পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৪৯৯। ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ’নাকুস’ (ঘণ্টা ধ্বনি) দিয়ে লোকদের সালাতের জন্য একত্র করা নির্দেশ দিলেন, তখন আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি হাতে ঘন্টা নিয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম, হে আল্লাহর বান্দা! ঘন্টাটি বিক্রি করবে কি? লোকটি বললঃ তা দিয়ে তুমি কি করবে? আমি বললাম, আমরা এর সাহায্যে লোকদের সালাতের জন্য ডাকব। লোকটি বলল, আমি কি তোমাকে এর চাইতে উত্তম জিনিস অবহিত করব না? আমি বললাম, অবশ্যই।
লোকটি বলল, তুমি বলবেঃ ’’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস সালাহ, হাইয়্যা ’আলাস সালাহ; হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’ (অর্থঃ আল্লাহু মহান, আল্লাহু সর্বশ্রেষ্ঠ (দুইবার), আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই (দুইবার), আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল (দুইবার), এসো সালাতের দিকে (দুইবার), এসো সফলতার দিকে (দুইবার), আল্লাহু মহান, আল্লাহু মহান, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই।)
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকটি কিছুটা দূরে গিয়ে বলল, যখন সালাতের জন্য দাঁড়াবে তখন বলবেঃ ’’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লালল্লাহু, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস সালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, ক্বাদ্ ক্বামাতিস সালাতু ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’
অতঃপর ভোর হলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে স্বপ্নে দেখা বিষয়টি অবহিত করি। তিনি বললেনঃ এটা স্বপ্ন সত্য, ইনশাআল্লাহ। তুমি উঠো, বিলালকে সাথে নিয়ে গিয়ে তুমি স্বপ্নে যা দেখেছো তা তাকে শিখিয়ে দাও, যেন সে (ঐভাবে) আযান দেয়। কারণ তার কণ্ঠস্বর তোমার কণ্ঠস্বরের চেয়ে উচ্চ। অতঃপর আমি বিলালকে নিয়ে দাঁড়ালাম এবং তাকে (আযানের শব্দগুলো) শিখাতে থাকলাম, বিলাল ঐগুলো উচ্চস্বরে বলতে লাগল। ’উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) নিজ ঘর থেকে আযান শুনতে পেয়ে তৎক্ষনাৎ চাদর টানতে টানতে বের হয়ে আসলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ঐ মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য নবীরূপে পাঠিয়েছেন, আমিও একই স্বপ্নে দেখেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই ....। [1]
হাসান সহীহ।
قَالَ أَبُو دَاوُدَ هَكَذَا رِوَايَةُ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدٍ وَقَالَ فِيهِ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنِ الزُّهْرِيِّ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ " .
- صحيح .
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব হতে ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ সূত্রে যুহরী (রহঃ)-এর বর্ণনায়ও অনুরূপ রয়েছে। তাতে যুহরী সূত্রে ইবনু ইসহাক বলেছেনঃ ’’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’’ (অর্থাৎ আল্লাহু আকবার চারবার বলেছেন)।
সহীহ।
وَقَالَ مَعْمَرٌ وَيُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ فِيهِ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ " . لَمْ يُثَنِّيَا .
- صحيح - لكن أصح تربيع التكبير.
অপরদিকে যুহরী সূত্রে মা’মার ও ইউনুস বলেছেনঃ ’’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার।’’ তারা আল্লাহু আকবার দু’বার বলেছেন, চারবার বলেননি।
সহীহ : কিন্তু তাকবীরে তারবী’ করাটা অধিক সহীহ।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَنْصُورٍ الطُّوسِيُّ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ التَّيْمِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ رَبِّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عَبْدُ اللهِ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ لَمَّا أَمَرَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّاقُوسِ يُعْمَلُ لِيُضْرَبَ بِهِ لِلنَّاسِ لِجَمْعِ الصَّلَاةِ طَافَ بِي وَأَنَا نَائِمٌ رَجُلٌ يَحْمِلُ نَاقُوسًا فِي يَدِهِ فَقُلْتُ يَا عَبْدَ اللهِ أَتَبِيعُ النَّاقُوسَ قَالَ وَمَا تَصْنَعُ بِهِ فَقُلْتُ نَدْعُو بِهِ إِلَى الصَّلَاةِ . قَالَ أَفَلَا أَدُلُّكَ عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ مِنْ ذَلِكَ فَقُلْتُ لَهُ بَلَى . قَالَ فَقَالَ تَقُولُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ قَالَ ثُمَّ اسْتَأْخَرَ عَنِّي غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ قَالَ وَتَقُولُ إِذَا أَقَمْتَ الصَّلَاةَ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ أَتَيْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا رَأَيْتُ فَقَالَ " إِنَّهَا لَرُؤْيَا حَقٌّ إِنْ شَاءَ اللهُ فَقُمْ مَعَ بِلَالٍ فَأَلْقِ عَلَيْهِ مَا رَأَيْتَ فَلْيُؤَذِّنْ بِهِ فَإِنَّهُ أَنْدَى صَوْتًا مِنْكَ " . فَقُمْتُ مَعَ بِلَالٍ فَجَعَلْتُ أُلْقِيهِ عَلَيْهِ وَيُؤَذِّنُ بِهِ - قَالَ - فَسَمِعَ ذَلِكَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَهُوَ فِي بَيْتِهِ فَخَرَجَ يَجُرُّ رِدَاءَهُ وَيَقُولُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ يَا رَسُولَ اللهِ لَقَدْ رَأَيْتُ مِثْلَ مَا رَأَى . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " فَلِلَّهِ الْحَمْدُ "
- حسن صحيح
‘Abd Allah b. Zaid reported :
when the Messenger of Allah (ﷺ) ordered a bell to be made so that it might be struck to gather the people for prayer, a man carrying a bell in his hand appeared to me while I was asleep, and I said; servant of ‘abd Allah, will you sell the bell? He asked; what will you do with it? I replied; we shall use it to call the people to prayer. He said; should I not suggest you something better than that. I replied: certainly. Then he told me to say: Allah is most great, Allah is most great, Allah is most great, Allah is most great. I testify that there is no god but Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah. Come to pray, come to pray; come to salvation; come to salvation. Allah is most great, Allah is most great. I testify that there is no god but Allah. He then moved backward a few steps and said: when you utter the IQAMAH, you should say: Allah is most great, Allah is most great. I testify that there is no god but Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah. Come to prayer, come to salvation. The time for prayer has come, the time for prayer has come: Allah is most great, Allah is most great. There is no god but Allah. When the morning came, I came to the Messenger of Allah (May peace be upon him) and informed him of what I had seen in the dream. He said: it is a genuine vision, and he then should use it to call people to prayer, for he has a louder voice than you have. So I got up along with Bilal and began to teach it to him and he used it in making the call to prayer. ‘Umar b. al-khattab (Allah be pleased with him) heard it while he was in his house and came out trailing his cloak and said: Messenger of Allah. By him who has sent you with the truth, I have also seen the kind of thing as has been shown to him. The Messenger of Allah (May peace be upon him) said: To Allah be the praise. Abu Dawud said; Al-Zuhri narrated this tradition in a similar way from Sa’id b. al-Musayyib on the authority of ‘Abd Allah b. Zaid. In this version Ibn Ishaq narrated from al-Zuhri: Allah is most great. Allah is most great, Allah is most great, Allah is most great. Ma;mar and yunus narrated from al-Zuhri; Allah is most great, Allah is most great. They did not report it twice again.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০০। মুহাম্মাদ ইবনু ’আবদুল মালিক ইবনু আবূ মাহযূরাহ হতে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি [আবূ মাহযূরাহ (রাঃ)] বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের নিয়ম শিখিয়ে দিন। তিনি আমার মাথার সম্মুখ ভাগে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, তুমি বলবেঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার-উচ্চস্বরে। এরপর কিছুটা নীচু স্বরে বলবেঃ আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। হাইয়্যা ’আলাস সলাহ, হাইয়্যা ’আলাস সলাহ। হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ। ফজরের সালাত হলে বলবেঃ আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম, আসালাতু খাইরুম মিনান নাউম (ঘুমের চেয়ে সালাত উত্তম-দু’বার)। আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।[1]
সহীহ।
-
আযান সংক্রান্ত যা জানা জরূরীঃ
(ক) আযানের বিভিন্ন মাসায়িলঃ
(১) উচ্চকণ্ঠ ব্যক্তি ক্বিবলাহমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আযান দিবেন। তিনি দু’ কানে আঙ্গুল প্রবেশ করাবেন, যাতে আযানে জোর হয়। ‘হাইয়া ‘আলাস সলাহ ও হাইয়া ‘আলাল ফালাহ’ বলার সময় যথাক্রমে ডানে ও বামে কেবল মুখ ঘুরাবেন, দেহ নয়- (তিরমিযী, নায়লুল আওত্বার ২/১১৪-১১৬)। যখমী হলে বসেও আযান দেয়া যাবে- (বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল ১/২৪২)।
(২) জরূরী কোনো ওযর না থাকলে আযান শুনে মাসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া সুন্নাতের বরখেলাফ ও ঘোরতর অপরাধ। (সহীহ মুসলিম, ফিক্বহুস সুন্নাহ)।
(৩) যিনি আযান দিবেন, তিনিই ইক্বামাত দিবেন। তবে অন্যেও দিতে পারেন। অবশ্য কোনো মসজিদে নির্দিষ্ট মুয়াজ্জিন থাকলে তার অনুমতি নিয়ে অন্যের আযান ও ইক্বামাত দেয়া উচিত। তবে সময় চলে যাওয়ার উপক্রম হলে যে কেউ আযান দিতে পারেন। (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯০, ৯২)।
(৪) বিনা চাওয়ায় ‘সম্মানী’ গ্রহণ করা চলবে। কেননা মজুরীর শর্তে আযান দেয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। তবে নির্দিষ্ট ও নিয়মিত ইমাম ও মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব গ্রহণ করা সমাজ ও সরকারের উপর অপরিহার্য। (আহমাদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, আবূ দাঊদ-সনদ সহীহ, মিশকাত, ‘দায়িত্বশীলদের ভাতা’ অধ্যায়, হা/ ৩৭৪৮)
(৫) ভুমিষ্ট সন্তানের কানে আযান শুনাতে হয়। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নায়ল ‘আকীকা’ অধ্যায়, ইরওয়া হা/ ১১৭৩)। তবে ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামাত শুনানোর হাদীস যা হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) থেকে মারফূ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে, উক্ত হাদীসটি মাওযু বা জাল। ইরওয়া হা/ ১১৭৪, সিলসিলাহ যঈফাহ হা/ ৩২১)।
(৬) আযান উযু অবস্থায় দেয়া উচিত। তবে বে-উযু অবস্থায় দেয়াও জায়িয আছে। আযানের জওয়াব বা অনুরূপ যে কোনো তাসবীহ, তাহলীল ও দু‘আসমূহ নাপাক অবস্থায় পাঠ করা জায়িয আছে।
(৭) ইক্বামাতের পরে দীর্ঘ বিরতী হলেও পুনরায় ইক্বামাত দিতে হবে না। (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৮৯, ৯২)
(৮) আযান ও জামা‘আত শেষে কেউ মসজিদে এলে কেবল ইক্বামাত দিয়েই জামা‘আত ও সালাত আদায় করা উচিত। (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯১) (তথ্যসূত্রঃ সালাতুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ৪৬ পৃষ্ঠা)।
(৯) মহিলারাও আযান এবং ইক্বামাত দিতে পারবেন। এতে আপত্তি নেই। তবে না দিলেও জায়িয। (ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ প্রমুখের অভিমত এটাই ইবনু আবূ শায়বাহ ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর আযান ও ইক্বামাত দেয়ার হাদীস দ্রঃ ১/২২৩, বাহরূর রায়িক ১/২৫ কেবল ইক্বামাত দেয়ার কথা রয়েছে, মাবসূত ১/১৩৩ আযান ইক্বামাত দু’টোই আলমুগনী ১/৪২২, ফিক্বহুস সুন্নাহ)।
(১০) কয়েক ওয়াক্ত ক্বাযা সালাতের জন্য এক আযান এবং একাধিক ইক্বামাত (অর্থাৎ প্রত্যেক ওয়াক্ত সালাতের জন্য আলাদাভাবে একবার করে ইক্বামাত) দিয়ে সালাত আদায় করবে। (সহীহ মুসলিম, আহমাদ)
(খ) আযানের জওয়াবে বাড়তি বিষয় পরিত্যাজ্যঃ আযানের দু‘আয় কয়েকটি বাড়তি বিষয় চালু রয়েছে, যা পরিহার করা উচিত।
(১) বায়হাক্বীতে বর্ণিত আযানের দু‘আর শুরুতে ‘‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি হাক্বক্বি হাযিহিদ দা‘ওয়াতি।’’ অন্যান্য সহীহ হাদীসসমূহের পরিপন্থি হওয়ার কারণে এ অংশটুকুত শায।
(২) বায়হাক্বীর একই হাদীসে আযানের দু‘আর শেষে ‘‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আদ।’’ এ অংশটুকু শায।
(৩) ত্বাহাভীর শারহু মা‘আনিল আসারে বর্ণিত ‘‘আ-তি সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদান।’’ এ অংশটুকু শায ও মুদরাজ।
(৪) ইবনুস সুন্নীর ‘আমলুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ’ গ্রন্থে বর্ণিত ‘‘ওয়াদ দারাজাতার রফী‘আহ।’’ এটিও কতিপয় পান্ডুলিপির মুদরাজ বর্ণনা। কারণ ইবনুস সুন্নী হাদীসটি তার উস্তাদ ইমাম নাসায়ীর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। অথচ নাসায়ীতে ঐ শব্দ দু’টি নেই, এমন কি অন্যদের নিকটও নেই। ইমাম সাখাবী (রহঃ) বলেন, ঐ শব্দগুলো কোনো হাদীসেই পাওয়া যায় না। হানাফী ‘আলিম ‘আব্দুল্লাহ দেহলভী (রহঃ) বলেন, ঐ দু’টি শব্দ মনে হয় মুদ্রক, প্রকাশক কিংবা সংশোধকের ভুল। আর ইমাম সাখাবীর নিকট ইবনুস সুন্নীর ঐ পান্ডুলিপির ছিলো যাতে উক্ত শব্দ দু’টি ছিলো না। সুতরাং কতিপয় পান্ডুলিপিতে প্রকাশিত উক্ত শব্দ দু’টি বিকৃত।
(৫) রাফি‘ঈর ‘আল-মুহাররির’ গ্রন্থে আযানের দু‘আর শেষে বর্ণিত ‘‘ইয়া আরহামার রা-হীমীন।’’ এটিও প্রমাণহীন। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী ও মোল্লা ‘আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘‘ওয়াদ দারাজাতার রফী‘আহ’’ ও ‘‘ইয় আরহামার রা-হীমীন’’ শব্দগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। ইমাম সাখাভী (রহঃ) বলেন, ঐ শব্দগুলো কোনো হাদীসেই পাওয়া যায় না। (দেখুন, শায়খ আলবানী, প্রণীত ইরওয়াউল গালীল, হা/ ২৪৩, মোল্লা ‘আলী ক্বারী হানাফী, মিরক্বাত (২/১৬৩), তালখীসুল হাবীর ১/৭৮, শামী ১/৩০, মাওযু‘আতে কাবীর- পৃষ্ঠা ৩৮, শারাহ নিকায়াহ ১/৬২, মাক্বাসিদুল হাসানাহ- ২১২ পৃঃ)।
(৬) আযান বা ইক্বামাতে ‘‘আশহাদু আন্না সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’’ বলা। (দেখুন, ফিক্বহুস সুন্নাহ)
(৭) আযানের দু‘আয় ‘‘ওয়ারযুক্বনা শাফাআতাহ ইয়অওমাল ক্বিয়ামাহ’’ বাক্যটি যোগ করা। এর কোনো শারঈ ভিত্তি নেই। তা সত্ত্বেও আযানের দু‘আয় রেডিও বাংলাদেশে ও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ভিত্তিহীন এ বাক্যটি প্রচার করা হয়।
অতএব উপরোক্ত বাক্যগুলো বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। কেননা হাদীস বিকৃত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি আমার নামে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যারোপ করলো (অর্থাৎ আমি যা বলিনি তা আমার দিকে সম্পর্কিত করলো) সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিলো।’’ (দেখুন, সহীহুল বুখারী)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি আমার নামে এমন হাদীস বর্ণনা করলো, ধারণা করা যাচ্ছে যে সেটি মিথ্যা, সে অন্যতম মিথ্যাবাদী।’’ (দেখুন, সহীহ মুসলিম)।
একদা সাহাবী বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) রাতে শয়নকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিখানো একটি দু‘আ যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে শুনান তখন তাতে ‘‘আমানতু বি নাবিয়্যিকাকাল্লাযী আরসালতা’’ স্থলে ‘‘বি রসূলিকা’’ বলায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেগে উঠেন এবং তাকে বলেন, আমার শিখানো শব্দ ‘‘বি নাবিয়্যিকা’’ বলো, ‘‘বি রসূলিকা’’ নয় (অথচ এতে অর্থের কোনো তারতম্য ছিলো না)। (দেখুন, সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাবীর স্থলে রসূল শব্দ বলাটাই যখন অন্যায় ও বাড়াবাড়ি হলো, যে কারণে তিনি রেগে গেলেন, তখন আযানের দু‘আয় ঐ ধরণের ভিত্তিহীন শব্দ বলার পরিণতি কিরূপ হবে তা চিন্তার বিষয় কি? আল্লাহ আমাদেরকে সংশয়পূর্ণ ও মনগড়া বিষয় বর্জনের তাওফিক দান করুন- আমীন!
(গ) আযানের অন্যান্য পরিত্যাজ্য বিষয়ঃ
(১) ‘তাকাল্লুফ’ করাঃ আযানের উক্ত দু‘আটি রেডিও কথক এমন ভঙ্গিতে পড়েন, যাতে প্রার্থনার আকৃতি থাকে না। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। কারণ নিজস্ব স্বাভাবিক সুরের বাইরে যাবতীয় তাকাল্লুফ বা ভাণ করা ইসলামে দারুনভাবে অপছন্দনীয়। (মিশকাত হা/ ১৯৩, ‘রিয়া হলো ছোট শিরক, আহমাদ, বায়হাক্বী)।
(২) গানের সুরের আযান দেয়াঃ গানের সুরে আযান দিলে একদা ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) জনৈক মুয়াজ্জিনকে ভীষণভাবে ধমক দিয়ে বলেছিলেন, আমি তোমার সাথে অবশ্যই বিদ্বেষ পোষণ করবো আল্লাহর জন্য। (ফিকহুস সুন্নাহ, সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম)।
(৩) আযানের আগে ও পরে উচ্চস্বরে যিকরঃ আজকাল জুমু‘আহর দিনে এবং অন্যান্য সালাতে বিশেষ করে ফাজরের আযানের আগে ও পর বিভিন্ন মসজিদে মাইকে ‘আসসালাতু ওয়াসসালামু ‘আলা রসূলিল্লাহ’ বলা হয়। এতদ্ব্যতীত হামদ্, নাত, তাসবীহ, দরূদ, কুরআন তিলাওয়াত, ওয়ায, গযল ইত্যাদি শুনা যায়। অথচ এগুলি বিদ‘আত এবং কেবলমাত্র ‘আযান’ ব্যতীত আর সবকিছুই পরিত্যাজ্য। এমন কি আযানের পরে পুনরায় ‘আসসালাতু আস্সালত’ বলে ডাকাও সাহাবী ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) প্রমুখ বিদ‘আত বলেছেন- (তিরমিযী, ফিকহুস সুন্নাহ)। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ কাউকে সালাতের জন্য ডাকেন বা জাগিয়ে দেন, তাতে তিনি অবশ্যই নেকী পাবেন। (সহীহুল বুখারী)।
(৪) বিপদে আযান দেয়াঃ বালা-মুসিবতের সময় বিশেষভাবে আযান দেয়াও কোনো দলীল নেই। কেননা আযান কেবল ফরয সালাতের জন্যই হয়ে থাকে, অন্য কিছুর জন্য নয়- (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯৩)।
(৫) আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখ রগড়ানোঃ আযান ও ইক্বামাতের সময় ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ শুনে বিশেষ দু‘আ সহ আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখ রগড়ানো, আযান শেষে দু’ হাত তুলে আযানের দু‘আ পড়া কিংবা উচ্চস্বরে ওটা পাঠ করা ও মুখে হাত মোছা ইত্যাদির কোনো শারঈ ভিত্তি নেই। (ফিক্বহুস সুন্নাহ)। (সালতুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪৫ পৃঃ)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম শুনে বা মুয়াজ্জিনের আযানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ শুনে কেউ আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখ রগড়ালে তার জন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শাফা‘আত হালাল হয়ে যাবে এবং তার চোখ অন্ধ হবে না ও চোখ উঠবে না- এ মর্মে বর্ণিত হাদীস দু’টি মিথ্যা ও বানোয়াট। আল্লামা সাখাভী (রহঃ) বলেন, দু’টো হাদীসই সহীহ নয় এবং এর কোনোটিরও সনদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছায় না- (ফিক্বহুস সুন্নাহ, ১/১২১)। ‘আবদুল হাই লাখনৌভী হানাফী (রহঃ) বলেন, আযান ও ইক্বামাতে যখনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম শুনা যায় তখনই দু’ নখে চুমু খাওয়া কোনো হাদীসে অথবা সাহাবীদের কোনো আসারে প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই যে এরূপ বলে সে ডাহা মিথ্যুক। এ কাজ জঘন্য বিদ‘আত। (যাহরাতু রিয়াযিল আবরার, পৃষ্ঠা ৭৬, আইনী তুহফা)।
(৬) আযান ও ইক্বামাতে মনগড়া শব্দ যোগ করাঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজরের আযানে ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’’ এবং ‘ইক্বামাতে ক্বাদকামাতিস সালাত’’ এবং ঝড়বৃষ্টির সময় ‘‘আলা-সল্লু ফী রিহালিকুম’’ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ বাড়াননি। সুতরাং উক্ত বাড়তি শব্দগুলো সুন্নাত (যা সহীহ হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত)। কিন্তু পরবর্তীকালে কিছু লোক আযানে সুন্নাতী শব্দের সাথে কতিপয় মনগড়া শব্দ ঢুকিয়ে দিয়ে আযানেও বিদ‘আত সৃষ্টি করেছেন। হিজরীর প্রথম শতরেক শেষ দিকে খলীফা কিংবা গভর্নর অথবা জনগণ যখন মসজিদে পৌঁছতো তখন মুয়াজ্জিন আযান এবং ইক্বামাতের মাঝে বারংবার বলতেন ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ এবং হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ। একদা বিখ্যাত সাহাবী ‘আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) কোনো মসজিদে ঐরূপ বলা দেখে নিজের সাথীকে বললেন, বিদ‘আতীদের মাসজিদ থেকে বেরিয়ে চলো। অতঃপর সেখানে তারা সালাত আদায় করলে না। (দেখুন, তিরমিযী ১/২৭)।
(ক) উমাইয়া খলীফাদের যুগে ‘‘হাইয়্যা ‘আলাস্ সালাহ ইয়া খলীফাতা রসূলিল্লাহ’’ শব্দগুলো বাড়ান হয়।
(খ) মিসরের শিয়া ফাত্বিমী খালীফাদের যুগে ৩৪৭ হিজরীতে, ‘‘মুহাম্মাদুন ওয়া ‘আলিয়ূন খাইরুল বাশার’’ শব্দগুলো যেগ করা হয়।
(গ) এক ফাত্বিমী খলীফা মুয়িয্য লি দীনিল্লাহ ৩৫৯ হিজরীতে ‘‘হাইয়্যা ‘আলা খায়রিল ‘আমল’’ শব্দগুলো জারি করেন।
(ঘ) ৪০১ হিজরীতে আযানের পর ‘‘আসসালাতু ‘আলা আমীরিল মু‘মিনীন ওয়া রহমাতুল্লাহ’’ শব্দগুলো সংযোজিত হয়।
(ঙ) ৪০৫ হিজরীতে ‘‘আসসালাতু রহিমাকাল্লাহ’’ বাড়ান হয়।
(চ) আবূল মায়মূন ইবনু ‘আব্দুল মাজীদ ৫২৪ হিজরীতে উক্ত (খ) ও (ঘ)-এ বর্ণিত শব্দগুলো আযান থেকে বাতিল করে দিলে ৫২৬ হিজরীতে হাফিয লি দীনিল্লাহ আবার তা জারি করেন।
(ছ) ৫৬৭ হিজরীতে সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ূবী ফাত্বিমী শিয়াদের দমন করে মিসরে আবার সুন্নাতী আযান প্রচলন করেন।
(জ) ৭৬০ হিজরীতে মুহতাসিব সালাহউদ্দীন ‘আব্দুল্লাহ বারীযী ‘‘আসসালাতু ওয়াসসালামু ইয়া রাসূলুল্লাহ’’ শব্দগুলো চালু করেন।
(ঞ) সিনেমার গানের সঙ্গে যে আযান দেয়া তা ফাত্বিমী রাফিযীদের তৈরীকৃত। হিজরীর অষ্টম শতকের শুরুতে নাজমুদ্দীন তাবান্দী নামক এক দারোগা ঐ ঢং চালু করেন। যা ৭৯১ হিজরীতে মিসর ও সিরিয়ার সমস্ত শহরে ছড়িয়ে পড়ে। (দেখুন, মাকরীযীর খিতাত ওয়াল আসার, ৪/৪৪-৪৭)।
হানাফী মাযহাবের দু’ নম্বর ইমাম আল্লামা আবূ ইউসূফ (রহঃ) বলেন, শাসক, মুফতি, ক্বাযী ও শিক্ষক প্রভৃতিকে অবহিত করানোর জন্য যদি মুয়াজ্জিন আযানের পর এ কথাগুলো বলে, ‘‘আসসালামু ‘আলাইকা ইয়া আমীর, হাইয়্যা ‘আলাস্ সালাহ হাইয়্যা আলাল ফালাহ, আসসালাতু ইয়ারহামু-কাল্লাহ’’ তাহলে কোনো আপত্তি নেই। ফাতাওয়াহ ক্বাযীখানও এটাকে গ্রহণ করেছেন।
কিন্তু ইবনুল মালিক উল্লেখ করেছেন যে, এ ব্যাপারে ইমাম আবূ হানিফা (রহঃ) ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর সাথে আছেন। এ সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আবূ ইউসূফের জন্য আফসোস! যিনি শাসকদের জন্য আযানে বাড়াবাড়ি নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। (দেখুন, আল বাহরুর রায়িক, ১/২৬১, মাসবূত ১/১৩১, (তথ্যসূত্রঃ আইনী তুহফা সালাতে মুস্তাফা)।
অতএব সহীহ হাদীস মোতাবেক সুন্নাতী আযান দেয়া অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ধরণের বাড়াবাড়ি করা সীমালঙ্ঘন, ভ্রষ্ঠতা ও চরম অন্যায়। তাই সহীহ হাদীসে বর্ণিত শব্দাবলী ছাড়া মানুষের মনগড়া সকল প্রকার শব্দ অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عُبَيْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ عَلِّمْنِي سُنَّةَ الأَذَانِ . قَالَ فَمَسَحَ مُقَدَّمَ رَأْسِي وَقَالَ " تَقُولُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ تَرْفَعُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَقُولُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ تَخْفِضُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَرْفَعُ صَوْتَكَ بِالشَّهَادَةِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ فَإِنْ كَانَ صَلَاةَ الصُّبْحِ قُلْتَ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ " .
- صحيح
Abu Mahdhurah reported; I said; Messenger of Allah, teach me the method of ADHAN (how to pronounce the call to prayer). He wiped my forehead (with his hand) and asked me to pronounce; Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great, raising your voice while saying them (these words). Then you must raise your voice in making the testimony:
I testify that there is no god but Allah, I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah. Lowering your voice while saying them (these words). Then you must raise your voice in making the testimony: I testify that there is no god but Allah, I testify there is no god but Allah; I testify Muhammad is the Messenger of Allah, I testify Muhammad is the Messenger of Allah. Come to prayer, come to prayer; come to salvation, come to salvation. If it is the morning prayer, you must pronounce; prayer is better than sleep, prayer is better than sleep, Allah is most great; there is no god but Allah.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০১। আবূ মাহযূরাহ (রাঃ) হতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। তাতে রয়েছেঃ আসসালাতু খাইরুম মিনান-নাওম, আসসালাতু খাইরুম মিনান নাওম-(এটা) ফজরের প্রথম আযানে (বলবে)। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, মুসাদ্দাদের বর্ণনা এর চেয়ে বেশি স্পষ্ট। তাতে রয়েছেঃ তিনি আমাকে ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের শব্দগুলো দুই দুইবার করে শিখিয়েছেন, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাল্-ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল-ফালাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
’আবদুর রাযযাক্ব বলেন, সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়ার সময় ’ক্বাদ্ ক্বামাতিস সালাতু, ক্বাদ ক্বামাতিস্ সলাহ’ দু’বার বলবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ মাহযূরাহ (রাঃ)-কে বললেন, (আমি যেভাবে আযান ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের শব্দগলো শিখালাম) তুমি কি তা ঠিকমতো শুনেছ? বর্ণনাকারী বলেন, আবূ মাহযূরাহ তার কপালের চুল কাটতেন না এবং সেগুলো পৃথকও করতেন না। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কপালে (এই চুলের উপর) হাত বুলিয়েছিলেন।[1]
সহীহ : তবে ’আবূ মাহযূরাহ তার কপালের চুল কাটতেন না...’ এ কথাটি বাদে।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، وَعَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُثْمَانُ بْنُ السَّائِبِ، أَخْبَرَنِي أَبِي وَأُمُّ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم نَحْوَ هَذَا الْخَبَرِ وَفِيهِ " الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ فِي الأُولَى مِنَ الصُّبْحِ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَحَدِيثُ مُسَدَّدٍ أَبْيَنُ قَالَ فِيهِ قَالَ وَعَلَّمَنِي الإِقَامَةَ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ " . وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ " وَإِذَا أَقَمْتَ الصَّلَاةَ فَقُلْهَا مَرَّتَيْنِ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ أَسَمِعْتَ " . قَالَ فَكَانَ أَبُو مَحْذُورَةَ لَا يَجُزُّ نَاصِيَتَهُ وَلَا يَفْرِقُهَا لأَنَّ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم مَسَحَ عَلَيْهَا .
- صحيح دون قوله : (فكان أبو محذورة لا يجز...)
Abu Mahdhurah also narrated this tradition from the prophet (May peace be upon him) to the same effect through a different chain of transmitters. This version has the additional wordings. The phrases “prayer is better than sleep, prayer is better than sleep” are to be pronounced in the first ADHAN (i.e., not in Iqamah) of the morning prayer.
Abu Dawud said; The version narrated by Musaddad is more clear. It reads:
He (the prophet) taught me IQAMAH (to pronounce each phrase) twice: Allah is most great. Allah is most great. I testify that there is no god but Allah. I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah: come to prayer, come to prayer: come to salvation, come to salvation: Allah is most great. Allah is great; there is no god but Allah.
Abu Dawud said: The narrator ‘Abd al-Razzaq said; You pronounce IQAMAH for announcing the prayer; you must say twice: the time for prayer has come, the time for prayer has come. (The Prophet said to Abu Mahdhurah): did you listen (to me)? Abu Mahdhurah would not have the hair of his forehead cut, nor would he separate them (from him) because the Prophet (ﷺ) wiped over them.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০২। আবূ মাহযূরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আযানের শব্দ ঊনিশটি আর ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের শব্দ সতেরটি শিখিয়েছেন। আযানের শব্দগুলো হচ্ছেঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আর ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের শব্দগুলো হচ্ছেঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, ক্বাদ ক্বামাতিস সালাতু ক্বাদ ক্বামাতিস সলাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।[1]
হাসান সহীহ।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، وَسَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، وَحَجَّاجٌ، - وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ - قَالُوا حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا عَامِرٌ الأَحْوَلُ، حَدَّثَنِي مَكْحُولٌ، أَنَّ ابْنَ مُحَيْرِيزٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ أَبَا مَحْذُورَةَ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَّمَهُ الأَذَانَ تِسْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً وَالإِقَامَةَ سَبْعَ عَشْرَةَ كَلِمَةً الأَذَانُ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَالإِقَامَةُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ " . كَذَا فِي كِتَابِهِ فِي حَدِيثِ أَبِي مَحْذُورَةَ .
- حسن صحيح
Abu Mahdhurah reported ; The Messenger of Allah (May peace be upon him) taught him nineteen phrases in ADHAN and seventeen phrases in IQAMAH. ADHAN runs; Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great; I testify that there is no god but Allah. I testify that Muhammad is the Messenger of Allah. I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; I testify that there is no god but Allah. I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is Messenger of Allah:
come to prayer, come to prayer, come to salvation; Allah is most great, Allah is most great: there is no god but Allah. IQAMAH runs: Allah is most great, Allah is most great. Allah is most great, Allah is most great: I testify that there is no god but Allah, I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; come to prayer; come to prayer: come to salvation. Come to salvation; the time for prayer has come the time for prayer has come: Allah is most great, Allah is most great: there is no god but Allah. This is recorded in his collection (i.e., in the collection of the narrator Hammam b. Yahya) according to the tradition reported by Abu Mahdhurah (i.e., IQAMAH contains seventeen phrases)
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০৩। আবূ মাহযূরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আযানের শব্দগুলো শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তুমি বলোঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। তারপর কন্ঠস্বর উচুঁ করে আবার বলোঃ আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। [1]
সহীহ।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، - يَعْنِي عَبْدَ الْعَزِيزِ - عَنِ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ، عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ، قَالَ أَلْقَى عَلَىَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم التَّأْذِينَ هُوَ بِنَفْسِهِ فَقَالَ " قُلِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ - مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ - قَالَ ثُمَّ ارْجِعْ فَمُدَّ مِنْ صَوْتِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ " .
- صحيح
Abu Mahdurah reported :
The Messenger of Allah (May peace be upon him) himself taught me the call to prayer (adhan). He asked me to pronounce: Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great. Allah is most great: I testify that there is no god but Allah. I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is Messenger of Allah. Then repeat and raise your voice; I testify that there is no god but Allah, I testify that there is no god but Allah ; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; come to prayer, come to prayer; come to salvation, come to salvation; Allah is most great. Allah is most great; there is no god but Allah.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০৪। আবূ মাহযূরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে আমাকে অক্ষরে অক্ষরে আযানের শব্দগুলো শিক্ষা দিয়েছেন। তা হচ্ছেঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আললাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ। আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি ফজরের (আযানে) বলতেন, আসসালাতু খাইরুম মিনান্ নাউম।[1]
সহীহ।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، قَالَ سَمِعْتُ جَدِّي عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ أَبِي مَحْذُورَةَ، يَذْكُرُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا مَحْذُورَةَ، يَقُولُ أَلْقَى عَلَىَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الأَذَانَ حَرْفًا حَرْفًا " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ " . قَالَ وَكَانَ يَقُولُ فِي الْفَجْرِ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ .
- صحيح
Abu Mahdhurah reported:
The Messenger of Allah (May peace be upon him) taught me the call to prayer (adhan) verbatim; Allah is most great, Allah is most great, Allah is most great, Allah is most great; I testify that there is no god but Allah, I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; I testify that there is no god but Allah. I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; come to prayer, come to prayer; come to salvation, come to salvation. He used to pronounce “prayer is better than sleep” in the dawn prayer.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০৫। আবূ মাহযূরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অক্ষরে অক্ষরে আযান শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি বলতেনঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তারপর বাকী অংশ ’আবদুল ’আযিয ইবনু ’আবদুল মালিক সূত্রে বর্ণিত ইবনু জুরাইজের হাদীসের অনুরূপ। মালিক ইবনু দীনারের হাদীসে রয়েছে, বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবূ মাহযূরাহর পুত্রকে বললাম, আপনার পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যেরূপ আযান শিখেছেন আমাকে তা বর্ণনা করুন। তিনি তার বর্ণনা দিয়ে বলেন, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার .....।[1]
সহীহ, তাকবীরে তারবী’ সহকারে।
وَكَذَلِكَ حَدِيثُ جَعْفَرِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنِ ابْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ عَنْ عَمِّهِ عَنْ جَدِّهِ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ " ثُمَّ تَرَجَّعْ فَتَرَفَّعْ صَوْتَكَ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ " .
منكر : والمحفوظ : الترجيع في الشهادتين فقط .
অনুরূপ জা’ফর ইবনু সুলাইমান- ইবনু আবূ মাহযূরাহ-তার চাচা-তার দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তাতে রয়েছেঃ তারপর তারজী’ করবে এবং উচ্চস্বরে ’’আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’’- বলবে।
মুনকার : মাহফূয হচ্ছে কেবল শাহাদাতাইনে তারজী করা।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دَاوُدَ الإِسْكَنْدَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادٌ، - يَعْنِي ابْنَ يُونُسَ - عَنْ نَافِعِ بْنِ عُمَرَ، - يَعْنِي الْجُمَحِيَّ - عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي مَحْذُورَةَ، أَخْبَرَهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُحَيْرِيزٍ الْجُمَحِيِّ، عَنْ أَبِي مَحْذُورَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَّمَهُ الأَذَانَ يَقُولُ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ " . ثُمَّ ذَكَرَ مِثْلَ أَذَانِ حَدِيثِ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ وَمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَفِي حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ دِينَارٍ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ أَبِي مَحْذُورَةَ قُلْتُ حَدِّثْنِي عَنْ أَذَانِ أَبِيكَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ فَقَالَ " اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ " . قَطُّ
- صحيح بتربيع التكبير
Abu Mahdhurah said that the apostle of Allah (May peace be upon him) taught him the call to prayer (adhan), saying:
Allah is most great, Allah is most great; I testify that there is no god but Allah. He then narrated adhan like the one contained in the tradition transmitted by Ibn Juraij from ‘Abd al-aziz b. ‘abd al-Malik to the same effect. The version Malik b. Dinar has. I asked the son of Abu Mahdhurah, saying: Narrate to me the adhan of your father narrated from the Messenger of Allah (May peace be upon him). He said: Allah is most great, Allah is most great, that is all. Similar is the version narrated by Ja’far b. Sulaiman from the son of Abd Muhdhurah from his uncle on the authority of his grandfather, excepting that he said; Then repeat and raise your voice. Allah is most great. Allah is most great.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০৬। ইবনু আবূ লায়লাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, সালাতের অবস্থা পর্যায়ক্রমে তিনবার পরিবর্তন হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের সাথীরা আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেন যে, রসূলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের মুসলিমগণ অথবা মু’মিনগণের একত্রে জামা’আতে সালাত আদায় করাটা আমার কাছে আনন্দদায়ক। এমনকি প্রাথমিক অবস্থায় আমি চিন্তা করলাম, সালাতের সময় হলে মানুষদের ডেকে আনার জন্য ঘরে ঘরে লোক পাঠিয়ে দিব। এমনকি আমি এ ইচ্ছাও করলাম যে, সালাতের সময় উপস্থিত হলে কিছু লোককে দুর্গের উপর দাঁড় করিয়ে দিব যারা মুসলিমদের সালাতের জন্য আহবান করবে।
এমনকি তারা ’নাকুস’ ঘন্টা ধ্বনিও বাজালো বা বাজাবার উপক্রম করল। বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় এক আনসারী এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে উৎকন্ঠিত দেখে আপনার কাছ থেকে ফিরে যাওয়ার পর (রাতে স্বপ্নে) এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। লোকটি যেন দু’টি সবুজ কাপড় পরে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আযান দিল। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর সে আবারও আযানের অনুরূপ শব্দ উচ্চারণ করল (ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিল)।
কিন্তু ’ক্বাদ ক্বামাতিস্ সালাতু’ অতিরিক্ত বলল। লোকেরা আমাকে মিথ্যাবাদী মনে না করলে আমি অবশ্যই বলব, আমি জাগ্রতই ছিলাম, ঘুমন্ত নয়। ইবনুল মুসান্নার বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে অবশ্যই উত্তম স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তবে ’আমরের বর্ণনায় ’’আল্লাহ অবশ্যই তোমাকে উত্তম স্বপ্ন দেখিয়েছেন’ কথাটুকু নেই। তুমি বিলালকে আযান দেয়ার নির্দেশ দাও। তখন ’উমার (রাঃ) বললেন, আমিও তার মত একই ধরনের স্বপ্ন দেখেছি।
কিন্তু লোকটি আগেই বলে ফেলাতে আমি বলতে লজ্জাবোধ করি। ইবনু আবূ লায়লাহ বলেন, আমাদের সাথীরা আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেন যে, প্রাথমিক পর্যায়ে কোন লোক মসজিদে এসে জামা’আত হতে দেখলে মুসল্লীদের কাছে সালাত কয় রাক’আত হয়েছে তা জিজ্ঞেস করত। অতঃপর ইশারায় তা জানিয়ে দেয়া হতো। তারপর তারা ঐ পরিমাণ সালাত দ্রুত আদায় করে জামা’আতে শামীল হত। ফলে তাঁর পিছনের মুক্তাদীদের অবস্থা পৃথক পৃথক হত। কেউ দাঁড়ানো, কেউ রুকু’তে, কেউ বসা, আবার কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথেই সালাতরত অবস্থায় থাকত।
ইবনু মুসান্না ’আমর ও হুসায়ন ইবনু আবূ লায়লাহ সূত্রে বর্ণনা করেন, এমন সময় (জামা’আত শুরু হওয়ার পর) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) আসলেন। শু’বাহ (রহঃ) বলেন, আমি একথা হুসাইন থেকে শুনেছিঃ তিনি বললেন, আমি আপনাকে যে অবস্থায় পাবো, তারই তো অনুসরণ করব। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মু’আয তোমাদের জন্য একটি সুন্নাত নির্ধারণ করেছে। তোমরাও সেরূপ করবে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের সাথীরা আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় পদার্পণ করে তাদের তিন দিন সিয়াম পালনের নির্দেশ দেন। অতঃপর রমাযানের সিয়াম ফরয (হওয়া সম্পর্কিত) আয়াত অবতীর্ন হয়। সাহাবীগণের ইতিপূর্বে সিয়াম পালনের অভ্যাস না থাকায় সিয়াম পালনের বিধান তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। কাজেই কেউ সিয়াম পালন অক্ষম হলে মিসকীনকে খাদ্য আহার করাতেন। এমতাবস্থায় এই আয়াত নাযিল হলোঃ ’’তোমাদের মধ্যে কেউ রমাযান মাস পেলে সে যেন অবশ্যই সিয়াম পালন করে’’- (সূরাহ বাক্বারাহ, ১৮৫)।
এতে রোগী ও মুসাফিরকে অব্যাহতি দিয়ে অবশিষ্ট সবাইকে সিয়াম পালনের নির্দেশ দেয়া হলো। আমাদের সাথীরা আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেনঃ (ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায়) কেউ ইফতার করে আহার না করে ঘুমিয়ে পড়লে তার পক্ষে পরদিন সূর্যাস্তের পূর্বে কোন কিছু খাওয়া বৈধ ছিল না। একদা ’উমার (রাঃ) সহবাসের ইচ্ছা করলে তার স্ত্রী বললেন, আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম। ’উমার ধারনা করলেন, তার স্ত্রী বাহানা করছে। তাই তিনি স্ত্রী সহবাস করলেন। অন্যদিকে জনৈক আনসারী (ইফতারের পর) খাদ্য চাইলে লোকেরা বলল, অপেক্ষা করুন আমরা আপনার জন্য খানা তৈরি করছি।। ইতিমধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর সকাল বেলা এই আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ’’রোযার রাতে স্ত্রী সহবাস তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো।’’ (সূরাহ বাক্বারাহ, ১৮৭)[1]
সহীহ।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَرْزُوقٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي لَيْلَى، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ أُحِيلَتِ الصَّلَاةُ ثَلَاثَةَ أَحْوَالٍ - قَالَ - وَحَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَقَدْ أَعْجَبَنِي أَنْ تَكُونَ صَلَاةُ الْمُسْلِمِينَ - أَوْ قَالَ الْمُؤْمِنِينَ - وَاحِدَةً حَتَّى لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ أَبُثَّ رِجَالاً فِي الدُّورِ يُنَادُونَ النَّاسَ بِحِينِ الصَّلَاةِ وَحَتَّى هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ رِجَالاً يَقُومُونَ عَلَى الآطَامِ يُنَادُونَ الْمُسْلِمِينَ بِحِينِ الصَّلَاةِ حَتَّى نَقَسُوا أَوْ كَادُوا أَنْ يَنْقُسُوا " . قَالَ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي لَمَّا رَجَعْتُ - لِمَا رَأَيْتُ مِنَ اهْتِمَامِكَ - رَأَيْتُ رَجُلاً كَأَنَّ عَلَيْهِ ثَوْبَيْنِ أَخْضَرَيْنِ فَقَامَ عَلَى الْمَسْجِدِ فَأَذَّنَ ثُمَّ قَعَدَ قَعْدَةً ثُمَّ قَامَ فَقَالَ مِثْلَهَا إِلَّا أَنَّهُ يَقُولُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ وَلَوْلَا أَنْ يَقُولَ النَّاسُ - قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى أَنْ تَقُولُوا - لَقُلْتُ إِنِّي كُنْتُ يَقْظَانًا غَيْرَ نَائِمٍ . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى " لَقَدْ أَرَاكَ اللهُ خَيْرًا " . وَلَمْ يَقُلْ عَمْرٌو " لَقَدْ أَرَاكَ اللهُ خَيْرًا فَمُرْ بِلَالاً فَلْيُؤَذِّنْ " . قَالَ فَقَالَ عُمَرُ أَمَا إِنِّي قَدْ رَأَيْتُ مِثْلَ الَّذِي رَأَى وَلَكِنِّي لَمَّا سُبِقْتُ اسْتَحْيَيْتُ . قَالَ وَحَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا قَالَ وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا جَاءَ يَسْأَلُ فَيُخْبَرُ بِمَا سُبِقَ مِنْ صَلَاتِهِ وَإِنَّهُمْ قَامُوا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم مِنْ بَيْنِ قَائِمٍ وَرَاكِعٍ وَقَاعِدٍ وَمُصَلٍّ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم . قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى قَالَ عَمْرٌو وَحَدَّثَنِي بِهَا حُصَيْنٌ عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى حَتَّى جَاءَ مُعَاذٌ . قَالَ شُعْبَةُ وَقَدْ سَمِعْتُهَا مِنْ حُصَيْنٍ فَقَالَ لَا أَرَاهُ عَلَى حَالٍ إِلَى قَوْلِهِ كَذَلِكَ فَافْعَلُوا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ ثُمَّ رَجَعْتُ إِلَى حَدِيثِ عَمْرِو بْنِ مَرْزُوقٍ قَالَ فَجَاءَ مُعَاذٌ فَأَشَارُوا إِلَيْهِ - قَالَ شُعْبَةُ وَهَذِهِ سَمِعْتُهَا مِنْ حُصَيْنٍ - قَالَ فَقَالَ مُعَاذٌ لَا أَرَاهُ عَلَى حَالٍ إِلَّا كُنْتُ عَلَيْهَا . قَالَ فَقَالَ إِنَّ مُعَاذًا قَدْ سَنَّ لَكُمْ سُنَّةً كَذَلِكَ فَافْعَلُوا . قَالَ وَحَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ أَمَرَهُمْ بِصِيَامِ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ ثُمَّ أُنْزِلَ رَمَضَانُ وَكَانُوا قَوْمًا لَمْ يَتَعَوَّدُوا الصِّيَامَ وَكَانَ الصِّيَامُ عَلَيْهِمْ شَدِيدًا فَكَانَ مَنْ لَمْ يَصُمْ أَطْعَمَ مِسْكِينًا فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ( فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ) فَكَانَتِ الرُّخْصَةُ لِلْمَرِيضِ وَالْمُسَافِرِ فَأُمِرُوا بِالصِّيَامِ . قَالَ وَحَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا قَالَ وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا أَفْطَرَ فَنَامَ قَبْلَ أَنْ يَأْكُلَ لَمْ يَأْكُلْ حَتَّى يُصْبِحَ . قَالَ فَجَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَأَرَادَ امْرَأَتَهُ فَقَالَتْ إِنِّي قَدْ نِمْتُ فَظَنَّ أَنَّهَا تَعْتَلُّ فَأَتَاهَا فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَأَرَادَ الطَّعَامَ فَقَالُوا حَتَّى نُسَخِّنَ لَكَ شَيْئًا فَنَامَ فَلَمَّا أَصْبَحُوا أُنْزِلَتْ عَلَيْهِ هَذِهِ الآيَةُ (أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ) .
- صحيح
Ibn Abi Laila said:
Prayer passed through three stages. And out people narrated to us that Messenger of Allah (May peace be upon him) said; it is to my liking that the prayer of Muslims or believers should be united (i.e., in congregation), so much so that I intended to send people to the houses to announce the time of prayer; and I also resolved that I should order people to stand at (the tops of) the forts and announce the time of the prayer for Muslims; and they struck the bell or were about to strike the bell (to announce the time for prayer). Then came a person from among the Ansar who said: Messenger of Allah, when I returned from you, as I saw your anxiety. I saw (in sleep) a person with two green clothes on him; he stood on the mosque and called (people) to prayer. He then sat down for a short while and stood up and pronounced in a like manner, except that he added: “The time for prayer has come”. If the people did not call me (a liar), and according to the version of Ibn al-Muthanna, if you did not call me (a liar). I would say that I was awake; I was awake; I was not asleep. The Messenger of Allah (May peace be upon him) said: According to the version of Ibn al-Muthanna, Allah has shown you a good (dream). But the version of ‘Amr does not have the words: Allah has shown you a good (dream). Then ask Bilal to pronounce the ADHAN (to call to the prayer). ‘Umar (in the meantime) said: I also had a dream like the one he had. But as he informed earlier. I was ashamed (to inform). Our people have narrated to us: when a person came (to the mosque during the prayer in congregation), he would ask (about the RAKAHS of prayer), and he would be informed about the number of RAKAHS already performed. They would stand (in prayer) along with the Messenger of Allah (May peace be upon him): some in standing position; others bowing; some sitting and some praying along with the Messenger of Allah (May peace be upon him).
Ibn al-Muthanna reported from ‘Amr from Hussain b. Abi Laila, saying ; Until Mu’adh came. Shu’bah said ; I heard it from Hussain who said : I shall follow the position (in the prayer in which I find him (the prophet)). . . you should do in a similar way.
Abu Dawud said: I then turned to the tradition reported by ‘Amr b. Marzuq he said; then Ma’adh came and they (the people) hinted at him. Shu’bah said; I heard it from hussain who said: Mu’adh then said; I shall follow the position (in the prayer when I join it) in which I find him (the prophet). He then said: Mu’adh has prayer when I join it in which I find him (the prophet). He then said: MU’adh has introduced for you a SUNNAH (a model behaviour), so you should do in a like manner. He said; our people have narrated to us; when the Messenger of Allah (ﷺ) came to Madina, he commanded them (the people) to keep fast for three days. Thereafter the Quranic verses with regard to the fasts during Ramadan were revealed. But they were people who were not accustomed to keep fast ; hence the keeping of the fasts was hard for them; so those who could not keep fast would feed an indigent; then the month”. The concession was granted to the patient and the traveler; all were commanded to keep fast.
পরিচ্ছেদঃ ২৮. আযানের পদ্ধতি
৫০৭। মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, সালাতের অবস্থা পর্যায়ক্রমে তিনবার পরিবর্তন হয়েছে। অনুরূপ সিয়ামের অবস্থাও তিনবার পরিবর্তন হয়েছে। তারপর বর্ণনাকারী নাসর ঐরূপ দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন। ইবনুল মুসান্না কেবল বাইতুল মাক্বদিসের দিকে মুখ করে সালাত আদায়ের ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তৃতীয় অবস্থা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় পদার্পণ করার পর তের মাস যাবত বাইতুল মাক্বদিসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেন।
অতঃপর আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেনঃ ’’আসমানের দিকে তোমার মুখ উত্তোলন আমরা লক্ষ্য করেছি। অতএব তোমার পছন্দের ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে আমি তোমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছি। এখন তুমি তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফেরাও। (সূরহ বাক্বারাহ, ১৪৪)। এভাবে আল্লাহ তাঁর মুখ কা’বার দিকে ফিরিয়ে দিলেন। ইবনুল মুসান্নার হাদীস এখানেই শেষ। আর যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন নাসর তার নাম উলেখ করে বলেনঃ অতঃপর আনসার গোত্রের ’আব্দুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) আসলেন।
তিনি উক্ত হাদীসে বলেনঃ স্বপ্নে দেখা লোকটি কিবলার দিকে মুখ করে বললঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়্যা ’আলাস্-সলাহ দু’বার, হাইয়্যা ’আলাল-ফালাহ দু’বার। আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। অতঃপর কিছুক্ষণ নীরব থেকে আবারও দাঁড়িয়ে পূর্বের কথারই পুনরাবৃত্তি করল। তবে ’আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ বলেন, লোকটি হাইয়্যা ’আলাল-ফালাহ বলার পর ক্বাদ্ ক্বামাতিস্ সালাতু ক্বাদ্ ক্বামাতিস্ সলাহ বাক্য দু’বার বলল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটা তুমি বিলালকে শিখিয়ে দাও। অতঃপর বিলাল (রাঃ) শিখানো শব্দগুলো দ্বারা আযান দিলেন।
এরপর বর্ণনাকারী সওম (রোযা) সম্পর্কে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি মাসে তিন দিন এবং আশুরার দিন সিয়াম পালন করতেন। অতঃপর আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেনঃ ’’তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হলো যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যেন তোমরা আল্লাহভীরু (মুত্তাক্বী) হতে পারো। নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনের জন্য। তোমাদের মধ্যে কেউ রোগাক্রান্ত হলে অথবা মুসাফির হলে পরবর্তীতে তাকে এর ক্বাযা করতে হবে। যারা সিয়াম পালনে সক্ষম (হয়েও সিয়াম পালন করে না) তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে আহার করাবে’’- (সূরাহ বাক্বারাহ, ১৮৩-১৮৪)। এতে কেউ ইচ্ছে হলে সিয়াম পালন করত, আর কেউ বা সিয়াম পালন না করে প্রতি সিয়ামের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে আহার করাতো। এটাই তার জন্য যথেষ্ট ছিল।
(সিয়ামের প্রাথমিক অবস্থা এরূপই ছিল) অতঃপর এ বিধান পরিবর্তন করে আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেনঃ ’’রমাযান হচ্ছে মহিমান্বিত মাস, যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে যা মানব জাতির পথপ্রদর্শক, হিদায়াতের স্পষ্ট দলীল এবং (হাক্ব ও বাতিলের মধ্যে) পার্থক্যকারী। তোমাদের যে কেউ রমাযান মাস পেলে সে যেন সিয়াম পালন করে। আর কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে সে পরবর্তী সময়ে তা ক্বাযা করে নিবে’’- (সূরাহ বাক্বারাহ, ১৮৫)। এরপর থেকে রমাযান মাস প্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তির উপর সিয়াম ফরয হয়ে যায় এবং মুসাফিরের জন্য এর ক্বাযা আদায় ফরয সাব্যস্ত হয়। আর ফিদয়ার ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ হয় সিয়াম পালনে অপারগ বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের জন্য। সাহাবী সিরমাহ (রাঃ) সারা দিন পরিশ্রম করেছিলেন। এরপর বর্ণনাকারী পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন।[1]
সহীহ, প্রথম দিকে তাকবীরে তারবী’ সহকারে। ইরওয়াউল গালীল ৪/ ২০-২১।
باب كَيْفَ الأَذَانُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، عَنْ أَبِي دَاوُدَ، ح وَحَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ الْمُهَاجِرِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ أُحِيلَتِ الصَّلَاةُ ثَلَاثَةَ أَحْوَالٍ وَأُحِيلَ الصِّيَامُ ثَلَاثَةَ أَحْوَالٍ وَسَاقَ نَصْرٌ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ وَاقْتَصَّ ابْنُ الْمُثَنَّى مِنْهُ قِصَّةَ صَلَاتِهِمْ نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَطُّ قَالَ الْحَالُ الثَّالِثُ أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَصَلَّى - يَعْنِي نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ - ثَلَاثَةَ عَشَرَ شَهْرًا فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى هَذِهِ الآيَةَ ( قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَحَيْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ) فَوَجَّهَهُ اللهُ تَعَالَى إِلَى الْكَعْبَةِ . وَتَمَّ حَدِيثُهُ وَسَمَّى نَصْرٌ صَاحِبَ الرُّؤْيَا قَالَ فَجَاءَ عَبْدُ اللهِ بْنُ زَيْدٍ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَقَالَ فِيهِ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ قَالَ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ حَىَّ عَلَى الصَّلَاةِ مَرَّتَيْنِ حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ مَرَّتَيْنِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ثُمَّ أَمْهَلَ هُنَيَّةً ثُمَّ قَامَ فَقَالَ مِثْلَهَا إِلَّا أَنَّهُ قَالَ زَادَ بَعْدَ مَا قَالَ " حَىَّ عَلَى الْفَلَاحِ " . قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " لَقِّنْهَا بِلَالاً " . فَأَذَّنَ بِهَا بِلَالٌ وَقَالَ فِي الصَّوْمِ قَالَ فَإِنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَصُومُ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَيَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى ( كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنَ قَبْلِكُمْ ) إِلَى قَوْلِهِ ( طَعَامُ مِسْكِينٍ ) فَكَانَ مَنْ شَاءَ أَنْ يَصُومَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَنْ يُفْطِرَ وَيُطْعِمَ كُلَّ يَوْمٍ مِسْكِينًا أَجْزَأَهُ ذَلِكَ وَهَذَا حَوْلٌ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى ( شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ ) إِلَى ( أَيَّامٍ أُخَرَ ) فَثَبَتَ الصِّيَامُ عَلَى مَنْ شَهِدَ الشَّهْرَ وَعَلَى الْمُسَافِرِ أَنْ يَقْضِيَ وَثَبَتَ الطَّعَامُ لِلشَّيْخِ الْكَبِيرِوَالْعَجُوزِ اللَّذَيْنِ لَا يَسْتَطِيعَانِ الصَّوْمَ وَجَاءَ صِرْمَةُ وَقَدْ عَمِلَ يَوْمَهُ وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
- صحيح بتربيع التكبير في أوله : إرواء الغليل (٤/٢٠-٢١)
Narrated Mu'adh ibn Jabal:
Prayer passed through three stages and fasting also passed through three stages. The narrator Nasr reported the rest of the tradition completely. The narrator, Ibn al-Muthanna, narrated the story of saying prayer facing in the direction of Jerusalem.
He said: The third stage is that the Messenger of Allah (ﷺ) came to Medina and prayed, i.e. facing Jerusalem, for thirteen months.
Then Allah, the Exalted, revealed the verse: "We have seen thee turning thy face to Heaven (for guidance, O Muhammad). And now verily We shall make thee turn (in prayer) toward a qiblah which is dear to thee. So turn thy face toward the Inviolable Place of Worship, and ye (O Muslims), wherever ye may be, turn your face (when ye pray) toward it" (ii.144). And Allah, the Reverend and the Majestic, turned (them) towards the Ka'bah. He (the narrator) completed his tradition.
The narrator, Nasr, mentioned the name of the person who had the dream, saying: And Abdullah ibn Zayd, a man from the Ansar, came. The same version reads: And he turned his face towards the qiblah and said: Allah is most great, Allah is most great; I testify that there is no god but Allah, I testify that there is no god but Allah; I testify that Muhammad is the Messenger of Allah, I testify that Muhammad is the Messenger of Allah; come to prayer (he pronounced it twice), come to salvation (he pronounced it twice); Allah is Most Great, Allah is most great. He then paused for a while, and then got up and pronounced in a similar way, except that after the phrase "Come to salvation" he added. "The time for prayer has come, the time for prayer has come."
The Messenger of Allah (ﷺ) said: Teach it to Bilal, then pronounce the adhan (call to prayer) with the same words. As regards fasting, he said: The Messenger of Allah (ﷺ) used to fast for three days every month, and would fast on the tenth of Muharram. Then Allah, the Exalted, revealed the verse: ".......Fasting was prescribed for those before you, that ye may ward off (evil)......and for those who can afford it there is a ransom: the feeding of a man in need (ii.183-84). If someone wished to keep the fast, he would keep the fast; if someone wished to abandon the fast, he would feed an indigent every day; it would do for him. But this was changed. Allah, the Exalted, revealed: "The month of Ramadan in which was revealed the Qur'an ..........(let him fast the same) number of other days" (ii.185).
Hence the fast was prescribed for the one who was present in the month (of Ramadan) and the traveller was required to atone (for them); feeding (the indigent) was prescribed for the old man and woman who were unable to fast. (The narrator, Nasr, further reported): The companion Sirmah, came after finishing his day's work......and he narrated the rest of the tradition.