পরিচ্ছেদঃ পিতৃপুরুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সম্পর্কে হুশিয়ারী, কেননা এই ধরণের কাজ এক ধরণের কুফরী
৪১৩. আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমার বিন খাত্তাব রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর জীবনের শেষ হজ্জের সময় আব্দুর রহমান বিন আওফ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মিনায় তাঁর বাসা থেকে ফিরে আসেন এবং বলেন, “ওমুক ব্যক্তি বলেছেন যে, যদি উমার মারা যায়, তাহলে আমি ওমুকের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবো।” তখন উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন: “আমি সন্ধায় মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে এদের সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করবো, যারা মুসলিমদের (খিলাফতের) বিষয়টি ছিনিয়ে নিতে চায়।”
তখন আব্দুর রহমান রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন, “আমি বললাম: হে আমিরুল মু‘মিনুন, এমনটি করবেন না। কেননা সময়টি হজ্জের মৌসুম, এই সময় উচ্ছৃংখল, নিম্নশ্রেণির অনেক সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়। আপনি যখন মানুষের মাঝে (ভাষনের জন্য) দাঁড়াবেন, এই লোকগুলোই আপনার মাজলিসে বেশি থাকবে। এরা আপনার বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যাবে, তারা আপনার কথা যথাস্থানে ব্যবহার করবে না। মদীনায় যাওয়া পর্যন্ত আপনি বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ মদীনা হলো হিজরতের জায়গা, এখানে আপনি খাস করে উলামা ও সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে ইচ্ছামত কথা বলতে পারবেন, তারা আপনার কথা বুঝবে, সংরক্ষন করবে এবং সেটাকে তারা যথাস্থানে প্রয়োগ করবে।” উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন: “আল্লাহ চাহে তো যদি আমি মদীনায় পৌঁছি তবে সর্বপ্রথম আমি এই বিষয়েই আলোচনা করবো।” অতঃপর যিল হজ্জ মাসের শেষের দিকে তিনি মদীনায় পৌঁছেন, যখন শুক্রবার হলো, তখন আমি প্রকোট উত্তাপের মাঝে তাড়াতাড়ি মসজিদে গেলাম, সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম যে, সা‘ঈদ বিন যাইদ আমার আগেই এসেছেন। এবং তিনি মিম্বারের ডান পাশের দিকে বসেছেন। আমি গিয়ে তার পাশে বসলাম, আমার হাঁটুর সাথে তাঁর হাটু লাগছিল। একটু পরেই উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু আসেন। তখন আমি সা‘ঈদ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে বললাম, “আজ তিনি মিম্বারে এমন কথা বলবেন, যা খলীফা নিযুক্ত হওয়ার পর কখনই বলেননি।” তখন সা‘ঈদ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন, “তিনি কী কথা বলবেন?”
এসময় উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মিম্বারে বসেন, আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা ও গুণকীর্তন করেন। তারপর বলেন: “অতঃপর, আজ আমি আপনাদের সামনে একটি কথা বলবো, যা বলা আমার ভাগ্যে নির্ধারিত ছিল। আমি ঠিক জানি না, হতে পারে এটি আমার মৃত্যুর পুর্বক্ষণ। কাজেই যে ব্যক্তি তা অনুধাবন করতে পারবে, এবং সংরক্ষণ করতে পারবে, সে যেন তা অন্যের কাছে বর্ণনা করে, তার বাহন তাকে যে পর্যন্ত নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তা অনুধাবন করতে পারবে না, তবে কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য জায়েয নেই আমার নামে মিথ্যা কথা বলা। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তিনি তাঁর উপর যা কিছু অবতীর্ণ করেছেন, তার মধ্যে রজমের আয়াত ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা পাঠ করেছেন, নিজে রজম বাস্তবায়ন করেছেন এবং তাঁর পরে আমরাও রজম বাস্তবায়ন করেছি। আমার আশংকা হয় যে, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর মানুষ হয়তো বলবে, “আমরা তো আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না।” ফলে তারা আল্লাহর নাযিলকৃত একটি ফরয বিধান পরিত্যাগ করে পথভ্রষ্ট হবে।
(বিবাহিত) নারী-পুরষের উপর রজম সত্য, যখন প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হবে অথবা কোন নারী স্বামী ছাড়া গর্ভবতী হবে অথবা কেউ ব্যভিচারের কথা স্বীকার করবে। আল্লাহর কসম, যদি মানুষ এরকম না বলতো যে, উমার আল্লাহর কিতাবে বৃদ্ধি করেছেন, তবে আমি তা আল্লাহর কিতাবে লিখে দিতাম। আপনারা শুনে রাখুন, আমরা রজমের আয়াত পাঠ করেছি, তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। কারণ তোমাদের জন্য কুফরী হলো তোমাদের পিতৃপুরুষদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা আমার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করবে না, যেভাবে খ্রীষ্টানরা মরিয়ম তনয় ‘ঈসা আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেছিল। নিশ্চয়ই আমি একজন বান্দা। কাজেই তোমরা বলবে, “আল্লাহর বান্দা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আপনারা জেনে রাখুন যে, ওমুক ব্যক্তি বলেছে যে, “যদি উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু মারা যান, তাহলে আমি ওমুকের কাছে বাইয়াত গ্রহণ করবো।” যে ব্যক্তি মুসলিমদের পরামর্শ ব্যতীত কোন ব্যক্তির বাইয়াত গ্রহণ করবে, তাহলে যে বাইয়াত গ্রহণ করবে এবং যার জন্য বাইয়াত গ্রহণ করবে, উভয়ের বাইয়াতই বাতিল। কাজেই কেউ যেন এর মাধ্যমে ধোঁকা না খেয়ে বলে যে, আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর বাইয়াত গ্রহণ আকস্মিক ছিল। জেনে রাখুন যে, তাঁর বাইয়াত আকস্মিক ছিল ঠিকই কিন্তু মহান আল্লাহ এর অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করেছেন। আর আপনাদের মাঝেও বর্তমানে এমন মানুষ নেই যার কাছে আবু বকরের মত মানুষ তাদের গর্দান সমর্পন করবে। জেনে রাখুন, যেদিন মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মৃত্যু দেন, সেদিনও তিনি আমাদের মাঝে সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিলেন।
মুহাজিরগণ খলিফার জন্য আবু বকরের কাছে জমায়েত হন, আর আমাদের ভাই আনসারগণ আমাদের থেকে আলাদা হয়ে বানু সা‘ঈদা গোত্রের ছাদের নিচে অবস্থান নেন। তখন আমি আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুকে বললাম, “আপনি আমাদেরকে আমাদের আনসার ভাইদের কাছে নিয়ে চলুন, আমরা দেখবো যে, তাঁরা কী করছে।” ফলে আমরা তাঁদের উদ্দেশ্যে বের হলাম। অতঃপর (পথিমধ্যে) আমাদের সাথে তাঁদের দুইজন সৎ ব্যক্তির সাক্ষাৎ হলো। তাঁরা বললেন: “আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?” আমি বললাম: “আমাদের আনসার ভাইদের কাছে।” তাঁরা বলেন: “আপনারা যদি আনসারদের কাছে না যান এটা আপনাদের জন্য কোন দূষনীয় হবে না। হে মুহাজিরগণ, আপনারা আপনাদের কাজ সম্পাদন করুন।” আমি বললাম: “আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমরা তাঁদের কাছে না যাওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবো না।” অতঃপর আমরা তাঁদের কাছে গেলাম। আমরা দেখতে পেলাম যে, তাঁরা বানু সা‘ঈদা গোত্রের ছাদের নিচে সমবেত হয়েছেন। এসময় আমরা দেখতে পেলাম যে, তাঁদের মাঝে এক ব্যক্তি চাদরাবৃত। আমি বললাম: “ইনি কে?” তাঁরা জবাব দিলেন: “সা‘দ বিন ‘উবাদা।” আমি বললাম: “তাঁর কী হয়েছে?” তাঁরা বললেন: “তিনি পীড়িত।” এরপর যখন আমরা বসলাম, তখন তাঁদের মাঝে একজন বক্তব্য দেওয়ার জন্য দন্ডায়মান হলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করলেন। তারপর বললেন: “অতঃপর, আমরা আনসারুল্লাহ (আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যকারী), ইসলামের সেনাবাহিনী। হে মুসলিমগণ, আমাদের কাছে কিছু লোক এসেছেন, তাঁরা খিলাফত নিয়ে নিতে চাচ্ছে আমাদেরকে মূল থেকে বের করে দিতে চাচ্ছে।
উমার রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু বলেন, যখন তিনি বক্তব্য শেষ করলেন, তখন আমি কথা বলতে উদ্যত হলাম। আমি সুন্দর চমকপ্রদ কিছু কথা প্রস্তুত করেছিলাম আবু বকরের উপস্থিতিতে বলার জন্য, আমি তা বলে এই ব্যাপারে তাঁদের রাগ-ক্ষোভ কিছুটা কমাতে চেয়েছিলাম। তিনি আমার চেয়ে বেশি ধৈর্যশীল ও গুরুগম্ভীর ছিলেন। তিনি আমার হাত ধরলেন এবং বললেন: “আপনি বসুন।” আমি তাঁকে রাগাতে অপছন্দ করলাম। ফলে তিনি কথা বললেন। আল্লাহর কসম, আমি বলার জন্য যেসব কথা প্রস্তুত করেছিলাম তার একটি কথাও তিনি ছাড়েননি বরং সব কথাই তিনি আমার মতো অথবা তার চেয়েও উত্তমভাবে উপস্থিত বাকপটুতায় বলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বা‘দ, আপনারা যে কল্যানের কথা বললেন, আপনারা সেটার উপযুক্ত। তবে নেতৃত্বের ব্যাপারটি আরবরা কুরাইশদের এই গোত্র ছাড়া অন্য কারো জন্য হওয়ার সাথে পরিচিত নয়। তাঁরা আরবদের মাঝে বাসস্থান ও বংশীয় দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ। আমি আপনাদের জন্য এই দুই ব্যক্তির যে কোন একজনকে মনোনিত করছি। আপনারা আপনাদের ইচ্ছামত তাদের যে কোন একজনের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করুন।” এই বলে তিনি আমার ও আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুমা এর হাত ধরেন। এসময় আবু উবাইদাহ আমাদের মাঝে বসে ছিলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে যা কিছু বলেছেন এই কথাটা ছাড়া আর কোন কিছুই আমার খারাপ লাগেনি। আল্লাহর কসম, পাপ হবে না- এমন কোন বিষয়ে আমাকে আগ বাড়িয়ে দিয়ে অতঃপর আমার শিরোচ্ছেদ করা হলে- সেটা আমার কাছে অধিকতর বেশি পছন্দনীয় এমন কওমের আমীর হওয়ার চেয়ে, যাদের মাঝে আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিদ্যমান আছেন! ”
তখন আনসারী এক যুবক বললেন: “আমি এমন এক পিলার যাতে খোশ-পাঁচড়াযুক্ত উট তাদের অসুখ নিরাময়ের জন্য এতে গা ঘষে। (অর্থাৎ আমি উচ্চবংশজাত) আমি খেজুরবিশিষ্ট্য এমন গাছ, যা বিচ্যুত হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য সহযোগী রয়েছে। অর্থাৎ সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রতিরোধ করার জন্য আমার বংশ-বুনিয়াদ রয়েছে। (আমার মত হলো) আমাদের মধ্য থেকে একজন আমীর হোক আর আপনাদের মধ্য থেকে একজন আমীর হোক।” এরপর হৈচৈ বেড়ে যায়। আমি আরো বেশি মতানৈক্য হওয়ার আশংকা করলাম। ফলে আমি বললাম: “হে আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু, আপনার হাত বাড়িয়ে দিন।” তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করলাম। এরপর মুহাজির ও আনসারগণও তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আমরা সা‘দ বিন ‘উবাদাহর উপর বিজয় লাভ করলাম।” তখন তাঁদের মাঝে এক ব্যক্তি বললেন যে, আপনারা তো সা‘দকে মেরে ফেললেন।” আমি বললাম: “আল্লাহ সা‘দকে মেরে ফেলুন।
কাজেই সে সময় আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহু কাছে বাইয়াত গ্রহণ করার চেয়ে উত্তম কিছু ছিল না। আমরা আশংকা করেছিলাম যে, যদি আমরা লোকজনকে ছেড়ে দেই, তাঁরা আমাদের পরে অন্য কারো কাছে বাইয়াত গ্রহণ করবে। তখন হয়তো আমাদের পছন্দ না সত্ত্বেও তার হাতে আমাদের বাইয়াত নিতে হবে নতুবা তাদের বিরোধিতা করতে হবে, তখন মতবিরোধ ও দ্বন্দ শুরু হবে। এজন্য আমরা সবাই আবু বকর রাদ্বিয়া্ল্লাহু আনহুর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করি এবং তাঁর প্রতি আমরা সন্তুষ্ট হয়ে যাই।”[1]
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বক্তব্য “আল্লাহ সা‘দকে মেরে ফেলুন” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত দান করুন।”
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (ইরওয়াউল গালীল: ২৩৩৮)
ذِكْرُ الزَّجْرِ عَنْ أَنْ يَرْغَبَ الْمَرْءُ عَنْ آبَائِهِ إِذِ اسْتِعْمَالُ ذَلِكَ ضَرْبٌ مِنَ الْكُفْرِ
أَخْبَرَنَا أَبُو يَعْلَى قَالَ حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ قَالَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ قَالَ سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ يُحَدِّثُ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ انْقَلَبَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ إِلَى مَنْزِلِهِ بِمِنًى فِي آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فقَالَ إِنَّ فُلَانًا يَقُولُ لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ بَايَعْتُ فُلَانًا. قَالَ عُمَرُ إِنِّي قَائِمٌ الْعَشِيَّةَ فِي النَّاسِ وَأُحَذِّرُهُمْ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يُرِيدُونَ أَنْ يَغْصِبُوهُمْ أَمْرَهُمْ. قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَقُلْتُ لَا تَفْعَلْ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَإِنَّ الْمَوْسِمَ يَجْمَعُ رَعَاعَ النَّاسِ وَغَوْغَاءَهُمْ وَإِنَّ أُولَئِكَ الَّذِينَ يَغْلِبُونَ عَلَى مَجْلِسِكَ إِذَا أَقَمْتَ فِي النَّاسِ فَيَطِيرُوا بِمَقَالَتِكَ وَلَا يَضَعُوهَا مَوَاضِعَهَا أَمْهِلْ حَتَّى تَقْدُمَ الْمَدِينَةَ فَإِنَّهَا دَارُ الْهِجْرَةِ فَتَخْلُصَ بِعُلَمَاءِ النَّاسِ وَأَشْرَافِهِمْ وَتَقُولُ مَا قُلْتَ مُتَمَكِّنًا وَيَعُونَ مَقَالَتَكَ وَيَضَعُونَهَا مَوَاضِعَهَا.
فقَالَ عُمَرُ لَئِنْ قَدِمْتَ الْمَدِينَةَ سَالِمًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَأَ تَكَلَّمَنَّ فِي أَوَّلِ مَقَامٍ أَقُومُهُ. فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فِي عَقِبِ ذِي الْحِجَّةِ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ عَجَّلْتُ الرَّوَاحَ فِي شِدَّةِ الْحَرِّ فَوَجَدْتُ سَعِيدَ بْنَ زَيْدٍ قَدْ سَبَقَنِي فَجَلَسَ إِلَى رُكْنِ الْمِنْبَرِ الْأَيْمَنِ وَجَلَسْتُ إِلَى جَنْبِهِ تَمَسُّ رُكْبَتِي رُكْبَتَهُ فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ طَلَعَ عُمَرُ فَقُلْتُ لِسَعِيدٍ أَمَا إِنَّهُ سَيَقُولُ الْيَوْمَ عَلَى هَذَا الْمِنْبَرِ مَقَالَةً لَمْ يَقُلْهَا مُنْذُ اسْتُخْلِفَ قَالَ وَمَا عَسَى أَنْ يَقُولَ فَجَلَسَ عُمَرُ عَلَى الْمِنْبَرِ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي قَائِلٌ لَكُمْ مَقَالَةً قُدِّرَ لِي أَنْ أَقُولَهَا لَا أَدْرِي لَعَلَّهَا بَيْنَ يَدَيْ أَجْلِي فَمَنْ عَقَلَهَا وَوَعَاهَا فَلْيُحَدِّثْ بِهَا حَيْثُ انْتَهَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْهَا فَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَكْذِبَ عَلَيَّ إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ فَكَانَ فِيمَا أَنْزَلَ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ فَقَرَأَ بِهَا وَرَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ وَأَخَافُ إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ مَا نَجْدُ آيَةَ الرَّجْمِ في كتاب الله فيضلوا بترك فريضة أنزله اللَّهُ وَالرَّجْمُ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ أَوْ كَانَ حَمْلٌ أَوِ اعْتِرَافٌ وَايْمُ اللَّهِ لَوْلَا أَنْ يَقُولَ النَّاسُ زَادَ عُمَرُ فِي كِتَابِ اللَّهِ لَكَتَبْتُهَا. أَلَا وَإِنَّا كُنَّا نَقْرَأُ لَا تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ فَإِنَّ كُفْرًا بِكُمْ أَنْ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ "لَا تُطْرُونِي كَمَا أَطْرَتِ النَّصَارَى عِيسَى بْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدٌ فَقُولُوا عَبْدُ اللَّهِ ورسوله."
أَلَا وَإِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ فُلَانًا قَالَ لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ بَايَعْتُ فُلَانًا فَمَنْ بَايَعَ امْرَأً مِنْ غَيْرِ مَشُورَةٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَإِنَّهُ لَا بَيْعَةَ لَهُ وَلَا لِلَّذِي بَايَعَهُ فَلَا يَغْتَرَّنَّ أَحَدٌ فَيَقُولُ إِنَّ بَيْعَةَ أَبِي بَكْرٍ كَانَتْ فَلْتَةً أَلَا وَإِنَّهَا كَانَتْ فَلْتَةً إِلَّا أَنَّ اللَّهَ وَقَى شَرَّهَا وَلَيْسَ مِنْكُمُ الْيَوْمَ مَنْ تُقْطَعُ إِلَيْهِ الْأَعْنَاقُ مِثْلَ أَبِي بَكْرٍ أَلَا وَإِنَّهُ كَانَ مِنْ خَيْرِنَا يَوْمَ تَوَفَّى اللَّهُ رَسُولَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
إِنَّ الْمُهَاجِرِينَ اجْتَمَعُوا إِلَى أَبِي بَكْرٍ وَتَخَلَّفَ عَنَّا الْأَنْصَارُ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ فَقُلْتُ لِأَبِي بَكْرٍ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا مِنَ الْأَنْصَارِ نَنْظُرُ مَا صَنَعُوا فَخَرَجْنَا نَؤُمُّهُمْ فَلَقِيَنَا رَجُلَانِ صَالِحَانِ مِنْهُمْ فَقَالَا أَيْنَ تَذْهَبُونَ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ فَقُلْتُ نُرِيدُ إِخْوَانَنَا مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ فلا عليكم أن لا تأتوهم اقضوا أَمَرَكُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَا نَرْجِعُ حَتَّى نَأْتِيَهُمْ فَجِئْنَاهُمْ فَإِذَا هُمْ مُجْتَمِعُونَ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ وَإِذَا رَجُلٌ مُزَّمِّلٌ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا فَقَالُوا سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ قُلْتُ مَا لَهُ قَالُوا وَجِعٌ فَلَمَّا جَلَسْنَا قَامَ خَطِيبُهُمْ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَنَحْنُ أَنْصَارُ اللَّهِ وَكَتِيبَةُ الْإِسْلَامِ وَقَدْ دَفَّتْ إِلَيْنَا يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ مِنْكُمْ دَافَّةٌ وَإِذَا هُمْ قَدْ أَرَادُوا أَنْ يَخْتَصُّوا بِالْأَمْرِ وَيُخْرِجُونَا مِنْ أَصْلِنَا.
قَالَ عُمَرُ فَلَمَّا سَكَتَ أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ وَقَدْ كُنْتُ زَوَّرْتُ مَقَالَةً قَدْ أَعْجَبَتْنِي أُرِيدُ أَنْ أَقُولَهَا بَيْنَ يَدَيْ أَبِي بَكْرٍ وَكُنْتُ أُدَارِي مِنْهُ بَعْضَ الْحَدِّ وَكَانَ أَحْلَمَ مِنِّي وَأَوْقَرَ فَأَخَذَ بِيَدِي وَقَالَ اجْلِسْ فَكَرِهْتُ أَنْ أُغْضِبَهُ فَتَكَلَّمَ فَوَاللَّهِ مَا تَرَكَ مِمَّا زَوَّرْتُهُ فِي مَقَالَتِي إِلَّا قَالَ مِثْلَهُ فِي بَدِيهَتِهِ أو أفضل، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَمَا ذَكَرْتُمْ مِنْ خَيْرٍ فَأَنْتُمْ أَهْلُهُ وَلَنْ يَعْرِفَ الْعَرَبُ هَذَا الْأَمْرَ إِلَّا لِهَذَا الْحَيِّ مِنْ قُرَيْشٍ هُمْ أَوْسَطُ الْعَرَبِ دَارًا وَنَسَبَا وَقَدْ رَضِيتُ لَكُمْ أَحَدَ هَذَيْنِ الرَّجُلَيْنِ فَبَايِعُوا أَيَّهُمَا شِئْتُمْ وَأَخَذَ بِيَدِي وَيَدِ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ وَهُوَ جَالِسٌ بَيْنَنَا فَلَمْ أَكْرَهُ شَيْئًا مِنْ مَقَالَتِهِ غَيْرَهَا كَانَ وَاللَّهِ لِأَنْ أُقَدَّمَ فَتُضْرَبَ عُنُقِي فِي أَمْرٍ لَا يقربني ذلك إلى إثم أحب إلي من أَنْ أُؤَمَّرَ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ فقَالَ فَتَى الْأَنْصَارِ أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ وَعُذَيْقُهَا الْمُرَجَّبُ مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ فَكَثُرَ اللَّغَطُ وَخَشِيتُ الِاخْتِلَافَ فَقُلْتُ ابْسُطْ يَدَكَ يَا أَبَا بَكْرٍ فَبَسَطَهَا فَبَايَعْتُهُ وَبَايَعَهُ الْمُهَاجِرُونَ وَالْأَنْصَارُ وَنَزَوْنَا عَلَى سَعْدٍ فقَالَ قَائِلٌ قَتَلْتُمْ سَعْدًا فَقُلْتُ قَتَلَ اللَّهُ سَعْدًا فَلَمْ نجد شيئا هُوَ أَفْضَلَ مِنْ مُبَايَعَةِ أَبِي بَكْرٍ خَشِيتُ إِنْ فَارَقْنَا الْقَوْمَ أَنْ يُحْدِثُوا بَعْدَنَا بَيْعَةً فَإِمَّا أَنْ نُبَايِعَهُمْ عَلَى مَا لَا نَرْضَى وَإِمَّا أَنْ نُخَالِفَهُمْ فَيَكُونُ فَسَادًا وَاخْتِلَافًا فَبَايَعْنَا أبا بكر جميعا ورضينا به."
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ قَوْلُ عُمَرَ قَتَلَ اللَّهُ سعدا يريد به في سبيل الله.
الراوي : عَبْد اللَّهِ بْن عَبَّاسٍ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 413 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.