পরিচ্ছেদঃ ৩৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত
১২৯৩-[৬] হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমীরুল মু’মিনীন ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) (রমাযান মাসের তারাবীহের জন্যে) লোকজনকে একত্র করলেন। তিনি [’উমার (রাঃ)] উবাই ইবনু কা’বকে ইমাম নিযুক্ত করলেন। উবাই ইবনু কা’ব তাদের নিয়ে বিশ রাত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। তিনি (উবাই) রমাযানের শেষ পনের দিন ছাড়া আর কোন দিন লোকদেরকে নিয়ে দু’আ কুনূত পড়েননি। শেষ দশ দিন উবাই ইবনু কা’ব মসজিদে আসেননি। বরং তিনি বাড়িতেই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। লোকেরা বলতে লাগল, উবাই ইবনু কা’ব ভেগে গেছেন। (আবূ দাঊদ)[1]
عَن الْحسن: أَن عمر بن الْخطاب جَمَعَ النَّاسَ عَلَى أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ فَكَانَ يُصَلِّي بِهِمْ عِشْرِينَ لَيْلَةً وَلَا يَقْنُتُ بِهِمْ إِلَّا فِي النِّصْفِ الْبَاقِي فَإِذَا كَانَتِ الْعَشْرُ الْأَوَاخِرُ تَخَلَّفَ فَصَلَّى فِي بَيْتِهِ فَكَانُوا يَقُولُونَ: أبق أبي. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: উবাই ইবনু কা‘ব তাদের সাথে তারাবীহ আদায়ের জন্য আর মসজিদে প্রবেশ করতেন না। আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন যে, তাদের أبق শব্দটি বলা উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর তারাবীহের জামা‘আত থেকে পিছে যেয়ে আর না আসার প্রতি অপছন্দনীয়তা প্রকাশ। তার ফিরে না আসাকে তারা হারানো দাসের সাথে তুলনা করেছেন।
এ হাদীস দ্বারা শাফি‘ঈ মাযহাবীগণ দলীল গ্রহণ করেছেন যে, বিতরে কুনূত পড়াটা রমাযানের শেষোর্ধেকের সাথে নির্দিষ্ট। কিন্তু হাদীসটি য‘ঈফ, কেননা তা মুনক্বাতি‘ কারণ হাসান ‘উমার (রাঃ)-কে পাননি। তাছাড়া ‘উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর খিলাফাতের ছয় বছর অবশিষ্ট থাকতে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন।
বিঃ দ্রঃ এখানে হাসান বলতে হাসান আল বসরী উদ্দেশ্য।
পরিচ্ছেদঃ ৩৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু‘আ কুনূত
১২৯৪-[৭] আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ’র পর দু’আ কুনূত পড়তেন। আর এক সূত্রে আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’আ কুনূত পড়তেন কখনো রুকূ’র পূর্বে, আর কখনো রুকূ’র পরে। (ইবনু মাজাহ)[1]
وَسُئِلَ أَن بْنُ مَالِكٍ عَنِ الْقُنُوتِ. فَقَالَ: قَنَتَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدُ الرُّكُوعِ وَفِي رِوَايَةٍ: قَبْلَ الرُّكُوعِ وَبَعْدَهُ. رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: এক মাস নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ‘র পরে ফরয সালাতে কুনূত পড়েছেন, অথবা ফাজরের (ফজরের) সালাতে পড়েছেন, যখন রি‘ল, যাক্ওয়ান এবং ‘আসিয়্যাহ্ গোত্রগুলোর উপর বদ্দু‘আ করতেন যেমন ‘আসিম (রাঃ)-এর হাদীস অতিবাহিত হয়েছে। তবে এ হাদীসের মূল রয়েছে সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে সেখানে উল্লেখ রয়েছে যে, তিনি অধিকাংশ সময় রুকূ‘র পরে কুনূত পড়তেন। অপর বর্ণনা রয়েছে যে, আনাস (রাঃ)-কে কুনূতের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, রুকূ‘র আগে ও পরে কুনূত পড়তাম।
ইবনু মুনযির (রহঃ) বলেন যে, নিশ্চয় কতিপয় সাহাবায়ে কিরাম ফাজ্রের (ফজরের) সালাতে রুকূ‘র আগে কুনূত পড়তেন, আবার কতিপয় রুকূ‘র পরে পড়তেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কুনূতে নাযিলাহ্ ব্যতীত ফরয সালাতে কোন কুনূত পড়াটা প্রমাণিত নয় এবং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কুনূতে নাযিলাহ্ রুকূ‘র পরে ছাড়া পড়তেন না। (আল্লাহ ভাল জানেন)
তাছাড়া হাসান আল বসরী পুরো বছরই কুনূত পড়তেন, যেমন মুহাম্মাদ বিন নাসর খান মারুযী কিতাবুল বিতর নামক গ্রন্থের ৩২ পৃষ্ঠায় তা উল্লেখ করেছেন এবং বিতরের কুনূত পড়াটা শুধু রমাযানের জন্য প্রযোজ্য- এই মর্মে কোন সহীহ কিংবা হাসান হাদীসও বর্ণিত হয়নি।