পরিচ্ছেদঃ ১৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বংশগৌরব ও পক্ষপাতিত্ব
৪৯০৯-[১৭] (ফিলিস্তিনী অধিবাসী) ’উবাদাহ্ ইবনু কাসীর আশ্ শামী (রহিমাহুল্লাহ) বর্ণিত। তিনি স্বীয় গোত্রের ’’ফাসীলাহ্’’ নামণী এক মহিলার নিকট থেকে বর্ণনা করেন। ফাসীলাহ্ বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমীপে জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রসূল! কোন ব্যক্তির নিজের গোত্রকে ভালোবাসা কি ’আসাবিয়্যাতের অন্তর্ভুক্ত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ না; বরং ’আসাবিয়্যাত হলো কোন ব্যক্তির নিজের গোত্রকে যুলমে সাহায্য করা। (আহমাদ ও ইবনু মাজাহ)[1]
হাদীরটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘ফাসীলাহ্’’ নামের বর্ণনাকারীকে চেনা যায় না । দেখুন- গয়াতুল মারাম হাঃ ৩০৫, পৃঃ ১৮৭।
عَن عُبَادَةَ
بْنِ كَثِيرٍ الشَّامِيِّ مِنْ أَهْلِ فِلَسْطِينَ عَن امْرَأَةٍ مِنْهُمْ يُقَالُ لَهَا فَسِيلَةُ أَنَّهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمِنَ الْعَصَبِيَّةِ أَنْ يُحِبَّ الرَّجُلُ قَوْمَهُ؟ قَالَ: «لَا وَلَكِنْ مِنَ الْعَصَبِيَّةِ أَنْ يَنْصُرَ الرَّجُلُ قَوْمَهُ عَلَى الظُّلْمِ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যাঃ (أَنْ يَنْصُرَ الرَّجُلُ قَوْمَهُ عَلَى الظُّلْمِ) মানুষকে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করা আর নিজে অন্যায় করা সমান কথা। বরং এটা আরো মারাত্মক। ঠিক ‘আসাবিয়্যাতের বিষয়টিও এরূপ। নিজে পাপী জাতির নিকট ভালো হওয়ার জন্য তাদেরকে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করাই হলো ‘আসাবিয়্যাহ্। যিনি সমাজে ‘আসাবিয়্যাতকে জিইয়ে রাখেন তিনি মূলত সমাজে ইবলীসের ভূমিকা পালন করেন। কাজেই জাতিকে জুলুম-অন্যায়ের উপর সাহায্য-সহযোগিতা থেকে সাবধান থাকুন। [সম্পাদক]
পরিচ্ছেদঃ ১৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বংশগৌরব ও পক্ষপাতিত্ব
৪৯১০-[১৮] ’উকবাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের বংশ পরিচয় এমন জিনিস নয় যে, তোমরা এর কারণে অন্যকে মন্দ বলবে। তোমরা সবাই এক আদমের সন্তান। পাল্লার সমান পাল্লা। কোন একদিক পূর্ণ করে নিতে পারো না। দীন ও আল্লাহভীতি ছাড়া তোমাদের কারো ওপর কারো মর্যাদা নেই। এক ব্যক্তি মন্দ ব্যক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে প্রগল্ভ, অশ্লীলভাষী ও কৃপণ। [আহমাদ; আর ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) ’’শু’আবুল ঈমানে’’ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।][1]
وَعَنْ
عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنْسَابُكُمْ هَذِهِ لَيْسَتْ بِمَسَبَّةٍ عَلَى أَحَدٍ كُلُّكُمْ بَنُو آدَمَ طَفُّ الصَّاعِ بِالصَّاعِ لَمْ تملؤوه لَيْسَ لِأَحَدٍ عَلَى أَحَدٍ فَضْلٌ إِلَّا بِدِينٍ وَتَقْوًى كَفَى بِالرَّجُلِ أَنْ يَكُونَ بَذِيًّا فَاحِشًا بَخِيلًا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ»
ব্যাখ্যাঃ হাদীসটির সারকথা হলো : যে ব্যক্তি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য শির্ক থেকে দূরে থাকে এবং কাবীরাহ্ ও সগীরাহ্ গুনাহ থেকে দূরে থাকে সেই প্রকৃত মর্যাদাবান। মোটকথা সকল আদম সন্তানের মাঝে কমতি রয়েছে। আর সকলে ক্ষতিগ্রস্ত তবে মুক্তাক্বী ও পূর্ণ দীনদার ব্যক্তি ব্যতীত।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَالْعَصْرِ * إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ * إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ
‘‘সময়ের কসম, নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে...’’- (সূরাহ্ আল ‘আসর ১-৩)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)