পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِذْ قَالَ مُوسٰى لِفَتَاهُ لَا أَبْرَحُ حَتّٰـى أَبْلُغَ مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ أَوْ أَمْضِيَ حُقُباً إِلٰى قَوْلِهِ تَعَالٰى قَالَ لَهُ مُوسٰى هَلْ أَتَّبِعُكَ عَلَى أَنْ تُعَلِّمَنِ مِمَّا عُلِّمْتَ رُشْداً

অর্থাৎ, (স্মরণ কর,) যখন মূসা তার সঙ্গীকে বলেছিল, দুই সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে না পৌঁছে আমি থামব না অথবা আমি যুগ যুগ ধরে চলতে থাকব। মূসা তাকে বলল, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে, তা হতে আমাকে শিক্ষা দেবেন এই শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করব কি? (সূরা কাহফ ৬০-৬৬)

তিনি আরো বলেন,

وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُونَ وَجْهَهُ

অর্থাৎ, তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহবান করে। (সূরা কাহফ ২৮)


(৩৪০৩) আনাস (রাঃ) বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনাবসানের পর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) উমার (রাঃ) কে বললেন, ’চলুন, আমরা উম্মে আইমানের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই, যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে যেতেন।’ সুতরাং যখন তাঁরা উম্মে আইমানের কাছে পৌঁছলেন, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। অতঃপর তাঁরা তাঁকে বললেন, ’তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কি জানো না যে, আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য (দুনিয়া থেকে) অধিক উত্তম? তিনি উত্তর দিলেন, ’আমি এ জন্য কান্না করছি না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য আল্লাহর নিকট যা রয়েছে, তা অধিকতর উত্তম সে কথা আমি জানি না। কিন্তু আমি এজন্য কাঁদছি যে, আসমান হতে ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেল।’ উম্মে আইমান (তাঁর এ দুঃখজনক কথা দ্বারা) ঐ দু’জনকে কাঁদতে বাধ্য করলেন। ফলে তাঁরাও তাঁর সাথে কাঁদতে লাগলেন।

وَعَن أَنَسٍ قَالَ : قَالَ أَبُو بَكرٍ لِعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا بَعْدَ وَفَاةِ رَسُولِ اللهِ ﷺ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى أُمِّ أيْمَنَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا نَزُورُهَا كَمَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَزُورُهَا فَلَمَّا انْتَهَيَا إِلَيْهَا بَكَتْ فَقَالاَ لَهَا : مَا يُبْكِيكِ ؟ أمَا تَعْلَمِينَ أنَّ مَا عِنْدَ اللهِ خَيْرٌ لرَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَتْ : مَا أبْكِي أَنْ لاَ أَكُونَ أَعْلَمُ أنَّ مَا عِنْدَ الله تَعَالَى خَيْرٌ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ وَلَكِنْ أبكي أنَّ الوَحْيَ قدِ انْقَطَعَ مِنَ السَّماءِ فَهَيَّجَتْهُمَا عَلَى البُكَاءِ فَجَعَلا يَبْكِيَانِ مَعَهَا رواه مسلم

وعن انس قال : قال ابو بكر لعمر رضي الله عنهما بعد وفاة رسول الله ﷺ انطلق بنا الى ام ايمن رضي الله عنها نزورها كما كان رسول الله ﷺ يزورها فلما انتهيا اليها بكت فقالا لها : ما يبكيك ؟ اما تعلمين ان ما عند الله خير لرسول الله ﷺ فقالت : ما ابكي ان لا اكون اعلم ان ما عند الله تعالى خير لرسول الله ﷺ ولكن ابكي ان الوحي قد انقطع من السماء فهيجتهما على البكاء فجعلا يبكيان معها رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৪) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক ব্যক্তি অন্য কোন গ্রামে তার ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য বের হল। আল্লাহ তাআলা তার রাস্তায় এক ফিরিশতাকে বসিয়ে দিলেন, তিনি তার অপেক্ষা করতে থাকলেন। যখন সে তাঁর কাছে পৌঁছল, তখন তিনি তাকে বললেন, ’তুমি কোথায় যাচ্ছ?’ সে বলল, ’এ লোকালয়ে আমার এক ভাই আছে, আমি তার কাছে যাচ্ছি।’ ফিরিশতা জিজ্ঞেস করলেন, ’তোমার প্রতি কি তার কোন অনুগ্রহ রয়েছে, যার বিনিময় দেওয়ার জন্য তুমি যাচ্ছ?’ সে বলল, ’না, আমি তার নিকট কেবলমাত্র এই জন্য যাচ্ছি যে, আমি তাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসি।’ ফিরিশতা বললেন, ’(তাহলে শোনো) আমি তোমার নিকট আল্লাহর দূত হিসাবে (এ কথা জানাবার জন্য) এসেছি যে, আল্লাহ তাআলা তোমাকে ভালবাসেন; যেমন তুমি তাকে আল্লাহর জন্য ভালবাস।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ أنَّ رَجُلاً زَارَ أَخَاً لَهُ في قَريَة أُخْرَى فَأرْصَدَ الله تَعَالَى عَلَى مَدْرَجَتِهِ مَلَكاً فَلَمَّا أتَى عَلَيهِ قَالَ : أيْنَ تُريدُ ؟ قَالَ : أُريدُ أخاً لي في هذِهِ القَريَةِ قَالَ : هَلْ لَكَ عَلَيهِ مِنْ نِعْمَة تَرُبُّهَا عَلَيهِ ؟ قَالَ : لا غَيْرَ أنِّي أحْبَبْتُهُ في الله تَعَالَى قَالَ : فإنِّي رَسُوْلُ الله إلَيْكَ بَأنَّ اللهَ قَدْ أَحَبَّكَ كَمَا أحْبَبْتَهُ فِيهِ رواه مسلم

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ ان رجلا زار اخا له في قرية اخرى فارصد الله تعالى على مدرجته ملكا فلما اتى عليه قال : اين تريد ؟ قال : اريد اخا لي في هذه القرية قال : هل لك عليه من نعمة تربها عليه ؟ قال : لا غير اني احببته في الله تعالى قال : فاني رسول الله اليك بان الله قد احبك كما احببته فيه رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৫) উক্ত রাবী (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন রোগীকে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞাসাবাদ করে অথবা তার কোন লিল্লাহী ভাইকে সাক্ষাৎ করে, সে ব্যক্তিকে এক (গায়বী) আহবানকারী আহবান ক’রে বলে, ’সুখী হও তুমি, সুখকর হোক তোমার ঐ যাত্রা (সাক্ষাতের জন্য যাওয়া)। আর তোমার স্থান হোক জান্নাতের প্রাসাদে।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ عَادَ مَرِيضاً أَوْ زَارَ أخاً لَهُ في اللهِ نَادَاهُ مُنَادٍ : بِأنْ طِبْتَ وَطَابَ مَمْشَاكَ وَتَبَوَّأتَ مِنَ الجَنَّةِ مَنْزِلاً رواه الترمذي وَقالَ حديث حسن، وفي بعض النسخ غريب

وعنه قال : قال رسول الله ﷺ من عاد مريضا او زار اخا له في الله ناداه مناد : بان طبت وطاب ممشاك وتبوات من الجنة منزلا رواه الترمذي وقال حديث حسن، وفي بعض النسخ غريب

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৬) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ হল, কস্ত্তরী বহনকারী (আতরওয়ালা) ও হাপরে ফুৎকারকারী (কামারের) ন্যায়। কস্তুরী বহনকারী (আতরওয়ালা) হয়তো তোমাকে কিছু দান করবে অথবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে অথবা তার কাছ থেকে সুবাস লাভ করবে। আর হাপরে ফুৎকারকারী (কামার) হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে দুর্গন্ধ পাবে।

وَعَن أَبي مُوسَى الأَشعَرِي أَنَّ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّمَا مَثَلُ الجَلِيسِ الصَّالِحِ وَجَلِيسِ السُّوءِ كَحَامِلِ المِسْكِ، وَنَافِخِ الْكِيرِ، فَحَامِلُ الْمِسْكِ: إمَّا أنْ يُحْذِيَكَ، وَإمَّا أنْ تَبْتَاعَ مِنْهُ وَإمَّا أنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيحاً طَيِّبَةً وَنَافِخُ الكِيرِ : إمَّا أنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ وَإمَّا أنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيحاً مُنْتِنَةً مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي موسى الاشعري ان النبي ﷺ قال انما مثل الجليس الصالح وجليس السوء كحامل المسك، ونافخ الكير، فحامل المسك: اما ان يحذيك، واما ان تبتاع منه واما ان تجد منه ريحا طيبة ونافخ الكير : اما ان يحرق ثيابك واما ان تجد منه ريحا منتنة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৭) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি গুণ দেখে মহিলাকে বিবাহ করা হয়; তার ধন-সম্পদ, তার বংশ মর্যাদা, তার রূপসৌন্দর্য এবং তার দ্বীন-ধর্ম দেখে। তুমি দ্বীনদার পাত্রী লাভ ক’রে সফলকাম হও। (অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।) (বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ৩৭০৮)

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ تُنْكَحُ المَرْأَةُ لأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاك مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال تنكح المراة لاربع : لمالها ولحسبها ولجمالها ولدينها فاظفر بذات الدين تربت يداك متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীলকে বললেন, ’আপনি যতটা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার চেয়ে বেশী সাক্ষাৎ করতে আপনার বাধা কিসের?’ ফলে এ আয়াত অবতীর্ণ হল, (জিবরীল বললেন,) আমরা তোমার প্রতিপালকের আদেশ ব্যাতিরেকে অবতরণ করি না। যা আমাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে এবং উভয়ের মধ্যস্থলে রয়েছে সে সকলই তাঁর মালিকানাধীন। (সূরা মারয়্যাম ৬৪)

وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ النَّبيُّ ﷺ لِجِبرِيلَ مَا يَمْنَعُكَ أنْ تَزُورَنَا أكثَرَ مِمَّا تَزُورُنَا ؟ فَنَزَلَتْ وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ رواه البخاري

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال : قال النبي ﷺ لجبريل ما يمنعك ان تزورنا اكثر مما تزورنا ؟ فنزلت وما نتنزل الا بامر ربك له ما بين ايدينا وما خلفنا وما بين ذلك رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪০৯) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমার বন্ধুকে মধ্যমভাবে ভালোবাস (অর্থাৎ, তার ভালোবাসাতে তুমি অতিরঞ্জন করো না)। কারণ, একদিন সে তোমার শত্রুতে পরিণত হতে পারে। আর তোমার শত্রুকে তুমি মধ্যমভাবে শত্রু ভেবো। (অর্থাৎ, তাকে শত্রু ভাবাতে বাড়াবাড়ি করো না।) কারণ, একদিন সে তোমার বন্ধুতে পরিণত হতে পারে। (সুতরাং তখন তোমাকে লজ্জায় পড়তে হবে।)

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ أحْبِبْ حَبِيبَكَ هَوْناً مَّا عَسى أنْ يَكُونَ بَغِيضَكَ يَوْماً مَّا وأبْغِضْ بَغِيضَكَ هَوْناً مَّا عَسى أنْ يَكُونَ حَبِيبَكَ يَوْماً مَّا

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله ﷺ احبب حبيبك هونا ما عسى ان يكون بغيضك يوما ما وابغض بغيضك هونا ما عسى ان يكون حبيبك يوما ما

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১০) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মু’মিন মানুষ ছাড়া অন্য কারো সঙ্গী হয়ো না এবং তোমার খাবার যেন পরহেযগার ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ না খায়।

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدرِي عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ لَا تُصَاحِبْ إلاَّ مُؤْمِناً وَلاَ يَأْكُلْ طَعَامَكَ إلاَّ تَقِيٌّ رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد لَا بَأْسَ بِهِ

وعن ابي سعيد الخدري عن النبي ﷺ قال لا تصاحب الا مومنا ولا ياكل طعامك الا تقي رواه ابو داود والترمذي باسناد لا باس به

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১১) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মনুষ্য-সমাজ হল শত উটের মত; যার মধ্যে একটা ভালো সওয়ারযোগ্য উট খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

وعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ تَجِدُونَ النَّاسَ كَإِبِلٍ مِائَةٍ لاَ يَجِدُ الرَّجُلُ فِيهَا رَاحِلَةً

وعن ابن عمر قال قال رسول الله ﷺ تجدون الناس كابل ماىة لا يجد الرجل فيها راحلة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১২) আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের উপর হয়। অতএব তোমাদের প্রত্যেককে দেখা উচিত যে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيْلِهِ فَليَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد صحيح وَقالَ الترمذي حديث حسن

وعن ابي هريرة ان النبي ﷺ قال الرجل على دين خليله فلينظر احدكم من يخالل رواه ابو داود والترمذي باسناد صحيح وقال الترمذي حديث حسن

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৩) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালবাসে (কিয়ামতে) সে তারই সাথী হবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে, কিন্তু (আমলে) তাদের সমকক্ষ হতে পারেনি। তিনি বললেন, মানুষ যাকে ভালবাসে, সে তারই সাথী হবে।

وَعَن أَبِي مُوسَى الأَشعَرِي أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ المَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وَفي رِوَايَةٍ: قِيلَ لِلنَّبِي ﷺ الرَّجُلُ يُحِبُّ القَومَ وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ؟ قَالَ المَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ

وعن ابي موسى الاشعري ان النبي ﷺ قال المرء مع من احب متفق عليه وفي رواية: قيل للنبي ﷺ الرجل يحب القوم ولما يلحق بهم؟ قال المرء مع من احب

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৪) আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করল, ’হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামত কবে ঘটবে?’ তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এর জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছ? সে বলল, ’আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ভালবাসা।’ তিনি বললেন, তুমি যাকে ভালবাস, তারই সাথী হবে। (বুখারী ৩৬৮৮, মুসলিম ৬৮৭৮, শব্দগুলি মুসলিমের)

উভয়ের অন্য এক বর্ণনায় আছে, আমি বেশি নামাযরোযা ও সাদকাহর মাধ্যমে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। কিন্তু আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসি। (তিনি বললেন, তুমি যাকে ভালবাস, তারই সাথী হবে।)

وَعَن أَنَسٍ أَنَّ أَعرَابِياً قَالَ لِرَسُولِ اللهِ ﷺ مَتَى السَّاعَةُ ؟ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَا أعْدَدْتَ لَهَا ؟ قَالَ : حُبَّ الله وَرَسُولهِ قَالَ أنْتَ مَعَ مَنْ أحْبَبْتَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وهذا لفظ مسلم وفي رواية لهما : مَا أعْدَدْتُ لَهَا مِنْ كَثيرِ صَوْمٍ وَلاَ صَلاَةٍ وَلاَ صَدَقَةٍ وَلَكِنِّي أُحِبُّ الله وَرَسُوْلَهُ

وعن انس ان اعرابيا قال لرسول الله ﷺ متى الساعة ؟ قال رسول الله ﷺ ما اعددت لها ؟ قال : حب الله ورسوله قال انت مع من احببت متفق عليه وهذا لفظ مسلم وفي رواية لهما : ما اعددت لها من كثير صوم ولا صلاة ولا صدقة ولكني احب الله ورسوله

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৫) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করল, ’হে আল্লাহর রসূল! কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে, কিন্তু (আমলে) তাদের সমকক্ষ হতে পারেনি।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মানুষ যাকে ভালবাসে, সে তারই সাথী হবে।

وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ كَيْفَ تَقُولُ في رَجُلٍ أَحَبَّ قَوْماً وَلَمْ يَلْحَقْ بِهِمْ ؟ فَقَالَ رَسُول الله ﷺ المَرْءُ مَعَ مَنْ أحَبَّ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابن مسعود قال : جاء رجل الى رسول الله ﷺ فقال : يا رسول الله كيف تقول في رجل احب قوما ولم يلحق بهم ؟ فقال رسول الله ﷺ المرء مع من احب متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৬) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সোনা-রূপার খনিরাজির মত মানব জাতিও নানা গোত্রের খনিরাজি। যারা জাহেলী যুগে উত্তম ছিল, তারা ইসলামী যুগেও উত্তম; যখন তারা দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে। আর আত্মাসমূহ সমবেত সৈন্যদলের মত। সুতরাং আপোসে যে আত্মাদল পরিচিত ও অভিন্ন প্রকৃতির হয়, সে আত্মাদলের মাঝে মিলন ও বন্ধুত্ব স্থাপিত হয়ে থাকে এবং যে আত্মাদল আপোসে অপরিচিত ও ভিন্ন প্রকৃতির হয়, সে আত্মাদলের মাঝে বিচ্ছিন্নতা ও অনৈক্য প্রকট হয়ে ওঠে।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبيِّ ﷺ قَالَ النَّاسُ مَعَادِنٌ كَمَعَادِنِ الذَّهَبِ وَالفِضَّةِ خِيَارُهُمْ في الجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ في الإسْلاَمِ إِذَا فَقُهُوا وَالأرْوَاحُ جُنُودٌ مُجَنَّدَةٌ فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ ومَا تَنَاكَرَ مِنْهَا اخْتَلَفَ رواه مسلم

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال الناس معادن كمعادن الذهب والفضة خيارهم في الجاهلية خيارهم في الاسلام اذا فقهوا والارواح جنود مجندة فما تعارف منها اىتلف وما تناكر منها اختلف رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৭) আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, আত্মাসমূহ সমবেত সৈন্যদলের মত। সুতরাং আপোসে যে আত্মাদল পরিচিত ও অভিন্ন প্রকৃতির হয়, সে আত্মাদলের মাঝে মিলন ও বন্ধুত্ব স্থাপিত হয়ে থাকে এবং যে আত্মাদল আপোসে অপরিচিত ও ভিন্ন প্রকৃতির হয়, সে আত্মাদলের মাঝে বিচ্ছিন্নতা ও অনৈক্য প্রকট হয়ে ওঠে।

وعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ ﷺ يَقُولُ الْأَرْوَاحُ جُنُودٌ مُجَنَّدَةٌ فَمَا تَعَارَفَ مِنْهَا ائْتَلَفَ وَمَا تَنَاكَرَ مِنْهَا اخْتَلَفَ

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت سمعت النبي ﷺ يقول الارواح جنود مجندة فما تعارف منها اىتلف وما تناكر منها اختلف

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৮)উসাইর ইবনে আমর মতান্তরে ইবনে জাবের থেকে বর্ণিত, উমার (রাঃ) এর নিকট যখনই ইয়ামান থেকে সহযোগী যোদ্ধারা আসতেন, তখনই তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করতেন, ’তোমাদের মধ্যে কি উয়াইস ইবনে আমের আছে?’ শেষ পর্যন্ত (এক দলের সঙ্গে) উয়াইস (ক্বারনী) (রাঃ) (মদীনা) এলেন। অতঃপর উমার (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ’তুমি কি উয়াইস ইবনে আমের?’ তিনি বললেন, ’হ্যাঁ।’ উমার (রাঃ) বললেন, ’মুরাদ (পরিবারের) এবং ক্বার্ন্ (গোত্রের)?’ উয়াইস বললেন, ’হ্যাঁ।’ তিনি (পুনরায়) জিজ্ঞেস করলেন, ’তোমার শরীরে শ্বেত রোগ ছিল, তা এক দিরহাম সম জায়গা ব্যতীত (সবই) দূর হয়ে গেছে?’ উয়াইস বললেন, ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’তোমার মা আছে?’ উয়াইস বললেন, ’হ্যাঁ।’

