাসসান (রাযিঃ) বললেন, তোমাদের জন্য সঠিক সময় হয়েছে যে, তোমরা সে সিংহকে ডেকে পাঠিয়েছ, যে তার লেজ দিয়ে আঘাত করে দেয়। তারপর তিনি তার জিহ্বা বের করে নাড়াতে লাগলেন এবং বললেন, সে মহান সত্তার শপথ, তিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি আমার জিহবার মাধ্যমে তাদেরকে এমনভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিব, যেমনভাবে হিংস্র বাঘ তার থাবা দিয়ে চামড়া টেনে ছিড়ে ফেলে।
তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে হাসসান! তুমি তাড়াতাড়ি করো না। কারণ, আবূ বকর (রাযিঃ) কুরায়শদের বংশ তালিকা সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশী অভিজ্ঞ। কেননা, তাদের সাথে আমারও আত্মীয়তার বন্ধন বিদ্যমান। অতএব তিনি এসে আমার বংশ তোমাকে আলাদা করে বলে দিবেন। তারপর হাসসান (রাযিঃ) তার [আবূ বকর (রাযিঃ) এর] নিকট গেলেন এবং (বংশ তালিকা সম্বন্ধে জ্ঞাত হয়ে) ফিরে এলেন। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তিনি আপনার বংশপঞ্জীর ব্যাপারে আমাকে জানিয়েছেন। সে মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি আপনাকে তাদের মাঝখান হতে এমন সুকৌশলে বের করে আনব, যেমনভাবে আটার খামির থেকে সূক্ষ্ম চুল বের করা হয়।
আয়িশাহ্ (রাযিঃ) বলেন, তারপর আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসসান এর ব্যাপারে বলতে শুনেছি যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ ও তার রসূলের তরফ হতে কাফিরদের দাঁতভাঙ্গা উত্তর দিতে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত রূহুল কুদুস’ অর্থাৎ- জিবরীল (আঃ) সারাক্ষণ তোমাকে সহযোগিতা করতে থাকবেন আর তিনি [আয়িশাহ্ (রাযিঃ)] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, হাসসান তাদের (কাফিরদের বিরুদ্ধে) ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে মু’মিনদের অন্তরে প্রশান্তি এনে দিলেন এবং কাফিরদের মান-সম্মানকে ভুলুষ্ঠিত করে আত্মতৃপ্তি লাভ করলেন।
হাসসান (রাযিঃ) বললেনঃ
তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুর্নাম করছ,
আর আমি তার পক্ষ হতে জবাব দিচ্ছি।
এর পুরস্কার ও প্রতিদান আল্লাহর কাছে।
তুমি দুর্নাম করছ এমন মুহাম্মাদের,
যিনি নেক লোক, সর্বশ্রেষ্ঠ পরহেযগার;
তিনি হচ্ছেন আল্লাহর রসূল,
যার চরিত্র মাধুর্য অনুপম।
মুহাম্মাদের সম্মানের খাতিরে উৎসর্গিত হোক।
আমি শপথ করে বলছি, কাদ্দা নামক পাহাড়ের দু’ প্রান্তে (মুসলিম মুজাহিদ বাহিনীর) বিজয় ধূলি উড়বে
তা তোমরা দেখতে পাবে, কিংবা আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।
আনসারগণ পর্বত শৃঙ্গ থেকে কাঁধে ধারণ করবেন বর্শা
এবং তারা থাকবেন তৃষ্ণ-কাতর জানোয়ারের মতো ওঁৎ পেতে
(অর্থাৎ- আনসারগণ শত্রু মুকাবিলায় সতত প্রস্তুত থাকেন)।
আমাদের অশ্বারোহীরা এত দ্রুতবেগে চলে যেন মুষলধারে বারি বর্ষিত হচ্ছে।
আর নারীরা তা হতে মুক্ত হওয়ার জন্যে পর্দা করে তাদের মুখমণ্ডল ঢেকে নিচ্ছে।
তোমরা যদি আমাদের (ইসলামের) বিমুখ হও,
তাহলেও ইসলামের বিজয় নিশান উড়বে
আর অন্ধকার চিরদিনের জন্য বিদূরিত হয়ে যাবে।
কিংবা তোমরা অপেক্ষায় থাকো ঐ সময়ের,
যেদিন মুসলিমদের সঙ্গে কাফিরদের মুকাবিলা হবে;
আর সেদিন আল্লাহ যাকে চান বিজয় মালা পরাবেন।
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, আমি আমার বান্দাকে রসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি;
আর তিনি সবসময় লোকদের সত্যের দিকে ডাকেন, যার মধ্যে নেই কোন কপটতা, অস্পষ্টতা।
আল্লাহ তা’আলা আরও ইরশাদ করেন,
আমি এমন মুজাহিদদের মদদ করি, যারা আনসার
