পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেছেন,
إنَّ الصَّلاَةَ تَنْهَى عَن الفَحْشَاءِ وَالمُنْكَرِ
অর্থাৎ, নিশ্চয় নামায অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ হতে বিরত রাখে। (আনকাবূত ৪৫ আয়াত)
(৬৩৬) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের দুনিয়ার মধ্যে আমার কাছে স্ত্রী ও খোশবুকে প্রিয় করা হয়েছে। আর নামাযকে করা হয়েছে আমার চক্ষুশীতলতা।
عَن أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ حُبِّبَ إِلَيَّ مِنْ الدُّنْيَا النِّسَاءُ وَالطِّيبُ وَجُعِلَ قُرَّةُ عَيْنِي فِي الصَّلَاةِ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৩৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আদম-সন্তান এমন কোন কাজ করেনি, যা নামায, সদ্ভাব প্রতিষ্ঠা ও সচ্চরিত্রতা থেকে অধিক শ্রেষ্ঠ হতে পারে।
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ شَيْئاً أَفْضَلَ مِنَ الصَّلاَةِ وَصَلاَحِ ذَاتِ الْبَيْنِ وَخُلُقِ حَسَنٍ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৩৮) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, সর্বশ্রেষ্ঠ আমল কী? উত্তরে তিনি বললেন, নামায। সে আবার বলল, তারপর কী? তিনি বললেন, নামায। সে আবার বলল, তারপর কী? তিনি বললেন, নামায। এইরূপ তিনবার বললেন।
عَبْدِ اللهِ بْنَ عَمْرٍو قَالَ: إِنَّ رَجُلاً جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَهُ عَن أَفْضَلِ الأَعْمَالِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : الصَّلاَةُ قَالَ : ثُمَّ مَهْ ؟ قَالَ : الصَّلاَةُ قَالَ : ثُمَّ مَهْ ؟ قَالَ : الصَّلاَةُ (ثَلاثَ مَرَّاتٍ)
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৩৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন, আচ্ছা তোমরা বল তো, যদি কারোর বাড়ির দরজার সামনে একটি নদী থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার ক’রে গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে কি? সাহাবীরা বললেন, (না,) কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। তিনি বললেন, পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণও সেইরূপ। এর দ্বারা আল্লাহ পাপরাশি নিশ্চিহ্ন করে দেন।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ أَرَأيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرَاً بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ ؟ قَالُوْا : لاَ يَبْقَى مِنْ دَرنهِ شَيْءٌ قَالَ فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ يَمْحُو اللهُ بِهِنَّ الخَطَايَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৪০) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণ ঠিক প্রবাহিত নদীর ন্যায়, যা তোমাদের কোন ব্যক্তির দরজার পাশে থাকে; যাতে সে প্রত্যহ পাঁচবার করে গোসল করে থাকে।
وَعَن جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الخَمْسِ كَمَثَلِ نَهْرٍ جَارٍ غَمْرٍ عَلَى بَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَومٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৪১) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এক মহিলাকে চুমা (চুমু) দিয়ে ফেলে। অতঃপর সে (অনুতপ্ত হয়ে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে ঘটনাটি বলে। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করেন, যার অর্থঃ তুমি নামায প্রতিষ্ঠা কর দিবসের দুই প্রান্তে এবং রাত্রির প্রথম ভাগে, নিশ্চয় পুণ্য কর্মাদি পাপরাশিকে বিদূরিত করে থাকে। (সূরা হূদ ১১৪ আয়াত) লোকটি বলল, এ বিধান কি কেবল আমার জন্য? তিনি বললেন, আমার উম্মতের সকলের জন্য।
وَعَن ابنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَجُلاً أَصَابَ مِنِ امْرَأَةٍ قُبْلَةً فَأتَى النَّبيَّ ﷺ فَأَخْبَرَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفاً مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ الرَّجُلُ أَلِيَ هَذَا ؟ قَالَ لِجَمِيعِ أُمَّتِي كُلِّهِمْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৪২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্তের নামায, এক জুমআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত এর মধ্যবর্তী সময়ে যেসব পাপ সংঘটিত হয়, সে সবের মোচনকারী হয় (এই শর্তে যে,) যদি মহাপাপে লিপ্ত না হয়।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ الصَّلَوَاتُ الخَمْسُ وَالجُمُعَةُ إِلَى الجُمُعَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ مَا لَمْ تُغشَ الكَبَائِرُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৪৩) উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি ফরয নামাযের জন্য ওযূ করবে এবং উত্তমরূপে ওযূ সম্পাদন করবে। (অতঃপর) তাতে উত্তমরূপে ভক্তি-বিনয়-নম্রতা প্রদর্শন করবে এবং উত্তমরূপে ’রুকু’ সমাধা করবে। তাহলে তার নামায পূর্বে সংঘটিত পাপরাশির জন্য কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হয়ে যাবে; যতক্ষণ মহাপাপে লিপ্ত না হবে। আর এ (রহমতে ইলাহীর ধারা) সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য।
وَعَن عُثمَانَ بنِ عَفَّانَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَا مِنِ امْرِئٍ مُسْلِمٍ تَحْضُرُهُ صَلاَةٌ مَكْتُوبَةٌ فَيُحْسِنُ وُضُوءَهَا وَخُشُوعَهَا وَرُكُوعَهَا إِلاَّ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا قَبْلَهَا مِنَ الذُّنُوب مَا لَمْ تُؤتَ كَبِيرةٌ وَذَلِكَ الدَّهْرَ كُلَّهُ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ নামাযের ফযীলত
(৬৪৪) আবু উসমান (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা একটি গাছের নিচে আমি সালমান (রাঃ) এর সাথে (বসে) ছিলাম। তিনি গাছের একটি শুষ্ক ডাল ধরে হিলিয়ে দিলেন। এতে ডালের সমস্ত পাতাগুলি ঝরে গেল। অতঃপর তিনি বললেন, হে আবু উসমান! তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না কি যে, কেন আমি এরূপ করলাম? আমি বললাম, কেন করলেন? তিনি বললেন, একদা আমিও আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে গাছের নিচে ছিলাম। তিনি আমার সামনে অনুরূপ করলেন; গাছের একটি শুষ্ক ডাল ধরে হিলিয়ে দিলেন। এতে তার সমস্ত পাতা খসে পড়ল।
অতঃপর বললেন, হে সালমান! তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না কি যে, কেন আমি এরূপ করলাম? আমি বললাম, কেন করলেন? তিনি উত্তরে বললেন, মুসলিম যখন সুন্দরভাবে ওযু করে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে তখন তার পাপরাশি ঠিক ঐভাবেই ঝরে যায় যেভাবে এই পাতাগুলো ঝরে গেল। আর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন,
وَأَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفاً مِّنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّآتِ ذلِكَ ذِكْرى لِلذَّاكِرِيْنَ
অর্থাৎ, আর তুমি দিনের দু’ প্রান্তভাগে ও রাতের প্রথামাংশে নামায কায়েম কর। পুণ্যরাশি অবশ্যই পাপরাশিকে দূরীভূত করে দেয়। (আল্লাহর) স্মরণকারীদের জন্য এ হল এক স্মরণ। (সূরা হূদ ১১৪ আয়াত)
عَنْ أَبيْ عُثْمَانَ قَالَ كُنْتُ مَعَ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ تَحْتَ شَجَرَةٍ وَأَخَذَ مِنْهَا غُصْنًا يَابِسًا فَهَزَّهُ حَتَّى تَحَاتَّ وَرَقُهُ ثُمَّ قَالَ يَا أَبَا عُثْمَانَ أَلَا تَسْأَلُنِي لِمَ أَفْعَلُ هَذَا قُلْتُ وَلِمَ تَفْعَلُهُ فَقَالَ هَكَذَا فَعَلَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَنَا مَعَهُ تَحْتَ شَجَرَةٍ فَأَخَذَ مِنْهَا غُصْنًا يَابِسًا فَهَزَّهُ حَتَّى تَحَاتَّ وَرَقُهُ فَقَالَ يَا سَلْمَانُ أَلَا تَسْأَلُنِي لِمَ أَفْعَلُ هَذَا فَقُلْتُ وَلِمَ تَفْعَلُهُ قَالَ إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ صَلَّى الصَّلَوَاتِ الْخَمْسَ تَحَاتَّتْ خَطَايَاهُ كَمَا يَتَحَاتُّ هَذَا الْوَرَقُ وَقَالَ وَأَقِمْ الصَّلَاةَ طَرَفَيْ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنْ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