পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৫৩. মক্কাহ বিজয়ের সময় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সেখানে অবস্থানকালের পরিমাণ।
৪২৯৭. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (মক্কা্য়) দশদিন অবস্থান করেছিলাম। সে সময় আমরা সালাত কসর করতাম।[1] [১০৮১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৬৪)
[1] আল্লাহ তা‘আলা আল-কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন-
{وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوْاْ مِنَ الصَّلَاةِ} (১০১) سورة النساء
‘‘যখন তোমরা যমীনে ভ্রমণ করবে তখন সালাত কসর করলে তাতে কোন সমস্যা নেই।’’ (সূরা আন-নিসাঃ ১০১)
উক্ত আয়াতে এরূপ প্রমাণ মিলে না যে, কি পরিমাণ সফর করলে কসর করা যাবে। এ কারণেই সাহাবীগণের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আববাস (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা চার বুরুদ (১৬ ফারসাখ সমান ৪৮ মাইল) পরিমাণ সফর করলে সালাত কসর করতেন এবং সওম ভেঙ্গে দিতেন। পক্ষান্তরে ইবনু ‘উমার হতে সহীহ বর্ণনায় সাব্যস্ত হয়েছে তিনি বলেন, ‘‘তিন মাইল সফর করলে সালাত কসর করা যাবে’’। সহীহ সানাদে তার থেকে আরো বর্ণিত হয়েছে, ‘তিনি মক্কাহ’য় অবস্থানকালীন যখন মিনায় যেতেন তখন কসর করতেন’। এমনকি সহীহ সূত্রে ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমি যদি এক মাইল পথের জন্য বের হতাম তাহলেও সালাত কসর করতাম’। তিনি আরো বলেন, আমি দিনের কিছু সময় সফর করতাম এবং কসর করতাম। এসব আসারের সূত্রগুলো সহীহ। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন ‘‘ফাতহুল বারী’’ ও শাইখ আলবানীর ‘‘ইরওয়াউল গালীল (৩/১৪-২০)
এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, সাহাবীগণ এ বিষয়ে একমত ছিলেন না। বরং তাদের মধ্যে মতভেদ সংঘটিত হয়েছিল। অতএব আমাদেরকে দেখা দরকার এ ব্যাপারে রসূল (স) এর ‘আমল কি ছিল? আমরা নাবী (স) এর ‘আমলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখছি ইবনু ‘উমার (রা) এর ‘আমল তাঁর ‘আমলের সাথে অনেকাংশেই মিলে যাচ্ছে। যদিও তাঁর থেকে এ ব্যাপারে কোন মৌখিক হাদীছ বর্ণিত হয়নি। কারণ আনাস (রা) নাবী (স)-এর আমল বর্ণনা করেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযিদ আল হুনাই বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রা)-কে কসর করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেন, রসূল (স) তিন মাইল বা তিন ফারসাখ পরিমাণ পথ সফর করলেই দু‘রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। (নিম্নের বর্ণনাকারী শু‘বাহ সন্দেহ বশতঃ তিন মাইল বা তিন ফারসাখ বলেছেন)।
হাদীছটি ইমাম মুসলিম (২/১৪৫), আবু আওয়ানাহ (২/৩৪৬), আবু দাউদ, ইবনু আবী শাইবাহ (২/১০৮/১-২), বাইহাক্বী (৩/১৪৬) ও আহমাদ(৩/১২৯) বর্ণনা বলেছেন।
উল্লেখ্য এক ফারসাফ সমান তিন মাইল। অতএব তিন ফারসাখ সমান ৯ মাইল। যেহেতু মুসলিম সহ অন্যান্য হাদীছগ্রন্থে বর্ণিত এ হাদীছটিতে তিন মাইল মাইল বা ৯ মাইলের কথা বলা হয়েছে। যা নাবী (স)-এর ‘আমল হিসেবে প্রমাণিত। অতএব আমরা সতর্কতার স্বার্থে তিন মাইলকে গ্রহণ না করে ৯ মাইলকে গ্রহণ করবো এবং ৯ মাইল পরিমাণ পথ সফর করলেই নির্দ্বিধায় সালাত কসর করব।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন ফিকহুস সুন্নাহ ইরওয়াউল গালীল ৩য় খন্ড ফতহুল বারী প্রমুখ গ্রহণসমূহের সালাত অধ্যায়। (দেখুন মুসলিম হাঃ নং ৬৯১, সহীহ আবূ দাউদ ১২০১, আহমাদ ১১৯০৪, সিলসিলা সহীহা হাঃ নং ১৬৩)
بَاب مَقَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ زَمَنَ الْفَتْحِ
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ح حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَقَمْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَشْرًا نَقْصُرُ الصَّلَاةَ.