এবং যাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে শত্রু মুকাবিলা করা।
প্রত্যহ তারা শত্রু মুকাবিলায় থাকে সতত প্রস্তুত।
কক্ষনো বা গাল-মন্দ, যুদ্ধ-বিগ্রহ অথবা নিন্দাবাদ দ্বারা।
তোমাদের মাঝে এমন কার দুঃসাহস আছে যে, আল্লাহর রসূলের বিদ্রুপ করে;
অথচ মাখলুকাত ব্যতীতও এক মহান সত্তা রয়েছেন, যিনি তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ
এবং সর্বাবস্থায় তার সহায়ক।
জিবরীল (আঃ) আমাদের জন্য আল্লাহর তরফ হতে নির্বাচিত সম্মানিত বাণীবাহক (দূত) এবং তিনি রূহুল কুদুস (পূতঃ-পবিত্র আত্মা) যার সাদৃশ্য ফেরেশতাকুলে দ্বিতীয় কেউ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬১৭০, ইসলামিক সেন্টার ৬২১৪)
باب فَضَائِلِ حَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ رضى الله عنه
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " اهْجُوا قُرَيْشًا فَإِنَّهُ أَشَدُّ عَلَيْهَا مِنْ رَشْقٍ بِالنَّبْلِ " . فَأَرْسَلَ إِلَى ابْنِ رَوَاحَةَ فَقَالَ " اهْجُهُمْ " . فَهَجَاهُمْ فَلَمْ يُرْضِ فَأَرْسَلَ إِلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَى حَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ حَسَّانُ قَدْ آنَ لَكُمْ أَنْ تُرْسِلُوا إِلَى هَذَا الأَسَدِ الضَّارِبِ بِذَنَبِهِ ثُمَّ أَدْلَعَ لِسَانَهُ فَجَعَلَ يُحَرِّكُهُ فَقَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لأَفْرِيَنَّهُمْ بِلِسَانِي فَرْىَ الأَدِيمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَعْجَلْ فَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ أَعْلَمُ قُرَيْشٍ بِأَنْسَابِهَا - وَإِنَّ لِي فِيهِمْ نَسَبًا - حَتَّى يُلَخِّصَ لَكَ نَسَبِي " . فَأَتَاهُ حَسَّانُ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ لَخَّصَ لِي نَسَبَكَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لأَسُلَّنَّكَ مِنْهُمْ كَمَا تُسَلُّ الشَّعَرَةُ مِنَ الْعَجِينِ . قَالَتْ عَائِشَةُ فَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لِحَسَّانَ " إِنَّ رُوحَ الْقُدُسِ لاَ يَزَالُ يُؤَيِّدُكَ مَا نَافَحْتَ عَنِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ " . وَقَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " هَجَاهُمْ حَسَّانُ فَشَفَى وَاشْتَفَى " . قَالَ حَسَّانُ هَجَوْتَ مُحَمَّدًا فَأَجَبْتُ عَنْهُ وَعِنْدَ اللَّهِ فِي ذَاكَ الْجَزَاءُ هَجَوْتَ مُحَمَّدًا بَرًّا تَقِيًّا رَسُولَ اللَّهِ شِيمَتُهُ الْوَفَاءُ فَإِنَّ أَبِي وَوَالِدَهُ وَعِرْضِي لِعِرْضِ مُحَمَّدٍ مِنْكُمْ وِقَاءُ ثَكِلْتُ بُنَيَّتِي إِنْ لَمْ تَرَوْهَا تُثِيرُ النَّقْعَ مِنْ كَنَفَىْ كَدَاءِ يُبَارِينَ الأَعِنَّةَ مُصْعِدَاتٍ عَلَى أَكْتَافِهَا الأَسَلُ الظِّمَاءُ تَظَلُّ جِيَادُنَا مُتَمَطِّرَاتٍ تُلَطِّمُهُنَّ بِالْخُمُرِ النِّسَاءُ فَإِنْ أَعْرَضْتُمُو عَنَّا اعْتَمَرْنَا وَكَانَ الْفَتْحُ وَانْكَشَفَ الْغِطَاءُ وَإِلاَّ فَاصْبِرُوا لِضِرَابِ يَوْمٍ يُعِزُّ اللَّهُ فِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَقَالَ اللَّهُ قَدْ أَرْسَلْتُ عَبْدًا يَقُولُ الْحَقَّ لَيْسَ بِهِ خَفَاءُ وَقَالَ اللَّهُ قَدْ يَسَّرْتُ جُنْدًا هُمُ الأَنْصَارُ عُرْضَتُهَا اللِّقَاءُ لَنَا فِي كُلِّ يَوْمٍ مِنْ مَعَدٍّ سِبَابٌ أَوْ قِتَالٌ أَوْ هِجَاءُ فَمَنْ يَهْجُو رَسُولَ اللَّهِ مِنْكُمْ وَيَمْدَحُهُ وَيَنْصُرُهُ سَوَاءُ وَجِبْرِيلٌ رَسُولُ اللَّهِ فِينَا وَرُوحُ الْقُدْسِ لَيْسَ لَهُ كِفَاءُ
'A'isha reported that Allah's Messenger (may peace be uport him) said. Satirise against the (non-believing amongst the) Quraish, for (the satire) is more grievous to them than the hurt of an arrow. So he (the Holy Prophet) sent (someone) to Ibn Rawiha and asked him to satirise against them, and he composed a satire, but it did not appeal to him (to the Holy Prophet). He then sent (someone) to Ka'b b. Malik (to do the same, but what he composed did not appeal to the Holy Prophet). He then sent one to Hassan b. Thabit. As he got into his presence, Hassan said:
Now you have called for this lion who strikes (the enemies) with his tail. He then brought out his tongue and began to move it and said: By Him Who has sent you with Truth, I shall tear them with my tongue as the leather is torn. Thereupon Allah's Messenger (ﷺ) said: Don't be hasty; (let) Abu Bakr who has the best know- ledge of the lineage of the Quraish draw a distinction for you in regard to my lineage, as my lineage is thesame as theirs. Hassan then came to him (Abu Bakr) and after making inquiry (in regard to the lineage of the Holy Prophet) came back to him (the holy Prophet) and said: Allah's Messenger, he (Abu Bakr) has drawn a distinction in vour lineage (and that of the Quraish) By Him Who has sent you with Truth, I shall draw out from them (your name) as hair is drawn out from the flour. 'A'isha said: I heard Allah's Messenger (ﷺ) as saying to Hassin: Verily Ruh-ul- Qudus would continue to help you so long as you put up a defence on behalf of Allah and His Messenger. And she said: I heard Allah's Messenger (ﷺ) saying: Hassan satirised against them and gave satisfaction to the (Muslims) and disquieted (the non-Muslims). You satirised Muhammad, but I replied on his behalf, And there is reward with Allah for this. You satirised Muhammad. virtuous, righteous, The Apostle of Allah, whose nature is truthfulness. So verily my father and his father and my honour Are a protection to the honour of Muhammad; May I lose my dear daughter, if you don't see her, Wiping away the dust from the two sides of Kada', They pull at the rein, going upward; On their shoulders are spears thirsting (for the blood of the enemy) ; our steeds are sweating-our women wipe them with their mantles. If you had not interfered with us, we would have performed the 'Umra, And (then) there was the Victory, and the darkness cleared away. Otherwise wait for the fighting on the day in which Allah will honour whom He pleases. And Allah said: I have sent a servant who says the Truth in which there is no ambiguity; And Allah said: I have prepared an army-they are the Ansar whose object is fighting (the enemy), There reaches every day from Ma'add abuse, or fighting or satire; Whoever satirises the Apostle from amongst you, or praises him and helps it is all the same, And Gabriel, the Messenger of Allah is among us, and the Holy Spirit who has no match.