পরিচ্ছেদঃ ৪২/৪. নাবী (ﷺ)-এর স্বপ্ন।

১৪৬৩. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি (স্বপ্নে) দেখলাম যে, আমি মিসওয়াক করছি। আমার নিকট দু’ ব্যক্তি এলেন। একজন অপরজন হতে বয়সে বড়। অতঃপর আমি তাদের মধ্যে কনিষ্ঠ ব্যক্তিকে মিসওয়াক দিতে গেলে আমাকে বলা হলো, বড়কে দাও। তখন আমি তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে দিলাম।

رؤيا النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

حديث ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: أَرَانِي أَتَسَوَّكُ بِسِوَاكٍ، فَجَاءَنِي رَجُلاَنِ أَحَدُهُمَا أَكْبَرُ مِنَ الآخَرِ فَنَاوَلْتُ السِّوَاكَ الأَصْغَرَ مِنْهُمَا، فَقِيلَ لِي كَبِّرْ، فَدَفَعْتُهُ إِلَى الأَكْبَرِ مِنْهُمَا

حديث ابن عمر، ان النبي صلى الله عليه وسلم قال: اراني اتسوك بسواك، فجاءني رجلان احدهما اكبر من الاخر فناولت السواك الاصغر منهما، فقيل لي كبر، فدفعته الى الاكبر منهما

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪২/ স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)

পরিচ্ছেদঃ ৪২/৪. নাবী (ﷺ)-এর স্বপ্ন।

১৪৬৪. আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, আমি মক্কাহ হতে হিজরত করে এমন জায়গায় যাচ্ছি যেখানে বহু খেজুর গাছ রয়েছে। তখন আমার ধারণা হল, এ স্থানটি ইয়ামামা অথবা হাযর হবে। স্থানটি মদীনাহ ছিল। যার পূর্বনাম ইয়াসরিব। স্বপ্নে আমি আরো দেখতে পেলাম যে আমি একটি তলোয়ার হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। হঠাৎ তার অগ্ৰাংশ ভেঙ্গে গেল। উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের যে বিপদ ঘটেছিল এটা তা-ই। অতঃপর দ্বিতীয় বার তলোয়ারটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করলাম তখন সেটি আগের চেয়েও আরো উত্তম হয়ে গেল। এটা হল যে, আল্লাহ্ মুসলিমগণকে বিজয়ী ও একত্রিত করে দিবেন। আমি স্বপ্নে আরো দেখতে পেলাম একটি গরু এবং শুনতে পেলাম আল্লাহ্ যা করেন সবই ভাল। এটাই হল উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের শাহাদাত বরণ। আর খায়ের হল- আল্লাহর পক্ষ হতে ঐ সকল কল্যাণ এবং সত্যবাদিতার পুরস্কার যা আল্লাহ আমাদেরকে বদর দিবসের পর দান করেছেন।

رؤيا النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

حديث أَبِي مُوسى، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أُهَاجِرُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى أَرْضٍ بِهَا نَخْلٌ، فَذَهَبَ وَهَلِي إِلَى أَنَّهَا الْيَمَامَةُ أَوْ هَجَرُ فَإِذَا هِيَ الْمَدِينَةُ، يَثْرِبُ وَرَأَيْتُ فِي رُؤْيَايَ هذِهِ أَنِّي هَزَزْتُ سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ، فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيبَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ، يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ بِأُخْرَى، فَعَادَ أَحْسَنَ مَا كَانَ، فَإِذَا هُوَ مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنَ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِينَ وَرَأَيْتُ فِيهَا بَقَرًا، وَاللهُ خَيْرٌ، فَإِذَا هُمُ الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَ أُحُدٍ، وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللهُ، مِنَ الْخَيْرِ، وَثَوَابِ الصِّدْقِ الَّذِي آتَانَا اللهُ بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ

حديث ابي موسى، عن النبي صلى الله عليه وسلم، قال: رايت في المنام اني اهاجر من مكة الى ارض بها نخل، فذهب وهلي الى انها اليمامة او هجر فاذا هي المدينة، يثرب ورايت في روياي هذه اني هززت سيفا فانقطع صدره، فاذا هو ما اصيب من المومنين، يوم احد ثم هززته باخرى، فعاد احسن ما كان، فاذا هو ما جاء الله به من الفتح واجتماع المومنين ورايت فيها بقرا، والله خير، فاذا هم المومنون يوم احد، واذا الخير ما جاء الله، من الخير، وثواب الصدق الذي اتانا الله بعد يوم بدر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪২/ স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)

পরিচ্ছেদঃ ৪২/৪. নাবী (ﷺ)-এর স্বপ্ন।

১৪৬৫. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে একবার মিথ্যুক মুসাইলামাহ (মদীনায়) এসেছিল। সে বলতে লাগল, মুহাম্মাদ যদি আমাকে তাঁর পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যান তাহলে আমি তাঁর অনুগত হয়ে যাব। সে তার গোত্রের বহু লোকজনসহ এসেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবিত ইবনু কাইস ইবনু সাম্মাসকে সঙ্গে নিয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর হাতে ছিল একটি খেজুরের ডাল। মুসাইলামাহ তার সঙ্গী-সাথীদের মাঝে ছিল, এই অবস্থায় তিনি তার কাছে পৌছলেন। তিনি বললেন, যদি তুমি আমার কাছে এ ডালটিও চাও তবে তাও আমি তোমাকে দেব না। তোমার ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ কক্ষনো লঙ্ঘিত হবে না। যদি তুমি আমার আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করে দিবেন। আমি তোমাকে ঠিক তেমনই দেখতে পাচ্ছি যেমনটি আমাকে (স্বপ্নে) দেখানো হয়েছে। এই সাবিত আমার পক্ষ থেকে তোমাকে জবাব দেবে। এরপর তিনি তার নিকট হতে চলে আসলেন।

ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি “আমি তোমাকে তেমনই দেখতে পাচ্ছি যেমন আমাকে দেখানো হয়েছিল”-এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।

رؤيا النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

حديث ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَدِمَ مُسَيْلِمَةُ الْكَذَّابُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلَ يَقُولُ: إِنْ جَعَلَ لِي مُحَمَّدٌ مِنْ بَعْدِهِ تَبِعْتُهُ وَقَدِمَهَا فِي بَشَرٍ كَثِيرٍ مِنْ قَوْمِه فَأَقْبَلَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَهُ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَفِي يَدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قِطْعَةُ جَرِيدٍ، حَتَّى وَقَفَ عَلَى مُسَيْلِمَةَ، فِي أَصْحَابِهِ فَقَالَ: لَوْ سَأَلْتَنِي هذِهِ الْقِطْعَةَ مَا أَعْطَيْتُكَهَا وَلَنْ تَعْدُوَ أَمْرَ اللهِ فِيكَ؛ وَلَئِنْ أَدْبَرْتَ لَيَعْقِرَنَّكَ اللهُ وَإِنِّي لأَرَاكَ الَّذِي أُرِيتُ فِيه مَا رَأَيْتُ وَهذَا ثَابِتٌ يُجِيبُكَ عَنِّي ثُمَّ انْصَرَفَ عَنْه
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَسَأَلْتُ عَنْ قَوْلِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكَ أُرَى الَّذِي أُرِيتُ فِيهِ مَا رَأَيْتُ

حديث ابن عباس، قال: قدم مسيلمة الكذاب على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم، فجعل يقول: ان جعل لي محمد من بعده تبعته وقدمها في بشر كثير من قومه فاقبل اليه رسول الله صلى الله عليه وسلم، ومعه ثابت بن قيس بن شماس وفي يد رسول الله صلى الله عليه وسلم، قطعة جريد، حتى وقف على مسيلمة، في اصحابه فقال: لو سالتني هذه القطعة ما اعطيتكها ولن تعدو امر الله فيك؛ ولىن ادبرت ليعقرنك الله واني لاراك الذي اريت فيه ما رايت وهذا ثابت يجيبك عني ثم انصرف عنه قال ابن عباس: فسالت عن قول رسول الله صلى الله عليه وسلم: انك ارى الذي اريت فيه ما رايت

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪২/ স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)

পরিচ্ছেদঃ ৪২/৪. নাবী (ﷺ)-এর স্বপ্ন।

১৪৬৬. আবু হুরাইরাহ (রাঃ) আমাকে জানালেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদিন আমি ঘুমাচ্ছিলাম তখন স্বপ্নে দেখলাম, আমার দু’হাতে স্বর্ণের দু’টি কঙ্কন। কঙ্কন দু’টি আমাকে চিন্তিত করল। তখন ঘুমের মধ্যেই আমার প্রতি ওয়াহী করা হল, কাকন দু’টিতে ফুঁ দাও। আমি সে দু’টিতে ফুঁ দিলে তা উড়ে গেল। আমি এর ব্যাখ্যা করেছি দু’জন মিথ্যাচারী (নবী) যারা আমার পরে বের হবে। তাদের একজন আনসী, অন্যজন মুসাইলামাহ।

رؤيا النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

فَأَخْبَرَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ، رَأَيْتُ فِي يَدَيّ سِوَارَيْنِ مِنْ ذَهَبٍ فَأَهَمَّنِي شَأْنُهُمَا، فَأُوحِيَ إِلَيَّ فِي الْمَنَامِ أَنِ انْفُخْهُمَا، فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا، فَأَوَّلْتُهُمَا كَذَّابَيْنِ يَخْرُجَانِ بَعْدِي؛ أَحَدُهُمَا الْعَنْسِيُّ، وَالآخَرُ مُسَيْلِمَةُ

فاخبرني ابو هريرة: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: بينا انا ناىم، رايت في يدي سوارين من ذهب فاهمني شانهما، فاوحي الي في المنام ان انفخهما، فنفختهما فطارا، فاولتهما كذابين يخرجان بعدي؛ احدهما العنسي، والاخر مسيلمة

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪২/ স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)

পরিচ্ছেদঃ ৪২/৪. নাবী (ﷺ)-এর স্বপ্ন।

১৪৬৭. সামুরাহ ইবনু জুনদাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? রাবী বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহর ইচ্ছা, তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করত। তিনি একদিন সকালে আমাদেরকে বললেনঃ গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক আসল। তারা আমাকে উঠাল। আর আমাকে বলল, চলুন। আমি তাদের সঙ্গে চলতে লাগলাম।

আমরা কাত হয়ে শায়িত এক ব্যক্তির কাছে পৌছলাম। দেখলাম, অপর এক ব্যক্তি তার নিকট পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে। ফলে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। আর পাথর নিচে গিয়ে পতিত হচ্ছে। এরপর আবার সে পাথরটি অনুসরণ করে তা পুনরায় নিয়ে আসছে। ফিরে আসতে না আসতেই লোকটির মাথা পূর্বের মত পুনরায় ভাল হয়ে যায়। ফিরে এসে আবার অনুরূপ আচরণ করে, যা পূর্বে প্রথমবার করেছিল। তিনি বলেন, আমি তাদের (সাথীদ্বয়কে) বললাম, সুবহানাল্লাহু! এরা কারা? তিনি বললেন, তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

তিনি বলেন, আমরা চললাম, এরপর আমরা চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যক্তির কাছে পৌছলাম। এখানেও দেখলাম, তার নিকট এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এটা দ্বারা মুখমণ্ডলের একদিক মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে নাসারন্ধ্র, চোখ ও মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে। আওফ (রহঃ) বলেন, আবু রাজা (রহঃ) কোন কোন সময় ইয়যুশারশিরু’ শব্দের পরিবর্তে ’ইয়াশুক্‌কু শব্দ বলতেন। এরপর ঐ লোকটি শায়িত ব্যক্তির অপরদিকে যায় এবং প্রথম দিকের সঙ্গে যেরূপ আচরণ করেছে। অনুরূপ আচরণই অপরদিকের সঙ্গেও করে। ঐ দিক হতে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি পূর্বের মত ভাল হয়ে যায়। তারপর আবার প্রথমবারের মত আচরণ করে। তিনি বলেনঃ আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং চুলা সদৃশ একটি গর্তের কাছে পৌছলাম। রাবী বলেন, আমার মনে হয় যেন তিনি বলেছিলেন, আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল । তিনি বলেন, আমরা তাতে উঁকি মারলাম, দেখলাম তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ রয়েছে। আর নিচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করে, তখনই তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠে। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বললাম, এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

তিনি বলেন, আমরা চললাম এবং একটা নদীর (তীরে) গিয়ে পৌছলাম। রাবী বলেন, আমার যতদূর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, নদীটি ছিল রক্তের মত লাল। আর দেখলাম, এই নদীতে এক ব্যক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর তীরে অপর এক ব্যক্তি রয়েছে এবং সে তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে। আর ঐ সাঁতারকাটা ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কাটার পর সে ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছে, যে নিজের নিকট পাথর একত্রিত করে রেখেছে। তথায় এসে সে তার মুখ খুলে দেয় আর ঐ ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সে চলে যায়, সাঁতার কাটতে থাকে; আবার তার কাছে ফিরে আসে, যখনই সে তার কাছে ফিরে আসে তখনই সে তার মুখ খুলে দেয়, আর ঐ ব্যক্তি তার মুখে একটা পাথর ঢুকিয়ে দেয়। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বলল, চলুন, চলুন।

তিনি বলেন, আমরা চললাম এবং এমন একজন কুশ্রী ব্যক্তির কাছে এসে পৌছলাম, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুশ্রী বলে মনে হয়। আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জ্বালাচ্ছে ও তার চতুর্দিকে দৌড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোকটি কে? তারা বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম ফুলের কলি রয়েছে। আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উঁচু। দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছে যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চতুষ্পর্শে এত বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত অধিক আর কখনো আমি দেখিনি। আমি তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং একটা বিরাট বাগানে গিয়ে পৌছলাম। এমন বড় এবং সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি। তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, এর ওপরে চড়ন। আমরা ওপরে চড়লাম। শেষ পর্যন্ত সোনা-রূপার ইটের তৈরি একটি শহরে গিয়ে আমরা উপনীত হলাম। আমরা শহরের দরজায় পৌছলাম এবং খুলতে বললাম। আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল, আমরা তাতে প্রবেশ করলাম। তখন তথায় আমাদের সঙ্গে এমন কিছু লোক সাক্ষাৎ করল যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক সুন্দর মনে হয়। আর শরীরের অর্ধেক এমনই কুশ্রী ছিল যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুশ্রী মনে হয়। তিনি বলেন, সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়। আর সেটা ছিল সুপ্রশস্ত প্রবহমান নদী, যার পানি ছিল দুধের মত সাদা। ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল। অতঃপর এরা আমাদের কাছে ফিরে এল, দেখা গেল তাদের এ কুশ্রীতা দূর হয়ে গেছে এবং তারা খুবই সুন্দর আকৃতির হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, এটা জান্নাতে আদন এবং এটা আপনার বাসস্থান। তিনি বলেন, আমি বেশ উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম ধবধবে সাদা মেঘের মত একটি প্ৰাসাদ রয়েছে। তিনি বলেন, তারা আমাকে বলল, এটা আপনার বাসগৃহ। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বললাম, আল্লাহ্ তোমাদের মাঝে বরকত দিন। আমাকে ছেড়ে দাও। আমি এতে প্রবেশ করি। তারা বলল, আপনি অবশ্য এতে প্রবেশ করবেন; তবে এখন নয়।

তিনি বলেন, আমি এ রাতে অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার দেখতে পেলাম, এগুলোর তাৎপর্য কী?

তারা আমাকে বলল, আচ্ছা। আমরা আপনাকে বলে দিচ্ছি। ঐ যে প্রথম ব্যক্তি যার কাছে আপনি পৌছেছিলেন, যার মাথা পাথর দিয়ে চূর্ণ বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যক্তি যে কুরআন গ্রহণ করে তা ছেড়ে দিয়েছে। আর ফারয সালাত ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে।

আর ঐ ব্যক্তি যার কাছে গিয়ে দেখেছেন যে, তার মুখের এক ভাগ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত, এমনিভাবে নাসারন্ধ্র ও চোখ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল। সে হল ঐ ব্যক্তি, যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন কোন মিথ্যা বলে যা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

আর এ সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে তারা হল ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর দল।

আর ঐ ব্যক্তি, যার কাছে পৌছে দেখেছিলেন যে, সে নদীতে সাঁতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সে হল সুদখোর।

আর ঐ কুশ্রী ব্যক্তি, যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর সে এর চতুস্পার্শ্বে দৌড়াচ্ছিল, সে হল জাহান্নামের দারোগা, মালিক ফেরেশতা।

আর এ দীর্ঘকায় ব্যক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহীম (আঃ)। আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিতরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে।

তিনি বলেন, তখন কিছু সংখ্যক মুসলিম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও।

আর ঐসব লোক যাদের অর্ধেকাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধেকাংশ অতি কুশ্রী তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা সৎ-অসৎ উভয় প্রকারের কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে। আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

رؤيا النبيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

حديث سَمُرَةُ بْنُ جُنْدُبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمَّا يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ لِأَصْحَابِهِ: " هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنْ رُؤْيَا " قَالَ: فَيَقُصُُّ عَلَيْهِ مَنْ شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُصَّ وَإِنَّهُ قَالَ، ذَاتَ غَدَاةٍ: إِنَّهُ أَتَانِي، اللَيْلَةَ، آتِيَانِ، وَإِنَّهُمَا ابْتَعَثَانِي، وَإِنَّهُمَا قَالاَ لِي: انْطَلِقْ وَإِنِّي انْطَلَقْتُ مَعَهُمَا، وَإِنَّا أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ، وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ بِصَخْرَةٍ، وَإِذَا هُوَ يَهْوِي بِالصَّخْرَةِ لِرَأْسِهِ، فَيَثْلَغُ رَأْسَهُ فَيَتَهَدْهَدُ الْحَجَرُ ههُنَا، فَيَتْبَعُ الْحَجَرَ، فَيَاْخُذُهُ، فَلاَ يَرْجِعُ إِلَيْهِ حَتَّى يَصِحَّ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الأُولَى
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: سُبْحَانَ اللهِ مَا هذَانِ
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ
قَالَ: فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُسْتَلْقٍ لِقَفَاهُ، وَإِذَا آخَرُ قَائِمٌ عَلَيْهِ، بِكَلُّوبٍ مِنْ حَدِيدٍ، وَإِذَا هُوَ يَأْتِي أَحَدَ شِقَّيْ وَجْهِهِ فَيُشَرْشِرُ شِدْقَهُ إِلَى قَفَاهُ، وَمِنْخَرَهُ إِلَى قَفَاهُ، وَعَيْنَهُ إِلَى قَفَاهُ
قَالَ: ثُمَّ يَتَحَوَّلُ إِلَى الْجَانِبِ الآخَرِ، فَيَفْعَلُ بِهِ مِثْلَ مَا فَعَلَ بِالْجَانِبِ الأَوَّلِ، فَمَا يَفْرُغُ مِنْ ذلِكَ الْجَانِبِ حَتَّى يَصِحَّ ذَلِكَ الْجَانِبُ كَمَا كَانَ، ثُمَّ يَعُودُ عَلَيْهِ فَيَفْعَلُ مِثْلَ مَا فَعَلَ الْمَرَّةَ الأُولى
قَالَ: قُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ مَا هذَانِ
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى مِثْلِ التَّنُّورِ، فَإِذَا فِيهِ لَغَطٌ وَأَصْوَاتٌ
قَالَ: فَاطَّلَعْنَا فِيهِ، فَإِذَا فِيهِ رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ، وَإِذَا هُمْ يَأْتِيهِمْ لَهَبٌ مِنْ أَسْفَلَ مِنْهُمْ، فَإِذَا أَتاهُمْ ذَلِكَ اللهَبُ ضَوْضوْا
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: مَا هؤُلاَءِ
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ، انْطَلِقْ
قَالَ: فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ أَحْمَرَ مِثْلِ الدَّمِ، وَإِذَا فِي النَّهَرِ رَجُلٌ سَابِحٌ يَسْبح، وَإِذَا عَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ حِجَارَةً كَثِيرَةً، وَإِذَا ذَلِكَ السَّابِحُ يَسْبَحُ مَا يَسْبَحُ ثُمَّ يَأْتِي ذَلِكَ الَّذِي قَدْ جَمَعَ عِنْدَهُ الْحِجَارَةَ فَيَفْغَرُ لَهُ فَاهُ، فَيُلْقِمُهُ حَجَرًا، فَيَنْطَلِقُ يَسْبَحُ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَيْهِ كُلَّمَا رَجَعَ إِلَيْهِ فَغَرَ لَهُ فَاهُ فَأَلْقَمَهُ حَجَرًا
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: مَا هذَانِ
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ، انْطَلِقْ
قَالَ: فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ كَرِيهِ الْمَرْآةِ، كَأَكْرَهِ مَا أَنْتَ رَاءٍ رَجُلاً، مَرْآةً؛ وَإِذَا عِنْدَهُ نَارٌ يَحُشُّهَا وَيَسْعى حَوْلَهَا
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: مَا هذَا
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ، انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا، فَأَتَيْنَا عَلَى رَوْضَةٍ مُعْتَمَّةٍ، فِيهَا مِنْ كُلِّ نَوْرِ الرَّبِيعِ، وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَيِ الرَّوْضَةِ رَجُلٌ طُوِيلٌ لاَ أَكَادُ أَرَى رَأْسَهُ طُولاً فِي السَّمَاءِ، وَإِذَا حَوْلَ الرَّجُلِ مِنْ أَكْثَرِ وِلْدَانٍ رَأَيْتُهُمْ قَطُّ
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: مَا هذَا مَا هؤُلاَءِ
قَالَ: قَالاَ لِي: انْطَلِقْ، انْطَلِقْ
قَالَ: فَانْطَلَقْنَا فَانْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ عَظِيمَةٍ؛ لَمْ أَرَ رَوْضَةً قَطُّ أَعْظَمَ مِنْهَا وَلاَ أَحْسَنَ
قَالَ: قَالاَ لِي: ارْقَ فِيهَا
قَالَ: فَارْتَقَيْنَا فِيهَا فَانْتَهَيْنَا إِلَى مَدِينَةٍ مَبْنِيَّةٍ، بِلَبِنِ ذَهَبٍ وَلَبِنِ فِضَّةٍ، فَأَتَيْنَا بَابَ الْمَدِينَةِ، فَاسْتَفْتَحْنَا، فَفُتِحَ لَنَا، فَدَخَلْنَاهَا، فَتَلَقَّانَا فِيهَا رِجَالٌ، شَطْرٌ مِنْ خَلْقِهِمْ كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ، وَشَطْرٌ كَأَقْبَحِ مَا أَنْتَ رَاءٍ
قَالَ: قَالاَ لَهُمُ: اذهَبُوا فَقَعُوا فِي ذلِكَ النَّهَرِ
قَالَ: وَإِذَا نَهَرٌ مُعْتَرِضٌ يَجْرِي كَأَنَّ مَاءَهُ الْمَحْضُ فِي الْبَيَاضِ فَذَهَبُوا فَوَقَعُوا فِيهِ ثُمَّ رَجَعُوا إِلَيْنَا، قَد ذَهَبَ ذَلِكَ السُّوءُ عَنْهُمْ فَصَارُوا فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ
قَالَ: قَالاَ لِي: هذِهِ جَنَّةُ عَدْنٍ، وَهذَا مَنْزِلكَ
قَالَ: فسَمَا بَصَرِي صُعُدًا، فَإِذَا قَصْرٌ مِثْلُ الرَّبَابَةِ الْبَيْضَاءِ
قَالَ: قَالاَ لِي: هذَاكَ مَنْزِلُكَ
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: بَارَكَ اللهُ فِيكُمَا، ذَرَانِي فَأَدْخلَهُ قَالاَ: أَمَّا الآنَ فَلاَ وَأَنْتَ دَاخِلُهُ
قَالَ: قُلْتُ لَهُمَا: فَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ مَنْذُ اللَّيْلَةِ عَجَبًا فَمَا هذَا الَّذِي رَأَيْتُ
قَالَ: قَالاَ لِي: أَمَا إِنّا سَنُخْبِرُكَ أَمَّا الرَّجُلُ الأَوَّلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُثْلَغُ رَأْسُهُ بِالْحَجَرِ، فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَأْخُذُ الْقُرْآنَ فَيَرْفِضُهُ، وَيَنَامُ عَنِ الصَّلاَةِ الْمَكْتُوبَةِ وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يُشَرْشَرُ شِدْقُهُ إِلَى قَفَاهُ، وَمَنْخِرُهُ إِلَى قَفَاهُ، وَعَيْنُهُ إِلَى قَفَاهُ، فَإِنَّهُ الرَّجُلُ يَغْدُو مِنْ بَيْتِهِ فَيَكْذِبُ الْكَذْبَةَ تَبْلُغُ الآفَاقَ وَأَمَّا الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ الْعُرَاةُ، الَّذِينَ فِي مِثْلِ بِنَاءِ التَّنُّورِ، فَإِنَّهُمُ الزُّنَاةُ وَالزَّوَانِي وَأَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي أَتَيْتَ عَلَيْهِ يَسْبَحُ فِي النَّهَرِ وَيُلْقَمُ الْحَجَرَ، فَإِنَّهُ آكِلُ الرِّبَا وَأَمَّا الرَّجُلُ الْكَرِيهُ الْمَرْآةِ، الَّذِي عِنْدَ النَّارِ، يَحُشُّهَا وَيَسْعى حَوْلَهَا، فَإِنَّهُ مَالِكٌ، خَازِنُ جَهَنَّمَ وَأَمَّا الرَّجُلُ الطَّوِيلُ الَّذِي فِي الرَّوْضَةِ فَإِنَّهُ إِبْرَاهِيمُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمَّا الْوِلْدَانُ الَّذِينَ حَوْلَهُ فَكُلُّ مَوْلُودٍ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ
قَالَ: فَقَالَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ: يَا رَسُولَ اللهِ وَأَوْلاَدُ الْمُشْرِكِينَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَوْلاَدُ الْمُشْرِكِينَ وَأَمَّا الْقَوْمُ الَّذِينَ كَانُوا، شَطْرٌ مِنْهُمْ حَسَنًا وَشَطْرٌ مِنْهُمْ قَبِيحًا، فَإِنَّهُمْ قَوْمٌ خَلَطُوا عَمَلاً صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا، تَجَاوَزَ اللهُ عَنْهُمْ

حديث سمرة بن جندب رضي الله عنه، قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم مما يكثر ان يقول لاصحابه: " هل راى احد منكم من رويا " قال: فيقص عليه من شاء الله ان يقص وانه قال، ذات غداة: انه اتاني، الليلة، اتيان، وانهما ابتعثاني، وانهما قالا لي: انطلق واني انطلقت معهما، وانا اتينا على رجل مضطجع، واذا اخر قاىم عليه بصخرة، واذا هو يهوي بالصخرة لراسه، فيثلغ راسه فيتهدهد الحجر ههنا، فيتبع الحجر، فياخذه، فلا يرجع اليه حتى يصح راسه كما كان ثم يعود عليه فيفعل به مثل ما فعل المرة الاولى قال: قلت لهما: سبحان الله ما هذان قال: قالا لي: انطلق قال: فانطلقنا، فاتينا على رجل مستلق لقفاه، واذا اخر قاىم عليه، بكلوب من حديد، واذا هو ياتي احد شقي وجهه فيشرشر شدقه الى قفاه، ومنخره الى قفاه، وعينه الى قفاه قال: ثم يتحول الى الجانب الاخر، فيفعل به مثل ما فعل بالجانب الاول، فما يفرغ من ذلك الجانب حتى يصح ذلك الجانب كما كان، ثم يعود عليه فيفعل مثل ما فعل المرة الاولى قال: قلت سبحان الله ما هذان قال: قالا لي: انطلق فانطلقنا، فاتينا على مثل التنور، فاذا فيه لغط واصوات قال: فاطلعنا فيه، فاذا فيه رجال ونساء عراة، واذا هم ياتيهم لهب من اسفل منهم، فاذا اتاهم ذلك اللهب ضوضوا قال: قلت لهما: ما هولاء قال: قالا لي: انطلق، انطلق قال: فانطلقنا، فاتينا على نهر احمر مثل الدم، واذا في النهر رجل سابح يسبح، واذا على شط النهر رجل قد جمع عنده حجارة كثيرة، واذا ذلك السابح يسبح ما يسبح ثم ياتي ذلك الذي قد جمع عنده الحجارة فيفغر له فاه، فيلقمه حجرا، فينطلق يسبح ثم يرجع اليه كلما رجع اليه فغر له فاه فالقمه حجرا قال: قلت لهما: ما هذان قال: قالا لي: انطلق، انطلق قال: فانطلقنا، فاتينا على رجل كريه المراة، كاكره ما انت راء رجلا، مراة؛ واذا عنده نار يحشها ويسعى حولها قال: قلت لهما: ما هذا قال: قالا لي: انطلق، انطلق فانطلقنا، فاتينا على روضة معتمة، فيها من كل نور الربيع، واذا بين ظهري الروضة رجل طويل لا اكاد ارى راسه طولا في السماء، واذا حول الرجل من اكثر ولدان رايتهم قط قال: قلت لهما: ما هذا ما هولاء قال: قالا لي: انطلق، انطلق قال: فانطلقنا فانتهينا الى روضة عظيمة؛ لم ار روضة قط اعظم منها ولا احسن قال: قالا لي: ارق فيها قال: فارتقينا فيها فانتهينا الى مدينة مبنية، بلبن ذهب ولبن فضة، فاتينا باب المدينة، فاستفتحنا، ففتح لنا، فدخلناها، فتلقانا فيها رجال، شطر من خلقهم كاحسن ما انت راء، وشطر كاقبح ما انت راء قال: قالا لهم: اذهبوا فقعوا في ذلك النهر قال: واذا نهر معترض يجري كان ماءه المحض في البياض فذهبوا فوقعوا فيه ثم رجعوا الينا، قد ذهب ذلك السوء عنهم فصاروا في احسن صورة قال: قالا لي: هذه جنة عدن، وهذا منزلك قال: فسما بصري صعدا، فاذا قصر مثل الربابة البيضاء قال: قالا لي: هذاك منزلك قال: قلت لهما: بارك الله فيكما، ذراني فادخله قالا: اما الان فلا وانت داخله قال: قلت لهما: فاني قد رايت منذ الليلة عجبا فما هذا الذي رايت قال: قالا لي: اما انا سنخبرك اما الرجل الاول الذي اتيت عليه يثلغ راسه بالحجر، فانه الرجل ياخذ القران فيرفضه، وينام عن الصلاة المكتوبة واما الرجل الذي اتيت عليه يشرشر شدقه الى قفاه، ومنخره الى قفاه، وعينه الى قفاه، فانه الرجل يغدو من بيته فيكذب الكذبة تبلغ الافاق واما الرجال والنساء العراة، الذين في مثل بناء التنور، فانهم الزناة والزواني واما الرجل الذي اتيت عليه يسبح في النهر ويلقم الحجر، فانه اكل الربا واما الرجل الكريه المراة، الذي عند النار، يحشها ويسعى حولها، فانه مالك، خازن جهنم واما الرجل الطويل الذي في الروضة فانه ابراهيم صلى الله عليه وسلم واما الولدان الذين حوله فكل مولود مات على الفطرة قال: فقال بعض المسلمين: يا رسول الله واولاد المشركين فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم واولاد المشركين واما القوم الذين كانوا، شطر منهم حسنا وشطر منهم قبيحا، فانهم قوم خلطوا عملا صالحا واخر سيىا، تجاوز الله عنهم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪২/ স্বপ্ন (كتاب الرؤيا)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে