পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা
২৮৯৫-[৪] ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি মুসলিমের ওপর অভাব-অনটন সৃষ্টি করে খাদ্য-সামগ্রী গুদামজাত করবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে কুষ্ঠরোগে এবং দারিদ্রে নিপতিত করবেন। (ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী-এর শু’আবুল ঈমান ও ’রযীন’ তাঁর গ্রন্থে)[1]
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنِ احْتَكَرَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ طَعَامَهُمْ ضَرَبَهُ اللَّهُ بِالْجُذَامِ وَالْإِفْلَاسِ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ. وَرَزِينٌ فِي كِتَابِهِ
ব্যাখ্যা : এখানে এ মর্মে প্রমাণ রয়েছে যে, যে ব্যক্তি মুসলিমদের ন্যূনতম ক্ষতির ইচ্ছা পোষণ করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে নিজ অর্পিত ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন। আর যে মুসলিমের উপকারের ইচ্ছা করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার জান ও মালে কল্যাণ দান করবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা
২৮৯৬-[৫] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশে চল্লিশ দিন পর্যন্ত খাদ্য-সামগ্রী গুদামজাত করে রাখবে, আল্লাহ থেকে সম্পর্কহীন (সে আল্লাহর আইন অমান্যকারী) এবং আল্লাহ তা’আলাও তার থেকে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যান (আল্লাহ তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান)। (রযীন)[1]
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ احْتَكَرَ طَعَامًا أَرْبَعِينَ يَوْمًا يُرِيدُ بِهِ الْغَلَاءَ فَقَدْ بَرِئَ مِنَ اللَّهِ وَبَرِئَ اللَّهُ مِنْهُ» . رَوَاهُ رَزِينٌ
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত চল্লিশ দিন দ্বারা নির্ধারিত সময় উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সম্পদ গুদামজাত করা বা জমা করে রাখা এবং এর মাধ্যমে নিজে লাভবান ও অন্যের ক্ষতি কামনা করা। আর এখানে আল্লাহর দায়মুক্তির উপর ব্যক্তির (খাদ্য গুদামজাতকারীর) দায় মুক্তিকেই আগে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পূর্ণ করার উপরই আল্লাহ তা‘আলার অঙ্গীকার পূর্ণ করা নির্ভরশীল। (অর্থাৎ ব্যক্তি যদি খাদ্য গুদামজাত করে আল্লাহ তাকে মুসীবাত দিবেন আর যদি না করে তবে আল্লাহ তা‘আলা তকে কল্যাণ দিবেন) যেমন আল্লাহ তা‘আলার কথা, ‘‘তোমরা আমার বিধান বাস্তবায়ন কর, আমি তোমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করব’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ৪০)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা
২৮৯৭-[৬] মু’আয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, গুদামজাতকারী ব্যক্তি কতই না নিকৃষ্ট! আল্লাহ তা’আলা দ্রব্যমূল্য কমিয়ে দিলে সে দুশ্চিন্তায় পড়ে। আর দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিলে সে আনন্দ-উচ্ছাস প্রকাশ করে। (বায়হাক্বী’র শু’আবুল ঈমানে ও ’রযীন’ তাঁর গ্রন্থে)[1]
وَعَنْ مُعَاذٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: بِئْسَ الْعَبْدُ الْمُحْتَكِرُ: إِنْ أَرْخَصَ اللَّهُ الْأَسْعَارَ حَزِنَ وَإِنْ أَغْلَاهَا فَرِحَ . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ وَرَزِينٌ فِي كِتَابِهِ
পরিচ্ছেদঃ ৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করা
২৮৯৮-[৭] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন পর্যন্ত খাদ্যজাত দ্রব্য গুদামজাত করে রাখবে, সে তার এ মাল দান-খয়রাত করে দিলেও তার জন্য যথেষ্ট (কাফফারা) হবে না। (রযীন)[1]
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنِ احْتَكَرَ طَعَامًا أَرْبَعِينَ يَوْمًا ثمَّ تَصَدَّقَ بِهِ لَمْ يَكُنْ لَهُ كَفَّارَةً» . رَوَاهُ رزين
ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, (بِه) -এর (ه) সর্বনামটি (طَعَام) এর দিকে প্রত্যাবর্তনশীল। গুদামজাতকৃত খাদ্য থেকে সাদাকা বা দান করাও যাবে না। ইবনু ‘আসাকির (রহঃ) মা‘আয থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের ওপর খাদ্য গুদামজাত করবে ৪০ দিন যাবৎ এবং তার দ্বারা যদি সে দান করে তবে তার দান কবুল হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)