তিনি বললেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ’’মুরাদ (পরিবারের) এবং ক্বার্ন্ (গোত্রের) উয়াইস ইবনে আমের ইয়ামানের সহযোগী ফৌজের সঙ্গে তোমাদের কাছে আসবে। তার দেহে ধবল দাগ আছে, যা এক দিরহাম সম স্থান ছাড়া সবই ভাল হয়ে গেছে। সে তার মায়ের সাথে সদাচারী হবে। সে যদি আল্লাহর প্রতি কসম খায়, তবে আল্লাহ তা পূরণ ক’রে দেবেন। সুতরাং (হে উমার!) তুমি যদি নিজের জন্য তাকে দিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনার দু’আ করাতে পার, তাহলে অবশ্যই করায়ো।’’ সুতরাং তুমি আমার জন্য (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা প্রার্থনা কর।’

শোনামাত্র উয়াইস উমারের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন। অতঃপর উমার তাঁকে বললেন, ’তুমি কোথায় যাবে?’ উয়াইস বললেন, ’কূফা।’ তিনি বললেন, ’আমি কি তোমার জন্য সেখানকার গর্ভনরকে পত্র লিখে দেব না?’ উয়াইস বললেন, ’আমি সাধারণ গরীব-মিসকীনদের সাথে থাকতে ভালবাসি।’

অতঃপর যখন আগামী বছর এল তখন কূফার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হজ্জে এল। সে উমার (রাঃ) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি তাকে উয়াইস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, ’আমি তাঁকে এই অবস্থায় ছেড়ে এসেছি যে, তিনি একটি ভগ্ন কুটির ও স্বল্প সামগ্রীর মালিক ছিলেন।’ উমার (রাঃ) বললেন, ’আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মুরাদ (পরিবারের) এবং ক্বার্ন্ (গোত্রের) উয়াইস ইবনে আমের ইয়ামানের সহযোগী ফৌজের সঙ্গে তোমাদের নিকট আসবে। তার দেহে ধবল রোগ আছে, যা এক দিরহামসম স্থান ছাড়া সবই ভালো হয়ে গেছে। সে তার মায়ের সাথে সদাচারী (মা-ভক্ত) হবে। সে যদি আল্লাহর উপর কসম খায়, তাহলে আল্লাহ তা পূর্ণ ক’রে দেবেন। যদি তুমি তোমার জন্য তার দ্বারা ক্ষমাপ্রার্থনার দু’আ করাতে পার, তাহলে অবশ্যই করায়ো।

অতঃপর সে (কূফার লোকটি হজ্জ সম্পাদনের পর) উয়াইস (ক্বারনীর) নিকট এল এবং বলল, ’আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’ উয়াইস বললেন, ’তুমি এক শুভযাত্রা থেকে নব আগমন করেছ। অতএব তুমি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।’ অতঃপর তিনি বললেন, ’তুমি উমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছ?’ সে বলল, ’হ্যাঁ।’ সুতরাং উয়াইস তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন। (এসব শুনে) লোকেরা (উয়াইসের) মর্যাদা জেনে নিল। সুতরাং তিনি তার সামনের দিকে (অন্যত্র) চলে গেলেন।

মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় উসাইর ইবনে জাবের (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, কুফার কিছু লোক উমার (রাঃ) এর নিকট এল। তাদের মধ্যে একটি লোক ছিল, সে উয়াইসের সাথে উপহাস করত। উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ’এখানে ক্বার্ন গোত্রের কেউ আছে কি?’ অতঃপর ঐ ব্যক্তি এল। উমার (রাঃ) বললেন, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নিকট ইয়ামান থেকে উয়াইস নামক একটি লোক আসবে। সে ইয়ামানে কেবলমাত্র তার মাকে রেখে আসবে। তার দেহে ধবল রোগ ছিল। সে আল্লাহর কাছে দু’আ করলে আল্লাহ তা এক দীনার অথবা এক দিরহাম সম স্থান ব্যতীত সবই দূর ক’রে দিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের কারো যদি তার সাথে সাক্ষাৎ হয়, তাহলে সে যেন তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, উমার (রাঃ) বলেন, ’আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ তাবেঈন হল এক ব্যক্তি, যাকে উয়াইস বলা হয়। তার মা আছে। তার ধবল রোগ ছিল। তোমরা তাকে আদেশ করো, সে যেন তোমাদের জন্য (আল্লাহর নিকট) ক্ষমাপ্রার্থনা করে।

وَعَن أُسَيْرِ بنِ عَمرٍو وَيُقَالُ : ابنِ جَابِرٍ، قَالَ : كَانَ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ إِذَا أتَى عَلَيهِ أمْدَادُ أهْلِ اليَمَنِ سَألَهُمْ : أفِيكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ ؟ حَتّٰـى أتَى عَلَى أُوَيْسٍ فَقَالَ لَهُ : أنْتَ أُوَيْسُ ابْنُ عَامِر ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَ : مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَ : فَكَانَ بِكَ بَرَصٌ فَبَرَأْتَ مِنْهُ إلاَّ مَوْضِعَ دِرْهَمٍ ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَ : لَكَ وَالِدةٌ ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ يَأتِي عَلَيْكُمْ أُويْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أمْدَادِ أهْلِ اليَمَنِ مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إلاَّ موْضِعَ دِرْهَمٍ لَهُ وَالدةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ لَوْ أقْسَمَ عَلَى الله لأَبَرَّهُ فإنِ اسْتَطَعْتَ أنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَل فَاسْتَغْفِرْ لي فَاسْتَغْفَرَ لَهُ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ : أيْنَ تُريدُ ؟ قَالَ : الكُوفَةَ قَالَ : ألاَ أكْتُبُ لَكَ إِلَى عَامِلِهَا ؟ قَالَ : أكُونُ في غَبْرَاءِ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيَّ فَلَمَّا كَانَ مِنَ العَامِ المُقْبِلِ حَجَّ رَجُلٌ مِنْ أشْرَافِهِمْ فَوافَقَ عُمَرَ فَسَألَهُ عَنْ أُوَيْسٍ فَقَالَ : تَرَكْتُهُ رَثَّ البَيْتِ قَليلَ المَتَاعِ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ يَأتِي عَلَيْكُمْ أُوَيْسُ بْنُ عَامِرٍ مَعَ أمْدَادٍ مِنْ أهْلِ اليَمَنِ مِنْ مُرَادٍ ثُمَّ مِنْ قَرَنٍ كَانَ بِهِ بَرَصٌ فَبَرَأَ مِنْهُ إلاَّ مَوضِعَ دِرْهَمٍ لَهُ وَالِدَةٌ هُوَ بِهَا بَرٌّ لَوْ أقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ فَإنِ اسْتَطْعتَ أنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ فَافْعَلْ فَأتَى أُوَيْساً فَقَالَ : اسْتَغْفِرْ لِي قَالَ : أنْتَ أحْدَثُ عَهْداً بسَفَرٍ صَالِحٍ فَاسْتَغْفِرْ لي قَالَ : لَقِيتَ عُمَرَ ؟ قَالَ : نَعَمْ فاسْتَغْفَرَ لَهُ فَفَطِنَ لَهُ النَّاسُ فَانْطَلَقَ عَلَى وَجْهِهِ رواه مسلم
وَفي رِوَايَةٍ لِمُسلِمٍ أَيضاً عَن أُسَيْر بنِ جَابِرٍ أنَّ أهْلَ الكُوفَةِ وَفَدُوا عَلَى عُمَرَ وَفِيهمْ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ يَسْخَرُ بِأُوَيْسٍ فَقَالَ عُمَرُ : هَلْ هاهُنَا أَحَدٌ مِنَ القَرَنِيِّينَ ؟ فَجَاءَ ذلِكَ الرَّجُلُ فَقَالَ عمرُ : إنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَدْ قَالَ إنَّ رَجُلاً يَأتِيكُمْ مِنَ اليَمَنِ يُقَالُ لَهُ : أُوَيْسٌ لاَ يَدَعُ باليَمَنِ غَيْرَ أُمٍّ لَهُ قَدْ كَانَ بِهِ بَيَاضٌ فَدَعَا الله تَعَالَى فَأذْهَبَهُ إلاَّ مَوضِعَ الدِّينَارِ أَو الدِّرْهَمِ فَمَنْ لَقِيَهُ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ
وفي رِوَايَةٍ لَهُ : عَن عُمَرَ قَالَ : إنِّي سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ إنَّ خَيْرَ التَّابِعِينَ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ : أُوَيْسٌ وَلَهُ وَالِدَةٌ وَكَانَ بِهِ بَيَاضٌ فَمُرُوهُ فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ

وعن اسير بن عمرو ويقال : ابن جابر، قال : كان عمر بن الخطاب اذا اتى عليه امداد اهل اليمن سالهم : افيكم اويس بن عامر ؟ حتـى اتى على اويس فقال له : انت اويس ابن عامر ؟ قال : نعم قال : من مراد ثم من قرن ؟ قال : نعم قال : فكان بك برص فبرات منه الا موضع درهم ؟ قال : نعم قال : لك والدة ؟ قال : نعم قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول ياتي عليكم اويس بن عامر مع امداد اهل اليمن من مراد ثم من قرن كان به برص فبرا منه الا موضع درهم له والدة هو بها بر لو اقسم على الله لابره فان استطعت ان يستغفر لك فافعل فاستغفر لي فاستغفر له فقال له عمر : اين تريد ؟ قال : الكوفة قال : الا اكتب لك الى عاملها ؟ قال : اكون في غبراء الناس احب الي فلما كان من العام المقبل حج رجل من اشرافهم فوافق عمر فساله عن اويس فقال : تركته رث البيت قليل المتاع قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول ياتي عليكم اويس بن عامر مع امداد من اهل اليمن من مراد ثم من قرن كان به برص فبرا منه الا موضع درهم له والدة هو بها بر لو اقسم على الله لابره فان استطعت ان يستغفر لك فافعل فاتى اويسا فقال : استغفر لي قال : انت احدث عهدا بسفر صالح فاستغفر لي قال : لقيت عمر ؟ قال : نعم فاستغفر له ففطن له الناس فانطلق على وجهه رواه مسلم وفي رواية لمسلم ايضا عن اسير بن جابر ان اهل الكوفة وفدوا على عمر وفيهم رجل ممن كان يسخر باويس فقال عمر : هل هاهنا احد من القرنيين ؟ فجاء ذلك الرجل فقال عمر : ان رسول الله ﷺ قد قال ان رجلا ياتيكم من اليمن يقال له : اويس لا يدع باليمن غير ام له قد كان به بياض فدعا الله تعالى فاذهبه الا موضع الدينار او الدرهم فمن لقيه منكم فليستغفر لكم وفي رواية له : عن عمر قال : اني سمعت رسول الله ﷺ يقول ان خير التابعين رجل يقال له : اويس وله والدة وكان به بياض فمروه فليستغفر لكم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব

পরিচ্ছেদঃ ভাল লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাঁদের সাহচর্য গ্রহণ করা, তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া, তাঁদের কাছে দু‘আ চাওয়া এবং বরকতময় স্থানসমূহের দর্শন

(৩৪১৯) ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সওয়ার হয়ে ও পায়ে হেঁটে (মসজিদে) কুবার যিয়ারত করতেন। অতঃপর তাতে দু’ রাকআত নামায পড়তেন।’ (বুখারী ১১৯১, ১১৯৪, মুসলিম ৩৪৫৫-৩৪৬২)

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি শনিবার সওয়ার হয়ে এবং কখনো পায়ে হেঁটে মসজিদে কুবা যেতেন। আর ইবনে উমারও এরূপ করতেন।’

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : كَانَ النَّبيُّ ﷺ يَزُورُ قُبَاءَ رَاكِباً وَمَاشِياً فَيُصَلِّي فِيهِ رَكْعَتَيْنِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رواية : كَانَ النَّبيُّ ﷺ يَأتي مَسْجِد قُبَاءَ كُلَّ سَبْتٍ رَاكباً وَمَاشِياً وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَفْعَلُهُ

وعن ابن عمر رضي الله عنهما قال : كان النبي ﷺ يزور قباء راكبا وماشيا فيصلي فيه ركعتين متفق عليه وفي رواية : كان النبي ﷺ ياتي مسجد قباء كل سبت راكبا وماشيا وكان ابن عمر يفعله

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
২৭/ আদব
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে