পরিচ্ছেদঃ ৫. স্ত্রী হতে দূরে থাকার কসম করা, স্ত্রী হতে বিরত থাকা ও তাদের অবকাশ দেয়া এবং আল্লাহ তা'আলার বাণী- “যদি তারা যিহারে লিপ্ত হয়” ইত্যাদি প্রসঙ্গে
৩৫৮৭-(৩৪/...) ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হান্যালী ও মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমর (রহিমাছমাল্লাহ) ..... ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণের মধ্যে থেকে দু’জন মহিলা সম্পর্কে উমার (রাযিঃ) কে জিজ্ঞেস করার জন্য বহুদিন যাবৎ আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিলাম যাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ “তোমাদের দু’জনের হৃদয় অন্যায় প্রবণ হয়েছে মনে করে তোমরা যদি অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসো তাহলে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন"। (সূরা আত তাহরীম ৬৬ঃ ৪)
পরিশেষে উমর (রাযিঃ) হাজ্জ (হজ্জ/হজ) পালনের জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লেন এবং আমিও হজ্জ পালনের জন্য তার সফরসঙ্গী হলাম। এরপর (হাজ্জ (হজ্জ/হজ) সমাপন করে ফেরার পথে) আমরা কোন এক রাস্তা দিয়ে চলার সময় উমার (রাযিঃ) এক পার্শ্বে মোড় নিলেন। আমিও পানির বদনাসহ তার সঙ্গে রাস্তার পাশে গেলাম। তিনি তার হাজত পূরণ করলেন এবং আমার কাছে এলেন। আমি তার উভয় হাতে পানি ঢাললাম, তিনি ওযু করে নিলেন। তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণের মধ্যে সে দু’জন মহিলা কারা ছিল যাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেনঃ উমর (রাযিঃ) বললেন, হে ইবনু আব্বাস। এতো তোমার জন্য আশ্চর্যের বিষয় বলে মনে হচ্ছে (তুমি এত বিলম্বে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে কেন?)
যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! তিনি [উমর (রাযিঃ)] জিজ্ঞাসিত বিষয়টি (ইবনু আব্বাসের এ বিষয়ে বিলম্বে প্রশ্ন করাকে) অপছন্দ করলেও তা বর্ণনা করতে কিছুই গোপন করলেন না। তিনি বললেন, তারা দু’জন ছিল হাফসাহ ও আয়িশাহ (রাযিঃ)। এরপর তিনি ঘটনার বিবরণ দিতে লাগলেন। তিনি বললেন, আমরা কুরায়শ বংশের লোকেরা (জাহিলিয়্যাত যুগে) আমাদের স্ত্রীদের উপর প্রভুত্ব করে চলতাম। যখন আমরা মদীনায় এলাম তখন এমন লোকদের দেখতে পেলাম যাদের উপর তাদের স্ত্রীরা প্রভাব বিস্তার করছিল। এমনি পরিবেশে আমাদের নারীরা তাদের (মদীনাহবাসীদের) নারীদের অভ্যাস রপ্ত করতে শুরু করে দেয়। তিনি বলেন, সে সময় মদীনার উচ্চভূমির অধিবাসী বানু উমাইয়্যাহ্ ইবনু যায়দের বংশধরদের মধ্যে আমার বসতবাটি ছিল। এরপর একদিন আমি আমার স্ত্রীর উপর রাগান্বিত হলাম। সে আমার কথার প্রত্যুত্তর করতে লাগল। আমি আমার সঙ্গে তার প্রত্যুত্তর করাকে খুবই অপ্রিয় মনে করলাম।
সে বলল, আপনার সঙ্গে আমার কথার প্রত্যুত্তর করাকে অপছন্দ করছেন কেন? আল্লাহর কসম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণও তো তার সঙ্গে কথার প্রত্যুত্তর করে থাকে। এমনকি তাদের কেউ কেউ তাকে সারা দিন রাত বিচ্ছিন্ন করে রাখে। তখন আমি রওনা করে (আমার মেয়ে) হাফসার কাছে চলে এলাম। এরপর আমি তাকে বললাম, তুমি কি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে প্রত্যুত্তর কর? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বললাম, তোমাদের মধ্যে কি কেউ তাকে সারা দিন রাত বিচ্ছিন্ন করে রাখে? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বললাম, তোমাদের যে কেউ এরূপ আচরণ করে সে আসলেই দুর্ভাগা ও ক্ষতিগ্রস্ত। তোমাদের মধ্যে কি কেউ বিপদমুক্ত ও নিরাপদ হতে পারে যদি আল্লাহ তার রসূলের ক্রোধের কারণে ক্রুদ্ধ হন। এরূপ হলে তো তার ধ্বংস অনিবার্য। তুমি কখনো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তার কথার প্রত্যুত্তরে লিপ্ত হয়ো না এবং তার কাছে কোন কিছু দাবী করবে না, তোমার মনে যা চায় তা আমার কাছে চাইবে। তোমার সতীন তোমার চাইতে অধিকতর সুন্দরী এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তোমার তুলনায় অধিকতর প্রিয়পাত্রী। সে যেন তোমাকে ধোকায় পতিত না করে ফেলে। এর দ্বারা তিনি [উমর (রাযিঃ)] আয়িশাহ (রাযিঃ) কে বুঝাতে চাইছেন।
তিনি বলেন, আমার একজন আনসারী প্রতিবেশী ছিলেন। আমরা দুই বন্ধু পালাক্রমে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে (তার মাজলিসে) যেতাম। একদিন তিনি উপস্থিত থাকতেন, অপরদিন আমি উপস্থিত হতাম। এভাবে তিনি আমাকে ওয়াহী ইত্যাদির খবর দিতেন, আমিও অনুরূপ খবর তাকে পৌছাতাম। সে সময় আমরা বেশ করে আলোচনা করতে ছিলাম যে, গাসসানী বাদশাহ নাকি আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ঘোড়ার ক্ষুরে নাল লাগাচ্ছে। একদিন আমার বন্ধু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং ইশার সময় (রাত্রিকালে) আমার কাছে (ফিরে) এলেন। তিনি এসে আমার ঘরের দরজা খটখটালেন এবং আমাকে ডাকলেন। আমি তার ডাক শুনে তার কাছে ছুটে এলাম। তিনি বললেন, একটা বিরাট কাণ্ড ঘটে গেছে। আমি বললাম, সে কী? গাস্সানীরা তাহলে এসে গেছে নাকি? তিনি বললেনঃ না, তারা আসেনি বরং ব্যাপার তার চাইতেও সাংঘাতিক ও দীর্ঘতর।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সহধর্মিণীদের ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন। তখন আমি বললাম, হাফসাহ হতাশ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি পূর্ব থেকেই ধারণা পোষণ করে আসছিলাম যে, এমন একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এরপর আমি ফজরের সালাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় পরিধান করলাম। আমি ঘর থেকে বেরিয়ে সরাসরি হাফসার কাছে উপস্থিত হলাম। তখন সে কাঁদছিল। আমি বললাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদেরকে ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন। সে (শ্বাসরুদ্ধ করে) বলল, আমি জানি না। তবে তিনি তার ঐ বালাখানায় নির্জনবাস করছেন।
তখন আমি তার কৃষ্ণাঙ্গ খাদিমের কাছে বললাম, উমারের (প্রবেশের) জন্য অনুমতি প্রার্থনা করো। এরপর সে ভিতরে প্রবেশ করল এবং পরক্ষণেই বেরিয়ে এসে আমার দিকে তাকাল। এরপর সে বলল, আমি তাঁর (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) কাছে আপনার কথা উত্থাপন করেছি কিন্তু তিনি নীরব আছেন (কিছুই বলছেন না)। অতঃপর আমি চলে এলাম এবং মিম্বারের কাছে এসে বসে পড়লাম। তখন আমি দেখতে পেলাম সেখানে একদল লোক বসা আছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। আমি খানিকটা বসলাম। এরপর আমার মনের প্রবল আকাঙ্খা আমার উপর প্রভাব বিস্তার করল। তখন আমি সে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকটির কাছে চলে এলাম এবং তাকে বললাম, ’উমারের জন্য ভিতরে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে এসো। সে ভেতরে প্রবেশ করল এবং বেরিয়ে এসে আমাকে বলল, আমি আপনার বিষয়টি তার সামনে উত্থাপন করেছি কিন্তু তিনি নীরব আছেন।
আমি যখন পিছনে ফিরে চললাম অমনি সে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকটি আমাকে ডাক দিয়ে বলল, আপনি প্রবেশ করুন; তিনি আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন। আমি ভিতরে প্রবেশ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম দিলাম। আমি দেখতে পেলাম, তিনি খেজুর পাতার তৈরি একটি চাটাই এর উপর হেলান দিয়ে আরাম করছেন যা তার পাজরে চাটাইয়ের দাগ বসিয়ে দিয়েছে। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি আপনার সহধর্মিণীগণকে ত্বলাক (তালাক) দিয়েছেন? তিনি তার মাথা উচিয়ে আমার প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন এবং বললেন, না। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ। হে আল্লাহর রসূল! আপনি বিষয়টি ভেবে দেখুন; আমরা যখন মদীনায় এলাম তখন দেখতে পেলাম, এখানকার পুরুষ লোকদের উপর তাদের স্ত্রীরা প্রভুত্ব বিস্তার করে আসছে।
এতে তাদের দেখাদেখি আমাদের স্ত্রীরাও তাদের অভ্যাস রপ্ত করতে শুরু করে দিয়েছে। একদিন আমি আমার স্ত্রীর প্রতি রাগান্বিত হলাম। অমনি সে আমার কথার প্রত্যুত্তর শুরু করে দিল। আমি তার প্রত্যুত্তর করাকে খুবই খারাপ মনে করলাম। সে বলে ফেলল, আপনার সঙ্গে প্রত্যুত্তর করাকে আপনি এত খারাপ মনে করছেন কেন? আল্লাহর কসম! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীগণও তো তার কথার প্রত্যুত্তর করে থাকে, এমনকি তাদের কেউ কেউ তাকে সারা দিন রাত বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি বললাম, তাদের মধ্যে কেউ এমন আচরণ করলে সে হতভাগ্য ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে থেকে কারো উপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগান্বিত হওয়ার কারণে যদি আল্লাহ ক্রুদ্ধ হয়ে যান তাহলে তার পতন ও ধ্বংস অনিবার্য।
তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃদু স্বরে হেসে উঠলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি হাফসার কাছে গিয়ে তাকে বলে দিয়েছি যে, তোমার সতীন সৌন্দর্যে তোমার তুলনায় অগ্ৰগামিনী এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তোমার চাইতে অধিকতর আদরিণী- তা যেন তোমাকে ধোকার জালে আবদ্ধ করতে না পারে। এতে আবার তিনি মুচকি হাসি দিলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার সঙ্গে একান্তে আলাপ করতে চাই। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, করতে পার। অতঃপর আমি বললাম এবং মাথা উঠিয়ে তার কোঠার (এদিক ওদিক) তাকিয়ে দেখলাম। আল্লাহর কসম! আমি সেখানে তিনখানি চামড়া ব্যতীত নয়ন জুড়ানো তেমন কিছু দেখতে পাইনি।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন তিনি আপনার উম্মাতকে প্রাচুর্য দান করেন। পারসিক ও রোমকদের তো বৈষয়িক সুখ সমৃদ্ধ দান করা হয়েছে অথচ তারা আল্লাহর ইবাদাত (আনুগত্য) করে না। তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি কি সন্দেহের জালে আচ্ছন্ন আছো। আসলে তারা তো এমন সম্প্রদায় যাদের পার্থিব জীবনে ক্ষণিকের তরে সুখ সমৃদ্ধি দান করা হয়েছে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি তার সহধর্মিণীগণের আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে কসম করেছিলেন যে, দীর্ঘ একমাস তাদের সঙ্গে একত্রে অতিবাহিত করবেন না। শেষাবধি আল্লাহ তাকে এ আচরণের জন্য তিরস্কার করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৫৫৮, ইসলামীক সেন্টার ৩৫৫৮)
باب فِي الإِيلاَءِ وَاعْتِزَالِ النِّسَاءِ وَتَخْيِيرِهِنَّ وَقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ}
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ، - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا وَقَالَ، إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمْ أَزَلْ حَرِيصًا أَنْأَسْأَلَ عُمَرَ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتَيْنِ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى (إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا) حَتَّى حَجَّ عُمَرُ وَحَجَجْتُ مَعَهُ فَلَمَّا كُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيقِ عَدَلَ عُمَرُ وَعَدَلْتُ مَعَهُ بِالإِدَاوَةِ فَتَبَرَّزَ ثُمَّ أَتَانِي فَسَكَبْتُ عَلَى يَدَيْهِ فَتَوَضَّأَ فَقُلْتُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَنِ الْمَرْأَتَانِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتَانِ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمَا ( إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا) قَالَ عُمَرُ وَاعَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ - قَالَ الزُّهْرِيُّ كَرِهَ وَاللَّهِ مَا سَأَلَهُ عَنْهُ وَلَمْ يَكْتُمْهُ - قَالَ هِيَ حَفْصَةُ وَعَائِشَةُ . ثُمَّ أَخَذَ يَسُوقُ الْحَدِيثَ قَالَ كُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ قَوْمًا نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا قَوْمًا تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ نِسَائِهِمْ - قَالَ - وَكَانَ مَنْزِلِي فِي بَنِي أُمَيَّةَ بْنِ زَيْدٍ بِالْعَوَالِي فَتَغَضَّبْتُ يَوْمًا عَلَى امْرَأَتِي فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي فَأَنْكَرْتُ أَنْ تُرَاجِعَنِي . فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ أَنْ أُرَاجِعَكَ فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَاهُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . فَانْطَلَقْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَقُلْتُ أَتُرَاجِعِينَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ نَعَمْ . فَقُلْتُ أَتَهْجُرُهُ إِحْدَاكُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ قَالَتْ نَعَمْ . قُلْتُ قَدْ خَابَ مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مِنْكُنَّ وَخَسِرَ أَفَتَأْمَنُ إِحْدَاكُنَّ أَنْ يَغْضَبَ اللَّهُ عَلَيْهَا لِغَضَبِ رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هِيَ قَدْ هَلَكَتْ لاَ تُرَاجِعِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ تَسْأَلِيهِ شَيْئًا وَسَلِينِي مَا بَدَا لَكِ وَلاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ هِيَ أَوْسَمَ وَأَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْكِ - يُرِيدُ عَائِشَةَ - قَالَ وَكَانَ لِي جَارٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَكُنَّا نَتَنَاوَبُ النُّزُولَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَنْزِلُ يَوْمًا وَأَنْزِلُ يَوْمًا فَيَأْتِينِي بِخَبَرِ الْوَحْىِ وَغَيْرِهِ وَآتِيهِ بِمِثْلِ ذَلِكَ وَكُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّ غَسَّانَ تُنْعِلُ الْخَيْلَ لِتَغْزُوَنَا فَنَزَلَ صَاحِبِي ثُمَّ أَتَانِي عِشَاءً فَضَرَبَ بَابِي ثُمَّ نَادَانِي فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ حَدَثَ أَمْرٌ عَظِيمٌ . قُلْتُ مَاذَا أَجَاءَتْ غَسَّانُ قَالَ لاَ بَلْ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ وَأَطْوَلُ طَلَّقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نِسَاءَهُ . فَقُلْتُ قَدْ خَابَتْ حَفْصَةُ وَخَسِرَتْ قَدْ كُنْتُ أَظُنُّ هَذَا كَائِنًا حَتَّى إِذَا صَلَّيْتُ الصُّبْحَ شَدَدْتُ عَلَىَّ ثِيَابِي ثُمَّ نَزَلْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ وَهْىَ تَبْكِي فَقُلْتُ أَطَلَّقَكُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ لاَ أَدْرِي هَا هُوَ ذَا مُعْتَزِلٌ فِي هَذِهِ الْمَشْرُبَةِ . فَأَتَيْتُ غُلاَمًا لَهُ أَسْوَدَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَصَمَتَ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى الْمِنْبَرِ فَجَلَسْتُ فَإِذَا عِنْدَهُ رَهْطٌ جُلُوسٌ يَبْكِي بَعْضُهُمْ فَجَلَسْتُ قَلِيلاً ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ ثُمَّ أَتَيْتُ الْغُلاَمَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ . فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَصَمَتَ . فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا فَإِذَا الْغُلاَمُ يَدْعُونِي فَقَالَ ادْخُلْ فَقَدْ أَذِنَ لَكَ فَدَخَلْتُ فَسَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ مُتَّكِئٌ عَلَى رَمْلِ حَصِيرٍ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِهِ فَقُلْتُ أَطَلَّقْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ نِسَاءَكَ فَرَفَعَ رَأْسَهُ إِلَىَّ وَقَالَ " لاَ " . فَقُلْتُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَوْ رَأَيْتَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ قَوْمًا نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا قَوْمًا تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ نِسَائِهِمْ فَتَغَضَّبْتُ عَلَى امْرَأَتِي يَوْمًا فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي فَأَنْكَرْتُ أَنْ تُرَاجِعَنِي . فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ أَنْ أُرَاجِعَكَ فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَاهُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . فَقُلْتُ قَدْ خَابَ مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مِنْهُنَّ وَخَسِرَ أَفَتَأْمَنُ إِحْدَاهُنَّ أَنْ يَغْضَبَ اللَّهُ عَلَيْهَا لِغَضَبِ رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هِيَ قَدْ هَلَكَتْ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ دَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَقُلْتُ لاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ جَارَتُكِ هِيَ أَوْسَمُ مِنْكِ وَأَحَبُّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْكِ . فَتَبَسَّمَ أُخْرَى فَقُلْتُ أَسْتَأْنِسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " نَعَمْ " . فَجَلَسْتُ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فِي الْبَيْتِ فَوَاللَّهِ مَا رَأَيْتُ فِيهِ شَيْئًا يَرُدُّ الْبَصَرَ إِلاَّ أُهُبًا ثَلاَثَةً فَقُلْتُ ادْعُ اللَّهَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنْ يُوَسِّعَ عَلَى أُمَّتِكَ فَقَدْ وَسَّعَ عَلَى فَارِسَ وَالرُّومِ وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَ اللَّهَ فَاسْتَوَى جَالِسًا ثُمَّ قَالَ " أَفِي شَكٍّ أَنْتَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ أُولَئِكَ قَوْمٌ عُجِّلَتْ لَهُمْ طَيِّبَاتُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا " . فَقُلْتُ اسْتَغْفِرْ لِي يَا رَسُولَ اللَّهِ . وَكَانَ أَقْسَمَ أَنْ لاَ يَدْخُلَ عَلَيْهِنَّ شَهْرًا مِنْ شِدَّةِ مَوْجِدَتِهِ عَلَيْهِنَّ حَتَّى عَاتَبَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ
Ibn 'Abbas (Allah be pleased with them) reported. I had always been anxious to ask 'Umar (Allah be pleased with him) about the two ladies amongst the wives of Allah's Prophet (may peace be upon Lim) about whom Allah, the Exalted, said:
" If you both turn in repentance to Allah, then indeed your hearts are inclined (to this)" (Ixvi. 4), until 'Umar (Allah be pleased with him) set out for Hajj and I also went along with him. And as we were going along a path, 'Umar (Allah be pleased with hiyn) went aside and I also went aside with him with a jug (of water). He answered the call of nature, and then came to me and I poured water over his hands and he performed ablution I said: Commander of the Faithful, who are the two ladies amongst the wives of Allah's Prophet (ﷺ) about whom Allah, the Exalted and Majestic, said: 'If you both turn to Allah in repentance, then indeed your heart are inclined to it"? 'Umar (Allah he pleased with him) said: How strange is it for you, Ibn 'Abbas! (Zuhri said: By Allah, he disliked what he asked about, but did not keep it a secret.) He ('Umar) said: They are Hafsa and 'A'isha; and he then began to narrate the hadith and said: We were such people among the Quraish who dominated women, and as we reached Medina we found there people who were dominated by their women, and our women began to learn (the habits) of their women. He further said: And my house was situated in the suburb of Aledina in the tribe of Banu Umayya b. Zaid. One day I became angry with my wife and she retorted upon me. I did not like that she should retort upon me. She said: You disapprove of my retorting upon you By Allah, the wives of Allah's Apostle (ﷺ) retort upon him, and one of them detaches herself from him for the day until the night. So I ('Umar) went out and visited Hafsa and said: Do you retort upon Allah's Messenger (ﷺ)? She said: Yes. I said; Does any one of you detach herself from him from the day to the night? She said: Yes. He said: She who did like it amongst you in fact failed and incurred loss. Does everyone amongst you not fear the wrath of Allah upon her due to the wrath of His Messenger (ﷺ), and (as a result thereof) she may perish? So do not retort upon Allah's Messenger (ﷺ) and do not ask him for anything, but ask me that which you desire, (and the frank behaviour) of your companion may not mislead you, if she is more graceful and is dearer to Allah's Messenger (ﷺ) than you (meaning 'A'isha) (Allah be pleased with her). He (Hadrat 'Umar further) said: I had a compalaion from the Ansar and, we used to remain in the company of the Messenger (ﷺ) turn by turn. He remained there for a day while I remained there on the other day, and he brought me the news about the revelation and other (matter), and I brought him (the news) like this. And we discussed that the Ghassanids were shoeing the horses in order to attack us. Id y companion once attended (the Apostle). and then came to me at night and knocked at my door and called me, and I came out to him, and he said: A matter of great importance has happened. I said: What is that? Have the Ghassanids come? He said: No, but even more serious and more significant than that: the Prophet (ﷺ) has divorced his wives. I said: Hafsa has failed and has incurred loss. and I feared that it would happen. When it was dawn I observed the dawn prayer and dressed myself, and then came there (in the house of the Holy Prophet) and visited Hafsa, and she was weeping. I said: Has Allah's Messenger (ﷺ) divorced you (all)? She said: I do not know. He has, however, separated himself in his attic. I came to a black servant and said to him: Seek permission for 'Umar. He went in and then came to me and said: I made mention of you to him, but he kept quiet. I then went to the pulpit and sat there, and there was a group of people sitting by it and some of then were weeping. I sat there for some time, until I was overpowered (by that very idea) which was in my mind. I then came back to the boy and said to him: Seek permission for Umar. He went in and came to me and said: I made mention of you to him but he kept quiet. I was about to turn back when the boy called me and said: Go in; permission has been granted to you. I went in and greeted Allah's Messenger (ﷺ) and he was reclining against the couch of mat and it had left its marks upon his side. I said: Messenger of Allah, have you divorced your wives? He raised his head towards me and said: No. I said: Allah is the Greatest. Messenger of Allah, I wish if you had seen how we the people of Quraish had domination over women but when we came to Medina we found people whom their women dominated. So our women began to learn from their women. One dily I became angry with my wife and she began to retort upon me. I did not approve that she should retort upon me. She said: You do not like that I should retort upon you, but, by Allah. the wives of Allah's Apostle (ﷺ) retort upon him and any one of them separates herself from him for a day until night. I said: He who did that amongst them in fact failed and incurred loss. Does any of them feel sate from the wrath of Allahupon her due to the wrath of Allah's Messenger (ﷺ), and she has certainly perished. Allah's Messtnger (ﷺ) smiled, I said: Messenger of Allah, I visited Hafsa and said: (The behaviour) of your companion ('A'isha) may not mislead you, If she is more graceful than you and is dearer to Allah's Messenger (ﷺ) than you. Allah's Messenger (ﷺ) smiled for the second time. I said: Allah's Messenger, way I talk to you about agreeable things? He said: Yes. I sat down and lifted my head (to see things) in the house and, by Allah, I did not see anything significant besides three hides. I said: Messenger of Allah, supplicate the Lord that He should make (life) prosperous for your Ummah as He has made plentiful for the people of Persia and Rome (in spite of the fact) that they do no, worship Allah, the Exalted and Majestic, whereupon he (Allah's Messenger) sat up an I then said: Ibn Khattab, do you doubt that they are a nation whom their nice things have been given immediately in the life of this world. I said: Allah's Messenger! seek pardon for me. And he (Allah's Messenger) had taken an oath that he would not visit them for a month due to extreme annoyance with them until Allah showed His displeasure to him (Allah's Messenger).