পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজ করার ইচ্ছা করে, সে ব্যক্তি সে কাজ বাস্তবায়ন না করলেও মহান আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেন আর তা বাস্তবায়ন করলে দশগুণ সাওয়াব লিখে দেন
৩৮৪. আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: “যখন আমার বান্দা কোন ভালো কাজ করার ইচ্ছা করে, যদি সে কাজটি বাস্তবায়ন না-ও করে তবুও আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেই, আর যদি আমল করে তবে তার জন্য দশ গুণ সাওয়াব লিখে দেই। আর যখন আমার বান্দা কোন মন্দ কাজ করার ইচ্ছা করে, কিন্তু বাস্তবায়ন না করে তখন আমি তার জন্য গোনাহ লিখি না, যদি সে বাস্তবায়ন করে, তবে তার জন্য একটি পাপ লিখি।”[1]
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: قَوْلُهُ جَلَّ وَعَلَا: (إِذَا هَمَّ عَبْدِي) أَرَادَ بِهِ إِذَا عَزَمَ فَسَمَّى الْعَزْمَ هَمًّا لِأَنَّ الْعَزْمَ نِهَايَةُ الْهَمِّ وَالْعَرَبُ فِي لُغَتِهَا تُطْلِقُ اسْمَ الْبَدَاءَةِ عَلَى النِّهَايَةِ وَاسْمَ النِّهَايَةِ عَلَى الْبَدَاءَةِ لِأَنَّ الْهَمَّ لَا يُكتب عَلَى الْمَرْءِ لِأَنَّهُ خَاطِرٌ لَا حُكْمَ لَهُ. وَيُحْتَمَلُ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ يَكْتُبُ لِمَنْ هَمَّ بِالْحَسَنَةِ الْحَسَنَةَ وَإِنْ لَمْ يَعْزِمْ عَلَيْهِ وَلَا عَمِلَهُ لِفَضْلِ الْإِسْلَامِ فَتَوْفِيقُ اللَّهِ الْعَبْدَ لِلْإِسْلَامِ فَضْلٌ تفضَّل بِهِ عَلَيْهِ وكِتْبَتُهُ مَا هَمَّ بِهِ مِنَ الْحَسَنَاتِ وَلَمَّا يَعْمَلْهَا فَضْلٌ وَكِتْبَتُهُ مَا هَمَّ بِهِ مِنَ السَّيِّئَاتِ وَلَمَّا يَعْمَلْهَا لَوْ كَتَبَهَا لَكَانَ عَدْلًا وَفَضْلُهُ قَدْ سَبَقَ عَدْلَهُ كَمَا أَنَّ رَحْمَتَهُ سَبَقَتْ غَضَبَهُ فَمِنْ فَضْلِهِ وَرَحْمَتِهِ مَا لَمْ يُكْتَبْ عَلَى صِبْيَانِ الْمُسْلِمِينَ مَا يَعْمَلُونَ مِنْ سَيِّئَةٍ قَبْلَ الْبُلُوغِ وَكَتَبَ لَهُمْ مَا يَعْمَلُونَهُ مِنْ حَسَنَةٍ كَذَلِكَ هَذَا وَلَا فَرْقَ.
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, আল্লাহর বাণী, “যখন আমার বান্দা ইচ্ছা করে” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যখন সে সংকল্প করে। কাজেই এখানে الْعَزْم (সংকল্প) শব্দকে هَمّ (ইচ্ছা) বলা হয়েছে। কেননা الْعَزْم হলো ইচ্ছার চুড়ান্ত পর্যায়। আরবরা প্রথম পর্যায়ের শব্দের ক্ষেত্রে চুড়ান্ত পর্যায়ের শব্দ এবং চুড়ান্ত পর্যায়ের শব্দের ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ের শব্দ ব্যবহার করে থাকে। কারণ هَمّ (ইচ্ছা) এর জন্য মানুষের কিছু লেখা হয় না। কেননা এটি মনের কল্পনা; যার উপর শরীয়তের কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না।
তবে এটাও সম্ভাবনা আছে যে, যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজের هَمّ (ইচ্ছা) করবে, মহান আল্লাহ ইসলামের ফযিলতে তাকে সাওয়াব দান করবেন, যদিও সে ব্যক্তি দৃঢ় সংকল্প না করে এবং আমল না করে। কাজেই বান্দাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান তাঁর অনুগ্রহের অন্তর্ভূক্ত, যা তিনি তার উপর অনুগ্রহ করেছেন। অনুরুপভাবে যা মানুষ ইচ্ছা করেছে কিন্তু আমল করেনি, তাকে এজন্য সাওয়াব দান করা তাঁর অনুগ্রহের অন্তর্ভূক্ত। মানুষ যা মন্দ কাজের ইচ্ছা করে কিন্তু বাস্তবায়ন করে না, এক্ষেত্রে যদি তিনি তার জন্য পাপ লিখে দিতেন, সেটাও ন্যায় সঙ্গত হতো। কিন্তু তাঁর অনুগ্রহ ন্যায় সঙ্গত ফায়সালার উপর অগ্রগামী হয়েছে যেমনভাবে তাঁর দয়া তাঁর ক্রোধের উপর অগ্রগামী। তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের অন্তর্ভূক্ত হলো মুসলিম শিশু বালেগ হওয়ার আগে যে মন্দ কাজ করে, সেজন্য কোন গোনাহ লেখা হয় না কিন্তু কোন ভাল কাজ করলে তার সাওয়াব লেখা হয়। এখানেও ব্যাপারটি এমনই; কোন পার্থক্য নেই।”
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আর রওদ্বুন নাদ্বীর: ৯৫৫।)
ذِكْرُ تَفَضُّلِ اللَّهِ جَلَّ وَعَلَا عَلَى مَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ بِكَتْبِهَا لَهُ وَإِنْ لَمْ يَعْمَلْهَا وَبِكَتْبِهِ عَشْرَةَ أَمْثَالِهَا إِذَا عَمِلَهَا
أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ الْحُبَابِ قَالَ: حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ قال: حدثنا عبد العزيز بن محمد عن الْعَلَاءِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: (قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: إِذَا هَمَّ عَبْدِي بِالْحَسَنَةِ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبْتُهَا لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا كَتَبْتُهَا لَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ وَإِنْ هَمَّ عَبْدِي بِسَيِّئَةٍ وَلَمْ يَعْمَلْهَا لَمْ أَكْتُبْهَا عَلَيْهِ فإن عملها كتبتها واحدة.)
الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 384 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.