পরিচ্ছেদঃ ৮১. মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান।
৩৪০-(২৯৯/১৮২) যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বলেন যে, কয়েকজন সাহাবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত দিবসে আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে কি তোমাদের পরস্পরের মাঝে কষ্ট হয়? সাহাবাগণ বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের পরস্পরের কষ্টবোধ হয়? তারা বললেন, না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তদ্রুপ তোমরা তাকেও দেখবে। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ সকল মানুষকে জমায়েত করে বলবেন, পৃথিবীতে তোমাদের যে যার ইবাদাত করেছিলে আজ তাকেই অনুসরণ কর।
তখন যারা সূর্যের উপাসনা করতো, তারা সূর্যের সাথে থাকবে। যারা চন্দ্রের উপাসনা করতো, তারা চন্দ্রের সাথে থাকবে। আর যারা আল্লাহদ্রোহীদের (তাগুতের) উপাসনা করতো, তারা আল্লাহদ্রোহীদের সাথে জমায়েত হয়ে যাবে। কেবল এ উম্মত অবশিষ্ট থাকবে। তন্মধ্যে মুনাফিকরাও থাকবে। তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট এমন আকৃতিতে উপস্থিত হবেন যা তারা চিনে না। তারপর (আল্লাহ তা’আলা) বলবেন, আমি তোমাদের প্রতিপালক (সুতরাং তোমরা আমার পিছনে চল)। তারা বলবে, নাউযুবিল্লাহ। আমাদের প্রভু না আসা পর্যন্ত আমরা এখানেই দাড়িয়ে থাকবো। আর তিনি যখন আসবেন, তখন আমরা তাকে চিনতে পারবো।
এরপর আল্লাহ তা’আলা তাদের নিকট তাদের পরিচিত আকৃতিতে আসবেন, বলবেনঃ আমি তোমাদের প্রভু। তারা বলবে, হ্যাঁ, আপনি আমাদের প্রতু। এ বলে তারা তাকে অনুসরণ করবে। এমন সময়ে জাহান্নামের উপর দিয়ে সিরাত (সাকো) বসানো হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আর আমি ও আমার উম্মতই হব প্রথম এ পথ অতিক্রমকারী। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত অন্য কেউ মুখ খোলারও সাহস করবে না। আর রাসূলগণও কেবল এ দু’আ করবেন। হে আল্লাহ! নিরাপত্তা দাও, নিরাপত্তা দাও। আর জাহান্নামে থাকবে সা’দান বৃক্ষের কাটার মত অনেক কাটাযুক্ত লৌহদণ্ড। তোমরা সাদান বৃক্ষটি দেখেছ কি? সাহাবাগণ বললেন, হ্যাঁ দেখেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তা সাদান বৃক্ষের কাটার মতই, তবে সেটা যে কত বিরাট তা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। পাপ কাজের জন্য কাটার আংটাগুলো ছোবল দিতে থাকবে। তাদের কেউ কেউ মু’মিন (যারা সাময়িক জাহান্নামী) তারা রক্ষা পাবে, আর কেউ তো শাস্তি ভোগ করে নাযাত পাবে।
এরপর আল্লাহ বান্দাদের মধ্যে ফায়সালা হতে অবসর হলে স্বীয় রহমতে কিছু সংখ্যক জাহান্নামীদের (জাহান্নাম হতে) বের করতে দেয়ার ইচ্ছা করবেন তখন ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিবেন যারা কালিমায় বিশ্বাসী ও শিরক করেনি যাদের উপর আল্লাহ তা’আলা রহম করতে চাইবেন যে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে আসো। আর যাদের উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করতে চেয়েছেন তারা ঐ সকল লোক যারা ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলত। অতঃপর ফেরেশতাগণ তাদের সনাক্ত করবেন। তারা সিজদা চিহ্নের সাহায্যে তাদের চিনবেন। কারণ, অগ্নি মানুষের দেহের সবকিছু জ্বালিয়ে ফেললেও সাজদার স্থান অক্ষত থাকবে। আল্লাহ তা’আলা সাজদার চিহ্ন নষ্ট করা হারাম (নিষিদ্ধ) করে দিয়েছেন। মোটকথা, ফেরেশতাগণ এদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনবে এমন অবস্থায় যে, তাদের দেহ আগুনে দগ্ধ। তাদের উপর ’মাউল-হায়াত’ (সঞ্জীবনী পানি) ঢেলে দেয়া হবে। তখন তারা এতে এমনভাবে সতেজ হয়ে উঠবে যেমনভাবে শস্য অঙ্কুর পানিসিক্ত উর্বর জমিতে সতেজ হয়ে উঠে।
তারপর আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের বিচার সমাপ্ত করবেন। শেষে এক ব্যক্তি থেকে যাবে। তার মুখমণ্ডল হবে জাহান্নামের দিকে। এই হবে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী। সে বলবে, হে আমার প্রভু! (অনুগ্রহ করে) আমার মুখটি জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দিন। কারণ জাহান্নামের দুর্গন্ধ আমাকে অসহনীয় কষ্ট দিচ্ছে; এর লেলিহান অগ্নিশিখা আমাকে দগ্ধ করে দিচ্ছে। আল্লাহ যতদিন চান ততদিন পর্যন্ত সে তার নিকট দু’আ করতে থাকবে। পরে আল্লাহ বলবেন, তোমার এ দু’আ কবুল করলে তুমি কি আরো কিছু কামনা করবে? সে বিভিন্ন ধরনের ওয়াদা ও অঙ্গীকার করে বলবে যে, জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দিবেন।
তার চেহারা যখন জান্নাতের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে, আর সে জান্নাত দেখবে, তখন আল্লাহ যতদিন চান সে নীরব থাকবে। পরে আবার বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেবল জান্নাতের দরজা পর্যন্ত আমাকে পৌছে দিন। আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি না অঙ্গীকার দিয়েছিলে যে, আমি তোমাকে যা দিয়েছি তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না। হে আদম সন্তান! তুমি হতভাগা ও তুমি সাংঘাতিক ওয়াদাভঙ্গকারী। তখন সে বলবে, হে আমার রব! এই বলে আল্লাহর কাছে দু’আ করতে থাকবে। আল্লাহ বলবেন, তুমি যা চাও তা যদি দিয়ে দেই তবে আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, আপনার ইজ্জতের কসম! আর কিছু চাইব না। এভাবে সে তার অক্ষমতা (আল্লাহর কাছে) পেশ করতে থাকবে যতদিন আল্লাহর ইচ্ছা হয়।
তারপর তাকে জান্নাতের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়া হবে। এবার যখন সে জান্নাতের দরজায় দাঁড়াবে, তখন জান্নাত তার সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে। সে জান্নাতের সমৃদ্ধি ও সুখ দেখতে থাকবে। সেখানে আল্লাহ যতক্ষণ চান সে ততক্ষণ চুপ করে থাকবে। পরে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। আল্লাহ বলবেন, তুমি না সকল ধরনের ওয়াদা ও অঙ্গীকার করে বলেছিলে, আমি যা দান করেছি এর চাইতে বেশি আর কিছু চাইবে না? হে হতভাগা আদম সন্তান! তুমি তো ভীষণ ওয়াদাভঙ্গকারী। সে বলবে, হে আমার রব। আমি যেন আপনার সৃষ্টির সবচেয়ে দুর্ভাগা না হই। সে বার বার দু’আ করতে থাকবে। পরিশেষে তার অবস্থা দেখে আল্লাহ তা’আলা হেসে ফেলবেন। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। (জান্নাতে প্রবেশের পর) আল্লাহ তাকে বলবেন, (যা চাওয়ার) চাও। তখন সে তার সকল কামনা চেয়ে শেষ করবে। এরপর আল্লাহ নিজেই স্মরণ করায়ে বলবেন, অমুক অমুকটা চাও। এভাবে তার কামনা শেষ হয়ে গেলে আল্লাহ বলবেন, তোমাকে এ সব এবং এর সমপরিমাণ আরো দেয়া হল।
আতা ইবনু ইয়াযীদ বলেন, এবং আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বর্ণিত এ হাদীসের কোন কথাই রদ করেননি। তবে আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) যখন এ কথা উল্লেখ করলেন, "আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তিকে বলবেন, তোমাকে এ সব এবং এর সমপরিমাণ আরো দেয়া হল" তখন আবূ সাঈদ (রাযিঃ) বললেনঃ হে আবূ হুরাইরাহ! বরং তা সহ আরো দশগুণ দেয়া হবে।
আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে "এর সম-পরিমাণ" এ শব্দ স্মরণ রেখেছি। আবূ সাঈদ (রাযিঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে "আরো দশগুণ" এ শব্দ সংরক্ষিত রেখেছি। রাবী বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) পরিশেষে বলেন, এ ব্যক্তি হবে জান্নাতে সর্বশেষ প্রবেশকারী। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৫৯)
باب مَعْرِفَةِ طَرِيقِ الرُّؤْيَةِ
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ نَاسًا قَالُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ " . قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " هَلْ تُضَارُّونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ دُونَهَا سَحَابٌ " . قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " فَإِنَّكُمْ تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتَّبِعْهُ . فَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الشَّمْسَ الشَّمْسَ وَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الْقَمَرَ الْقَمَرَ وَيَتَّبِعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الطَّوَاغِيتَ الطَّوَاغِيتَ وَتَبْقَى هَذِهِ الأُمَّةُ فِيهَا مُنَافِقُوهَا فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ - تَبَارَكَ وَتَعَالَى - فِي صُورَةٍ غَيْرِ صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ . فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى يَأْتِيَنَا رَبُّنَا فَإِذَا جَاءَ رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ . فَيَأْتِيهِمُ اللَّهُ تَعَالَى فِي صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ . فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا . فَيَتَّبِعُونَهُ وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَىْ جَهَنَّمَ فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُ وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ الرُّسُلُ وَدَعْوَى الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ . وَفِي جَهَنَّمَ كَلاَلِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ هَلْ رَأَيْتُمُ السَّعْدَانَ " . قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ مَا قَدْرُ عِظَمِهَا إِلاَّ اللَّهُ تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمُ الْمُؤْمِنُ بَقِيَ بِعَمَلِهِ وَمِنْهُمُ الْمُجَازَى حَتَّى يُنَجَّى حَتَّى إِذَا فَرَغَ اللَّهُ مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَأَرَادَ أَنْ يُخْرِجَ بِرَحْمَتِهِ مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ أَنْ يُخْرِجُوا مِنَ النَّارِ مَنْ كَانَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا مِمَّنْ أَرَادَ اللَّهُ تَعَالَى أَنْ يَرْحَمَهُ مِمَّنْ يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَيَعْرِفُونَهُمْ فِي النَّارِ يَعْرِفُونَهُمْ بِأَثَرِ السُّجُودِ تَأْكُلُ النَّارُ مِنِ ابْنِ آدَمَ إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَى النَّارِ أَنْ تَأْكُلَ أَثَرَ السُّجُودِ . فَيُخْرَجُونَ مِنَ النَّارِ وَقَدِ امْتَحَشُوا فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ مِنْهُ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ثُمَّ يَفْرُغُ اللَّهُ تَعَالَى مِنَ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَيَبْقَى رَجُلٌ مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ عَلَى النَّارِ وَهُوَ آخِرُ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنِ النَّارِ فَإِنَّهُ قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا وَأَحْرَقَنِي ذَكَاؤُهَا فَيَدْعُو اللَّهَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدْعُوَهُ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى هَلْ عَسَيْتَ إِنْ فَعَلْتُ ذَلِكَ بِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ . فَيَقُولُ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ . وَيُعْطِي رَبَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ مَا شَاءَ اللَّهُ فَيَصْرِفُ اللَّهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ فَإِذَا أَقْبَلَ عَلَى الْجَنَّةِ وَرَآهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَىْ رَبِّ قَدِّمْنِي إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ . فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ لاَ تَسْأَلُنِي غَيْرَ الَّذِي أَعْطَيْتُكَ وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ . فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ وَيَدْعُو اللَّهَ حَتَّى يَقُولَ لَهُ فَهَلْ عَسَيْتَ إِنْ أَعْطَيْتُكَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ . فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ . فَيُعطِي رَبَّهُ مَا شَاءَ اللَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ فَيُقَدِّمُهُ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَإِذَا قَامَ عَلَى بَابِ الْجَنَّةِ انْفَهَقَتْ لَهُ الْجَنَّةُ فَرَأَى مَا فِيهَا مِنَ الْخَيْرِ وَالسُّرُورِ فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ . فَيَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَهُ أَلَيْسَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ مَا أُعْطِيتَ وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ . فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ لاَ أَكُونُ أَشْقَى خَلْقِكَ . فَلاَ يَزَالُ يَدْعُو اللَّهَ حَتَّى يَضْحَكَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى مِنْهُ فَإِذَا ضَحِكَ اللَّهُ مِنْهُ قَالَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ . فَإِذَا دَخَلَهَا قَالَ اللَّهُ لَهُ تَمَنَّهْ . فَيَسْأَلُ رَبَّهُ وَيَتَمَنَّى حَتَّى إِنَّ اللَّهَ لَيُذَكِّرُهُ مِنْ كَذَا وَكَذَا حَتَّى إِذَا انْقَطَعَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ " . قَالَ عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ لاَ يَرُدُّ عَلَيْهِ مِنْ حَدِيثِهِ شَيْئًا . حَتَّى إِذَا حَدَّثَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَنَّ اللَّهَ قَالَ لِذَلِكَ الرَّجُلِ وَمِثْلُهُ مَعَهُ . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ مَعَهُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ مَا حَفِظْتُ إِلاَّ قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَشْهَدُ أَنِّي حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَذَلِكَ الرَّجُلُ آخِرُ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ .
Chapter: Knowing about the seeing
Abu Haraira reported: The people said to the Messenger of Allah (ﷺ): Messenger of Allah, shall we see our Lord on the Day of Resurrection? The Messenger of Allah (ﷺ) said: Do you feel any trouble in seeing the moon on the night when it is full? They said: Messenger of Allah, no. He (the Messenger) further said: Do you feel any trouble in seeing the sun, when there is no cloud over it? They said: Messenger of Allah. no. He (the Holy Prophet) said: Verily you would see Him like this (as you see the sun and the moon). God will gather people on the Day of Resurrection and say: Let every people follow what they worshipped. Those who worshipped the sun would follow the sun, and those who worshipped the moon would follow the moon, and those who worshipped the devils would follow the devils. This Ummah (of Islam) alone would be left behind and there would be hypocrites too amongst it. Allah would then come to them in a form other than His own Form, recognisable to them, and would say: I am your Lord. They would say: We take refuge with Allah from thee. We will stay here till our Lord comes to us. and when our Lord would come we would recognise Him. Subsequently Allah would come to them in His own Form, recognisable to them, and say: I am your Lord. They would say: Thou art our Lord. And they would follow Him, and a bridge would be set over the Hell; and I (the Holy Prophet) and my Ummah would be the first to pass over it; and none but the messengers would speak on that day, and the prayer of the messengers on that day would be: O Allah! grant safety, grant safety. In Hell, there would be long spits like the thorns of Sa'dan He (the Holy Prophet) said: Have you seen Sa'dan? They replied: Yes, Messenger of Allah. He said: Verily those (hooks) would be like the thorns of Sa'dan, but no one knows their size except Allah. These would seize people for their misdeeds. Some of them would escape for their (good) deeds, and some would be rewarded for their deeds till they get salvation. When Allah would finish judging His bondsmen and because of His mercy decide to take out of Hell such people as He pleases. He would command the angels to bring out those who had not associated anything with Allah; to whom Allah decided to show mercy. those who would say: There is no god but Allah. They (the angels) would recognise them in the Fire by the marks of prostration, for Hell-fire will devour everything (limb) of the sons of Adam except the marks of prostration. Allah has forbidden the fire to consume the marks of prostration. They will be taken out of the Fire having been burnt, and the water of life would be poured over them, and they will sprout as seed does In the silt carried by flood. Then Allah would finish judging amongst His bondsmen; but a man who will be the last to enter Paradise will remain facing Hell and will say: O my Lord I turn my face away from Hell, for its air has poisoned me ard its blaze has burnt me. He will then call to Allah as long as Allah would wish that he should call to Him. Then Allah, Blessed and Exalted, would say: If I did that, perhaps you would ask for more than that. He would say: I would not ask You more than this, and he would give his Lord covenants and agreements as Allah wished, and so He would turn his face away from the Fire When he turns towards the Paradise and sees it, he will remain silent as long as Allah wishes him to remain so. He will then say: O my Lord I bring me forward to the gate of the Paradise. Allah would say to him: Did you not give covenants and agreements that you would not ask for anything besides what I had given you. Woe to thee! O son of Adam, how treacherous you are! He would say: O my Lord! and would continue calling to Allah till He would say to him: If I grant you that, perhaps you will ask for more. He will reply: No, by Thy greatness, and he will give His Lord promises and covenants as Allah had wished. He would then bring him to the gate of the Paradise, and when he would stand at the gate of the Paradise, it would lay open before him. and he would see the bounty and the joy that there is in it. He would remain quiet as long as Allah would desire him to remain silent. He would then say: O my Lord, admit me to Paradise. Allah. Blessed and Exalted, would say: Did you not give covenants and agreements that you would not ask for anything more than what I had granted you? Woe to you! son of Adam, how treacherous you are! And he would say: O my Lord, I do not wish to be the most miserable of Thy creatures. He would continue calling upon Allah till Allah, Blessed and Exalted, would laugh. When Allah would laugh at him, He would say: Enter the Paradise. When he would enter, Allah would say: State your wish. He would express his wishes till Allah would remind him (the desire of) such and such (things). When his desires would be exhausted Allah would say: That is for thee and, besides it, the like of it also. 'Ata' b. Yazid said: Abu Sa'id al-Khudri was with Abu Huraira and be did not reject anything from the hadith narrated by him, but when Abu Huraira narrated:" Allah said to that man; ind its like along with it," Abu Sa'id said:" Ten like it along with it," O Abu Huraira. Abu Huraira said: I do not remember except the words:" That is for you and a similar one along with it." Abu Sa'id said: I bear witness to the fact that I remembered from the Messenger of Allah (ﷺ) his words:" That is for thee and ten like it." Abu Huraira said: That man was the last of those deserving of Paradise to enter Paradise.
পরিচ্ছেদঃ ৮১. মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান।
৩৪১-(৩০০/...) আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান আদ দারিমী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বলেন, সাহাবাগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের রবকে দেখতে পাব? ..... এরপর রাবী ইবরাহীম ইবনু সাদ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৬০)
باب مَعْرِفَةِ طَرِيقِ الرُّؤْيَةِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُمَا أَنَّ النَّاسَ قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ .
Chapter: Knowing about the seeing
Abu Huraira reported: The people said to the Messenger of Allah (ﷺ): Messenger of Allah I shall we see our Lord on the Day of Resurrection? The rest of the hadith was narrated according to the narration of Ibrahim b. Sa'd.
পরিচ্ছেদঃ ৮১. মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান।
৩৪২-(৩০১/...) মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ..... হাম্মাম ইবনু মুনব্বিহ (রহঃ) বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কতিপয় হাদীস বর্ণনা করেন। তন্মধ্যে এটিও ছিল, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ের জান্নাতীকে বলা হবে যে, তুমি কামনা কর। সে কামনা করতে থাকবে এবং আরো কামনা করবে। আল্লাহ তাকে বলবেন, তোমার যা কমন করার তা কি করেছ? সে বলবে, জী! আল্লাহ বলবেন, যা কামনা করেছ তা এবং এর অনুরূপ তোমাকে প্রদান করা হল। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৬১)
باب مَعْرِفَةِ طَرِيقِ الرُّؤْيَةِ
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَدْنَى مَقْعَدِ أَحَدِكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ أَنْ يَقُولَ لَهُ تَمَنَّ . فَيَتَمَنَّى وَيَتَمَنَّى فَيَقُولُ لَهُ هَلْ تَمَنَّيْتَ فَيَقُولُ نَعَمْ . فَيَقُولُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَا تَمَنَّيْتَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ " .
Chapter: Knowing about the seeing
Hammam b. Munabbih said: This is what Abu Huraira transmitted to us from the Messenger of Allah (ﷺ), and he narrated many of them;- one of them was: The Messenger of Allah (ﷺ) said: The lowest in rank among you in Paradise would be asked: Desire (whatever you like). And he would express his desire and again and again express a desire. tHe would be asked: Have you expressed your desire? He would say: Yes. Then He (Allah) would say: For thee is (granted) what thou desirest, and the like of it along with it.
পরিচ্ছেদঃ ৮১. মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান।
৩৪৩-(৩০২/১৮৩) সুওয়াইদ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে কতিপয় লোক তাকে জিজ্ঞেস করে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত দিবসে আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হাঁ! তিনি আরো বললেনঃ দুপুরে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমাদের কষ্ট হয়? চন্দ্রের চৌদ্দ তারিখে মেঘমুক্ত অবস্থায় চন্দ্র দেখতে কি তোমাদের কষ্ট হয়? সকলে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তা হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঠিক তদ্রুপ কিয়ামত দিবসে তোমাদের বারাকাতময় মহামহিম প্রতিপালককে দেখতে কোনই কষ্ট অনুভব হবে না যেমন চন্দ্র ও সূর্য দেখতে কষ্ট অনুভব কর না। সে দিন এক ঘোষণাকারী ঘোষণা দিবে, যে যার উপাসনা করতো সে আজ তার অনুসরণ করুক। তখন আল্লাহ ব্যতীত তারা অন্য দেব-দেবী ও মূর্তিপূজার বেদীর উপাসনা করত তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না; সকলেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সৎ হোক বা অসৎ যারা আল্লাহর ইবাদাত করত তারাই কেবল অবশিষ্ট থাকবে এবং কিতাবীদের (যারা দেব-দেবী ও বেদীর উপাসক ছিল না তারাও বাকী থাকবে)।
এরপর ইয়াহুদীদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমরা কার ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আল্লাহর পুত্র উযায়র-এর। তাদেরকে বলা হবে মিথ্যা বলছো। আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। তোমরা কি চাও? তারা বলবে, হে আল্লাহ! আমাদের খুবই পিপাসা পেয়েছে। আমাদের পিপাসা নিবারণ করুন। প্রার্থনা শুনে তাদেরকে ইঙ্গিত করে মরীচিকাময় জাহান্নামের দিকে জমায়েত করা হবে। সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা যেন পানির ঢেউ খেলবে। এর একাংশ আরেক অংশকে গ্রাস করতে থাকবে। তারা এতে ঝাপিয়ে পড়বে।
এরপর খৃস্টানদেরকে ডাকা হবে, বলা হবে, তোমরা কার ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আল্লাহর পুত্র মাসীহ এর (ঈসার) উপাসনা করতাম। বলা হবে, মিথ্যা বলছ। আল্লাহ কোন স্ত্রী বা সন্তান গ্রহণ করেননি। জিজ্ঞেস করা হবে, এখন কি চাও? তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের দারুন পিপাসা পেয়েছে, আমাদের পিপাসা নিবারণ করুন। তখন তাদেরকেও পানির ঘাটে যাবার ইঙ্গিত করে জাহান্নামের দিকে হাকিয়ে নিয়ে জমায়েত করা হবে। এটিকে মরীচিকার ন্যায় মনে হবে। সেখানে আগুনের লেলিহান শিখা যেন পানির ঢেউ খেলবে। এর একাংশ অপর অংশকে গ্রাস করে নিবে। তারা তখন জাহান্নামে ঝাপিয়ে পড়তে থাকবে। শেষে সৎ হোক বা অসৎ এক আল্লাহর উপাসক ব্যতীত আর কেউ (ময়দানে) অবশিষ্ট থাকবে না।
তখন আল্লাহ তা’আলা পরিচিত আকৃতিতে তাদের নিকট আসবেন। বলবেন, সবই তাদের স্ব স্ব উপাস্যের অনুসরণ করে চলে গেছে, আর তোমরা কার অপেক্ষা করছ? তারা বলবে, হে আমাদের প্রভু! যেখানে আমরা বেশী মুখাপেক্ষী ছিলাম সে দুনিয়াতেই আমরা অপরাপর মানুষ থেকে পৃথক থেকেছি এবং তাদের সঙ্গী হইনি। তখন আল্লাহ বলবেন, আমিই তো তোমাদের প্রতু। মু’মিনরা বলবে, "আমরা তোমার থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি" আল্লাহর সঙ্গে আমরা কিছুই শারীক করি না। এ কথা তারা দুই বা তিনবার বলবে। এমন কি কেউ কেউ অবাধ্যতা প্রদর্শনেও অবতীর্ণ হয়ে যাবে। আল্লাহ বলবেন, আচ্ছা, তোমাদের নিকট এমন কোন নিদর্শন আছে যদ্বারা তাকে তোমরা চিনতে পার? তারা বলবে অবশ্যই আছে।
এরপর পায়ের সাক’ (গোছা) উন্মোচিত হবে। তখন পৃথিবীতে যারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আল্লাহর উদ্দেশে সিজদা করত, সে মুহুর্তে তাদেরকে আল্লাহ সিজদা করতে অনুমতি দিবেন এবং তারা সবাই সিজদাবনত হয়ে পড়বে। আর যে কারো ভয়-ভীতি কিংবা লোক দেখানোর জন্য সিজদা করতো তার মেরুদণ্ড শক্ত ও অনমনীয় করে দেয়া হবে। যখনই তারা সিজদা করতে ইচ্ছা করবে তখনই তারা চিত হয়ে পড়ে যাবে। অতঃপর তারা তাদের মাথা উঠাবে এবং তিনি তার আসলরূপে আবির্ভূত হবেন। অতঃপর বলবেন, আমি তোমাদের রব, তারা বলবে, হ্যাঁ! আপনি আমাদের রব। তারপর জাহান্নামের উপর "জাসর" (পুল) স্থাপন করা হবে। শাফাআতেরও অনুমতি দেয়া হবে। মানুষ বলতে থাকবে, হে আল্লাহ! আমাদের নিরাপত্তা দিন, আমাদের নিরাপত্তা দিন।
জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! "জাসর" কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ এটি এমন স্থান যেখানে পা পিছলে যায়। সেখানে আছে নানা প্রকারের লৌহ শলাকা ও কাটা, দেখতে নাজদের সা’দান বৃক্ষের কাটার ন্যায়। মুমিনগণের কেউ তো এ পথ চোখের পলকের গতিতে, কেউ বিদ্যুৎ গতিতে, কেউ বায়ুর গতিতে, কেউ উত্তম অশ্ব গতিতে, কেউ উষ্ট্রের গতিতে অতিক্রম করবে। কেউ তো অক্ষত অবস্থায় নাযাত পাবে, আর কেউ তো হবে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় নাযাতপ্রাপ্ত। আর কতককে কাটাবিদ্ধ অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। অবশেষে মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সে সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, ঐ দিন মু’মিনগণ তাদের ঐ সব ভাইদের স্বার্থে আল্লাহর সাথে এত অধিক বিতর্কে লিপ্ত হবে যারা জাহান্নামে রয়ে গেছে যে, তোমাদের পার্থিব অধিকারের ক্ষেত্রেও এমন বিতর্কে লিপ্ত হয় না। তারা বলবে, হে রব! এরা তো আমাদের সাথেই সিয়াম, সালাত আদায় করত, হজ্জ করত। তখন তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে যে, যাও, তোমাদের পরিচিতদের উদ্ধার করে আন। উল্লেখ্য এরা জাহান্নামে পতিত হলেও মুখমণ্ডল আযাব থেকে রক্ষিত থাকবে। (তাই তাদেরকে চিনতে কোন অসুবিধা হবে না।) মুমিনগণ জাহান্নাম হতে এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে আনবে। এদের অবস্থা এমন হবে যে, কারোর তো পায়ের নলা পর্যন্ত, আবার কারো হাটু পর্যন্ত দেহ আগুন ছাই করে দিবে।
উদ্ধার শেষ করে মুমিনগণ বলবে, হে রব যাদের সম্পর্কে আপনি নির্দেশ প্রদান করেছিলেন, তাদের মাঝে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। আল্লাহ বলবেন, পুনরায় যাও, যার অন্তরে এক দীনার পরিমাণও ঈমান অবশিষ্ট পাবে তাকেও উদ্ধার করে আন। তখন তারা আরো একদলকে উদ্ধার করে এনে তারা বলবে, হে রব! অনুমতিপ্রাপ্তদের কাউকেও রেখে আসিনি। আল্লাহ বলবেনঃ আবার যাও, যার অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণও ঈমান অবশিষ্ট পাবে তাকেও বের করে আন। তখন আবার এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে এনে তারা বলবে, হে রব! যাদের আপনি উদ্ধার করতে বলেছিলেন তাদের কাউকে ছেড়ে আসিনি। আল্লাহ বলবেনঃ আবার যাও, যার অন্তরে অণু পরিমাণও ঈমান বিদ্যমান, তাকেও উদ্ধার করে আন। তখন আবারও এক বিরাট দলকে উদ্ধার করে এনে তারা বলবে, হে রব! যাদের কথা বলেছিলেন তাদের কাউকেও রেখে আসিনি।
সাহাবা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) বলেন, তোমরা যদি এ হাদীসের ব্যাপারে আমাকে সত্যবাদী মনে না কর তবে এর সমর্থনে নিম্নোক্ত আয়াতটি যদি চাও তবে তিলাওয়াত করতে পারঃ "আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলম করেন না এবং অণু পরিমাণ নেক কাজ হলেও আল্লাহ তা দ্বিগুণ করে দেন এবং তার নিকট হতে মহাপুরস্কার প্রদান করেন"- (সূরাহ আন নিসা ৪ঃ ৪০)।
এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ ফেরেশতারা সুপারিশ করলেন, নবীগণও সুপারিশ করলেন এবং মুমিনরাও সুপারিশ করেছে, কেবলমাত্র আরহামুর রাহিমীন পরম দয়াময়ই রয়ে গেছেন। এরপর তিনি জাহান্নাম থেকে এক মুঠো তুলে আনবেন, ফলে এমন একদল লোক মুক্তি পাবে যারা কখনো কোন সৎকর্ম করেনি এবং আগুনে জ্বলে লাল হয়ে গেছে। পরে তাদেরকে জান্নাতের প্রবেশ মুখের নাহরুল হায়াতে ফেলে দেয়া হবে। তারা এতে এমনভাবে সতেজ হয়ে উঠবে, যেমনভাবে শস্য অঙ্কুর স্রোতবাহিত পানি ভেজা উর্বর জমিতে সতেজ হয়ে উঠে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ) তোমরা কি কোন বৃক্ষ কিংবা পাথরের আড়াল কোন শস্যদানা অঙ্কুরিত হতে দেখনি? যেগুলো সূর্য কিরণের মাঝে থেকে সেগুলো হলদে ও সবুজ রূপ ধারণ করে আর যেগুলো ছায়াযুক্ত স্থানে থাকে সেগুলো সাদা হয়ে যায়।
সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মনে হয় আপনি যেন গ্রামাঞ্চলে পশু চরিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর তারা নহর থেকে মুক্তার ন্যায় ঝকঝকে অবস্থায় ওঠে আসবে এবং তাদের গ্রীবাদেশে মোহরাঙ্কিত থাকবে যা দেখে জান্নাতীগণ তাদের চিনতে পারবেন। এরা হর ’উতাকাউল্লাহ-আল্লাহর পক্ষ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত। আল্লাহ তা’আলা সৎ আমল ব্যতীতই তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। এরপর আল্লাহ তাদেরকে লক্ষ্য করে বলবেনঃ যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর। আর যা কিছু দেখছ সব কিছু তোমাদেরই। তারা বলবে, হে রব! আপনি আমাদেরকে এত দিয়েছেন যা সৃষ্টজগতের কাউকে দেননি। আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের জন্য আমার নিকট এর চেয়েও উত্তম বস্তু আছে। তারা বলবে, কি সে উত্তম বস্তু? আল্লাহ বলবেনঃ সে হল আমার সন্তুষ্টি। এরপর আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হবো না।
ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন : শাফা’আত সম্পৰ্কীয় এ হাদীসটি আমি ঈসা ইবনু হাম্মাদ যুগবাতুর মিসরী এর নিকট পাঠ করতে বললাম, আপনি লায়স ইবনু সা’দ থেকে নিজে এ হাদীসটি শুনেছেন? আমি কি আপনার পক্ষ থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করতে পারি? তিনি উত্তর করলেন, হ্যাঁ! এরপর আমি ঈসা ইবনু হাম্মাদকে হাদীসটি এ সূত্রে শুনিয়েছি যে, ঈসা ইবনু হাম্মদ (রহঃ) আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর করলেনঃ মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে ভীড়ের কারণে তোমাদের কি কোন অসুবিধা হয়? আমরা বললাম, না ...। এভাবে হাদীসটির শেষ পর্যন্ত তুলে ধরলাম। এ হাদীসটি হাফিয ইবনু মাইসারাহ বর্ণিত হাদিসেরই অনুরুপ। তিনিبِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ قَدَمٍ قَدَّمُوهُ এ অংশটুকুর পর فَيُقَالُ لَهُمْ لَكُمْ مَا رَأَيْتُمْ অর্থাৎ তাদের বলা হবেঃ তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা দেখছ।
আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) বলেন, আমার কাছে রিওয়ায়াতে পৌছেছে যে, জাসর (পুল) চুল অপেক্ষা অধিক সূক্ষ্ম ও তরবারি অপেক্ষা অধিক তীক্ষ। তাছাড়া লায়সের হাদিসে فَيَقُولُونَ رَبَّنَا أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ বাক্যটির পরবর্তী অংশগুলো উল্লেখ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫১, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৬২)
باب مَعْرِفَةِ طَرِيقِ الرُّؤْيَةِ
وَحَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ نَاسًا، فِي زَمَنِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَعَمْ " . قَالَ " هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ بِالظَّهِيرَةِ صَحْوًا لَيْسَ مَعَهَا سَحَابٌ وَهَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ صَحْوًا لَيْسَ فِيهَا سَحَابٌ " . قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " مَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ كَمَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أَذَّنَ مُؤَذِّنٌ لِيَتَّبِعْ كُلُّ أُمَّةٍ مَا كَانَتْ تَعْبُدُ . فَلاَ يَبْقَى أَحَدٌ كَانَ يَعْبُدُ غَيْرَ اللَّهِ سُبْحَانَهُ مِنَ الأَصْنَامِ وَالأَنْصَابِ إِلاَّ يَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ حَتَّى إِذَا لَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ مِنْ بَرٍّ وَفَاجِرٍ وَغُبَّرِ أَهْلِ الْكِتَابِ فَيُدْعَى الْيَهُودُ فَيُقَالُ لَهُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ عُزَيْرَ ابْنَ اللَّهِ . فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ صَاحِبَةٍ وَلاَ وَلَدٍ فَمَاذَا تَبْغُونَ قَالُوا عَطِشْنَا يَا رَبَّنَا فَاسْقِنَا . فَيُشَارُ إِلَيْهِمْ أَلاَ تَرِدُونَ فَيُحْشَرُونَ إِلَى النَّارِ كَأَنَّهَا سَرَابٌ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ . ثُمَّ يُدْعَى النَّصَارَى فَيُقَالُ لَهُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ الْمَسِيحَ ابْنَ اللَّهِ . فَيُقَالُ لَهُمْ كَذَبْتُمْ . مَا اتَّخَذَ اللَّهُ مِنْ صَاحِبَةٍ وَلاَ وَلَدٍ . فَيُقَالُ لَهُمْ مَاذَا تَبْغُونَ فَيَقُولُونَ عَطِشْنَا يَا رَبَّنَا فَاسْقِنَا . - قَالَ - فَيُشَارُ إِلَيْهِمْ أَلاَ تَرِدُونَ فَيُحْشَرُونَ إِلَى جَهَنَّمَ كَأَنَّهَا سَرَابٌ يَحْطِمُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي النَّارِ حَتَّى إِذَا لَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ تَعَالَى مِنْ بَرٍّ وَفَاجِرٍ أَتَاهُمْ رَبُّ الْعَالَمِينَ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى فِي أَدْنَى صُورَةٍ مِنَ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا . قَالَ فَمَا تَنْتَظِرُونَ تَتْبَعُ كُلُّ أُمَّةٍ مَا كَانَتْ تَعْبُدُ . قَالُوا يَا رَبَّنَا فَارَقْنَا النَّاسَ فِي الدُّنْيَا أَفْقَرَ مَا كُنَّا إِلَيْهِمْ وَلَمْ نُصَاحِبْهُمْ . فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ . فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ لاَ نُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا - مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا - حَتَّى إِنَّ بَعْضَهُمْ لَيَكَادُ أَنْ يَنْقَلِبَ . فَيَقُولُ هَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ آيَةٌ فَتَعْرِفُونَهُ بِهَا فَيَقُولُونَ نَعَمْ . فَيُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ فَلاَ يَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ لِلَّهِ مِنْ تِلْقَاءِ نَفْسِهِ إِلاَّ أَذِنَ اللَّهُ لَهُ بِالسُّجُودِ وَلاَ يَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ اتِّقَاءً وَرِيَاءً إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ ظَهْرَهُ طَبَقَةً وَاحِدَةً كُلَّمَا أَرَادَ أَنْ يَسْجُدَ خَرَّ عَلَى قَفَاهُ . ثُمَّ يَرْفَعُونَ رُءُوسَهُمْ وَقَدْ تَحَوَّلَ فِي صُورَتِهِ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ فَقَالَ أَنَا رَبُّكُمْ . فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا . ثُمَّ يُضْرَبُ الْجِسْرُ عَلَى جَهَنَّمَ وَتَحِلُّ الشَّفَاعَةُ وَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ " . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْجِسْرُ قَالَ " دَحْضٌ مَزِلَّةٌ . فِيهِ خَطَاطِيفُ وَكَلاَلِيبُ وَحَسَكٌ تَكُونُ بِنَجْدٍ فِيهَا شُوَيْكَةٌ يُقَالُ لَهَا السَّعْدَانُ فَيَمُرُّ الْمُؤْمِنُونَ كَطَرْفِ الْعَيْنِ وَكَالْبَرْقِ وَكَالرِّيحِ وَكَالطَّيْرِ وَكَأَجَاوِيدِ الْخَيْلِ وَالرِّكَابِ فَنَاجٍ مُسَلَّمٌ وَمَخْدُوشٌ مُرْسَلٌ وَمَكْدُوسٌ فِي نَارِ جَهَنَّمَ . حَتَّى إِذَا خَلَصَ الْمُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ بِأَشَدَّ مُنَاشَدَةً لِلَّهِ فِي اسْتِقْصَاءِ الْحَقِّ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ لِلَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لإِخْوَانِهِمُ الَّذِينَ فِي النَّارِ يَقُولُونَ رَبَّنَا كَانُوا يَصُومُونَ مَعَنَا وَيُصَلُّونَ وَيَحُجُّونَ . فَيُقَالُ لَهُمْ أَخْرِجُوا مَنْ عَرَفْتُمْ . فَتُحَرَّمُ صُوَرُهُمْ عَلَى النَّارِ فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثيرًا قَدْ أَخَذَتِ النَّارُ إِلَى نِصْفِ سَاقَيْهِ وَإِلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا مَا بَقِيَ فِيهَا أَحَدٌ مِمَّنْ أَمَرْتَنَا بِهِ . فَيَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ دِينَارٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ . فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا أَحَدًا مِمَّنْ أَمَرْتَنَا . ثُمَّ يَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ نِصْفِ دِينَارٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ . فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا مِمَّنْ أَمَرْتَنَا أَحَدًا . ثُمَّ يَقُولُ ارْجِعُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوهُ . فَيُخْرِجُونَ خَلْقًا كَثِيرًا ثُمَّ يَقُولُونَ رَبَّنَا لَمْ نَذَرْ فِيهَا خَيْرًا " . وَكَانَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ يَقُولُ إِنْ لَمْ تُصَدِّقُونِي بِهَذَا الْحَدِيثِ فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ ( إِنَّ اللَّهَ لاَ يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُضَاعِفْهَا وَيُؤْتِ مِنْ لَدُنْهُ أَجْرًا عَظِيمًا) " فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ شَفَعَتِ الْمَلاَئِكَةُ وَشَفَعَ النَّبِيُّونَ وَشَفَعَ الْمُؤْمِنُونَ وَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ فَيَقْبِضُ قَبْضَةً مِنَ النَّارِ فَيُخْرِجُ مِنْهَا قَوْمًا لَمْ يَعْمَلُوا خَيْرًا قَطُّ قَدْ عَادُوا حُمَمًا فَيُلْقِيهِمْ فِي نَهْرٍ فِي أَفْوَاهِ الْجَنَّةِ يُقَالُ لَهُ نَهْرُ الْحَيَاةِ فَيَخْرُجُونَ كَمَا تَخْرُجُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ أَلاَ تَرَوْنَهَا تَكُونُ إِلَى الْحَجَرِ أَوْ إِلَى الشَّجَرِ مَا يَكُونُ إِلَى الشَّمْسِ أُصَيْفِرُ وَأُخَيْضِرُ وَمَا يَكُونُ مِنْهَا إِلَى الظِّلِّ يَكُونُ أَبْيَضَ " . فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّكَ كُنْتَ تَرْعَى بِالْبَادِيَةِ قَالَ " فَيَخْرُجُونَ كَاللُّؤْلُؤِ فِي رِقَابِهِمُ الْخَوَاتِمُ يَعْرِفُهُمْ أَهْلُ الْجَنَّةِ هَؤُلاَءِ عُتَقَاءُ اللَّهِ الَّذِينَ أَدْخَلَهُمُ اللَّهُ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ خَيْرٍ قَدَّمُوهُ ثُمَّ يَقُولُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ فَمَا رَأَيْتُمُوهُ فَهُوَ لَكُمْ . فَيَقُولُونَ رَبَّنَا أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ . فَيَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي أَفْضَلُ مِنْ هَذَا فَيَقُولُونَ يَا رَبَّنَا أَىُّ شَىْءٍ أَفْضَلُ مِنْ هَذَا . فَيَقُولُ رِضَاىَ فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا " .
قَالَ مُسْلِمٌ قَرَأْتُ عَلَى عِيسَى بْنِ حَمَّادٍ زُغْبَةَ الْمِصْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثَ فِي الشَّفَاعَةِ وَقُلْتُ لَهُ أُحَدِّثُ بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنْكَ أَنَّكَسَمِعْتَ مِنَ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ فَقَالَ نَعَمْ . قُلْتُ لِعِيسَى بْنِ حَمَّادٍ أَخْبَرَكُمُ اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَرَى رَبَّنَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ إِذَا كَانَ يَوْمٌ صَحْوٌ " . قُلْنَا لاَ . وَسُقْتُ الْحَدِيثَ حَتَّى انْقَضَى آخِرُهُ وَهُوَ نَحْوُ حَدِيثِ حَفْصِ بْنِ مَيْسَرَةَ . وَزَادَ بَعْدَ قَوْلِهِ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ قَدَمٍ قَدَّمُوهُ " فَيُقَالُ لَهُمْ لَكُمْ مَا رَأَيْتُمْ وَمِثْلُهُ مَعَهُ " . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ بَلَغَنِي أَنَّ الْجِسْرَ أَدَقُّ مِنَ الشَّعْرَةِ وَأَحَدُّ مِنَ السَّيْفِ . وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ اللَّيْثِ " فَيَقُولُونَ رَبَّنَا أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنَ الْعَالَمِينَ " وَمَا بَعْدَهُ فَأَقَرَّ بِهِ عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ .
Chapter: Knowing about the seeing
Abu Sa'id al-Khudri reported: Some people during the lifetime of the Messenger of Allah (ﷺ) said: Messenger of Allah! shall we see our Lord on the Day of Resurrection? The Messenger of Allah (ﷺ) said: Yes, and added: Do you feel any trouble in seeing the sun at noon with no cloud over it, and do you feel trouble in seeing the moon (open) in the full moonlit night with no cloud over it? They said: No, Messenger of Allah! He (the Holy Prophet) said: You will not feel any trouble in seeing Allah on the Day of Resurrection any more than you do in seeing any one of them. When the Day of Resurrection comes a Mu'adhdhin (a proclaimer) would proclaim: Let every people follow what they used to worship. Then all who worshipped idols and stones besides Allah would fall into the Fire, till only the righteous and the vicious and some of the people of the Book who worshipped Allah are left. Then the Jews would be summoned, and it would be said to them: What did you worship? They will say: We worshipped 'Uzair, son of Allah. It would be said to them: You tell a lie; Allah had never had a spouse or a son. What do you want now? They would say: We feel thirsty, O our Lord! Quench our thirst. They would be directed (to a certain direction) and asked: Why don't you go there to drink water? Then they would be pushed towards the Fire (and they would find to their great dismay that) it was but a mirage (and the raging flames of fire) would be consuming one another, and they would fall into the Fire. Then the Christians would be summoned and it would be said to them: What did you worship? They would say: We worshipped Jesus, son of Allah. It would be said to them: You tell a lie; Allah did not take for Himself either a spouse or a son. Then it would be said to them: What do you want? They would say: Thirsty we are, O our Lord! Quench our thirst. They would be directed (to a certain direction) and asked: Why don't you go there to get water? But they would be pushed and gathered together towards the Hell, which was like a mirage to them, and the flames would consume one another. They would fall Into the Fire, till no one is left except he who worshipped Allah, be he pious or sinful. The Lord of the Universe, Glorified and Exalted, would come to them in a form recognisable to them and say; What are you looking for? Every people follow that which they worshipped. They would say: Our Lord, we kept ourselves separate from the people in the world, though we felt great need of them; we, however, did not associate ourselves with them. He would say: I am your Lord. They would say: We take refuge with Allah from thee and do not associate anything with Allah. They would repeat it twice or thrice, till some of them would be about to return. It would be said: Is there any sign between you and Him by which you will recognise Him? They would say: Yes. and the things would be laid bare. Those who used to prostrate themselves before God of their own accord would be permitted by God to prostrate themselves. But there would remain none who used to prostrate out of fear (of people) and ostentation but Allah would make his back as one piece, and whenever he would attempt to prostrate he would fall on his back. Then they would raise their heads and He would assume the Form in which they had seen Him the first time and would say: I am your Lord. They would say: Thou art our Lord. Then the bridge would be set up over the Hell and intercession would be allowed and they will say: O God, keep safe, keep safe. It was asked: Messenger of Allah, what is this bridge? He said: The void in which one Is likely to slip. There would be hooks, tongs, spits like the thorn that is found in Najd and is known as Sa'dan. The believers would then pass over within the twinkling of an eye, like lightning, like wind, like a bird, like the finest horses and camels. Some will escape and be safe, some will be lacerated and let go, and some will be pushed into the fire of Hell till the believers will find rescue from the Fire. By One in Whose hand is my life, there will be none among you more eager to claim a right than the believers on the Day of Resurrection for (saying their) brethren in the Fire who would say: O our Lord, they were fasting along with us, and praying and performing pilgrimage. It will be said to them: Take out those whom you recognise. Then their persons would be forbidden to the Fire; and they would take out a large number of people who had been overtaken by Fire up to the middle of the shank or up to the knees. They would then say: O our Lord I not one of those about whom Thou didst give us command remains in it. He will then say: Go back and bring out those in whose hearts you find good of the weight of a dinar Then they will take out a large number of people. Then they would say: O our Lord! we have not left anyone about whom You commanded us. He will then say: Go back and bring out those in whose hearts you find as much as half a dinar of good. Then they will take out a large number of people, and would say: O our Lord! not one of those about whom Thou commanded us we have left in it. Then He would say: Go back and in whose heart you find good to the weight of a particle bring him out. They would bring out a large number of people, and would then say: O our Lord, now we have not left anyone in it (Hell) having any good in him. Abu Sa'id Khudri said: If you don't testify me in this hadith, then recite if you like:" Surely Allah wrongs not the weight of an atom; and if it is a good deed. He multiplies it and gives from Himself a great reward" (al-Qur'an, iv. 40). Then Allah, Exalted and Great, would say: The angels have interceded, the apostles have interceded and the believers have interceded, and no one remains (to grant pardon) but the Most Merciful of the mercifuls. He will then take a handful from Fire and bring out from it people who never did any good and who had been turned into charcoal, and will cast them into a river called the river of life, on the outskirts of Paradise. They will come out as a seed comes cut from the silt carried by flood. You see it near the stone or near the tree. That which is exposed to the sun is yellowish or greenish and which is under the shade is white. They said: Messenger of Allah! it seems as if you had been tending a flock in the jungle. He (the Holy Prophet) said: They will come forth like pearls with seals on their necks. The inhabitants of Paradise would recognise them (and say): Those are who have been set free by the Compassionate One. Who has admitted them into Paradise without any (good) deed that they did or any good that they sent in advance Then He would say: Enter the Paradise; whatever you see in it is yours. They would say: O Lord, Thou hast bestowed upon us (favours) which Thou didst not bestow upon anyone else in the world. He would say: There is with Me (a favour) for you better than this. They would say: O our Lord! which thing is better than this? He would say: It is My pleasure. I will never be angry with you after this. It is narrated on the authority of Abu Sa'id al-Khudri: We said: Messenger of Allah, shall we see our Lord? The Messenger of Allah (ﷺ) said: Do you feel any trouble in seeing the sun on a cloudless day? We said: No. And the remaining part of the hadith has been narrated to the end like the hadith transmitted by Hafs b. Maisara with the addition of these words: Without the deed that they did or any good that they had sent before. It would be said to them: For you is whatever you see (in it) and with it the like of it. Abu Sa'id said: I have come to know that the bridge would be thinner even than the hair and sharper than the sword; and in the hadith narrated by Laith these words are not found: They would say, O our Lord! Thou hast bestowed upon us (favours) which thou didst not bestow on anyone else in the world.
পরিচ্ছেদঃ ৮১. মহান আল্লাহর দর্শন পথের জ্ঞান।
৩৪৪-(৩০৩/...) আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ্ (রহঃ) ..... যায়দ ইবনু আসলাম থেকে পূর্ব বর্ণিত হাদীসদ্বয়ের সনদের হাফস ইবনু মাইসারার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এ রিওয়ায়াতে শব্দগুলো কিছু কম বর্ণনা আছে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৫২, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৬৩)
باب مَعْرِفَةِ طَرِيقِ الرُّؤْيَةِ
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، بِإِسْنَادِهِمَا نَحْوَ حَدِيثِ حَفْصِ بْنِ مَيْسَرَةَ إِلَى آخِرِهِ وَقَدْ زَادَ وَنَقَصَ شَيْئًا .
Chapter: Knowing about the seeing
Abu Bakr b. Abi Shaiba, Ja'far b. 'Aun, Hisham b. Sa'd, Zaid b. Aslam narrated the hadith as transmitted by Hafs b. Maisara, with certain additions and omissions.