পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৩-(৬৫/৪০৫) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী (রহঃ) ..... আবূ মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে আসলেন, আমরা তখন সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাযিঃ) এর বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। বাশীর ইবনু সা’দ (রাযিঃ) তাকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহ আপনার উপর দুরূদ পাঠ করার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা কিভাবে আপনার উপর দুরূদ পাঠ করব? রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ করে থাকলেন। এমনকি আমরা আফসোস করে বললাম, সে যদি তাকে এ প্রশ্ন না করত।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমরা বল- "আল্লাহুম্মা সল্লি আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লাইতা আলা- আ-লি ইবর-হীমা ওয়াবা-রিক আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বা-রকতা আলা আ-লি ইবর-হীমা ফিল আলামীন। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ"
অর্থাৎ "হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ ও তার পরিবার পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করো— যেভাবে তুমি ইবরাহীম (আঃ)-এর পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করেছ। তুমি মুহাম্মাদ ও তার পরিবার-পরিজনকে বারাকাত ও প্রাচুর্য দান করো— যেভাবে তুমি ইবরাহীম (আঃ) এর পরিবার-পরিজনকে দুনিয়া ও আখিরাতে বারাকাত ও প্রাচুর্য দান করেছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত।" আর সালাম দেয়ার নিয়ম যা তোমরা ইতিপূর্বে জেনেছ। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯০, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০২)
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُجْمِرِ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ الأَنْصَارِيَّ، - وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ هُوَ الَّذِي كَانَ أُرِيَ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ - أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ قَالَ أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ فِي مَجْلِسِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ لَهُ بَشِيرُ بْنُ سَعْدٍ أَمَرَنَا اللَّهُ تَعَالَى أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُولُوا " اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ فِي الْعَالَمِينَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ . وَالسَّلاَمُ كَمَا قَدْ عَلِمْتُمْ " .
Abdullah b. Zaid-he who was shown the call (for prayer in a dream) narrated it on the authority of Abu Mas'ud al-Ansari who said:
We were sitting in the company of Sa'id b. 'Ubida when the Messenger of Allah (ﷺ) came to us. Bashir b. S'ad said: Allah has commanded us to bless you. Messenger of Allah! But how should we bless you? He (the narrator) said: The Messenger of Allah (ﷺ) kept quiet (and we were so much perturbed over his silence) that we wished we had not asked him. The Messenger of Allah (ﷺ) then said: (For blessing me) say:" 0 Allah, bless Muhammad and the members of his household as Thou didst bless the mernbers of Ibrahim's household. Grant favours to Muhammad and the members of his household as Thou didst grant favours to the members of the household of Ibrahim in the world. Thou art indeed Praiseworthy and Glorious" ; and salutation as you know.
পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৪-(৬৬/৪০৬) মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) ..... ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কাব ইবনু উজরাহ (রাযিঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমি কি তোমাকে কিছু উপহার দিব না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে আসলেন, আমরা বললাম, আমরা আপনাকে কিভাবে সালাম করব তা জানতে পেরেছি কিন্তু আপনার উপর কিভাবে দুরূদ পাঠ করব?
তিনি বললেনঃ তোমর বল, আল্লাহুম্মা সল্লি আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লাইত আলা- আ-লি ইবরহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ, আল্লাহুম্মা রা-রিক আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রাকতা আলা- আ-লি ইবর-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।"
অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার বংশধরদের উপর ঐরূপ রহমত নাযিল কর যেমনটি করেছিলে ইবরাহীম (আঃ) এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার বংশধরদের উপর ঐরূপ বারাকাত নাযিল কর যেমনটি করেছিলে ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়।" (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯১, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০৩)
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি বেশি বেশি সালাত ও সালাম পাঠ করার প্রতি এই হাদীসটি উৎসাহ প্রদান করে। তবে তাঁর প্রতি সালাত বা দরূদ পাঠ করার উত্তম পন্থা হলো নিম্নরূপ:
"اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ، اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ ".
(صحيح البخاري, رقم الحديث ৩৩৭০, وصحيح مسلم, رقم الحديث ৬৬ - (৪০৬), واللفظ للبخاري).
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে এমনভাবে সম্মানিত করুন, যেমনভাবে ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গকে সম্মানিত করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত মহিমান্বিত।
হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে যে সম্মান বা মর্যাদা প্রদান করেছেন, সে সম্মান বা মর্যাদা এমনভাবে বলবৎ রাখুন, যেমনভাবে ইবরাহীম ও তাঁর পরিবারবর্গের সম্মান বা মর্যাদা বলবৎ রেখেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত মহিমান্বিত।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩৭০ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬ -(৪০৬), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।
২। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি আল্লাহর সালাত বা দরূদ এর অর্থ:
معنى صلاة الله على الرسول: تعظيم الله للرسول, وثناؤه عليه.
এর অর্থ হলো: আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]কে অতিশয় সম্মানিত ও গৌরবান্বিত করা।
এবং
معنى اللهم صل على محمد: اللهم عَظِّمْهُ في الدنيا والآخرة بما يليق به.
এর অর্থ হলো: হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদকে তাঁর উপযুক্ত সম্মান দুনিয়াতে এবং পরকালে প্রদান করুন।
৩। এই হাদীসটির দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় যে, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]এর প্রতি সালাম পাঠ করার বিষয়টি শরীয়ত সম্মত একটি কাজ। এই বিষয়টি প্রমাণিত হয় মহান আল্লাহর বাণীর দ্বারা। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন:
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا ﴿۵۶﴾
ভাবার্থের অনুবাদ: “নিশ্চয় আল্লাহ বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে অতিশয় সম্মান করেন। এবং ফেরেশতাগণ আল্লাহর নিকটে নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অতিশয় সম্মান প্রার্থনা করেন। সুতরাং হে ঈমানদার মুসলিম জাতি! তোমরাও নাবী মুহাম্মাদ এর অতিশয় সম্মান করো ও তাঁর প্রতি যথাযথভাবে সালাম পেশ করো”। (সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ৫৬)।
এই আয়াতের সঙ্গে একটি হাদীস সংযুক্ত রয়েছে, আর তা হলো এই যে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إِنَّ لِلَّهِ مَلاَئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فيِ الأرْضِ يُبَلِّغُونِي مِنْ أُمَّتِي السَّلاَمَ ".
(سنن النسائي, رقم الحديث ১২৮২, وصححه الألباني).
অর্থ: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এমন কতকগুলি ভ্রমণকারী ফেরেশতামণ্ডলী নির্ধারিত রয়েছেন, যাঁরা আমার প্রতি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছিয়ে দেন”।
(সুনান নাসায়ী, হাদীস নং ১২৮২, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ ( সঠিক ) বলেছেন) ।
আমাদের নাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর একটি অধিকার বা প্রাপ্য তাঁর উম্মতের উপর হলো এই যে, তাঁর উম্মতের প্রতিটি মানুষ যেন তাঁর প্রতি সালাম পেশ করে। তাই প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তিকে আদেশ প্রদান করা হয়েছে যে, সে যেন আল্লাহর রাসূলের প্রতি সাধারণভাবে যে কোনো সময়ে সালাম প্রেরণ করে কিংবা কতকগুলি নির্দিষ্ট সময়ে সালাম প্রেরণ করে যেমন, নামাজের তাশাহহোদ পাঠের সময় এবং মাসজিদে প্রবেশ করার সময় বা মাসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম প্রেরণ করা। এবং নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অনুপস্থিতিতেও তাঁর মৃত্যুবরণ করার পর অথবা তাঁর জীবদ্দশাতেও তাঁর প্রতি সালাম পেশ করার বিধান নির্ধারিত রয়েছে। তবে এই বিধানটি শুধু মাত্র তাঁরই জন্য প্রযোজ্য এবং কেবল মাত্র তাঁরই বৈশিষ্ট্য। অন্য কোনো মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয় এবং এটা অন্য কোনো মানুষের বৈশিষ্ট্যও নয়। তাই অন্য কোনো নির্দিষ্ট মানুষকে তার অনুপস্থিতিতে তার প্রতি সালাম পেশ করা বৈধ নয়। শুধু মাত্র নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত রয়েছে যে, তাঁকে তাঁর উম্মতের সালাম পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এর দ্বারা মুসলিম ব্যক্তি নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে সালাম দেওয়ার মর্যাদা লাভ করে থাকে এবং তাঁর প্রতি তার এই সালাম পেশ করাও হয়। যদিও সে আল্লাহর রাসূলের জীবদ্দশাতে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য পথের দূরত্ব অতিক্রম না করে থাকে অথবা যদিও সে তাঁর মৃত্যুবরণ করার পর তাঁর কবরের নিকটে উপস্থিত না হয়ে থাকে।
৪। সালাম এর ভাবার্থ হলো: সকল প্রকারের অমঙ্গল এবং দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্তি, শান্তি, পরিত্রাণ এবং নিরাপত্তা প্রাপ্ত হওয়া।
৫। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি অধিকতর সালাম প্রেরণ করার নিয়মটি হলো এই যে,
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
অর্থ: “হে নাবী আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি, আল্লাহর করুণা ও তাঁর কল্যাণ অবতীর্ণ হোক”।
পাঠ করা।
অথবা
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ.
অর্থ: “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
বলে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা।
কিংবা
اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا نَبِيَّ اللهِ.
অর্থ: “হে আল্লাহর নাবী! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
পাঠ করে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা উচিত।
নচেৎ
اَلسَّلاَمُ عَلَى النَّبِيِّ.
অর্থ: “আল্লাহর নাবীর প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক”।
উচ্চারণ করেও আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা যেতে পারে।
তবে মুসলিম ব্যক্তির সঠিক ভাবে জেনে রাখা উচিত যে, আমাদের এই সালাম ফেরেশতাগণের মাধ্যমে আমাদের নাবীর প্রতি পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। যেমন এর পূর্বে উল্লিখিত হাদীসটির দ্বারা এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সেই হাদীসটি হলো এই যে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:
"إِنَّ لِلَّهِ مَلاَئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فيِ الأرْضِ يُبَلِّغُونِيْ مِنْ أُمَّتِي السَّلاَمَ ".
(سنن النسائي, رقم الحديث ১২৮২, وصححه الألباني).
অর্থ: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এমন কতকগুলি ভ্রমণকারী ফেরেশতামণ্ডলী নির্ধারিত রয়েছেন, যাঁরা আমার প্রতি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছিয়ে দেন”।
(সুনান নাসায়ী, হাদীস নং ১২৮২, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ ( সঠিক ) বলেছেন) ।
৬। কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটা জায়েজ বা বৈধ নয় যে, সে সম্মিলিতভাবে, একযোগে একসুরে কোন একটি নির্দিষ্ট পন্থায় আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সালাম পেশ বা প্রেরণ করবে। তাই প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন সুরে, পৃথকভাবে এবং স্বতন্ত্রপদ্ধতিতে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি অধিকতর সালাম প্রেরণ করবে। কেননা সম্মিলিতভাবে, একযোগে, একসুরে কোন একটি নির্দিষ্ট পন্থায় আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সালাম পেশ বা প্রেরণ করার নিয়মটি ইসলামী শরীয়ত বা বিধানের মধ্যে পাওয়া যায় না। তাই এককভাবে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি বেশি বেশি বা অধিকতর সালাম পেশ বা প্রেরণ করাই উচিত।
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ فَقَالَ أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا قَدْ عَرَفْنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكَ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ قَالَ " قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ " .
Ibn Abi Laila reported:
Ka'b b. 'Ujra met me and said: Should I not offer you a present (and added): The Messenger of Allah (ﷺ) came to us and we said: We have learnt how to invoke peace upon you; (kindly tell us) how we should bless you. He (the Holy Prophet) said: Say:" O Allah: bless Muhammad and his family as Thou didst bless the family of Ibrahim. Verily Thou art Praiseworthy and Glorious, O Allah."
পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৫-(৬৭/...) যুহায়র ইবনু হারব, আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... হাকাম হতে এ সনদ সূত্রে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু মিসআরের বর্ণনায় আমি কি তোমাকে কিছু উপহার দিব না’ কথাটুকু নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯২, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০৪)
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، وَمِسْعَرٍ، عَنِ الْحَكَمِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ . وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ مِسْعَرٍ أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً
A hadith like this has been narrated by Mis'ar on the authority of al-Hakam, but in the hadith transmitted by Mis'ar these words are not found:
" Should I not offer you a present?"
পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৬-(৬৮/...) মুহাম্মাদ ইবনু বাক্কার (রহঃ) ..... হাকাম হতে এ সনদ সূত্রে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ সূত্রে "ওয়া বা-রিক আলা- মুহাম্মাদিন" উল্লেখ করেছেন এবং "আল্লাহুম্মা" শব্দের উল্লেখ করেননি। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯৩, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০৫)
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ، عَنِ الأَعْمَشِ، وَعَنْ مِسْعَرٍ، وَعَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، كُلُّهُمْ عَنِ الْحَكَمِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ " وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ " . وَلَمْ يَقُلِ اللَّهُمَّ .
A hadith like this has been narrated by al-Hakam except that he said:
" Bless Muhammad (ﷺ)" and he did not say:" O Allah I
পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৭-(৬৯/৪০৭) মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র, ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ..... ইবনু নুমায়র ও আমর ইবনু সুলায়ম বলেন, আবূ হুমায়দ আস সাইদী আমাকে অবহিত করেছেন যে, তারা (সাহাবাগণ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার উপর কিভাবে দুরূদ পড়বো? তিনি বললেনঃ বল, "আল্লাহুম্মা সল্লি আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা- সল্লাইতা আলা- আ-লি ইবর-হীমা ওয়াবা-রিক আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া আলা- আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা-বা-রকতা আলা- আ-লি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।" অর্থাৎ হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার বিবিগণ এবং তার বংশধরগণের প্রতি রহমত বর্ষণ কর, যেভাবে তুমি রহমত বর্ষণ করেছ ইবরাহীম (আঃ) এর পরিজনের প্রতি- তুমি বারাকাত নাযিল কর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার বিবিগণের প্রতি যেভাবে তুমি বারাকাত নাযিল করেছ ইবরাহীম (আঃ)-এর পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯৪, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০৬)
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ نَافِعٍ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - وَاللَّفْظُ لَهُ - قَالَ أَخْبَرَنَا رَوْحٌ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ، أَنَّهُمْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ قَالَ " قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ " .
Abu Humaid as-Sa'idi reported:
They (the Companions of the Holy Prophet) said: Apostle of Allah, how should we bless you? He (the Holy Prophet) observed: Say:" O Allah! bless Muhammad, his wives and his offspring as Thou didst bless Ibrahim, and grant favours to Muhammad, and his wives and his offspring as Thou didst grant favours to the family of Ibrahim; Thou art Praiseworthy and Glorious."
পরিচ্ছেদঃ ১৭. তাশাহহুদ পড়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দুরূদ পাঠ করা
৭৯৮-(৭০/৪০৮) ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ূব (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরূদ পড়ে আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত নাযিল করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯৫, ইসলামিক সেন্টারঃ ৮০৭)
باب الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ التَّشَهُّدِ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ - عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ صَلَّى عَلَىَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرًا " .
Abu Huraira reported:
The Messenger of Allah (ﷺ) said: He who blesses me once, Allah would bless him ten times.