পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮০৯. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করে। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কী হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ ব্যক্তিরাই প্রবেশ করছে। তখন আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হবে না যতক্ষণ না তিনি তাঁর পা তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে, বাস, বাস, বাস। তখন জাহান্নাম পূর্ণ হয়ে যাবে এবং এর এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে মুড়িয়ে দেয়া হবে। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির কারো প্রতি যুলম করবেন না। অবশ্য আল্লাহ্ তা’আলা জান্নাতের জন্য অন্য মাখলুক সৃষ্টি করবেন।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَحَاجَّتِ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ فَقَالَتِ النَّارُ: أُوثِرْتُ بِالْمُتَكَبِّرِينَ وَالْمُتَجَبِّرِينَ وَقَالَتِ الْجَنَّةُ: مَا لِي لاَ يَدْخُلُنِي إِلاَّ ضُعَفَاءُ النَّاسِ وَسَقَطُهُمْ قَالَ اللهُ، تَبَارَكَ وَتَعَالَى، لِلْجنَّةِ: أَنْتِ رَحْمَتِي أَرْحَمُ بِكِ مَنْ أَشَاءُ مِنْ عِبَادِي وَقَالَ لِلنَّارِ: إِنَّمَا أَنْتِ عَذَابٌ أُعَذِّبُ بِكِ مَنْ أَشَاءُ مِنْ عِبَادِي وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا مِلْؤُهَا فَأَمَّا النَّارُ فَلاَ تَمْتَلِىءُ حَتَّى يَضَعَ رِجْلَهُ فَتَقُولُ قَطٍ قَطٍ قَطٍ فَهُنَالِكَ تَمْتَلِىءُ، وَيُزْوَى بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ وَلاَ يَظْلِمُ اللهُ، عَزَّ وَجَلَّ، مِنْ خَلْقِهِ أَحَدًا وَأَمَّا الْجَنَّةُ، فَإِنَّ اللهَ، عَزَّ وَجَلَّ، يُنْشِىءُ لَهَا خَلْقًا
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১০. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম সর্বদাই বলতে থাকবে— আরও কি আছে? এমন কি রাব্বুল ইয্যত তাতে তার পা রাখবেন। জাহান্নাম বলবে, ’বাস, বাস’ তোমার ইয্যতের কসম! সেদিন তার একাংশ অপরাংশের সঙ্গে মিলিত হয়ে যাবে।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تَزَالُ جَهَنَّمُ تَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ، حَتَّى يَضَعَ رَبُّ الْعِزَّةِ فِيهَا قَدَمَهُ فَتَقُولُ قطِ قَطِ وَعِزَّتِكَ وَيُزْوَى بَعْضُهَا إِلَى بَعْض
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১১. আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামত দিবসে মৃত্যুকে একটি ধূসর রঙের মেষের আকারে আনা হবে। তখন একজন সম্বােধনকারী ডাক দিয়ে বলবেন, হে জান্নাতবাসী! তখন তারা ঘাড় মাথা উঁচু করে দেখতে থাকবে। সম্বােধনকারী বলবে, তোমরা কি একে চিন? তারা বলবেন হ্যাঁ, এ হল মৃত্যু। কেননা সকলেই তাকে দেখেছে। তারপর সম্বােধনকারী আবার ডেকে বলবেন, হে জাহান্নামবাসী! জাহান্নামীরা মাথা উঁচু করে দেখতে থাকবে, তখন সম্বােধনকারী বলবে তোমরা কি একে চিন? তারা বলবে, হ্যাঁ, এ তো মৃত্যু। কেননা তারা সকলেই তাকে দেখেছে। তারপর (সেটি) যবেহ করা হবে। আর ঘােষক বলবেন, হে জান্নাতবাসী! স্থায়ীভাবে (এখানে) থাক। তোমাদের আর কোন মৃত্যু নেই। আর হে জাহান্নামবাসী! চিরদিন। (এখানে) থাক। তোমাদের আর মৃত্যু নেই। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন- ’তাদের সতর্ক করে দাও পরিতাপের দিবস সম্বন্ধে যখন সকল ফয়সালা হয়ে যাবে অথচ এখন তারা গাফিল, তারা অসতর্ক দুনিয়াবাসী-অবিশ্বাসী।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يُؤْتَى بِالْمَوْتِ كَهَيْئَةِ كَبْشٍ أَمْلَحَ، فَيُنَادِي مُنَادٍ، يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ فَيَشْرَئِبُّونَ وَيَنْظُرونَ فَيَقُولُ: هَلْ تَعْرِفُونَ هذَا فَيَقُولُونَ: نَعَمْ هذَا الْمَوْتُ وَكلُّهُمْ قَدْ رَأَوْهُ ثُمَّ يُنَادِي: يَا أَهْلَ النَّارِ فَيَشْرَئِبُّونَ وَيَنْظُرُونَ فَيَقُولُ: هَلْ تَعْرِفُونَ هذَا فَيَقُولُونَ: نَعَمْ هذَا الْمَوْتُ وَكُلُّهُمْ قَدْ رَآه فَيُذْبَحُ ثُمَّ يَقُولُ: يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ خُلُودٌ، فَلاَ مَوْتَ وَيَا أَهْلَ النَّار خُلُودٌ، فَلاَ مَوْتَ ثُمَّ قَرَأَ (وَأَنْذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ إِذْ قُضِيَ الأَمْرُ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ، وَهؤُلاَءِ فِي غَفْلَةٍ، أَهْل الدُّنْيَا، وَهُمْ لاَ يُؤْمِنُونَ)
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১২. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মৃত্যুকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যব্হ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষন্নতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَارَ أَهْلُ الْجَنَّةِ إِلَى الْجَنَّةِ، وَأَهْلُ النَّارِ إِلَى النَّارِ؛ جِيءَ بِالْمَوْتِ حَتَّى يُجْعَلَ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُذْبَحُ ثُمَّ يُنَادِي مُنَادٍ: يَا أَهْلَ الْجنَّةِ لاَ مَوْتَ، وَيَا أَهْلَ النَّارِ لاَ مَوْتَ فَيَزْدَادُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَرَحًا إِلَى فَرَحِهِمْ، وَيَزْدَادُ أَهْلُ النَّارِ حُزْنًا إِلَى حُزْنِهِمْ
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১৩. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: مَا بَيْنَ مَنْكِبَيِ الْكَافِرِ مَسِيرَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ لِلرَّاكِبِ الْمُسْرِعِ
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১৪. হারিস ইবনু ওয়াহাব খুযাঈ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল এবং অসহায়; কিন্তু তারা যদি কোন ব্যাপারে আল্লাহর নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা এবং অহংকারী তারাই জাহান্নামী।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث حارِثَةَ بْنِ وَهْبٍ الْخُزَاعِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ كُلُّ ضَعِيفٍ مَتَضَعِّفٍ، لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১৫. আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খুতবাহ দিতে শুনেছেন, খুতবায় তিনি কওমে সামূদের প্রতি প্রেরিত উষ্ট্রী ও তার পা কাটার কথা উল্লেখ করলেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (إِذِ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا) এর ব্যাখ্যায় বললেন, ঐ উষ্ট্রীকে হত্যা করার জন্য এক হতভাগ্য শক্তিশালী ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠল যে সে সমাজের মধ্যে আবু যামআর মত প্রভাবশালী ও অত্যন্ত শক্তিধর ছিল। এ খুতবায় তিনি মেয়েদের সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যে তার স্ত্রীকে ক্রীতদাসের মত মারপিট করে; কিন্তু ঐ দিনের শেষেই সে আবার তার সঙ্গে এক বিছানায় মিলিত হয়। তারপর তিনি বায়ু নিঃসরণের পর হাসি দেয়া সম্পর্কে বললেন, তোমাদের কেউ কেউ হাসে সে কাজটির জন্য যে কাজটি সে নিজেও করে।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ زَمْعَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ، وَذَكَرَ النَّاقَةَ وَالَّذِي عَقَرَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (إِذِ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا) انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَزِيزٌ عَارِمٌ مَنِيعٌ فِي رَهْطِهِ، مِثْلُ أَبِي زَمْعَةَ وَذَكَرَ النِّسَاءَ فَقَالَ: يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ، يَجْلِدُ امْرَأَتَهُ جَلْدَ الْعَبْدِ، فَلَعَلَّهُ يُضَاجِعُهَا مِنْ آخِرِ يَوْمِهِ ثُمَّ وَعَظَهُمْ فِي ضَحِكِهِمْ مِنَ الضَّرْطَةِ، وَقَالَ لِمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا يَفْعَلُ
পরিচ্ছেদঃ ৫১/১৩. অত্যাচারী ও উদ্ধৃতরা জাহান্নামের আগুনে এবং দুর্বল ও বিনীতা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮১৬. আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি ’আমর ইবনু ’আমির খুয’আইকে তার বহির্গত নাড়ি-ভঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলাফেলা করতে দেখেছি। সেই প্রথম ব্যক্তি যে সাইবা উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করে।
النار يدخلها الجبارون والجنة يدخلها الضعفاء
حديث أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرِ بْنِ لُحَيٍّ الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ، وَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