পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৩৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাত্রে স্বপ্নে আমার রব তাবারাকা অতা’আলা সুন্দর আকৃতিতে আমার কাছে এসে বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশতা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, ’না।’ অতঃপর তিনি তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন। এমনকি আমি আমার বক্ষস্থলে তার শীতলতা অনুভব করলাম। সুতরাং (তার ফলে) আমি জানতে পারলাম আসমানে যা আছে এবং যমীনে যা আছে।

অতঃপর তিনি বললেন, ’হে মুহাম্মাদ! তুমি কি জানো, সর্বোচ্চ ফিরিশতা-সভা কী বিষয়ে বাদানুবাদ করে?’ আমি বললাম, ’হ্যাঁ। কাফফারা (পাপের প্রায়শ্চিত্ত) ও মর্যাদাসমূহের ব্যাপারে। কাফফারা হল, নামায আদায়ের পর মসজিদে অবস্থান করা, জামাআতের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টের সময় পূর্ণরূপে উযূ করা। আর মর্যাদাসমূহ হল, সালাম প্রচার করা, অন্নদান করা এবং রাতে লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন নামায পড়া। তিনি বললেন, ’সত্য বলেছ। যে এগুলি পালন করবে, সে কল্যাণের সাথে জীবন-যাপন করবে, কল্যাণের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং সে সেদিনকার মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল।---’

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ عَن النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَتَانِى رَبِّى فِى أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّى وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ رَبِّى لاَ أَدْرِى فَوَضَعَ يَدَهُ بَيْنَ كَتِفَىَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَعَلِمْتُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قَالَ يَا مُحَمَّدُ فَقُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ وَسَعْدَيْكَ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأُ الأَعْلَى قُلْتُ فِى الدَّرَجَاتِ وَالْكَفَّارَاتِ وَفِى نَقْلِ الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغِ الْوُضُوءِ فِى الْمَكْرُوهَاتِ وَانْتِظَارِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ وَمَنْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّه

عن ابن عباس عن النبى صلى الله عليه وسلم قال اتانى ربى فى احسن صورة فقال يا محمد قلت لبيك ربى وسعديك قال فيم يختصم الملا الاعلى قلت ربى لا ادرى فوضع يده بين كتفى فوجدت بردها بين ثديى فعلمت ما بين المشرق والمغرب قال يا محمد فقلت لبيك رب وسعديك قال فيم يختصم الملا الاعلى قلت فى الدرجات والكفارات وفى نقل الاقدام الى الجماعات واسباغ الوضوء فى المكروهات وانتظار الصلاة بعد الصلاة ومن يحافظ عليهن عاش بخير ومات بخير وكان من ذنوبه كيوم ولدته امه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৩৯) আবূ যার্র বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ’আপনি কি আপনার প্রতিপালককে দেখেছেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’নূর, তাঁকে কীরূপে দেখা সম্ভব?

অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, আমি নূর দেখেছি।

عَن أَبِى ذَرٍّ قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ هَلْ رَأَيْتَ رَبَّكَ؟ قَالَ نُورٌ أَنَّى أَرَاهُ

عن ابى ذر قال سالت رسول الله ﷺ هل رايت ربك؟ قال نور انى اراه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৪০) আবূ মূসা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাঁর পর্দা (অন্তরাল) হল নূর (জ্যোতি)। যে পর্দা উন্মোচিত হলে তাঁর আনন-দীপ্তি সমস্ত সৃষ্টিকুলকে দগ্ধীভূত করে ফেলবে।

عَن أَبِى مُوسَى قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ حِجَابُهُ النُّورُ لَوْ كَشَفَهُ لأَحْرَقَتْ سُبُحَاتُ وَجْهِهِ مَا انْتَهَى إِلَيْهِ بَصَرُهُ مِنْ خَلْقِهِ

عن ابى موسى قال قال رسول الله ﷺ حجابه النور لو كشفه لاحرقت سبحات وجهه ما انتهى اليه بصره من خلقه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৪১) উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মরণের পূর্বে কখনই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবে না।

عَن عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَنَّكُمْ لَنْ تَرَوْنَ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالَى حَتَّى تَمُوتُوا (قَالَ يَزِيدُ) تَرَوْا رَبَّكُمْ حَتَّى تَمُوْتُوا

عن عبادة بن الصامت قال قال رسول الله ﷺ وانكم لن ترون ربكم تبارك وتعالى حتى تموتوا (قال يزيد) تروا ربكم حتى تموتوا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান

পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর দীদার

(৪২) মাসরূক (রহঃ) বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) এর নিকট হেলান দিয়ে বসে ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেন, ’হে আবূ আয়েশা! যে ব্যক্তি তিনটের মধ্যে একটি কথা বলে, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করেঃ

(১) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ তাঁর প্রতিপালক (আল্লাহ) কে দেখেছেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। যেহেতু আল্লাহ বলেন,


﴿لاَّ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ﴾

দৃষ্টিসমূহ তাঁকে আয়ত্ব করতে পারে না, কিন্তু দৃষ্টিসমূহ তাঁর আয়ত্বে আছে এবং তিনিই সুক্ষদর্শী; সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরা আনআমঃ ১০৩)

﴿وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاء حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاء إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ﴾

কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন ওহীর (প্রত্যাদেশ) মাধ্যম ব্যতিরেকে, অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা কোন দূত প্রেরণ ব্যতিরেকে; আর তখন আল্লাহ যা চান তা তাঁর অনুমতিক্রমে অহী (প্রত্যাদেশ) করেন; নিঃসন্দেহে তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময়। (শূরাঃ ৫১)

বর্ণনাকারী মাসরূক বলেন, আমি হেলান দিয়ে বসে ছিলাম। এ কথা শুনে সোজা হয়ে বসে বললাম, ’হে উম্মুল মু’মিনীন! একটু থামুন, আমার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবেন না। আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি যে,

(وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى)

’নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল।’ (নাজমঃ ১৩) ’অবশ্যই সে তাকে স্পষ্ট দিগন্তে দর্শন করেছে।’ (তাকভীরঃ ২৩)

মা আয়েশা বললেন, ’আল্লাহর কসম! আমি এ ব্যাপারে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেন,

﴿إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ لَمْ أَرَهُ عَلَى صُورَتِهِ الَّتِى خُلِقَ عَلَيْهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ﴾

তিনি হলেন জিবরীল। তাঁকে ঐ দুইবার ছাড়া অন্য বারে তাঁর সৃষ্টিগত আসল রূপে দর্শন করিনি। যখন তিনি আসমানে অবতরণরত ছিলেন, তাঁর বিরাট সৃষ্টি-আকৃতি আকাশ-পৃথিবীর মধ্যবর্তী স্থানকে ঘিরে রেখেছিল!

(২) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর অবতীর্ণ কিছু অহী গোপন করেছেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। অথচ আল্লাহ বলেন, হে রসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা প্রচার কর, (যদি তা না কর, তাহলে তো তুমি তাঁর বার্তা প্রচার করলে না।) (সূরা মা’য়িদাহ ৬৭ আয়াত)

(৩) যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ ভবিষ্যতের খবর জানেন, সে আল্লাহর প্রতি বিরাট মিথ্যা আরোপ করে। অথচ আল্লাহ বলেন, বল, আল্লাহ ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না। (নামলঃ ৬৫)

عَن مَسْرُوقٍ قَالَ كُنْتُ مُتَّكِئًا عَندَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ يَا أَبَا عَائِشَةَ ثَلاَثٌ مَنْ تَكَلَّمَ بِوَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللهِ الْفِرْيَةَ قُلْتُ مَا هُنَّ قَالَتْ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا ﷺ رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللهِ الْفِرْيَةَ قَالَ وَكُنْتُ مُتَّكِئًا فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَنْظِرِينِى وَلاَ تَعْجَلِينِى أَلَمْ يَقُلِ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ(وَلَقَدْ رَآهُ بِالأُفُقِ الْمُبِينِ) (وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَى فَقَالَتْ أَنَا أَوَّلُ هَذِهِ الأُمَّةِ سَأَلَ عَن ذَلِكَ رَسُولَ اللهِ ﷺ فَقَالَ إِنَّمَا هُوَ جِبْرِيلُ لَمْ أَرَهُ عَلَى صُورَتِهِ الَّتِى خُلِقَ عَلَيْهَا غَيْرَ هَاتَيْنِ الْمَرَّتَيْنِ رَأَيْتُهُ مُنْهَبِطًا مِنَ السَّمَاءِ سَادًّا عِظَمُ خَلْقِهِ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ فَقَالَتْ أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللهَ يَقُولُ(لاَ تُدْرِكُهُ الأَبْصَارُ وَهُوَ يُدْرِكُ الأَبْصَارَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ) أَوَلَمْ تَسْمَعْ أَنَّ اللهَ يَقُولُ (وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَنْ يُكَلِّمَهُ اللهُ إِلاَّ وَحْيًا أَوْ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولاً فَيُوحِىَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِىٌّ حَكِيمٌ) قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ كَتَمَ شَيْئًا مِنْ كِتَابِ اللهِ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللهِ الْفِرْيَةَ وَاللهُ يَقُولُ (يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ قَالَتْ وَمَنْ زَعَمَ أَنَّهُ يُخْبِرُ بِمَا يَكُوْنُ فِى غَدٍ فَقَدْ أَعْظَمَ عَلَى اللهِ الْفِرْيَةَ وَاللهُ يَقُولُ (قُلْ لاَ يَعْلَمُ مَنْ فِى السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ الْغَيْبَ إِلاَّ اللهُ)

عن مسروق قال كنت متكىا عند عاىشة فقالت يا ابا عاىشة ثلاث من تكلم بواحدة منهن فقد اعظم على الله الفرية قلت ما هن قالت من زعم ان محمدا ﷺ راى ربه فقد اعظم على الله الفرية قال وكنت متكىا فجلست فقلت يا ام المومنين انظرينى ولا تعجلينى الم يقل الله عز وجل(ولقد راه بالافق المبين) (ولقد راه نزلة اخرى فقالت انا اول هذه الامة سال عن ذلك رسول الله ﷺ فقال انما هو جبريل لم اره على صورته التى خلق عليها غير هاتين المرتين رايته منهبطا من السماء سادا عظم خلقه ما بين السماء الى الارض فقالت اولم تسمع ان الله يقول(لا تدركه الابصار وهو يدرك الابصار وهو اللطيف الخبير) اولم تسمع ان الله يقول (وما كان لبشر ان يكلمه الله الا وحيا او من وراء حجاب او يرسل رسولا فيوحى باذنه ما يشاء انه على حكيم) قالت ومن زعم ان رسول الله ﷺ كتم شيىا من كتاب الله فقد اعظم على الله الفرية والله يقول (يا ايها الرسول بلغ ما انزل اليك من ربك وان لم تفعل فما بلغت رسالته قالت ومن زعم انه يخبر بما يكون فى غد فقد اعظم على الله الفرية والله يقول (قل لا يعلم من فى السموات والارض الغيب الا الله)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মাসরূক (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১/ ঈমান
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে