পরিচ্ছেদঃ ১৭১. লি‘আন।
২২৫০. আল্ হাসান ইবন আলী .... ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হিলাল ইবন উমাইয়্যা, যিনি ঐ ব্যক্তির একজন ছিলেন, (যারা অকারণে তাবুক যুদ্ধে গমণ করনেনি, যার ফলে অপরাধী সাব্যস্ত হন এবং কান্নাকাটির পর) আল্লাহ্তাদের তাওবা কবুল কনে। একদা তিনি তার খামার হতে রাতে প্রত্যাবর্তনের পর তার স্ত্রীর সাথে এক ব্যক্তিকে (শুরায়ক ইবন সাহমকে) যিনায় লিপ্ত দেখতে পান এবং তার দু’কর্ণে তাদের কথোপকথন শ্রবণ করেন। কিন্তু তিনি এতদসত্ত্বেও কোনরূপ বাড়াবাড়ি না করে রাতযাপন করেন।
সকালবেলা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি রাতে আমার স্ত্রীর নিকট গমণপূর্বক তার সাথে এক ব্যক্তিকে (ব্যভিচারে লিপ্তবস্থায়) আমার স্বচক্ষে অবলোকন করি এবং তার কথাও আমি স্বকর্ণে শ্রবণ করি। এতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং তার নিকট ইহা খুবই গুরুতর মনে হয়। তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ (অর্থ) ’’যারা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে যিনার দোষারোপ করে, আর এব্যাপারে (স্ত্রী ব্যভিচারের) তাদের কোন সাক্ষী থাকে না নিজে ব্যতীত’’ ... আয়াতের শেষ পর্যন্ত নাযিল হয়।
আর ঐ সময় রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ওহী নাযিল হওয়াকালীন সময়ের কাঠিন্যতা প্রকাশ পায়। এরপর তিনি বলেনঃ হে হিলাল! তুমি সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ্ তা’আলা তোমার ব্যাপারে স্বস্তির বিধান জারি করেছেন। তখন হিলাল (রাঃ) বলেন, আমি আমার রবের নিকট এ রকম কিছুর প্রত্যাশা করেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তাকে এখানে নিয়ে এসো! তখন সে (হিলালের স্ত্রী) সেখানে আসে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের (উভয়ের) সম্মুখে ঐ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং বলেন, আখিরাতের আযাব দুনিয়ার আযাবের চাইতে ভয়াবহ।
হিলাল (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তার (স্ত্রীর) ব্যাপারে যা বলছি, সত্য বলছি। তার স্ত্রী বলে, সে মিথ্যা বলছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের বলেন, তোমরা তাদের পরস্পরের মধ্যে লি’আন করতে বল। হিলালকে বলা হয়, তুমি সাক্ষ্য প্রদান কর। তিনি আল্লাহর শপথপূর্বক চারবার বলেন যে, তিনি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। এরপর তিনি পঞ্চমবারের জন্য সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত হলে তাঁকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় করো। কেননা, আখিরাতের আযাবের চেয়ে দুনিয়ার আযাব খুবই নগন্য। আর এ সাক্ষ্য (পঞ্চমবারের) তোমার শাস্তিকে অবধারিত করবে (যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও)।
তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! তিনি আমাকে এজন্য শাস্তি প্রদান করবেন না, যেমন তিনি তার সম্পর্কে বলাতে আমাকে শাস্তি প্রদান করনেনি। অতঃপর তিনি পঞ্চমবারের শাস্তি প্রদানের সময় বলেন, যদি সে (নিজে) মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হয়, তবে তার উপর আল্লাহর লা’নত (যেন বর্ষিত হয়)। এরপর তার স্ত্রীকে সাক্ষ্য প্রদান করতে বলা হলে, সে চারবার আল্লাহ নামে এরূপ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, সে (তার স্বামী) মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভূক্ত। এরপর সে পঞ্চমবার শপথবাক্য উচ্চারণের জন্য প্রস্তুত হলে তাকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় করো এবং (জেনে রাখ) আখিরাতের আযাবের তুলনায় দুনিয়ার আযাব খুবই নগণ্য। আর এটা তোমার জন্য শাস্তিকে অবধারিত করবে।
এতদশ্রবণে সে ক্ষণকালের জন্য থেমে যায় এবং পরে বলে, আমি আমার কাওমের লোকদের হেয় করব না। এরপর সে পঞ্চমবারের মতো সাক্ষ্য প্রদানের সময় বলে, তার (নিজের) উপর আল্লাহর গযব (যেন লালায়িত হয়), যদি সে (তার স্বামী) সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হয়। অতঃপর রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন এবং ফায়সালা দেন যে, তার গর্ভস্থিত সন্তান যেন তার পিতার সাথে সম্পর্কিত না করা হয়। আর সেই মহিলাকে যেন যিনাকারী হিসাবে এবং তার সন্তানকে যেন ব্যভিচারের ফসল হিসাবে আখ্যায়িত করা না হয়। আর যে ব্যক্তি তাকে (মহিলাকে) ব্যভিচারীর দোষারোপ করবে অথবা তার সন্তানের প্রতি এরূপ দোষারোপ করবে তার উপর হদ (শরী’আতের শাস্তি বিধান) জারি করা হবে। আর তিনি এরূপ সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করেন যে, তার উপর (স্বামীর) ঐ মহিলার থাকার জন্য এবং ভরণ পোষণের জন্য কোনরূপ দায়-দায়িত্ব বর্তাবে না। কেননা, তারা তালাক ব্যতীত উভয়েই বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
আর সে (স্বামী) তার প্রতি দৃষ্টিপাতও করতে পারবেনা। এরপর তিনি বলেনঃ সে যদি স্থুল (পায়ের) গোছাবিশিষ্ট, লাল চুল বিশিষ্ট (যার উপরিভাগ কালো) এবং হালকা পাতলা গড়নের সন্তান প্রসব করে তবে তা হবে হিলালের সন্তান। অপর পক্ষে, সে যদি স্বাস্থ্যবান, মোটাতাজা সন্তান প্রসব করে, তবে তার গর্ভজাত সন্তান হবে, যার প্রতি দোষারোপ করা হয়েছে। সে (মহিলা) মোটাতাজা, স্বাস্থ্যবান একটি সন্তান প্রসব করল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি সে আল্লাহর নামে সাক্ষ্য প্রদান না করতো, তবে তার ও আমার মধ্যকার ফায়সালার ব্যাপারটি অন্যরকম হতো। রাবী ইকরামা বলেন, পরবর্তীকালে সে (সন্তান) মুদের গোত্রের আমীর হয়। কিন্তু তাকে তার পিতার সাথে সম্পর্কিত করা হতো না।
باب فِي اللِّعَانِ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَاءَ هِلاَلُ بْنُ أُمَيَّةَ وَهُوَ أَحَدُ الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ فَجَاءَ مِنْ أَرْضِهِ عَشِيًّا فَوَجَدَ عِنْدَ أَهْلِهِ رَجُلاً فَرَأَى بِعَيْنَيْهِ وَسَمِعَ بِأُذُنَيْهِ فَلَمْ يَهِجْهُ حَتَّى أَصْبَحَ ثُمَّ غَدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي جِئْتُ أَهْلِي عِشَاءً فَوَجَدْتُ عِنْدَهُمْ رَجُلاً فَرَأَيْتُ بِعَيْنِي وَسَمِعْتُ بِأُذُنِي فَكَرِهَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا جَاءَ بِهِ وَاشْتَدَّ عَلَيْهِ فَنَزَلَتْ ( وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ ) الآيَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا فَسُرِّيَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَبْشِرْ يَا هِلاَلُ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَكَ فَرَجًا وَمَخْرَجًا " . قَالَ هِلاَلٌ قَدْ كُنْتُ أَرْجُو ذَلِكَ مِنْ رَبِّي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَرْسِلُوا إِلَيْهَا " . فَجَاءَتْ فَتَلاَ عَلَيْهِمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَكَّرَهُمَا وَأَخْبَرَهُمَا أَنَّ عَذَابَ الآخِرَةِ أَشَدُّ مِنْ عَذَابِ الدُّنْيَا فَقَالَ هِلاَلٌ وَاللَّهِ لَقَدْ صَدَقْتُ عَلَيْهَا فَقَالَتْ قَدْ كَذَبَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَعِنُوا بَيْنَهُمَا " . فَقِيلَ لِهِلاَلٍ اشْهَدْ . فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهُ يَا هِلاَلُ اتَّقِ اللَّهَ فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكَ الْعَذَابَ . فَقَالَ وَاللَّهِ لاَ يُعَذِّبُنِي اللَّهُ عَلَيْهَا كَمَا لَمْ يَجْلِدْنِي عَلَيْهَا . فَشَهِدَ الْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ قِيلَ لَهَا اشْهَدِي . فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ فَلَمَّا كَانَتِ الْخَامِسَةُ قِيلَ لَهَا اتَّقِي اللَّهَ فَإِنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ وَإِنَّ هَذِهِ الْمُوجِبَةُ الَّتِي تُوجِبُ عَلَيْكِ الْعَذَابَ . فَتَلَكَّأَتْ سَاعَةً ثُمَّ قَالَتْ وَاللَّهِ لاَ أَفْضَحُ قَوْمِي فَشَهِدَتِ الْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ فَفَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا وَقَضَى أَنْ لاَ يُدْعَى وَلَدُهَا لأَبٍ وَلاَ تُرْمَى وَلاَ يُرْمَى وَلَدُهَا وَمَنْ رَمَاهَا أَوْ رَمَى وَلَدَهَا فَعَلَيْهِ الْحَدُّ وَقَضَى أَنْ لاَ بَيْتَ لَهَا عَلَيْهِ وَلاَ قُوتَ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُمَا يَتَفَرَّقَانِ مِنْ غَيْرِ طَلاَقٍ وَلاَ مُتَوَفَّى عَنْهَا وَقَالَ " إِنْ جَاءَتْ بِهِ أُصَيْهِبَ أُرَيْصِحَ أُثَيْبِجَ حَمْشَ السَّاقَيْنِ فَهُوَ لِهِلاَلٍ وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جُمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ فَهُوَ لِلَّذِي رُمِيَتْ بِهِ فَجَاءَتْ بِهِ أَوْرَقَ جَعْدًا جُمَالِيًّا خَدَلَّجَ السَّاقَيْنِ سَابِغَ الأَلْيَتَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَوْلاَ الأَيْمَانُ لَكَانَ لِي وَلَهَا شَأْنٌ " . قَالَ عِكْرِمَةُ فَكَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَمِيرًا عَلَى مُضَرَ وَمَا يُدْعَى لأَبٍ .
Ibn ‘Abbas said “Hilal bin Umayyah was one of the three persons whose repentance was accepted by Allaah. One night he returned from his land and found a man along with his wife. He witnessed with his eyes and heard with his ears. He did not threaten him till the morning.” Next day he went to the Apostle of Allaah(ﷺ) in the morning and said Apostle of Allaah(ﷺ) “I came to my wife in the night and found a man along with her. I saw with my own eyes and heard with my own ears. The Apostle of Allaah(ﷺ) disliked what he described and he took it seriously. There upon the following Qur’anic verse came down “And those who make charges against their spouses but have no witnesses except themselves, let the testimony of one of them ....” When the Apostle of Allaah(ﷺ) came to himself (after the revelation ended) he said “Glad tidings to you Hilal, Allaah the exalted has made ease and a way out for you.” Hilal said “I expected that from my Lord. The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Send for her. She then came.” The Apostle of Allaah(ﷺ) recited the verses to them and he reminded them and told them that the punishment in the next world was more severe than that in n this world. Hilal said “I swear by Allah I spoke the truth against her.” She said “He told a lie.” The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Apply the method of invoking curses on one another. Hilal was told “Bear witness. So he bore witness before Allaah four times that he spoke the truth.” When he was about to utter the fifth time he was told “Hilal fear Allah, for the punishment in this world is easier than that in the next world and this is the deciding one, that will surely cause punishment to you.” He said “I swear by Allaah. Allah will not punish me for this (act), as He did not cause me to be flogged for this (act).” So he bore witness a fifth time invoking the curse of Allah on him if he was of those who tell a lie. Then the people said to her, Testify. So she gave testimony before Allaah that he was a liar. When she was going to testify the fifth time she was told “Fear Allah, for the punishment in this world is easier than that in the next world. This is the deciding one that will surely cause punishment to you.” She hesitated for a moment. And then said “By Allah, I will not disgrace my people.” So she testified a fifth time invoking the curse of Allah on her if he spoke the truth. Apostle of Allaah(ﷺ) separated them from each other and decided that the child will not be attributed to its father. Neither she nor her child will be accused of adultery. He who accuses her or her child will be liable to punishment. He also decided that there will be no dwelling and maintenance for her (from the husband) as they were separated without divorce and death. He then said “If she gives birth to a child with reddish hair, light buttocks, wide belly and light shins he will be the child of Hilal. If she bears a dusky child with curly hair, fat limbs, fat shins and fat buttocks he will be the child of the one who was accused of adultery. She gave birth to a child with curly hair, fat limbs, fat shins and fat buttocks. The Apostle of Allaah(ﷺ) said “Had there been no oaths, I would have dealt with her severely.”
‘Ikrimah said “Later on he became the chief of the tribe of Mudar. He was not attributed to his father.”