পরিচ্ছেদঃ ৩৬৩. কুরআন সাত হরফে নাযিল হওয়া সম্পর্কে।
১৪৭৫. আল-কানবী (রহঃ) ..... আব্দুর রহমান ইবন আব্দুল ক্বারী (রহঃ) বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে শুনেছিঃ আমি হিশাম ইবন হাকীম (রাঃ)- কে সূরা আল-ফুরকান আমার পাঠের নিয়মের ব্যতিক্রমে পাঠ করতে শুনি। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম স্বয়ং আমাকে তা শিক্ষা দেন। আমি তার উপর ঝাপিয়ে পড়তে উদ্যত হই, কিন্তু তাঁকে পাঠ করার সুযোগ দিলাম। তিনি আবসর হলে আমি তার গলায় আমার চাদর পেচিয়ে তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির করি এবং বলিঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এই ব্যক্তিকে সূরা ফুরকান অন্যরূপে তিলাওয়াত করতে শুনেছি, যেরূপে আপনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন তার বিপরীত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেনঃ তুমি পাঠ কর। তখন সে ব্যক্তি ঐরূপে পাঠ করে, যেরূপে আমি তাকে পাঠ করতে শুনেছিলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তা এরূপই অবতীর্ণ হয়েছে। পরে তিনি আমাকে বলেনঃ এবার তুমি পাঠ কর। তখন আমি তা তিলাওয়াত করি। আমার পাঠের পর তিনি বলেনঃ সূরাটি এভাবে নাযিল হয়েছে। অতপর তিনি বলেনঃ কুরআন সাত কিরআতে অবতীর্ণ হয়েছে। অতএব যেভাবে পড়তে সহজ হয় তোমার পাঠ কর। ( বুখারী, মুসলিম, তিরমিয, নাসাঈ )।
باب أُنْزِلَ الْقُرْآنُ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ الْقَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ سَمِعْتُ هِشَامَ بْنَ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، يَقْرَأُ سُورَةَ الْفُرْقَانِ عَلَى غَيْرِ مَا أَقْرَؤُهَا وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَقْرَأَنِيهَا فَكِدْتُ أَنْ أَعْجَلَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَمْهَلْتُهُ حَتَّى انْصَرَفَ ثُمَّ لَبَّبْتُهُ بِرِدَائِهِ فَجِئْتُ بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي سَمِعْتُ هَذَا يَقْرَأُ سُورَةَ الْفُرْقَانِ عَلَى غَيْرِ مَا أَقْرَأْتَنِيهَا . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اقْرَأْ " . فَقَرَأَ الْقِرَاءَةَ الَّتِي سَمِعْتُهُ يَقْرَأُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَكَذَا أُنْزِلَتْ " . ثُمَّ قَالَ لِي " اقْرَأْ " . فَقَرَأْتُ فَقَالَ " هَكَذَا أُنْزِلَتْ " . ثُمَّ قَالَ " إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ أُنْزِلَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ " .
'Umar b. al-Khattab said:
I heard Hisham b. Hakim (b. Hizam) reciting Surah al-Furqan in a different manner from my way of reciting, and the Messenger of Allah (ﷺ) had taught me to recite it. I nearly spoke sharply to him, but I delayed till he had finished. Then I caught his cloak at the neck, and I brought him to the Messenger of Allah (ﷺ). I said: Messenger of Allah, I heard this man reciting Surah al-Furqan in a manner different from that in which you taught me to recite it. The Messenger of Allah (ﷺ) the told him to recite it. He then recited in the manner I heard him recite. The Messenger of Allah (ﷺ) said: Thus was it sent down. He then said to me: Recite, I recited (it). He then said: Thus was it sent down. He said: The Qur'an was sent down in seven modes of reading, so recite according to what comes most easily.
পরিচ্ছেদঃ ৩৬৩. কুরআন সাত হরফে নাযিল হওয়া সম্পর্কে।
১৪৭৬. মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহিয়া (রহঃ) .... মা’মার (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, কুরআন যে সাত কিরাআতে অবতীর্ণ হয়েছে, তা কেবলমাত্র আক্ষরিক পার্থক্য, এতে হালাল-হারাম সম্পর্কে কোন বিভেদ নাই।
باب أُنْزِلَ الْقُرْآنُ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، قَالَ قَالَ الزُّهْرِيُّ إِنَّمَا هَذِهِ الأَحْرُفُ فِي الأَمْرِ الْوَاحِدِ لَيْسَ تَخْتَلِفُ فِي حَلاَلٍ وَلاَ حَرَامٍ .
Al-Zuhri said:
These modes of reading aimed at the same point, not different in respect of lawful and unlawful.
পরিচ্ছেদঃ ৩৬৩. কুরআন সাত হরফে নাযিল হওয়া সম্পর্কে।
১৪৭৭. আবুল ওয়ালীদ আত-তায়ালিস (রহঃ) ..... উবাই ইবন কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, হে উবাই, আমাকে কুরআন শিক্ষা দেওয়া হয়েছে এবং, তুমি কি তা এক হরফে পড়তে চাও, না দুই হরফে? ঐ সময় আমার সঙ্গী ফেরেশতা আমাকে বলেন, আপনি বলুন, আমি দুই হরফে পড়তে চাই। তখন আমি বলিঃ দুই হরফের দ্বারা। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ তুমি কি দুই হরফে পড়তে চাও, না তিন হরফে? তখন আমার সংগী ফেরেশতা (জিবরীল) আমাকে বলেন, আপনি বলুনঃ তিনি হরফের দ্বারা। তখন আমি বলিঃ তিন হরফের রীতিতে। এরূপে সাত কিরাআত (বা রীতি) পর্যন্ত পৌছায়।
অতঃপর তিনি বলেন, এই হরফগুলো বা কিরআত দ্বারা কুরাআন পরিপূর্ণভাবে বোধগম্য হওয়ার জন্য যথেষ্ট। যদি তুমি বলঃ (سَمِيعًا عَلِيمًا عَزِيزًا حَكِيمًا) তবে তুমি ঠিকই বলবে। (এভাবে যদি কেউ বলেঃسَمِيعًا عَلِيمًا او عَلِيمًا سَمِيعًا তবে তাও ঠিক) যতক্ষণ না আযাবের আয়াত রহমতের সাথে অথবা রহমতের আয়াত আযাবের সাথে সম্মিলিত হয়। (অর্থাৎ শব্দের বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও যেন অর্থের মধ্যে কোনরূপ ব্যতিক্রম না হয়)।
باب أُنْزِلَ الْقُرْآنُ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمُرَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ الْخُزَاعِيِّ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " يَا أُبَىُّ إِنِّي أُقْرِئْتُ الْقُرْآنَ فَقِيلَ لِي عَلَى حَرْفٍ أَوْ حَرْفَيْنِ فَقَالَ الْمَلَكُ الَّذِي مَعِي قُلْ عَلَى حَرْفَيْنِ . قُلْتُ عَلَى حَرْفَيْنِ . فَقِيلَ لِي عَلَى حَرْفَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةٍ . فَقَالَ الْمَلَكُ الَّذِي مَعِي قُلْ عَلَى ثَلاَثَةٍ . قُلْتُ عَلَى ثَلاَثَةٍ . حَتَّى بَلَغَ سَبْعَةَ أَحْرُفٍ ثُمَّ قَالَ لَيْسَ مِنْهَا إِلاَّ شَافٍ كَافٍ إِنْ قُلْتَ سَمِيعًا عَلِيمًا عَزِيزًا حَكِيمًا مَا لَمْ تَخْتِمْ آيَةَ عَذَابٍ بِرَحْمَةٍ أَوْ آيَةَ رَحْمَةٍ بِعَذَابٍ " .
Ubayy b. Ka'b reported:
The Prophet (ﷺ) said: "Ubayy, I was asked to recite the Qur'an and I was asked: 'In one mode or two modes?' The angel that accompanied me said: 'Say, in two modes', I said: 'In two modes', I was asked again: 'In two or three modes'. The matter reached up to seven modes. He then said: 'Each mode is sufficiently health-giving, whether you utter 'all-hearing and all-knowing' or instead 'all-powerful and all-wise'. This is valid until you finish the verse indicating punishment on mercy and finish the verse indicating mercy on punishment."
পরিচ্ছেদঃ ৩৬৩. কুরআন সাত হরফে নাযিল হওয়া সম্পর্কে।
১৪৭৮. মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না (রহঃ) ..... উবাই ইবন কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম গিফার গোত্রের কূপের নিকট আবস্থনকালে তার নিকট জিবরীল (আঃ) আগমন করে বলেনঃ আল্লাহ রব্বুল আলামীন নির্দেশ প্রদান করেছেন যে, আপনি আপনার উম্মতের সকলকে যেন একই কিরাতের অনুসারী বানান। তখন তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহ্র নিকট এইজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি যে, এ ব্যাপারে আমার উম্মতের এই ক্ষমতা নাই। জিবরীল (আঃ) দ্বিতীয় বার আগমন করে পূর্বের ন্যায় বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একইরূপ বলেন। এরূপে সাত কিরাআত পর্যন্ত পৌছায়। অতঃপর জিবরীল (আঃ) বলেনঃ আল্লাহ তাআলা আপনাকে আপনার উম্মতদেরকে সাত কিরাতের কুরআন পড়বার অনুমতি প্রদান করেছেন। আপনার উম্মতের এই সাত কিরাআতের যে কোন কিরাআতে কুরআন পাঠ করবে, তারা ঠিক করবে।
باب أُنْزِلَ الْقُرْآنُ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ عِنْدَ أَضَاةِ بَنِي غِفَارٍ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَأْمُرُكَ أَنْ تُقْرِئَ أُمَّتَكَ عَلَى حَرْفٍ . قَالَ " أَسْأَلُ اللَّهَ مُعَافَاتَهُ وَمَغْفِرَتَهُ إِنَّ أُمَّتِي لاَ تُطِيقُ ذَلِكَ " . ثُمَّ أَتَاهُ ثَانِيَةً فَذَكَرَ نَحْوَ هَذَا حَتَّى بَلَغَ سَبْعَةَ أَحْرُفٍ قَالَ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكَ أَنْ تُقْرِئَ أُمَّتَكَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ فَأَيُّمَا حَرْفٍ قَرَءُوا عَلَيْهِ فَقَدْ أَصَابُوا .
Ubayy b. Ka'b said:
The Prophet (ﷺ) was present at the pool of Banu Ghifar, Gabriel came to him and said: "Allah has commanded you to make your community read (the Qur'an) in one harf. He (the Prophet) said: 'I beg Allah His pardon and forgiveness; my community has not strength to do so'. He then came for the second time and told him the same thing till he reached up to seven harfs. Finally, he said: 'Allah has commanded you to make your community read (the Qur'an) in seven harfs; in whichever mode they read, that will be correct.