পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দু‘আ না করা

৩৬২৭-[৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মা’ইয আল আসলামী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট স্বীকারোক্তি দিল যে, সে জনৈকা নারীর সাথে অবৈধ কাজ করেছে। সে কথাটি চারবার স্বীকার করল, কিন্তু তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার দিক হতে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তথাপিও সে প্রত্যেকবারই একই কথার পুনরাবৃত্তি করল। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পঞ্চমবারে তার দিকে ফিরে বললেনঃ তুমি কি ঐ মহিলার সাথে সহবাস করেছ? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আচ্ছা! তোমার পুরুষাঙ্গ তার লজ্জাস্থানের মধ্যে প্রবেশ করে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল? সে বলল : হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তবে কি যেমনটি সুরমা শলাকা সুরমাদানির মধ্যে এবং রশি কুপের ভিতরে ঢুকে অদৃশ্য হয়ে যায়। সে বলল : জ্বী, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি জানো যিনা কাকে বলে? সে বলল : হ্যাঁ, জানি। আমি তার সাথে অবৈধভাবে এমন কাজ করেছি, যা কোনো মানুষ তার স্ত্রীর সাথে বৈধভাবে সঙ্গম করে। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, এসব কথার দ্বারা কি বলতে চাচ্ছ? সে বলল : আমি চাই আপনি আমাকে পাক-পবিত্র করে দেন। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হত্যা করার নির্দেশ করলেন। ফলে তাকে হত্যা করা হলো।

অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার দু’জন সাহাবীকে বলতে শুনলেন, তাদের মধ্যে একে অপরকে বলছে- এ লোকটির প্রতি লক্ষ্য করো। আল্লাহ তা’আলা যার দোষ-ত্রুটি গোপন করেছিলেন, কিন্তু তার নাফ্স তাকে ছাড়ল না। ফলে তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা হলো যেভাবে কুকুরকে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। তাদের উভয়ের কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নীরব থাকলেন। তারপর কিছুক্ষণ পথ চলাকালে হঠাৎ এমন একটি মৃত গাধার নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন যার পা ফুলে উপরের দিকে উঠে রয়েছে। এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন : অমুক, অমুক! (ঐ দু’ ব্যক্তি) কোথায়? তারা বলল : হে আল্লাহর রসূল! এই তো আমরা। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা দু’জন নামো এবং এ মৃত গাধাটির গোশ্ত/মাংস খাও। তারা দু’জন বলল : হে আল্লাহর নবী! এ মৃত গাধার গোশ্ত/মাংস কে খেতে পারবে? অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কিছুক্ষণ পূর্বেই তোমাদের ভাইয়ের যে ইয্যত-আব্রু নষ্ট করেছ, তা এই মৃত গাধার গোশ্ত/মাংস খাওয়ার চেয়েও মারাত্মক ছিল। সে সত্তার কসম! যার হাতে আমার জীবন। নিঃসন্দেহে সে (মা’ইয ) এখন জান্নাতের নহরসমূহে ডুব দিয়ে (ঘুড়ে) বেড়াচ্ছে। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: جَاءَ الْأَسْلَمِيُّ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشَهِدَ عَلَى نَفْسِهِ أَنَّهُ أَصَابَ امْرَأَةً حَرَامًا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ كُلَّ ذَلِكَ يُعْرِضُ عَنْهُ فَأَقْبَلَ فِي الْخَامِسَةِ فَقَالَ: «أَنِكْتَهَا؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «حَتَّى غَابَ ذَلِكَ مِنْكَ فِي ذَلِكَ مِنْهَا» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «كَمَا يَغِيبُ الْمِرْوَدُ فِي الْمُكْحُلَةِ وَالرِّشَاءُ فِي الْبِئْرِ؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ تَدْرِي مَا الزِّنَا؟» قَالَ: نَعَمْ أَتَيْتُ مِنْهَا حَرَامًا مَا يَأْتِي الرَّجُلُ مِنْ أَهْلِهِ حَلَالًا قَالَ: «فَمَا تُرِيدُ بِهَذَا الْقَوْلِ؟» قَالَ: أُرِيدُ أَنْ تُطَهِّرَنِي فَأَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ فَسَمِعَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلَيْنِ مِنْ أَصْحَابِهِ يَقُولُ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: انْظُرْ إِلَى هَذَا الَّذِي سَتَرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فَلَمْ تَدَعْهُ نَفْسُهُ حَتَّى رُجِمَ رَجْمَ الْكَلْبِ فَسَكَتَ عَنْهُمَا ثُمَّ سَارَ سَاعَةً حَتَّى مَرَّ بِجِيفَةِ حِمَارٍ شَائِلٍ برجلِهِ فَقَالَ: «أينَ فلانٌ وفلانٌ؟» فَقَالَا: نَحْنُ ذَانِ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ: «انْزِلَا فَكُلَا مِنْ جِيفَةِ هَذَا الْحِمَارِ» فَقَالَا: يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَنْ يَأْكُلُ مِنْ هَذَا؟ قَالَ: «فَمَا نِلْتُمَا مِنْ عَرْضِ أَخِيكُمَا آنِفًا أَشَدُّ مِنْ أَكْلٍ مِنْهُ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهُ الْآنَ لَفِي أنهارِ الجنَّةِ ينغمسُ فِيهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن ابي هريرة قال: جاء الاسلمي الى نبي الله صلى الله عليه وسلم فشهد على نفسه انه اصاب امراة حراما اربع مرات كل ذلك يعرض عنه فاقبل في الخامسة فقال: «انكتها؟» قال: نعم قال: «حتى غاب ذلك منك في ذلك منها» قال: نعم قال: «كما يغيب المرود في المكحلة والرشاء في البىر؟» قال: نعم قال: «هل تدري ما الزنا؟» قال: نعم اتيت منها حراما ما ياتي الرجل من اهله حلالا قال: «فما تريد بهذا القول؟» قال: اريد ان تطهرني فامر به فرجم فسمع نبي الله صلى الله عليه وسلم رجلين من اصحابه يقول احدهما لصاحبه: انظر الى هذا الذي ستر الله عليه فلم تدعه نفسه حتى رجم رجم الكلب فسكت عنهما ثم سار ساعة حتى مر بجيفة حمار شاىل برجله فقال: «اين فلان وفلان؟» فقالا: نحن ذان يا رسول الله فقال: «انزلا فكلا من جيفة هذا الحمار» فقالا: يا نبي الله من ياكل من هذا؟ قال: «فما نلتما من عرض اخيكما انفا اشد من اكل منه والذي نفسي بيده انه الان لفي انهار الجنة ينغمس فيها» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ এসব প্রশ্ন করার কারণ হলো অজ্ঞতার দ্বারা তার সাক্ষ্য থেকে তাকে ফিরিয়ে আনা যাতে তার ওপর কঠিন শাস্তি বাস্তবায়ন না হয় এবং আল্লাহর অধিকার আছে সহজ করা আর ইমাম তথা বিচারকের জন্য বৈধ আছে আসামীর অস্বীকারের কারণে দণ্ড মাওকূফ করা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দু‘আ না করা

৩৬২৮-[৪] খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো অপরাধ করে এবং তার ওপর ঐ অপরাধের দণ্ড কার্যকর হয়, তখন উক্ত দণ্ডই তার জন্য কাফফারা হয়ে যায়। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَصَابَ ذَنْبًا أُقِيمَ عَلَيْهِ حَدُّ ذَلِكَ الذَّنْبِ فَهُوَ كفارتُه» رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن خزيمة بن ثابت قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من اصاب ذنبا اقيم عليه حد ذلك الذنب فهو كفارته» رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: (كَفَّارَتُه) তার অপরাধের কাফফারা হয়ে যায় তথা সেই গুনাহকে মিটিয়ে দেয়।

ইবনু হাজার ‘আরবা‘ঈন হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, শুধু দণ্ড কায়িম করা কাফফারা স্বরূপ যেমন মুসলিমের হাদীস তবে তা দণ্ডের পাপের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর তাওবাহ্ ছেড়ে দেয়ার দৃষ্টিতে তথা তাওবাহ্ না করলে দণ্ডও কাফফারা হিসেবে কার্যকর হবে না, সুতরাং অবশ্যই তাওবাহ্ করতে হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দু‘আ না করা

৩৬২৯-[৫] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী হয় এবং দুনিয়াতে তার ওপর তা কার্যকরী হয়, তাহলে আল্লাহ তা’আলা তার বান্দার প্রতি সর্বাধিক ন্যায়পরায়ণ। সুতরাং পরকালে তাকে দ্বিতীয়বার অপরাধী করবেন না। আর যে ব্যক্তি কোনো অপরাধ করল আর আল্লাহ তা’আলা তার দোষ-ত্রুটিকে গোপন করে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তাহলে আল্লাহ তা’আলা অনেক দয়ালু-মেহেরবান। অতএব পরকালে তাকে ঐ অপরাধের জন্য আর শাস্তি দেবেন না, যা তিনি দুনিয়াতে ক্ষমা করে দিয়েছেন। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্; আর ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে গরীব বলেছেন)[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَصَابَ حَدًّا فَعُجِّلَ عُقُوبَتَهُ فِي الدُّنْيَا فَاللَّهُ أَعْدَلُ مِنْ أَنْ يُثَنِّيَ عَلَى عَبْدِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الْآخِرَة وَمن أصَاب حد فستره اللَّهُ عليهِ وَعَفَا عَنْهُ فَاللَّهُ أَكْرَمُ مِنْ أَنْ يَعُودَ فِي شَيْءٍ قَدْ عَفَا عَنْهُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
هَذَا الْبَاب خَال عَن الْفَصْل الثَّالِث

وعن علي رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من اصاب حدا فعجل عقوبته في الدنيا فالله اعدل من ان يثني على عبده العقوبة في الاخرة ومن اصاب حد فستره الله عليه وعفا عنه فالله اكرم من ان يعود في شيء قد عفا عنه» . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب هذا الباب خال عن الفصل الثالث

ব্যাখ্যা: জুমহূরদের মতে বান্দার পাপ কাজ গোপন করা আর আল্লাহর নিকট তাওবাহ্ করা প্রকাশ করার চেয়ে উত্তম। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে