পরিচ্ছেদঃ ২. নফল সালাত ও অন্য যে কোন নফল ইবাদাতের উপর মাতা-পিতার খিদমাত আগ্রাধিকার প্রাপ্ত

৬৪০২-(৭/২৫৫০) শাইবান ইবনু ফাররূখ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুরায়জ (বনী ইসরাঈলের একজন আবিদ ব্যক্তি) তার ইবাদাতখানায় ইবাদাতে নিমগ্ন থাকতেন। (একবার) তার মাতা তার কাছে আসলেন। হুমায়দ (রহঃ) বলেন, আমাদের কাছে আবু রাফি এমন ভঙ্গিতে ব্যক্ত করেন, যেমনভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মায়ের ডাকের ভঙ্গিতে আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর কাছে ব্যক্ত করেছেন। কিভাবে তার হাত তাঁর ভ্রুর উপর রাখছিলেন। এরপর তার দিকে মাথা উঁচু করে তাকে ডাকছিলেন। বললেন, হে জুরায়জ! আমি তোমার মা, আমার সাথে কথা বলো। এ কথা এমন অবস্থায় বলছিলেন, যখন জুরায়জ সালাতে নিমগ্ন ছিলেন। তখন তিনি মনে মনে বলতে লাগলেন, “হে আল্লাহ! (একদিকে) আমার মা আর (অপরদিকে) আমার সালাত (আমি কী করি?)"।

রাবী বলেন, অবশেষে তিনি তার সালাতকে অগ্রাধিকার দিলেন এবং তার মা ফিরে গেলেন। পরে তিনি দ্বিতীয়বার আসলেন এবং বললেন, হে জুরায়জ। আমি তোমার মা, তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো। তিনি বললেন, ইয়া আল্লাহ! আমার মা, আমার সালাত। তখন তিনি তার সালাতে ব্যস্ত রইলেন। তখন তার মা বললেন, “হে আল্লাহ! এ জুরায়জ আমারই ছেলে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। সে আমার সাথে কথা বলতে অস্বীকার করল। হে আল্লাহ তার মৃত্যু দিয়ো না, যে পর্যন্ত তাকে ব্যভিচারিণীর মুখ না দেখাও।” তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যদি তার মাতা তার বিরুদ্ধে অন্য কোন বিপদের জন্য বদদু’আ করতেন তাহলে অবশ্যই সে, বিপদে পতিত হত।

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এক মেষ রাখাল জুরায়জ এর ইবাদাতখানার নিকটেই (মাঝে মাঝে) আশ্রয় নিত। তিনি বলেন, এরপর গ্রাম থেকে এক মহিলা বের হয়ে এলে উক্ত রাখাল তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। এতে মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। তখন লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করল, এ (সন্তান) কোথা থেকে? সে উত্তর দিল, এ ইবাদাতখানায় যে বাস করে, তার থেকে। তিনি বলেন, এরপর তারা শাবল কোদাল ইত্যাদি নিয়ে এলো এবং চীৎকার করে ডাক দিল। তখন জুরায়জ সালাতে মশগুল ছিলেন। কাজেই তিনি তাদের সাথে কথা বললেন না। তিনি বলেন, এরপর তারা তার ইবাদাতখানা ধ্বংস করতে লাগল।

তিনি এ অবস্থা দেখে নীচে নেমে এলেন। এরপর তারা বলল, এ মহিলাকে জিজ্ঞেস করো (সে কী বলছে)। তিনি বলেন, তখন জুরায়জ মুচকি হেসে শিশুটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, তোমার পিতা কে? তখন শিশুটি বলল, আমার পিতা সে মেষ রাখাল। যখন তারা সে শিশুটির মুখে এ কথা শুনতে পেল তখন তারা বলল, (হে দরবেশ) আমরা তোমার ইবাদাতখানার (গীর্জার) যতটুকু ভেঙ্গে ফেলেছি তা সোনা-রূপা দিয়ে পুনঃনির্মাণ করে দেব। তিনি বললেন, না; বরং তোমরা মাটি দ্বারাই পূর্বের ন্যায় তা নির্মাণ করে দাও। এরপর তিনি তার ইবাদাতগাহে উঠে বসলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৭৭, ইসলামিক সেন্টার ৬৩২৬)

باب تَقْدِيمِ بِرِّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى التَّطَوُّعِ بِالصَّلاَةِ وَغَيْرِهَا ‏‏

حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ هِلاَلٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ جُرَيْجٌ يَتَعَبَّدُ فِي صَوْمَعَةٍ فَجَاءَتْ أُمُّهُ ‏.‏ قَالَ حُمَيْدٌ فَوَصَفَ لَنَا أَبُو رَافِعٍ صِفَةَ أَبِي هُرَيْرَةَ لِصِفَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّهُ حِينَ دَعَتْهُ كَيْفَ جَعَلَتْ كَفَّهَا فَوْقَ حَاجِبِهَا ثُمَّ رَفَعَتْ رَأْسَهَا إِلَيْهِ تَدْعُوهُ فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ كَلِّمْنِي ‏.‏ فَصَادَفَتْهُ يُصَلِّي فَقَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَرَجَعَتْ ثُمَّ عَادَتْ فِي الثَّانِيَةِ فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ فَكَلِّمْنِي ‏.‏ قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَقَالَتِ اللَّهُمَّ إِنَّ هَذَا جُرَيْجٌ وَهُوَ ابْنِي وَإِنِّي كَلَّمْتُهُ فَأَبَى أَنْ يُكَلِّمَنِي اللَّهُمَّ فَلاَ تُمِتْهُ حَتَّى تُرِيَهُ الْمُومِسَاتِ ‏.‏ قَالَ وَلَوْ دَعَتْ عَلَيْهِ أَنْ يُفْتَنَ لَفُتِنَ ‏.‏ قَالَ وَكَانَ رَاعِي ضَأْنٍ يَأْوِي إِلَى دَيْرِهِ - قَالَ - فَخَرَجَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الْقَرْيَةِ فَوَقَعَ عَلَيْهَا الرَّاعِي فَحَمَلَتْ فَوَلَدَتْ غُلاَمًا فَقِيلَ لَهَا مَا هَذَا قَالَتْ مِنْ صَاحِبِ هَذَا الدَّيْرِ ‏.‏ قَالَ فَجَاءُوا بِفُئُوسِهِمْ وَمَسَاحِيهِمْ فَنَادَوْهُ فَصَادَفُوهُ يُصَلِّي فَلَمْ يُكَلِّمْهُمْ - قَالَ - فَأَخَذُوا يَهْدِمُونَ دَيْرَهُ فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ نَزَلَ إِلَيْهِمْ فَقَالُوا لَهُ سَلْ هَذِهِ - قَالَ - فَتَبَسَّمَ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَ الصَّبِيِّ فَقَالَ مَنْ أَبُوكَ قَالَ أَبِي رَاعِي الضَّأْنِ ‏.‏ فَلَمَّا سَمِعُوا ذَلِكَ مِنْهُ قَالُوا نَبْنِي مَا هَدَمْنَا مِنْ دَيْرِكَ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ ‏.‏ قَالَ لاَ وَلَكِنْ أَعِيدُوهُ تُرَابًا كَمَا كَانَ ثُمَّ عَلاَهُ ‏.‏

حدثنا شيبان بن فروخ، حدثنا سليمان بن المغيرة، حدثنا حميد بن هلال، عن ابي رافع، عن ابي هريرة، انه قال كان جريج يتعبد في صومعة فجاءت امه ‏.‏ قال حميد فوصف لنا ابو رافع صفة ابي هريرة لصفة رسول الله صلى الله عليه وسلم امه حين دعته كيف جعلت كفها فوق حاجبها ثم رفعت راسها اليه تدعوه فقالت يا جريج انا امك كلمني ‏.‏ فصادفته يصلي فقال اللهم امي وصلاتي ‏.‏ فاختار صلاته فرجعت ثم عادت في الثانية فقالت يا جريج انا امك فكلمني ‏.‏ قال اللهم امي وصلاتي ‏.‏ فاختار صلاته فقالت اللهم ان هذا جريج وهو ابني واني كلمته فابى ان يكلمني اللهم فلا تمته حتى تريه المومسات ‏.‏ قال ولو دعت عليه ان يفتن لفتن ‏.‏ قال وكان راعي ضان ياوي الى ديره - قال - فخرجت امراة من القرية فوقع عليها الراعي فحملت فولدت غلاما فقيل لها ما هذا قالت من صاحب هذا الدير ‏.‏ قال فجاءوا بفىوسهم ومساحيهم فنادوه فصادفوه يصلي فلم يكلمهم - قال - فاخذوا يهدمون ديره فلما راى ذلك نزل اليهم فقالوا له سل هذه - قال - فتبسم ثم مسح راس الصبي فقال من ابوك قال ابي راعي الضان ‏.‏ فلما سمعوا ذلك منه قالوا نبني ما هدمنا من ديرك بالذهب والفضة ‏.‏ قال لا ولكن اعيدوه ترابا كما كان ثم علاه ‏.‏


Abu Huraira reported that Juraij was one who was devoted to (prayer) in the temple. His mother came to him. Humaid said that Abu Rafi' demonstrated before us like the demonstration made by abu Huraira to whom Allah's Messenger (ﷺ) had demonstrated as his mother called him placing her palms upon the eyebrows and lifting her head for calling him and said:
Juraij, it is your mother, so talk to her. She found him at that time absorbed in prayer, so he said (to himself): O Lord, my mother (is calling me) (whereas I am absorbed) in my prayer. He opted for prayer. She (his mother) went back, then came again for the second time and said: O Juraij, it is your mother (calling you), so talk to me. He said: O Allah. there is my mother also and my prayer, and he opted for prayer. She said: O Allah, this Juraij is my son. I pray to talk to him but he refuses to talk to me. O Allah, don't bring death to him unless he has seen the prostitutes, and had she invoked the curse upon him (from the heart of her heart) he would have been involved in some turmoil. There was a shepherd living near by his temple (the temple where Juraij was engaged in prayer). It so happened that a woman of that village came there and that shepherd committed fornication with her and she became pregnant and gave birth to a child. It was said to her: Whose child is this? She said: He is the child of one who is living in this temple. So there came persons with hatchets and spades. They called Juraij. He was absorbed in prayer and he did not talk to them and they were about to demolish that temple that he saw them and then came to them and they said: Ask her (this woman) what she says. He smiled and then touched the head of the child and said: Who is your father? He (the child) said: My father is the shepherd of the sheep, and when they heard this, they said: We are prepared to rebuild with gold and silver what we have demolished from your temple. He said: No, rebuild it with clay as it had been before. He then went up (to his room and absorbed himself in prayer).


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৪৬। সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب) 46. The Book of Virtue, Enjoining Good Manners, and Joining of the Ties of Kinship

পরিচ্ছেদঃ ২. নফল সালাত ও অন্য যে কোন নফল ইবাদাতের উপর মাতা-পিতার খিদমাত আগ্রাধিকার প্রাপ্ত

৬৪০৩-(৮/...) যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তিনজন ব্যতীত কেউ দোলনায় কথা বলেনি। তাদের মধ্যে একজন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ), আরেকজন জুরায়জ সম্পর্কিত শিশুটি। জুরায়জ ছিলেন একজন ইবাদাতগুজার ব্যক্তি। তিনি একটি ইবাদাতখানা তৈরি করে সেখানে অবস্থান করতেন। এক সময় তার কাছে তার মা আসলেন। তিনি সে সময় সালাতে নিমগ্ন ছিলেন। মা ডাকলেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বলতে লাগলেন, হে আমার প্রতিপালক! (একদিকে) আমার মা ও (অপর দিকে) আমার সালাত। এরপর তিনি সালাতে মগ্ন থাকলেন। মা ফিরে গেলেন।

পরের দিন তিনি আবার তার কাছে এলেন। তখনও তিনি সালাত আদায় করছিলেন। তিনি বললেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বললেন, হে আমার প্রতিপালক একদিকে আমার মা (আমাকে ডাকছেন) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত। এরপর তিনি সালাতে মশগুল রইলেন। মা ফিরে গেলেন। এরপরের দিন আবার এলেন। তখনও তিনি সালাতেই রত ছিলেন। এবারও (মা) বললেন, হে জুরায়জ! তখন তিনি (মনে মনে) বললেন, হে আমার প্রতিপালক! একদিকে আমার মা (আমাকে ডাকছেন)। (অন্যদিকে) আমার সালাত। এরপর তিনি সালাতেই লিপ্ত রইলেন। এবার তার মা বললেন, হে আল্লাহ! বদকার স্ত্রীলোকের সম্মুখীন করার আগ পর্যন্ত তুমি তার মৃত্যু দিয়ো না।

এরপর বানু ইসরাঈলদের মধ্যে জুরায়জ ও তার ইবাদাত সম্পর্কে আলোচনা হতে লাগল। (বনী ইসরাঈলের মধ্যে) সৌন্দর্য উপমেয় এক দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিল। সে বলল, যদি তোমরা চাও তাহলে আমি তোমাদের সামনে তাকে (জুরায়জকে) ফিতনায় ফেলতে পারি। তিনি বলেন, এরপর সে জুরায়জের সামনে নিজেকে পেশ করে। কিন্তু জুরায়জ তার প্রতি ভ্রুক্ষেপও করেননি। অবশেষে সে এক মেষ রাখালের নিকট আসে। সে জুরায়জের ইবাদাতখানায় মাঝে মধ্যে যাওয়া-আসা করত। সে তাকে নিজের দিকে প্রলুব্ধ করল। সে (রাখাল) তার উপর অনুরক্ত হলো। এতে সে গর্ভবতী হয়ে গেল। যখন সে সন্তান প্রসব করল তখন বলে দিল যে, এ সন্তান জুরায়জের। লোকেরা (এ কথা শুনে) তার কাছে এসে জড়ো হলো এবং তাকে নীচে নামতে বাধ্য করল এবং তারা তার ইবাদাতখানা ভেঙ্গে ফেলল আর তাকে প্রহার করতে লাগল। তখন তিনি (জুরায়জ) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের ব্যাপার কী? তারা বলল, তুমি তো এ দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোকের সাথে ব্যভিচার করেছে এবং তোমার পক্ষ থেকে সে সন্তান প্রসব করেছে।

তখন তিনি বললেন, শিশুটি কোথায়? তারা শিশুটি নিয়ে এলো। এরপর তিনি বললেন, আমাকে একটু অবকাশ দাও, আমি সালাত আদায় করে নেই। তারপর তিনি সালাত আদায় করলেন এবং সালাত শেষে শিশুটির কাছে এলেন। এরপর তিনি শিশুটির পেটে টোকা দিয়ে বললেন, হে বৎস! তোমার পিতা কে? সে উত্তর করল। অমুক রাখাল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন লোকেরা জুরায়জের দিকে এগিয়ে আসলো এবং তাকে চুম্বন করতে এবং তার গায়ে হাত বুলাতে লাগল। এরপর বলল, আমরা আপনার ইবাদাতখানা স্বর্ণ দ্বারা নির্মাণ করে দিব। তিনি বললেন, না বরং পুনরায় মাটি দিয়ে তৈরি করে দাও, যেমন ছিল। লোকেরা তাই করল।

(তৃতীয় জন) একদা এক শিশু তার মায়ের দুধ পান করছিল। তখন উত্তম পোষাকে সজ্জিত এক লোক একটি হৃষ্টপুষ্ট সওয়ারীর উপর আরোহণ করে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তার মা বলল, হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে এর মতো বানিয়ে দাও। তখন শিশুটি মাতৃস্তন ছেড়ে তার প্রতি লক্ষ্য করে বলল, "হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এর মতো বানিও না।" এরপর সে আবার স্তনের দিকে ফিরে দুধ পান করতে লাগল। রাবী বলেন, মনে হয় যেন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এখনো দেখছি যে, তিনি তার শাহাদাত অঙ্গুলি নিজ মুখে দিয়ে তা চুষে সে শিশুটির দুধ পানের দৃশ্য দেখাচ্ছেন। এরপর তিনি বর্ণনা করলেন যে, কিছু লোক একজন যুবতীকে নিয়ে যাচ্ছিল এবং তাকে তারা প্রহার করছিল এবং বলাবলি করছিল যে, তুই ব্যভিচার করেছিস, তুই চুরি করেছিস। আর সে বলছিল, আল্লাহর উপরই আমার ভরসা; আর তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক। তখন তার মা বলল, হে আল্লাহ! তুমি আমার পুত্রকে এর (দাসীর) মতো বানিও না। তখন শিশুটি দুধপান ছেড়ে তার (দাসীর) প্রতি লক্ষ্য করে বলল, "হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এর (এ দাসীর) মতো বানিয়ে দাও।"

সে সময় মা ও পুত্রের মধ্যে কথোপকথন হলো। তখন মা বলল, ঠাটা পড়ুক (এ কেমন কথা)। সুদৰ্শন এক ব্যক্তি যাচ্ছিল। তখন আমি বললাম, "হে আল্লাহ! তুমি আমার ছেলেকে এর মতো বানিও"। আর তুমি বললে, “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এর মতো বানিও না"। এরপর লোকেরা এ দাসীকে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন তারা তাকে প্রহার করছিল এবং বলছিল, তুই ব্যভিচার করেছিস এবং তুই চুরি করেছিস। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! তুমি আমার পুত্রকে তার মতো বানিও না। আর তুমি বললে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মতো বানাও। সে বলল, সে আরোহী ব্যক্তি ছিল অত্যাচারী। তাই আমি বলেছি, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মতো বানিও না। আর যে দাসীকে ওরা বলছিল, তুই যিনা করেছিস। আসলে সে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়নি এবং বলেছিল, চুরি করেছিস, অথচ সে চুরি করেনি। তাই আমি বললাম, "হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তার মতো বানিয়ে দাও"। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৭৮, ইসলামিক সেন্টার ৬৩২৭)

باب تَقْدِيمِ بِرِّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى التَّطَوُّعِ بِالصَّلاَةِ وَغَيْرِهَا ‏‏

حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِي الْمَهْدِ إِلاَّ ثَلاَثَةٌ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَصَاحِبُ جُرَيْجٍ وَكَانَ جُرَيْجٌ رَجُلاً عَابِدًا فَاتَّخَذَ صَوْمَعَةً فَكَانَ فِيهَا فَأَتَتْهُ أُمُّهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ ‏.‏ فَقَالَ يَا رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ فَانْصَرَفَتْ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ فَقَالَ يَا رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ فَانْصَرَفَتْ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَتْهُ وَهُوَ يُصَلِّي فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ ‏.‏ فَقَالَ أَىْ رَبِّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَأَقْبَلَ عَلَى صَلاَتِهِ فَقَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ تُمِتْهُ حَتَّى يَنْظُرَ إِلَى وُجُوهِ الْمُومِسَاتِ ‏.‏ فَتَذَاكَرَ بَنُو إِسْرَائِيلَ جُرَيْجًا وَعِبَادَتَهُ وَكَانَتِ امْرَأَةٌ بَغِيٌّ يُتَمَثَّلُ بِحُسْنِهَا فَقَالَتْ إِنْ شِئْتُمْ لأَفْتِنَنَّهُ لَكُمْ - قَالَ - فَتَعَرَّضَتْ لَهُ فَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَيْهَا فَأَتَتْ رَاعِيًا كَانَ يَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ فَأَمْكَنَتْهُ مِنْ نَفْسِهَا فَوَقَعَ عَلَيْهَا فَحَمَلَتْ فَلَمَّا وَلَدَتْ قَالَتْ هُوَ مِنْ جُرَيْجٍ ‏.‏ فَأَتَوْهُ فَاسْتَنْزَلُوهُ وَهَدَمُوا صَوْمَعَتَهُ وَجَعَلُوا يَضْرِبُونَهُ فَقَالَ مَا شَأْنُكُمْ قَالُوا زَنَيْتَ بِهَذِهِ الْبَغِيِّ فَوَلَدَتْ مِنْكَ ‏.‏ فَقَالَ أَيْنَ الصَّبِيُّ فَجَاءُوا بِهِ فَقَالَ دَعُونِي حَتَّى أُصَلِّيَ فَصَلَّى فَلَمَّا انْصَرَفَ أَتَى الصَّبِيَّ فَطَعَنَ فِي بَطْنِهِ وَقَالَ يَا غُلاَمُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ فُلاَنٌ الرَّاعِي - قَالَ - فَأَقْبَلُوا عَلَى جُرَيْجٍ يُقَبِّلُونَهُ وَيَتَمَسَّحُونَ بِهِ وَقَالُوا نَبْنِي لَكَ صَوْمَعَتَكَ مِنْ ذَهَبٍ ‏.‏ قَالَ لاَ أَعِيدُوهَا مِنْ طِينٍ كَمَا كَانَتْ ‏.‏ فَفَعَلُوا ‏.‏ وَبَيْنَا صَبِيٌّ يَرْضَعُ مِنْ أُمِّهِ فَمَرَّ رَجُلٌ رَاكِبٌ عَلَى دَابَّةٍ فَارِهَةٍ وَشَارَةٍ حَسَنَةٍ فَقَالَتْ أُمُّهُ اللَّهُمَّ اجْعَلِ ابْنِي مِثْلَ هَذَا ‏.‏ فَتَرَكَ الثَّدْىَ وَأَقْبَلَ إِلَيْهِ فَنَظَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ ‏.‏ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى ثَدْيِهِ فَجَعَلَ يَرْتَضِعُ ‏.‏ قَالَ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَحْكِي ارْتِضَاعَهُ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ فِي فَمِهِ فَجَعَلَ يَمُصُّهَا ‏.‏ قَالَ وَمَرُّوا بِجَارِيَةٍ وَهُمْ يَضْرِبُونَهَا وَيَقُولُونَ زَنَيْتِ سَرَقْتِ ‏.‏ وَهِيَ تَقُولُ حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ ‏.‏ فَقَالَتْ أُمُّهُ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهَا ‏.‏ فَتَرَكَ الرَّضَاعَ وَنَظَرَ إِلَيْهَا فَقَالَ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا ‏.‏ فَهُنَاكَ تَرَاجَعَا الْحَدِيثَ فَقَالَتْ حَلْقَى مَرَّ رَجُلٌ حَسَنُ الْهَيْئَةِ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ اجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهُ ‏.‏ فَقُلْتَ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ ‏.‏ وَمَرُّوا بِهَذِهِ الأَمَةِ وَهُمْ يَضْرِبُونَهَا وَيَقُولُونَ زَنَيْتِ سَرَقْتِ ‏.‏ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلِ ابْنِي مِثْلَهَا ‏.‏ فَقُلْتَ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا قَالَ إِنَّ ذَاكَ الرَّجُلَ كَانَ جَبَّارًا فَقُلْتُ اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْنِي مِثْلَهُ ‏.‏ وَإِنَّ هَذِهِ يَقُولُونَ لَهَا زَنَيْتِ ‏.‏ وَلَمْ تَزْنِ وَسَرَقْتِ وَلَمْ تَسْرِقْ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِثْلَهَا ‏.‏

حدثنا زهير بن حرب، حدثنا يزيد بن هارون، اخبرنا جرير بن حازم، حدثنا محمد بن سيرين، عن ابي هريرة، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال ‏"‏ لم يتكلم في المهد الا ثلاثة عيسى ابن مريم وصاحب جريج وكان جريج رجلا عابدا فاتخذ صومعة فكان فيها فاتته امه وهو يصلي فقالت يا جريج ‏.‏ فقال يا رب امي وصلاتي ‏.‏ فاقبل على صلاته فانصرفت فلما كان من الغد اتته وهو يصلي فقالت يا جريج فقال يا رب امي وصلاتي فاقبل على صلاته فانصرفت فلما كان من الغد اتته وهو يصلي فقالت يا جريج ‏.‏ فقال اى رب امي وصلاتي ‏.‏ فاقبل على صلاته فقالت اللهم لا تمته حتى ينظر الى وجوه المومسات ‏.‏ فتذاكر بنو اسراىيل جريجا وعبادته وكانت امراة بغي يتمثل بحسنها فقالت ان شىتم لافتننه لكم - قال - فتعرضت له فلم يلتفت اليها فاتت راعيا كان ياوي الى صومعته فامكنته من نفسها فوقع عليها فحملت فلما ولدت قالت هو من جريج ‏.‏ فاتوه فاستنزلوه وهدموا صومعته وجعلوا يضربونه فقال ما شانكم قالوا زنيت بهذه البغي فولدت منك ‏.‏ فقال اين الصبي فجاءوا به فقال دعوني حتى اصلي فصلى فلما انصرف اتى الصبي فطعن في بطنه وقال يا غلام من ابوك قال فلان الراعي - قال - فاقبلوا على جريج يقبلونه ويتمسحون به وقالوا نبني لك صومعتك من ذهب ‏.‏ قال لا اعيدوها من طين كما كانت ‏.‏ ففعلوا ‏.‏ وبينا صبي يرضع من امه فمر رجل راكب على دابة فارهة وشارة حسنة فقالت امه اللهم اجعل ابني مثل هذا ‏.‏ فترك الثدى واقبل اليه فنظر اليه فقال اللهم لا تجعلني مثله ‏.‏ ثم اقبل على ثديه فجعل يرتضع ‏.‏ قال فكاني انظر الى رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو يحكي ارتضاعه باصبعه السبابة في فمه فجعل يمصها ‏.‏ قال ومروا بجارية وهم يضربونها ويقولون زنيت سرقت ‏.‏ وهي تقول حسبي الله ونعم الوكيل ‏.‏ فقالت امه اللهم لا تجعل ابني مثلها ‏.‏ فترك الرضاع ونظر اليها فقال اللهم اجعلني مثلها ‏.‏ فهناك تراجعا الحديث فقالت حلقى مر رجل حسن الهيىة فقلت اللهم اجعل ابني مثله ‏.‏ فقلت اللهم لا تجعلني مثله ‏.‏ ومروا بهذه الامة وهم يضربونها ويقولون زنيت سرقت ‏.‏ فقلت اللهم لا تجعل ابني مثلها ‏.‏ فقلت اللهم اجعلني مثلها قال ان ذاك الرجل كان جبارا فقلت اللهم لا تجعلني مثله ‏.‏ وان هذه يقولون لها زنيت ‏.‏ ولم تزن وسرقت ولم تسرق فقلت اللهم اجعلني مثلها ‏.‏


Abu Huraira reported Allah's Apostle (ﷺ) as saying:
None spoke in the cradle but only three (persons), Christ son of Mary, the second one the companion of Juraij. Juraij had got constructed a temple and confined himself in that. His mother came to him as he was busy in prayer and she said: Juraij. He said: My Lord, my mother (is calling me while I am engaged in) my prayer. He continued with the prayer. She returned and she came on the next day and he was busy in prayer, and she said: Juraij. And he said: My Lord, my mother (is calling me while I am engaged) in prayer, and he continued with the prayer and she went back, and then on the next day she again came and he was busy in prayer and she said: Juraij. And he said: My Lord, my mother (is calling me while I am engaged in my prayer, and he continued with the prayer, and she said: My Lord, don't give him death unless he has seen the fate of the prostitutes. The story of Juraij and that of his meditation and prayer gained currency amongst Bani Isra'il. There was a prostitute who had been a beauty incarnate. She said (to the people): If you like I can allure him to evil. She presented herself to him but he paid no heed (to her). She came to a shepherd who lived near the temple and she offered herself to him and he had a sexual intercourse with her and so she became pregnant arid when she gave birth to a child she said: This is from Juraij. So they came and asked him to get down and demolished the temple and began to beat him. He said: What is the matter? They said: You have committed fornication with this prostitute and she has given birth to a child from your loins. He said: Where is the child? They brought him (the child) and he said: just leave me so that I should observe prayer. And he observed prayer and when he finished, he came to the child. He struck his stomach and said: O boy, who is your father? lie said: He is such shepherd. So they turned towards Juraij, kissed him and touched him (for seeking blessing) and said: We are prepared to construct your temple with gold. He said. No, just rebuild it with mud as it had been, and they did that. Then there was a babe who was sucking his mother that a person dressed in fine garment came riding upon a beast. His mother said: O Allah, make my child like this one. He (the babe) left sucking and began to see towards him, and said: O Allah, don't make me like him. He then returned to the chest and began to suck the milk of his mother. He (Abu Huraira) said: I perceived as if I am seeing Allah's Messenger (ﷺ) as he is explaining the scene of his sucking milk with his forefinger in his mouth and sucking that. He (Abu Huraira) further reported Allah's Apostle (may be peace upon him) as saying: There happened to pass by him a girl who was being beaten and they were saying: You have committed adultery and you have committed theft and she was saying: Allah is enough for me and He is my good Protector, and his mother said: O Allah, don't make my child like her and he left sucking the milk, and looked towards her and said: O Allah, make me like her, and there was a talk between them. She said: O with shaven head, a good-looking person happened to pass by and I said: O Allah, make my child like him, and you said: O Allah, don't make me like him, and they passed by a girl while they were beating her and saying: You committed fornication and you committed theft, and I said: O Allah, don't make my child like her, and you said: O Allah, make me like her. Thereupon he said: That person was a tyrant, and I said: O Allah, don't make me like him, and they were saying about her: You committed fornication whereas in fact she had not committed that and they were saying: You have committed theft whereas she had not committed theft, so I said: O Allah, make me like her.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৪৬। সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب) 46. The Book of Virtue, Enjoining Good Manners, and Joining of the Ties of Kinship
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে