পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إنَّ اللهَ يَأمُرُ بِالعَدْلِ وَالإِحْسَانِ

অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা ও সদাচরণের নির্দেশ দেন...। (সূরা নাহল ৯০)

তিনি অন্য জায়গায় বলেন,

وَأَقْسِطُوا إنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ

অর্থাৎ, সুবিচার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। (সূরা হুজুরাত ৯)


(১৭৯৩) আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা সাত ব্যক্তিকে সেই দিনে তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না; (তারা হল,) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ (রাষ্ট্রনেতা), সেই যুবক যার যৌবন আল্লাহ আযযা অজাল্লার ইবাদতে অতিবাহিত হয়, সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদসমূহের সাথে লটকে থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে।) সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা স্থাপন করে; যারা এই ভালোবাসার উপর মিলিত হয় এবং এই ভালোবাসার উপরেই চিরবিচ্ছিন্ন (তাদের মৃত্যু) হয়। সেই ব্যক্তি যাকে কোন কুলকামিনী সুন্দরী (অবৈধ যৌন-মিলনের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, কিন্তু সে বলে, ’আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ সেই ব্যক্তি যে দান ক’রে গোপন করে; এমনকি তার ডান হাত যা প্রদান করে, তা তার বাম হাত পর্যন্তও জানতে পারে না। আর সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে; ফলে তার উভয় চোখে পানি বয়ে যায়।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إلاَّ ظِلُّهُ : إمَامٌ عَادِلٌ وَشَابٌّ نَشَأ في عِبَادَةِ الله عز وجل وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالمَسَاجِدِ وَرَجُلاَنِ تَحَابّا في اللهِ اجْتَمَعَا عَلَيهِ وتَفَرَّقَا عَلَيهِ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأةٌ ذَاتُ مَنصَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ : إنِّي أخَافُ الله وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ وَرَجُلٌ ذَكَرَ الله خَالِياً فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ متفقٌ عليه

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال سبعة يظلهم الله في ظله يوم لا ظل الا ظله : امام عادل وشاب نشا في عبادة الله عز وجل ورجل قلبه معلق بالمساجد ورجلان تحابا في الله اجتمعا عليه وتفرقا عليه ورجل دعته امراة ذات منصب وجمال فقال : اني اخاف الله ورجل تصدق بصدقة فاخفاها حتى لا تعلم شماله ما تنفق يمينه ورجل ذكر الله خاليا ففاضت عيناه متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৪) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট যারা ন্যায়পরায়ণ তারা দয়াময়ের ডান পার্শ্বে জ্যোতির মিম্বরের উপর অবস্থান করবে। আর তাঁর উভয় হস্তই ডান। (ঐ ন্যায়পরায়ণ তারা) যারা তাদের বিচারে, পরিবারে এবং তার কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বাধীন ব্যক্তিবর্গের ব্যাপারে ন্যায়নিষ্ঠ।

وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّ الْمُقْسِطِينَ عِنْدَ اللهِ عَلَى مَنَابِرَ مِنْ نُورٍ عَنْ يَمِينِ الرَّحْمَنِ عَزَّ وَجَلَّ وَكِلْتَا يَدَيْهِ يَمِينٌ الَّذِينَ يَعْدِلُونَ فِى حُكْمِهِمْ وَأَهْلِيهِمْ وَمَا وَلُوا رواه مسلم

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما قال : قال رسول الله ﷺ ان المقسطين عند الله على منابر من نور عن يمين الرحمن عز وجل وكلتا يديه يمين الذين يعدلون فى حكمهم واهليهم وما ولوا رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৫) ইয়ায ইবনে হিমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, জান্নাতী তিন প্রকার। (১) ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ, যাকে ভাল কাজ করার তাওফীক দেওয়া হয়েছে। (২) ঐ ব্যক্তি যে প্রত্যেক আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিমের প্রতি দয়ালু ও নম্র-হৃদয় এবং (৩) সেই ব্যক্তি যে বহু সন্তানের (গরীব) পিতা হওয়া সত্ত্বেও হারাম ও ভিক্ষাবৃত্তি থেকে দূরে থাকে।

وَعَن عِياضِ بن حِمارٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُأهلُ الجَنَّةِ ثَلاَثَةٌ : ذُو سُلطَانٍ مُقْسِطٌ مُوَفَّقٌ وَرَجُلٌ رَحيمٌ رَقِيقُ القَلْبِ لكُلِّ ذي قُرْبَى ومُسْلِمٍ وعَفِيفٌ مُتَعَفِّفٌ ذُو عِيالٍ رواه مسلم

وعن عياض بن حمار قال : سمعت رسول الله ﷺ يقولاهل الجنة ثلاثة : ذو سلطان مقسط موفق ورجل رحيم رقيق القلب لكل ذي قربى ومسلم وعفيف متعفف ذو عيال رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৬) আমর বিন আস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিচারক যদি সুবিচারের প্রয়াস রেখে বিচার করে অতঃপর তা সঠিক হয়, তবে তার জন্য রয়েছে দুটি সওয়াব। আর সুবিচারের প্রয়াস রেখে যদি বিচারে ভুল করেও বসে, তবে তার জন্যও রয়েছে একটি সওয়াব।

عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أن رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا حَكَمَ الْحَاكِمُ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَصَابَ فَلَهُ أَجْرَانِ وَإِذَا حَكَمَ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَخْطَأَ فَلَهُ أَجْرٌ

عن عمرو بن العاص ان رسول الله ﷺ قال اذا حكم الحاكم فاجتهد ثم اصاب فله اجران واذا حكم فاجتهد ثم اخطا فله اجر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি বিচারক-পদ গ্রহণ করল অথবা যাকে লোকেদের (কাযী বা) বিচারক নিযুক্ত করা হল, তাকে যেন বিনা ছুরিতে যবাই করা হল। অন্য বর্ণনায় শব্দ ভিন্ন অর্থ একই।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنْ وَلِىَ الْقَضَاءَ فَقَدْ ذُبِحَ بِغَيْرِ سِكِّينٍ
وَفِيْ رِوَايَةٍ مَنْ جُعِلَ قَاضِيًا بَيْنَ النَّاسِ فَقَدْ ذُبِحَ بِغَيْرِ سِكِّينٍ

عن ابى هريرة ان رسول الله ﷺ قال من ولى القضاء فقد ذبح بغير سكين وفي رواية من جعل قاضيا بين الناس فقد ذبح بغير سكين

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৮) বুরাইদা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কাযী (বিচারক) তিন প্রকার। এদের মধ্যে একজন জান্নাতী এবং অপর দু’জন জাহান্নামী।

জান্নাতী হল সেই বিচারক যে ’হক’ (সত্য) জানল এবং সেই অনুযায়ী বিচার করল। আর যে বিচারক ’হক’ জানা সত্ত্বেও অবিচার করল সে জাহান্নামী এবং যে বিচারক না জেনে (বিনা ইলমে) লোকেদের বিচার করল সেও জাহান্নামী।

عَنِ بُرَيْدَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ الْقُضَاةُ ثَلاَثَةٌ وَاحِدٌ فِى الْجَنَّةِ وَاثْنَانِ فِى النَّارِ فَأَمَّا الَّذِى فِى الْجَنَّةِ فَرَجُلٌ عَرَفَ الْحَقَّ فَقَضَى بِهِ وَرَجُلٌ عَرَفَ الْحَقَّ فَجَارَ فِى الْحُكْمِ فَهُوَ فِى النَّارِ وَرَجُلٌ قَضَى لِلنَّاسِ عَلَى جَهْلٍ فَهُوَ فِى النَّارِ

عن بريدة عن النبى ﷺ قال القضاة ثلاثة واحد فى الجنة واثنان فى النار فاما الذى فى الجنة فرجل عرف الحق فقضى به ورجل عرف الحق فجار فى الحكم فهو فى النار ورجل قضى للناس على جهل فهو فى النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৭৯৯) উম্মে সালামাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তো একজন মানুষ মাত্র। আর তোমরা আমার নিকট বিচার নিয়ে আসছ। সম্ভবতঃ তোমাদের কেউ কেউ একে অন্যের চাইতে দলীল ও প্রমাণ পেশকরণে অধিক পারদর্শী। ফলে আমি তার নিকট থেকে আমার শোনা মতে তার সপক্ষে ফায়সালা দিয়ে তার ভাইয়ের কিছু হক তাকে দিয়ে দিই, তাহলে সে যেন তার কিছুই গ্রহণ না করে। যেহেতু আমি তো (এ অবস্থায়) তার জন্য (জাহান্নামের) আগুনের একটি অংশ কেটে দিই।

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ وَإِنَّكُمْ تَخْتَصِمُونَ إِلَيَّ وَلَعَلَّ بَعْضَكُمْ أَنْ يَكُونَ أَلْحَنَ بِحُجَّتِهِ مِنْ بَعْضٍ فَأَقْضِي عَلَى نَحْوِ مَا أَسْمَعُ فَمَنْ قَضَيْتُ لَهُ مِنْ حَقِّ أَخِيهِ شَيْئًا فَلَا يَأْخُذْهُ فَإِنَّمَا أَقْطَعُ لَهُ قِطْعَةً مِنْ النَّارِ

عن ام سلمة قالت قال رسول الله ﷺ انما انا بشر وانكم تختصمون الي ولعل بعضكم ان يكون الحن بحجته من بعض فاقضي على نحو ما اسمع فمن قضيت له من حق اخيه شيىا فلا ياخذه فانما اقطع له قطعة من النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০০) আবূ উমামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজের কসম দ্বারা কোন মুসলিমের অধিকার হরণ করে, সে ব্যক্তির জন্য আল্লাহ দোযখ ওয়াজেব এবং জান্নাত হারাম করে দেন। লোকেরা বলল, ’যদিও সামান্য কিছু হয় তাও, হে আল্লাহর রসূল!’ বললেন, যদিও বা পিল্লু (গাছের) একটি ডালও হয়।

عَنْ أَبِى أُمَامَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ مَنِ اقْتَطَعَ حَقَّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِيَمِينِهِ فَقَدْ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ النَّارَ وَحَرَّمَ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ وَإِنْ كَانَ شَيْئًا يَسِيرًا يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ وَإِنْ قَضِيبًا مِنْ أَرَاكٍ

عن ابى امامة ان رسول الله ﷺ قال من اقتطع حق امرى مسلم بيمينه فقد اوجب الله له النار وحرم عليه الجنة فقال له رجل وان كان شيىا يسيرا يا رسول الله قال وان قضيبا من اراك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০১) আবূ যার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন জিনিস দাবী করে যা তার নয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়। আর সে যেন নিজের ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়।

عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ قَالَ رسول الله ﷺ مَنِ ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ فَلَيْسَ مِنَّا وَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ

عن ابي ذر قال قال رسول الله ﷺ من ادعى ما ليس له فليس منا وليتبوا مقعده من النار

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০২) খাওলা আনসারিয়্যাহ (রাঃ) বলেন, তিনি শুনেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় কিছু লোক আল্লাহর মাল নাহক ব্যয়-বন্টন করবে। সুতরাং তাদের জন্য কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুন রয়েছে।

عَنْ خَوْلَةَ الْأَنْصَارِيَّةِ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ ﷺ يَقُولُ إِنَّ رِجَالًا يَتَخَوَّضُونَ فِي مَالِ اللهِ بِغَيْرِ حَقٍّ فَلَهُمْ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

عن خولة الانصارية رضي الله عنها قالت سمعت النبي ﷺ يقول ان رجالا يتخوضون في مال الله بغير حق فلهم النار يوم القيامة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০৩) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এই নেতৃত্ব থাকবে কুরাইশদের মাঝে। যতক্ষণ তাদের কাছে দয়া ভিক্ষা করা হলে তারা দয়া করবে, বিচার করলে ইনসাফ করবে, বিতরণ করলে ন্যায়ভাবে করবে। তাদের মধ্যে যে তা করবে না, তার উপর আল্লাহ, ফিরিশতামণ্ডলী এবং সমস্ত মানবমণ্ডলীর অভিশাপ। তার নিকট থেকে নফল-ফরয কোন ইবাদতই কবূল করা হবে না।

عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ رسوال الله ﷺ إِنَّ هَذَا الْأَمْرَ فِي قُرَيْشٍ مَا دَامُوا إِذَا اسْتُرْحِمُوا رَحِمُوا وَإِذَا حَكَمُوا عَدَلُوا وَإِذَا قَسَمُوا أَقْسَطُوا فَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ مِنْهُمْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ لَا يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ

عن انس قال قال رسوال الله ﷺ ان هذا الامر في قريش ما داموا اذا استرحموا رحموا واذا حكموا عدلوا واذا قسموا اقسطوا فمن لم يفعل ذلك منهم فعليه لعنة الله والملاىكة والناس اجمعين لا يقبل منه صرف ولا عدل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০৪) আব্দুল্লাহ বিন আবী আওফা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় মহান আল্লাহ বিচারকের সাথে থাকেন, যতক্ষণ সে অন্যায় বিচার করে না। অতঃপর সে যখন অন্যায় বিচার করে, তখন তিনি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং শয়তানকে তার সাথী বানিয়ে দেন।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِى أَوْفَى قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ مَعَ الْقَاضِى مَا لَمْ يَجُرْ فَإِذَا جَارَ بَرِئَ اللهُ مِنْهُ وَأَلْزَمَهُ الشَّيْطَانُ

عن عبد الله بن ابى اوفى قال قال رسول الله ﷺ ان الله مع القاضى ما لم يجر فاذا جار برى الله منه والزمه الشيطان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০৫) আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) সম্পর্কে এসেছে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে খায়বারের ইয়াহুদীদের নিকট পাঠালেন, সেখানকার ফলসমূহ ও ফসলাদি অনুমান ক’রে দেখে আসার জন্য। ইয়াহুদীরা তাঁকে ঘুষ পেশ করল; যাতে তিনি তাদের ব্যাপারে একটু শিথিলতা প্রদর্শন করেন। তিনি বললেন, ’আল্লাহর কসম! আমি তাঁর পক্ষ হতে প্রতিনিধি হয়ে এসেছি, যিনি দুনিয়ায় আমার কাছে সব থেকে বেশী প্রিয়তম এবং তোমরা আমার নিকট সর্বাধিক অপ্রিয়। কিন্তু স্বীয় প্রিয়তমের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং তোমাদের প্রতি আমার শত্রুতা আমাকে তোমাদের ব্যাপারে সুবিচার না করার উপর উদ্বুদ্ধ করতে পারবে না।’ এ কথা শুনে তারা বলল, ’এই সুবিচারের কারণেই আসমান ও যমীনের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে।’

قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنِ رَوَاحَةَ لَمَّا بَعَثَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُخْرِصُ عَلَى أَهْلِ خَيْبَرَ ثِمَارَهُمْ وَزُرُوعَهُمْ، فَأَرَادُوْا أَنْ يَرشُّوْهُ لَيَرْفَقُ بِهِمْ فَقَالَ: وَاللهِ لَقَدْ جِئْتُكُمْ مِنْ عِنْدَ أَحَبَّ الخَلْقِ إِليَ وَلَأَنْتُمْ أَبْغَضُ إِلَي مِنْ أَعْدَادِكُمْ مِنَ الْقِرَدَةِ وَالْخَنَازِيْرِ وَمَا يَحْمِلُنِيْ حبي إِيَّاهُ وَبغضي لَكُمْ عَلَى أَنْ لَّا أَعْدِلَ فِيْكُمْ فَقَالُوا: بِهَذَا قَامَتِ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ

قال عبد الله بن رواحة لما بعثه النبي صلى الله عليه وسلم يخرص على اهل خيبر ثمارهم وزروعهم، فارادوا ان يرشوه ليرفق بهم فقال: والله لقد جىتكم من عند احب الخلق الي ولانتم ابغض الي من اعدادكم من القردة والخنازير وما يحملني حبي اياه وبغضي لكم على ان لا اعدل فيكم فقالوا: بهذا قامت السموات والارض

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (প্রাচীনকালে) একটি লোক অন্য ব্যক্তির কাছ হতে কিছু জায়গা ক্রয় করল। ক্রেতা ঐ জায়গায় (প্রোথিত) একটি কলসী পেল, যাতে স্বর্ণ ছিল। জায়গার ক্রেতা বিক্রেতাকে বলল, ’তোমার স্বর্ণ নিয়ে নাও। আমি তো তোমার জায়গা খরিদ করেছি, স্বর্ণ তো খরিদ করিনি।’ জায়গার বিক্রেতা বলল, ’আমি তোমাকে জায়গা এবং তাতে যা কিছু আছে সবই বিক্রি করেছি।’ অতঃপর তারা উভয়েই এক ব্যক্তির নিকট বিচার প্রার্থী হল। বিচারক ব্যক্তি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’তোমাদের সন্তান আছে কি?’ তাদের একজন বলল, ’আমার একটি ছেলে আছে।’ অপরজন বলল, ’আমার একটি মেয়ে আছে।’ বিচারক বললেন, ’তোমরা ছেলেটির সাথে মেয়েটির বিয়ে দিয়ে দাও এবং ঐ স্বর্ণ থেকে তাদের জন্য খরচ কর এবং দান কর।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَاِشْتَرَى رَجُلٌ مِنْ رَجُلٍ عَقَاراً فَوَجَدَ الَّذِيْ اشْتَرَى العَقَارَ فِي عَقَارِهِ جَرَّةً فِيهَا ذَهَبٌ فَقَالَ لَهُ الَّذِي اشْتَرَى العَقَارَ : خُذْ ذَهَبَكَ إنَّمَا اشْتَرَيْتُ مِنْكَ الأَرْضَ وَلَمْ أَشْتَرِ الذَّهَبَ وَقَالَ الَّذِي لَهُ الأَرْضُ : إِنَّمَا بِعْتُكَ الأَرْضَ وَمَا فِيهَا فَتَحَاكَمَا إِلَى رَجُلٍ فَقَالَ الَّذِي تَحَاكَمَا إِلَيْهِ : أَلَكُمَا وَلَدٌ ؟ قَالَ أَحَدُهُمَا : لِي غُلاَمٌ وَقَالَ الآخَرُ : لِي جَارِيَةٌ، قَالَ : أَنْكِحَا الغُلاَمَ الجَارِيَةَ وَأَنْفِقَا عَلَى أَنْفُسِهمَا مِنْهُ وَتَصَدَّقَا متفق عليه

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قالاشترى رجل من رجل عقارا فوجد الذي اشترى العقار في عقاره جرة فيها ذهب فقال له الذي اشترى العقار : خذ ذهبك انما اشتريت منك الارض ولم اشتر الذهب وقال الذي له الارض : انما بعتك الارض وما فيها فتحاكما الى رجل فقال الذي تحاكما اليه : الكما ولد ؟ قال احدهما : لي غلام وقال الاخر : لي جارية، قال : انكحا الغلام الجارية وانفقا على انفسهما منه وتصدقا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন

পরিচ্ছেদঃ ন্যায়-বিচার ও ন্যায়পরায়ণ শাসকের মাহাত্ম্য

(১৮০৭) উক্ত রাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, দু’জন মহিলার সাথে তাদের দু’টি ছেলে ছিল। একদা একটি নেকড়ে বাঘ এসে তাদের মধ্যে একজনের ছেলেকে নিয়ে গেল। একজন মহিলা তার সঙ্গিনীকে বলল, ’বাঘে তোমার ছেলেকেই নিয়ে গেছে।’ অপরজন বলল, ’তোমার ছেলেকেই বাঘে নিয়ে গেছে।’ সুতরাং তারা দাঊদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বিচারপ্রার্থিনী হল। তিনি (অবশিষ্ট ছেলেটি) বড় মহিলাটির ছেলে বলে ফায়সালা করে দিলেন। অতঃপর তারা দাঊদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুত্র সুলায়মান সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বের হয়ে গিয়ে উভয়েই আনুপূর্বিক ঘটনাটি বর্ণনা করল। তখন তিনি বললেন, ’আমাকে একটি চাকু দাও। আমি একে দু টুকরো করে দু’জনের মধ্যে ভাগ ক’রে দেব।’ তখন ছোট মহিলাটি বলল, ’আপনি এরূপ করবেন না। আল্লাহ আপনাকে রহম করুন। ছেলেটি ওরই।’ তখন তিনি ছেলেটি ছোট মহিলার (নিশ্চিত জেনে) ফায়সালা দিলেন।

وَعَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُكَانَتِ امْرَأَتَانِ مَعَهُمَا ابْنَاهُمَا جَاءَ الذِّئْبُ فَذَهَبَ بِابْنِ إِحْدَاهُمَا فَقَالَتْ لِصَاحِبَتِهَا : إِنَّمَا ذَهَبَ بِابْنِكِ وَقَالَتِ الأُخْرَى : إِنَّمَا ذَهَبَ بِابْنِكِ، فَتَحَاكَمَا إِلَى دَاوُدَ ﷺ فَقَضَى بِهِ لِلْكُبْرَى فَخَرَجَتَا عَلَى سُلَيْمَانَ بْنِ دَاوُدَ ﷺ فَأَخْبَرَتَاهُ فَقَالَ : ائْتُونِي بِالسِّكِّينِ أَشُقُّهُ بَيْنَهُمَا فَقَالَتِ الصُّغْرَى : لاَ تَفْعَلْ رَحِمَكَ اللهُ هُوَ ابْنُهَا فَقَضَى بِهِ لِلصُّغْرَى متفق عليه

وعنه انه سمع رسول الله ﷺ يقولكانت امراتان معهما ابناهما جاء الذىب فذهب بابن احداهما فقالت لصاحبتها : انما ذهب بابنك وقالت الاخرى : انما ذهب بابنك، فتحاكما الى داود ﷺ فقضى به للكبرى فخرجتا على سليمان بن داود ﷺ فاخبرتاه فقال : اىتوني بالسكين اشقه بينهما فقالت الصغرى : لا تفعل رحمك الله هو ابنها فقضى به للصغرى متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১৮/ শাসন
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে