পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৮৫) আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নক্ষত্রমণ্ডলী আকাশের জন্য নিরাপত্তা। নক্ষত্রমণ্ডলী ধ্বংস হলে আকাশে তার প্রতিশ্রম্নত জিনিস এসে যাবে। আর আমি আমার সাহাবার জন্য নিরাপত্তা। আমি চলে গেলে আমার সাহাবার কাছে প্রতিশ্রুত জিনিস এসে যাবে। অনুরূপ আমার সাহাবাবর্গ আমার উম্মতের জন্য নিরাপত্তা। সুতরাং আমার সাহাবাবর্গ বিদায় নিলে আমার উম্মতের মাঝে প্রতিশ্রুত জিনিস এসে পড়বে।
عَنْ أَبِـيْ مُوسٰى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ فَإِذَا ذَهَبَتِ النُّجُومُ أَتَى السَّمَاءَ مَا تُوعَدُ وَأَنَا أَمَنَةٌ لأَصْحَابِى فَإِذَا ذَهَبْتُ أَتَى أَصْحَابِى مَا يُوعَدُونَ وَأَصْحَابِى أَمَنَةٌ لأُمَّتِى فَإِذَا ذَهَبَ أَصْحَابِى أَتَى أُمَّتِى مَا يُوعَدُونَ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৮৬) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’লোকেদের নিকট একটি যুগ আসছে, যখন একটি জামাআত যুদ্ধে বের হবে। তাদেরকে বলা হবে, ’তোমাদের মাঝে কি এমন লোক আছে, যে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দর্শন করেছে?’ তারা বলবে, ’হ্যাঁ।’ সুতরাং তাদের বিজয় লাভ হবে। অতঃপর একটি জামাআত যুদ্ধে বের হবে। তাদেরকে বলা হবে, ’তোমাদের মাঝে কি এমন লোক আছে, যে তাকে দর্শন করেছে, যে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গ লাভ করেছে?’ তারা বলবে, ’হ্যাঁ।’ সুতরাং তাদের বিজয় লাভ হবে। অতঃপর একটি জামাআত যুদ্ধে বের হবে। তাদেরকে বলা হবে, ’তোমাদের মাঝে কি এমন লোক আছে, যে তাকে দর্শন করেছে, যে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গীর সঙ্গ লাভ করেছে?’ তারা বলবে, ’হ্যাঁ।’ সুতরাং তাদের বিজয় লাভ হবে।
عَنْ أبي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ فَيَغْزُو فِئَامٌ مِنْ النَّاسِ فَيَقُولُونَ فِيكُمْ مَنْ صَاحَبَ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَيَقُولُونَ نَعَمْ فَيُفْتَحُ لَهُمْ ثُمَّ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ فَيَغْزُو فِئَامٌ مِنْ النَّاسِ فَيُقَالَ هَلْ فِيكُمْ مَنْ صَاحَبَ أَصْحَابَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَيَقُولُونَ نَعَمْ فَيُفْتَحُ لَهُمْ ثُمَّ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ فَيَغْزُو فِئَامٌ مِنْ النَّاسِ فَيُقَالَ هَلْ فِيكُمْ مَنْ صَاحَبَ مَنْ صَاحَبَ أَصْحَابَ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَيَقُولُونَ نَعَمْ فَيُفْتَحُ لَهُمْ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৮৭) আবূ আব্দুর রহমান জুহানী (রাঃ) বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসে ছিলাম। এমন সময় দুই জন আরোহী দেখা গেল। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’ওরা (ইয়ামানের) কিন্দী মাযহিজী।’’
তারা তাঁর নিকট উপস্থিত হল। দেখা গেল তারা মাযহিজ গোত্রের দুই লোক। অতঃপর তাদের একজন তাঁর নিকটবর্তী হয়ে বায়আত করতে গেল। সুতরাং যখন সে তাঁর হাত ধরল, তখন বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি কী মনে করেন? যে আপনাকে দেখল, আপনার প্রতি ঈমান আনল, আপনার অনুসরণ করল এবং আপনার সত্যায়ন করল, তার জন্য কী?’
তিনি বললেন, সুসংবাদ বা সুখের জীবন সেই ব্যক্তির জন্য।
তারপর সে তাঁর হাত স্পর্শ ক’রে সরে গেল। অতঃপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে তাঁর হাতে বায়আত করতে গেল। সুতরাং যখন সে তাঁর হাত ধরল, তখন বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি কী মনে করেন? যে আপনার প্রতি ঈমান আনল, আপনার অনুসরণ করল এবং আপনার সত্যায়ন করল, কিন্তু আপনাকে দেখতে পেল না, তার জন্য কী?’
উত্তরে তিনি বললেন, সুসংবাদ বা সুখের জীবন সেই ব্যক্তির জন্য। অতঃপর সুসংবাদ বা সুখের জীবন সেই ব্যক্তির জন্য। অতঃপর সুসংবাদ বা সুখের জীবন সেই ব্যক্তির জন্য।
তারপর সে তাঁর হাত স্পর্শ ক’রে সরে গেল।
عَنْ أَبِـيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجُهَنِيِّ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إِذْ طَلَعَ رَاكِبَانِ فَلَمَّا رَآهُمَا قَالَ كِنْدِيَّانِ مَذْحِجِيَّانِ حَتّٰـى أَتَيَاهُ فَإِذَا رِجَالٌ مِنْ مَذْحِجٍ قَالَ فَدَنَا إِلَيْهِ أَحَدُهُمَا لِيُبَايِعَهُ قَالَ فَلَمَّا أَخَذَ بِيَدِهِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ مَنْ رَآكَ فَآمَنَ بِكَ وَصَدَّقَكَ وَاتَّبَعَكَ مَاذَا لَهُ قَالَ طُوبَى لَهُ قَالَ فَمَسَحَ عَلَى يَدِهِ فَانْصَرَفَ ثُمَّ أَقْبَلَ الْآخَرُ حَتّٰـى أَخَذَ بِيَدِهِ لِيُبَايِعَهُ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ مَنْ آمَنْ بِكَ وَصَدَّقَكَ وَاتَّبَعَكَ وَلَمْ يَرَكَ قَالَ طُوبَى لَهُ ثُمَّ طُوبَى لَهُ ثُمَّ طُوبَى لَهُ قَالَ فَمَسَحَ عَلَى يَدِهِ فَانْصَرَفَ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৮৮) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ’আল্লাহ বান্দাগণের অন্তরসমূহে দৃষ্টিপাত করলেন, তাতে তিনি মুহাম্মাদের অন্তরকে বান্দাগণের অন্তরসমূহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পেলেন। সুতরাং তিনি তাঁকে নিজের জন্য (বন্ধু) নির্বাচন করলেন এবং তাঁর দূত হিসাবে প্রেরণ করলেন। অতঃপর পুনরায় তিনি মুহাম্মাদ ছাড়া অন্য সকল বান্দাগণের অন্তরসমূহে দৃষ্টিপাত করলেন, তাতে তিনি মুহাম্মাদের সাহাবাদের অন্তরসমূহকে বান্দাগণের অন্তরসমূহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পেলেন। সুতরাং তিনি তাঁদেরকে তাঁর নিজ নবীর মন্ত্রী বানালেন, যাঁরা তাঁর দ্বীনের জন্য সংগ্রাম করবেন। সুতরাং মুসলিম (সাহাবা)গণ যেটাকে ভালো মনে করেন, সেটা আল্লাহর নিকট ভালো। আর তাঁরা যেটা মন্দ মনে করেন, সেটা আল্লাহর নিকট মন্দ।’
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ إِنَّ اللهَ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ فَوَجَدَ قَلْبَ مُحَمَّدٍ ﷺ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ فَاصْطَفَاهُ لِنَفْسِهِ فَابْتَعَثَهُ بِرِسَالَتِهِ ثُمَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِ مُحَمَّدٍ فَوَجَدَ قُلُوبَ أَصْحَابِهِ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ فَجَعَلَهُمْ وُزَرَاءَ نَبِيِّهِ يُقَاتِلُونَ عَلَى دِينِهِ فَمَا رَأَى الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللهِ حَسَنٌ وَمَا رَأَوْا سَيِّئًا فَهُوَ عِنْدَ اللهِ سَيِّئٌ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৮৯) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) আরো বলেন, ’সাবধান! তোমাদের কেউ যেন নিজ দ্বীনের ব্যাপারে কোন ব্যক্তির এমন অন্ধ অনুকরণ না করে যে, সে ঈমানের কাজ করলে সেও করবে, নচেৎ সে কুফরী করলে সেও করবে। বরং যদি তোমাদের অন্ধ অনুকরণ করা জরুরীই হয়, তাহলে তোমরা পরলোকগত মানুষের (নবী ও সাহাবাদের) অনুকরণ কর। কারণ জীবিত ব্যক্তির ব্যাপারে ফিতনার নিরাপত্তা নেই।’
عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: لَا يُقَلِّدَنَّ أَحَدُكُمْ دِينَهُ رَجُلًا، فَإِنْ آمَنَ آمَنَ وَإِنْ كَفَرَ كَفَرَ، وَإِنْ كُنْتُمْ لَا بُدَّ مُقْتَدِينَ فَاقْتَدُوا بِالْمَيِّتِ، فَإِنَّ الْحَيَّ لَا يُؤْمَنُ عَلَيْهِ الْفِتْنَةُ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৯০) তিনি আরো বলেন, ’যে ব্যক্তি কাউকে আদর্শ বানাতে চায়, সে যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাবৃন্দকে নিজের আদর্শ বানায়। কারণ তাঁরা অন্তরের দিক থেকে এ উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ। ইলমে সবচেয়ে সুগভীর ও ’তাকালস্নুফ’ (কষ্টকল্পনায়) অতি কম। তাঁরা এমন এক সম্প্রদায়, যাঁদেরকে আল্লাহ তাঁর নবীর সাহচর্যের জন্য মনোনীত করেছিলেন। তোমরা তাঁদের অধিকার স্বীকার কর। কারণ তাঁরা ছিলেন সরল ও সঠিক পথের পথিক।’
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ : مَنْ كَانَ مُسْتَنًّا فَلْيَسْتَنَّ بِمَنْ قَدْ مَاتَ فَإِنَّ الْحَيَّ لَا تُؤْمَنُ عَلَيْهِ الْفِتْنَةُ أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوا أَفْضَلَ هَذِهِ الْأُمَّةِ أَبَرَّهَا قُلُوْبًا وَّأَعْمَقَهَا عِلْمًا وَأَقَلَّهَا تَكَلُّفًا اِخْتَارَهُمُ اللهُ لِصُحْبَةِ نَبِيِّهِ وَلْإِقَامَةِ دِيْنِهِ فَاعْرِفُوْا لَـهُمْ فَضْلَهُمْ وَاتَّبَعُوْهُمْ عَلَى آثَارِهِمْ وَتَمَسَّكُوْا بِمَا اسْتَطَعْتُمْ مِّنْ أَخْلَاقِهِمْ وَسِيَرِهِمْ فَإِنَّهُمْ كَانُوْا عَلَى الْـهُدَى الْـمُسْتَقِيْمِ رَوَاهُ رَزِيْنُ
পরিচ্ছেদঃ সাহাবার মাহাত্ম্য
(২৮৯১) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কাউকে আদর্শ বানাতে চায়, সে যেন মৃতদেরকে নিজের আদর্শ বানায়। তাঁরা হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবা। তাঁরা এ উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ। হৃদয়ে সবচেয়ে সৎশীল, ইলমে সবচেয়ে সুগভীর ও ’তাকালস্নুফ’ (কষ্টকল্পনায়) অতি কম। তাঁরা এমন এক সম্প্রদায়, যাঁদেরকে আল্লাহ তাঁর নবীর সাহচর্যের জন্য এবং তাঁর দ্বীন বহনের জন্য মনোনীত করেছিলেন। সুতরাং তোমরা তাঁদের চরিত্র ও নিয়ম-নীতিতে সাদৃশ্য অবলম্বন কর। যেহেতু তাঁরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহচর। তাঁরা ছিলেন সরল সুপথের উপর।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ: مَنْ كَانَ مُسْتَنًّا فَلْيَسْتَنَّ بِمَنْ قَدْ مَاتَ، أُولَئِكَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوا خَيْرَ هَذِهِ الْأُمَّةِ، أَبَّرَهَا قُلُوبًا، وَأَعْمَقَهَا عِلْمًا، وَأَقَلَّهَا تَكَلُّفًا، قَوْمٌ اخْتَارَهُمُ اللهُ لِصُحْبَةِ نَبِيِّهِ صلّى الله عليه وسلم وَنَقْلِ دِينِهِ، فَتَشَبَّهُوا بِأَخْلَاقِهِمْ وَطَرَائِقِهِمْ فَهُمْ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانُوا عَلَى الْهُدَى الْمُسْتَقِيمِ