পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৫৯৫-[৪] ’আমর ইবনু ’আব্দুল্লাহ ইবনু সফ্ওয়ান (রহঃ) তাঁর এক মামা হতে বর্ণনা করেন, যাকে ইয়াযীদ ইবনু শায়বান বলা হতো। ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, আমরা ’আরাফাতে আমাদের (পূর্ব পুরুষদের) নির্দিষ্ট স্থানে ছিলাম। ’আমর বলেন, এ স্থানটি ছিল ইমামের (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) স্থান হতে অনেক দূরে। ইয়াযীদ(রাঃ) বলেন, এমন সময় আমাদের কাছে ইবনু মিরবা’ আল আনসারী এসে বললেন, আমি তোমাদের কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ হতে প্রেরিত প্রতিনিধি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে তোমাদের অবস্থানেই (’ইবাদাতগাহেই) থাকার জন্য বলেছেন। কারণ তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের সুন্নাতের উপরেই রয়েছ। (তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ)[1]

عَنْ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَفْوَانَ عَنْ خَالٍ لَهُ يُقَالُ لَهُ يَزِيدُ بْنُ شَيْبَانَ قَالَ: كُنَّا فِي مَوْقِفٍ لَنَا بِعَرَفَةَ يُبَاعِدُهُ عَمْرٌو مِنْ مَوْقِفِ الْإِمَامِ جِدًّا فَأَتَانَا ابْنُ مِرْبَعٍ الْأَنْصَارِيُّ فَقَالَ: إِنِّي رَسُولُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْكُمْ يَقُولُ لَكُمْ: «قِفُوا عَلَى مَشَاعِرِكُمْ فَإِنَّكُمْ عَلَى إِرْثِ من إِرْثِ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ

عن عمرو بن عبد الله بن صفوان عن خال له يقال له يزيد بن شيبان قال: كنا في موقف لنا بعرفة يباعده عمرو من موقف الامام جدا فاتانا ابن مربع الانصاري فقال: اني رسول رسول الله صلى الله عليه وسلم اليكم يقول لكم: «قفوا على مشاعركم فانكم على ارث من ارث ابيكم ابراهيم عليه السلام» . رواه الترمذي وابو داود والنساىي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: ইয়াযীদ বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে আমরা আমাদের বাপ-দাদা ও পূর্ববর্তীদের প্রথানুসারে ইমামের অবস্থান করার স্থান হতে অনেক দূরে থাকতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দূতের মাধ্যমে তাদেরকে তাদের মাশ্‘আর তথা কুরবানী করার স্থানে অবস্থান করতে বললেন। কেননা তাদের অবস্থান ছিল ইব্রাহীম (আঃ)-এর অবস্থান করার জায়গায়। তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত অনুযায়ী অবস্থান করেছিলেন। তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে দূরে অবস্থান করাকে হজ্জের ত্রুটি মনে করতেন অথবা তারা ধারণা করতেন যে, তারা যেখানে অবস্থান করে সেটি অবস্থানের স্থান নয়। তাদের অন্তরের প্রশান্তির জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দূত পাঠিয়ে সেখানেই অবস্থান করতে বলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৫৯৬-[৫] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’আরাফার সম্পূর্ণ স্থানই অবস্থানস্থল এবং মিনার সম্পূর্ণ স্থানই কুরবানীর স্থান, মুযদালিফার সম্পূর্ণটাই অবস্থানস্থল এবং মক্কার সকল পথই রাস্তা ও কুরবানীর স্থান। (আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «كُلُّ عَرَفَةَ مَوْقِفٌ وَكُلُّ مِنًى مَنْحَرٌ وَكُلُّ الْمُزْدَلِفَةِ مَوْقِفٌ وَكُلُّ فِجَاجِ مَكَّةَ طَرِيقٌ وَمَنْحَرٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ

وعن جابر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «كل عرفة موقف وكل منى منحر وكل المزدلفة موقف وكل فجاج مكة طريق ومنحر» . رواه ابو داود والدارمي

ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীসটিতে হজ্জের কয়েকটি কার্যাবলীতে বিশেষ প্রশস্ততা প্রদান করা হয়েছে তা হচ্ছে, বাত্বনি ‘উরানাহ্ ব্যতীত ‘আরাফার সকল স্থানই হজ্জের জন্য অবস্থানের স্থান। মিনার সকল স্থানই কুরবানী করার এবং হজ্জের জন্তু যবেহের স্থান। মিনা ও ‘আরাফার মতো মুযদালিফার সকল স্থানই অবস্থানের স্থান। কিন্তু বাত্বনি মুহাসসার ব্যতীত। আর মক্কায় সকল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা জায়িয আছে, যদিও সানিয়্যাহ্ দিয়ে প্রবেশ করা উত্তম। যেখান দিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করেছিলেন। অনুরূপ মক্কার সকল স্থানে কুরবানী করা বৈধ। কেননা তা হারাম সীমানার অন্তর্ভুক্ত। মূলত এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রশস্ততা দান ও সংকীর্ণতা দূর করা। এভাবেই ইমাম ত্বীবী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৫৯৭-[৬] খালিদ ইবনু হাওযাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উটের উপর চড়ে ’আরাফার দিনে দু’ পাদানীতে পা রেখে সওয়ার অবস্থায় ভাষণ দিতে দেখেছি। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن خالدِ بنَ هَوْذَةَ قَالَ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ يَوْمَ عَرَفَةَ عَلَى بَعِيرٍ قَائِمًا فِي الركابين. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن خالد بن هوذة قال: رايت النبي صلى الله عليه وسلم يخطب الناس يوم عرفة على بعير قاىما في الركابين. رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: আবূ ‘আমর ইবনু ‘আলী হতে আল আসমা‘ঈ বর্ণনা করেন ‘আদা তার ভাই হারমালাহ্ ও তাদের দু’জনের পিতা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তারা দু’জন তাদের সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুযা‘আহ্-এর নিকট দু’জনের ইসলাম গ্রহণের সুসংবাদ পাঠালেন। ‘আরাফার দিন দ্বিপ্রহরের পরে উটে চড়ে থেকে তাদের হজ্জের কার্যাবলী শিক্ষা দিতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৫৯৮-[৭] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতা শু’আয়ব হতে, তিনি তাঁর দাদা [’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সকল দু’আর শ্রেষ্ঠ দু’আ হলো ’আরাফার দিনের দু’আ আর শ্রেষ্ঠ কালিমাহ্ (যিকির) যা আমি পাঠ করেছি ও আমার পূর্ববর্তী নবীগণ পাঠ করেছেন তা হলো, ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর’’ (অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শারীক নেই। তাঁরই রাজত্ব। তার জন্যই সকল প্রশংসা। তিনি সকল শক্তির আঁধার।)। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ وَخَيْرُ مَا قُلْتُ أَنَا وَالنَّبِيُّونَ مِنْ قَبْلِي: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْء قدير . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: خير الدعاء دعاء يوم عرفة وخير ما قلت انا والنبيون من قبلي: لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ‘আরাফার দিনের দু‘আ সর্বোত্তম দু‘আ বলতে, অধিক সাওয়াব পাওয়ার এবং অধিক দু‘আ গ্রহণ হওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে এবং অন্যান্য দিনের চেয়ে ‘আরাফার দিনের মর্যাদা প্রমাণিত হয় বর্ণিত হাদীস দ্বারা। এ দিনে উত্তম দু‘আ হচ্ছে, হাদীসে বর্ণিত দু‘আটি। এরপর তিনি اَللّٰهُمَّ اجَّعَلْ فِىْ قَلْبِىْ نُوْرًا এ দু‘আটি পড়তেন। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা ‘‘আর সর্বোত্তম দু‘আ হচ্ছে, যা আমি বলি’’ এর ব্যাখ্যায় শায়খ দেহলবী (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ- আমি দু‘আ করতাম, দু‘আটি হচ্ছে, لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ পূর্ণাঙ্গ দু‘আটি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পূর্ববর্তী নাবীগণও ‘আরাফার দিন সন্ধ্যায় এ দু‘আটি পড়তেন।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৫৯৯-[৮] ইমাম মালিক এ হাদীসটি তলহা ইবনু ’উবায়দুল্লাহ (রাঃ) হতে ’’লা- শারীকা লাহূ’’ বাক্য পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন।)[1]

وروى مالكٌ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ إِلَى قَوْلِهِ: «لَا شريك لَهُ»

وروى مالك عن طلحة بن عبيد الله الى قوله: «لا شريك له»

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে পূর্বের হাদীসে বর্ণিত দু‘আ সম্পর্কে বলা হয়েছে। পূর্বের হাদীসে বর্ণিত দু‘আ- لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ، لَهُ المُلْكُ، وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ এর পরিবর্তে لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَهُ পর্যন্ত হবে বলে এ হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে। এর সমর্থনে ইমাম বাইহাক্বী ও তার কিতাবে হাদীস সংকলন করেছেন। কিন্তু ইমাম ‘আবদুল বার (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীসের ব্যাপারে সকলে একমত যে, এটা মুরসাল হাদীস।

ইমাম বুখারী (রহঃ) এটাকে মুনকার হাদীস বলেছেন। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, ‘আরাফার দিনের দু‘আটি হবে- لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ، لَهُ المُلْكُ، وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ আর এটাই শুদ্ধ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৬০০-[৯] তলহা ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু কারীয (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শয়তানকে ’আরাফার দিন ব্যতীত অন্য কোন দিন এত অপমানিত, এত লাঞ্ছিত, এত বেশি ঘৃণিত ও এত বেশী রাগান্বিত হতে দেখা যায় না। কেননা শয়তান এদিন দেখতে থাকে বান্দাদের প্রতি আল্লাহর রহমত নাযিল হচ্ছে, তাদের বড় বড় গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হচ্ছে। তবে এটা বদরের দিন দেখে গিয়েছিল। কেউ জিজ্ঞেস করলো, বদরের দিন কি দেখা গিয়েছিল (হে আল্লাহ রসূল!)। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সেদিন সে নিশ্চিতভাবে শয়তান দেখেছিল, জিবরীল (আঃ) মালায়িকাকে (ফেরেশতাগণকে) কাতারবন্দী করতে দেখেছিল। (মালিক মুরসাল হিসেবে; ইমাম বাগাবী শারহুস্ সুন্নাহয় তবে শব্দবিন্যাস মাসাবীহ-এর)[1]

لإرساله وَعَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ كَرِيزٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا رُئِيَ الشَّيْطَانُ يَوْمًا هُوَ فِيهِ أَصْغَرُ وَلَا أَدْحَرُ وَلَا أَحْقَرُ وَلَا أَغْيَظُ مِنْهُ فِي يَوْمِ عَرَفَةَ وَمَا ذَاكَ إِلَّا لِمَا يَرَى مِنْ تَنَزُّلِ الرَّحْمَةِ وَتَجَاوُزِ اللَّهِ عَنِ الذُّنُوبِ الْعِظَامِ إِلَّا مَا رُئِيَ يَوْمَ بَدْرٍ» . فَقِيلَ: مَا رُئِيَ يَوْمَ بَدْرٍ؟ قَالَ: «فَإِنَّهُ قَدْ رَأَى جِبْرِيلَ يَزَعُ الْمَلَائِكَةَ» . رَوَاهُ مَالِكٌ مُرْسَلًا وَفِي شَرْحِ السُّنَّةِ بِلَفْظِ الْمَصَابِيحِ

لارساله وعن طلحة بن عبيد الله بن كريز ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ما رىي الشيطان يوما هو فيه اصغر ولا ادحر ولا احقر ولا اغيظ منه في يوم عرفة وما ذاك الا لما يرى من تنزل الرحمة وتجاوز الله عن الذنوب العظام الا ما رىي يوم بدر» . فقيل: ما رىي يوم بدر؟ قال: «فانه قد راى جبريل يزع الملاىكة» . رواه مالك مرسلا وفي شرح السنة بلفظ المصابيح

ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীসটিতে ‘আরাফার দিনে শয়তানের তুচ্ছ, অপমানিত এবং খারাপ অবস্থানের অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। শয়তান ‘আরাফার সারাদিন সেখান হতে দূরে থাকে। তার (শয়তানের) অপমানিত, লাঞ্চিত এবং খারাপ অবস্থায় থাকার ও ‘আরাফার ময়দান হতে দূরে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে, সে আল্লাহ তা‘আলা ‘আরাফায় অবস্থানকারী বান্দাদের কাবীরাহ্ গুনাহগুলো ক্ষমা করেন। আর রহমাতে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) ‘আরাফায় অবস্থানকারীদের নিকট অবতরণ করেন। তার আরেকটি কারণ হতে পারে যে, সে (শয়তান) মালায়িকাহ্-কে হাজীদের দু‘আর জন্য ডানা বিছাতে দেখেছে। আর এটাও সম্ভাবনা থাকতে পারে যে, সে অর্থাৎ- শয়তান মালায়িকাহ্-কে বলতে শুনেছে যে, তাদের (হাজী তথা ‘আরাফায় অবস্থানকারীদেরকে) আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ শয়তানের এমন অনুভূতি শক্তি সৃষ্টি করেছেন, যার কারণে সে মালায়িকাহ্-কে আনিত খবরের সংবাদ শুনেছে যে, আল্লাহ ‘আরাফায় অবস্থানকারীদের কাবীরাসহ সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।

অনুরূপ খারাপ অবস্থায় শয়তান ছিল দ্বিতীয় হিজরীতে অনুষ্ঠিত বদর যুদ্ধে। যখন শয়তান দেখেছিল মালায়িকাহ্ মুজাহিদদের যুদ্ধের জন্য সাজিয়ে দিচ্ছিলেন এবং তাদেরকে কাতার হতে বের হতে নিষেধ করেছিলেন। আর হাদীসটিতে হজ্জের ফাযীলাত, ‘আরাফায় উপস্থিত বাদরের দিনের এবং পাপীদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ করার ফাযীলাত বর্ণিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফায় অবস্থান প্রসঙ্গে

২৬০১-[১০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’আরাফার দিন আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং হাজীদের ব্যাপারে মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) সম্মুখে গর্ববোধ করেন এবং বলেন, তোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকাও, তারা আমার কাছে আসছে এলোমেলো চুলে, ধূলাবালি গায়ে, আহাজারী করতে করতে দূর-দূরান্ত হতে উপস্থিত হয়েছে। আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি তাদেরকে মাফ করে দিলাম। তখন মালায়িকাহ্ বলেন, হে রব! অমুক বান্দাকে তো বড় গুনাহগার বলে অভিহিত করা হয় এবং অমুক পুরুষ ও নারীকেও। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তখন বলেন, আমি তাদেরকেও ক্ষমা করে দিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’আরাফার দিনের চেয়ে এত বেশি জাহান্নাম হতে মুক্তি দেবার মতো আর কোন দিন নেই। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَ يَوْمُ عَرَفَةَ إِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيُبَاهِي بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ فَيَقُولُ: انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي أَتَوْنِي شُعْثًا غُبْرًا ضَاجِّينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ فَيَقُولُ الْمَلَائِكَةُ: يَا رَبِّ فُلَانٌ كَانَ يُرَهَّقُ وَفُلَانٌ وَفُلَانَةُ قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَمَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ عَتِيقًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن جابر رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا كان يوم عرفة ان الله ينزل الى السماء الدنيا فيباهي بهم الملاىكة فيقول: انظروا الى عبادي اتوني شعثا غبرا ضاجين من كل فج عميق اشهدكم اني قد غفرت لهم فيقول الملاىكة: يا رب فلان كان يرهق وفلان وفلانة قال: يقول الله عز وجل: قد غفرت لهم . قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «فما من يوم اكثر عتيقا من النار من يوم عرفة» . رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা ‘আরাফার দিন, দুনিয়ার আসমানে নেমে এসে ‘আরাফায় অবস্থানকারী বান্দাদের নিয়ে দুনিয়ার মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) অথবা নিকটবর্তী মালাক (ফেরেশতা) অথবা সকল মালায়িকাহ্’র সাথে ফখর করেন। অতঃপর আল্লাহ বলেন, মালায়িকাহ্’র তোমরা লক্ষ্য করো, তারা বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দেশ হতে এসেছে এবং উচ্চস্বরে তালবিয়াহ্ পাঠ করছে। তোমরা সাক্ষ্য থাক! আমি তাদের সকলকে ক্ষমা করে দিলাম। তখন মালায়িকাহ্ আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলেন, তাদের মধ্যে তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এবং নাফরমানী ও ফাসিক্বী নারী-পুরুষ আছে। আল্লাহ বলেন, তবুও আমি ক্ষমা করে দিলাম। কেননা হজ্জ/হজ তার পূর্ববর্তী পাপসমূহকে বিনষ্ট করে দেয়। আর সেদিন আল্লাহ অনেক সংখ্যক লোককে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিবেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك) 11. The Rites of Pilgrimage
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে