পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৭৬) মুআয (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির শেষ কথা ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হবে (অর্থাৎ এই কালেমা পড়তে পড়তে যার মৃত্যু হবে), সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
عَنْ مُعَاذٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ كَانَ آخِرَ كَلامِهِ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ دَخَلَ الجَنَّةَ رواه أَبُو داود والحاكم وَقَالَ صحيح الإسناد
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৭৭) হুযাইফা (রাঃ) বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার বুকে লাগালাম। অতঃপর তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে ’লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলে এবং সেটাই তার শেষ কথা হয় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে একদিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সিয়াম রাখে এবং সেটাই তার শেষ আমল হয় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কিছু সাদকাহ করে এবং সেটা তার শেষ কর্ম হয় তবে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে।
عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ أَسْنَدْتُ النَّبِيَّ ﷺ إِلَى صَدْرِي فَقَالَ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ صَامَ يَوْمًا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ خُتِمَ لَهُ بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৭৮) জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (কিয়ামতের দিন) প্রত্যেক ব্যক্তিকে ঐ অবস্থায় উঠানো হবে, যে অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেছে।
عَن جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُبْعَثُ كُلُّ عَبْدٍ عَلَى مَا مَاتَ عَلَيهِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৭৯) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মুমূর্ষু ব্যক্তিদেরকে ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দাও।
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِي قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮০) মুসাইয়িব কর্তৃক বর্ণিত, আবূ তালেবের যখন মৃত্যুর সময় হল, তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, চাচাজান! আপনি কালিমা ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়ে নিন। আমি আল্লাহর দরবারে আপনার জন্য সাক্ষ্য দেব। এই কালিমা দলীল স্বরূপ পেশ করে আপনার পরিত্রাণের জন্য সুপারিশ করব। কিন্তু পাশে বড় বড় নেতা বসে ছিল। আবূ জাহল, আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়া বলল, আপনি কি শেষ অবস্থায় বিধর্মী হয়ে মরবেন? আপনি কি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবেন? যতবার মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উপর পরিত্রাণের জন্য ঐ কালেমা পেশ করেন, ততবার তারা তা নাকচ করে দেয়। ফলে কালিমা না পড়েই তাঁর জীবন-লীলা সাঙ্গ হয়।
عَنْ الْمُسَيَّبِ قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلٍ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِى أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَا عَمِّ قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللهِ فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِى أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ وَيُعِيدُ لَهُ تِلْكَ الْمَقَالَةَ حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮১) আনাস (রাঃ) বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক (মরণাপন্ন) ব্যক্তিকে দেখা করতে গিয়ে বললেন, হে মামা! ’লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বল। লোকটি বলল, মামা নাকি চাচা? তিনি বললেন, বরং মামা। অতঃপর লোকটি বলল, ’লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলা কি আমার জন্য কল্যাণকর? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অবশ্যই।
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ دَخَلَ عَلَى رَجُلٍ مِنْ بَنِي النَّجَّارِ يَعُودُهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ (يَا خَالُ قُلْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ) فَقَالَ أَوَخَالٌ أَنَا أَوْ عَمٌّ فَقَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَا بَلْ خَالٌ) فَقَالَ لَهُ قَوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ هُوَ خَيْرٌ لِي قَالَ نَعَمْ
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮২) আনাস (রাঃ) বলেন, একজন ইহুদী কিশোর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করত। সে পীড়িত হলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখা করতে এলেন এবং তার মাথার পাশে বসে বললেন, ইসলাম গ্রহণ কর (তুমি মুসলিম হয়ে যাও)। তাঁর এই কথা শুনে সে তার পিতার দিকে (তার মত জানতে) দৃষ্টিপাত করল। তার পিতা তার নিকটেই বসে ছিল। সে বলল, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা তুমি মেনে নাও। ফলে কিশোরটি মুসলিম হয়ে গেল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলতে বলতে বের হয়ে গেলেন, সেই আল্লাহর সকল প্রশংসা যিনি ওকে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে নিলেন। (আহমাদ ১২৭৯২, বুখারী ১৩৫৬)
তারপর কিশোরটি মারা গেলে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা তোমাদের এক সাথীর উপর (জানাযার) নামায পড়। (আহমাদ ১৩৭৩৬)
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ غُلَامٌ يَهُودِيٌّ يَخْدُمُ النَّبِيَّ ﷺ فَمَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ ﷺ يَعُودُهُ فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَقَالَ لَهُ أَسْلِمْ فَنَظَرَ إِلَى أَبِيهِ وَهُوَ عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُ أَطِعْ أَبَا الْقَاسِمِ ﷺ فَأَسْلَمَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ ﷺ وَهُوَ يَقُولُ الْحَمْدُ لِلهِ الَّذِي أَنْقَذَهُ مِنْ النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮৩) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! তার মানে কি মরণকে অপছন্দ করা? আমরা তো সকলেই মরণকে অপছন্দ করি। তিনি বললেন, ব্যাপারটি এরূপ নয়। প্রকৃত ব্যাপার এই যে, (মৃত্যুর সময়) মু’মিনকে যখন আল্লাহর করুণা, তাঁর সন্তুষ্টি তথা জান্নাতের সুসংবাদ শুনানো হয়, তখন সে আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভকেই পছন্দ করে, আর আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর কাফেরের (অন্তিমকালে) যখন তাকে আল্লাহর আযাব ও তাঁর অসন্তুষ্টির সংবাদ দেওয়া হয়, তখন সে আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ অপছন্দ করে। আর আল্লাহও তার সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ أَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ كَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ أَكَراهِيَةُ المَوتِ فَكُلُّنَا نَكْرَهُ المَوتَ ؟ قَالَ لَيْسَ كَذَلِكَ وَلَكِنَّ المُؤْمِنَ إِذَا بُشِّرَ بِرَحْمَةِ اللهِ وَرِضْوَانِهِ وَجَنَّتِهِ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ فَأَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَإِنَّ الكَافِرَ إِذَا بُشِّرَ بِعَذابِ اللهِ وَسَخَطهِ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ وَكَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮৪) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুমিনের মৃত্যুকালে তার কপালে ঘাম ঝরে।
عن بُرَيْدَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَمُوتُ بِعَرَقِ الْجَبِينِ
পরিচ্ছেদঃ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে
(১২৮৫) আয়েশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইন্তেকাল করলেন তখন তাঁকে চেককাটা ইয়ামানী চাদর দ্বারা ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।
عن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قالت: إَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ حِينَ تُوُفِّيَ سُجِّيَ بِبُرْدٍ حِبَرَةٍ