পরিচ্ছেদঃ ৭৪/১. মহান আল্লাহর বাণীঃ হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর আস্তানা ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমন্ডিত হতে পার। সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫ঃ৯০)
৫৫৭৬. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইসরা (মি’রাজের) রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে শরাব ও দুধের দু’টি পেয়ালা পেশ করা হল। তিনি উভয়টির প্রতি লক্ষ্য করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করেন। তখন জিবরীল (আ.) বললেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত দ্রব্যের দিকে পথ প্রদর্শন করেছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মাত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। [1] [৩৩৯৪]
যুহরী (রহ.) থেকে মা’মার, ইবনু হাদী, ’উসমান, ইবনু ’উমার ও যুবাইদী এরকম বর্ণনা করেছেন। আধুনিক প্রকাশনী- ৫১৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০৬৩)
[1]. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO) মাদক দ্রব্যের এক আন্তর্জাতিক শ্রেণী বিন্যাস করেছে। সেটা হলোঃনারকটিক জাতীয়ঃ হেরোইন, মরফিন, আফিম, পেথিডিন, কোডিন ফেনসিডেল), মেথাডন।বারবিচুরেট জাতীয়ঃ ফেনোবারবিটন, পেনটোবারবিটন।প্রশান্তিদায়ক ঔষধঃ ডায়াজেপাম, নাইট্রাজেপাম, ক্লোবাজাম, লরাজেপাম ইত্যাদি।মদজাতীয়ঃ বিয়ার, ব্রান্ডি, হুইসকি, ভদকা, রাম, বাংলা মদ, তাড়ি, জিন, রেকটিফাইড স্পিরিট, ৫% এর অধিক এলকোহল যুক্ত যেকোন তরল পদার্থ ইত্যাদি।
স্নায়ূ উত্তেজক মাদকঃক্যানাবিস জাতীয়ঃ গাঁজা, মারিজুয়ানা, ভাং, হাশিশ, চরস, সিদ্ধি।এমফেটামিন জাতীয়ঃ রিটালিন, ডেকসোড্রিন, মেথিড্রিন।কোকেইন জাতীয়ঃ কোকেইন বড়ি, নস্যি বা পেস্ট।মায়াবিভ্রম উৎপাদনকারী মাদকঃ এলএসডি, মেসকেলিন।
বিবিধ মাদকদ্রব্যঃতামাক জাতীয়ঃ বিড়ি, চুরুট, সিগারেট, হুক্কা, জর্দা, সাদাপাতা, খৈনী, দাঁতের গুল, নস্যি, ভিক্স ইত্যাদি।মরফিন ধরনের ঔষধ দেহের যন্ত্রণা কমায় এবং ঘুম পাড়ায় খুব তাড়াতাড়ি। ঘুমের তথাকথিত দেবতা ‘‘মারফিউস’’ এর নামানুসারে এর নাম রাখা হয় মরফিন। এ থেকে আরও শক্তিশালী যন্ত্রণা কমানোর ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে যেমন হেরোইন। এটা কখনো বাদামী রং এবং কখনো সাদা রং এর পাউডার হিসেবে পাওয়া যায়। মরফিন ও হেরোইন ধুমপানের সঙ্গে কিংবা নাকের ভিতর দিয়ে টেনে বা রক্তনালীর মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশার কাজে ব্যবহার করা হয়।
মাদকদ্রব্য সেবনে কী কী ক্ষতি হয়ঃ
দৈহিক ক্ষতিঃ রক্তহীনতা, ক্ষুদামান্দ্য, অপুষ্টি, যক্ষা, ফুসফুসের পানি জমা, নিউমুনিয়া, হৃদরোগ, গেস্ট্রিক আলসার, প্যাংক্রিয়াসের অসুখ, পরিপাক যন্ত্র থেকে রক্ত ক্ষরণ, লিভারে প্রদাহ, জন্ডিস, লিভার সিরুসিস, ক্যানসার, কিডনি রোগ নেফ্রটিক সিনড্রম), টিটেনাস, মৃগীরোগ, গোশতপেশীতে অসুখ, স্নায়ুতন্ত্রের গোলযোগ, মস্তিষ্ক বিকল, দৃষ্টিহীনতা অপটিকস নিউরাইটিস), যৌনরোগ, এইডস, মাসিকের অনিয়ম, বন্ধাত্ব, বিকলাঙ্গ সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা। সড়ক দুর্ঘটনা জনিত মাথায় আঘাত ও অন্যান্য জটিল আঘাত, চর্মরোগ, শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস, বিষক্রিয়া সেপটিসেমিয়া), মুত্যু।
মানসিক ক্ষতিঃ উশৃংঙ্খল ও অসংলগ্ন আচরণ, উত্তেজনা, খিটখিটে মেজাজ, অনিদ্রা, স্মৃতিবৈকল্য, চিন্তার অসংলগ্নতা, চরম স্বার্থপরতা, শিক্ষা জীবনের ব্যহতি, কর্মদক্ষতার অবনতি, নিরুৎসাহ, উদাসীনতা, দয়ামায়াহীনতা, হতাশা, অবসাদ, বিষণ্ণতা, আত্মহত্যার প্রবনতা, গুরুতর মানসিক ব্যাধি, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, মিথ্যুক ও অধার্মিক হওয়া।
পারিবারিক ক্ষতিঃ পারিবারিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, নানাবিধ অশান্তি সৃষ্টি, সম্পর্কের অবনতি, বৈবাহিক জীবন দুঃসহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, পরিবারের মর্যাদাহানি, অধিক দেউলিয়াপনা এবং নিত্য ব্যবহার্য গৃহস্থালী দ্রব্য বিক্রি করা।
সামাজিক ক্ষতিঃ অপরাধমূলক আচরণ, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, মাস্তানী, হত্যা ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত থাকা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকা, সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজন থেকে বার বার টাকা ধার নেয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে প্রায়ই অনুপস্থিতি, চাকুরী হারানো, উৎপাদন বিমুখ হওয়া, বেকার হওয়া, সমাজে অপাংক্তেয় হওয়া।
بَاب قَوْلِ اللهِ تَعَالٰى
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّه“ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِه„ بِإِيلِيَاءَ بِقَدَحَيْنِ مِنْ خَمْرٍ وَلَبَنٍ فَنَظَرَ إِلَيْهِمَا ثُمَّ أَخَذَ اللَّبَنَ فَقَالَ جِبْرِيلُ الْحَمْدُ للهِ÷ الَّذِي هَدَاكَ لِلْفِطْرَةِ وَلَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ تَابَعَه“ مَعْمَرٌ وَابْنُ الْهَادِ وَعُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ وَالزُّبَيْدِيُّ عَنْ الزُّهْرِيِّ.