পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৩২. মহামারী, তায়েরাহ (পাখি উড়িয়ে) অশুভ ফল নেয়া ও গণনা করে ভবিষ্যদ্বাণী করা ইত্যাদির বর্ণনা।
১৪৩৩. উসামা বিন যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্লেগ একটি আযাব। যা বনী ইসরাঈলের এক সম্প্রদায়ের উপর পতিত হয়েছিল অথবা আমাদের পূর্বে যারা ছিল। তোমরা যখন কোন স্থানে প্লেগের ছড়াছড়ি শুনতে পাও, তখন তোমরা সেখানে যেয়ো না। আর যখন প্লেগ এমন জায়গায় দেখা দেয়, যেখানে তুমি অবস্থান করছে, তখন সে স্থান হতে পালানোর লক্ষ্যে বের হয়ো না। আবূ নযর (রহঃ) বলেন, পলায়নের লক্ষ্যে এলাকা ত্যাগ করো না। তবে অন্য কারণে যেতে পার, তাতে বাধা নেই।
الطاعون والطيرة والكهانة وغيرها
حديث أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الطَّاعُونُ رِجْسٌ، أُرْسِلَ عَلَى ظَائِفَةٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، أَوْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَإِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ (وَفِي رِوَايَةٍ) لاَ يُخْرِجُكُمْ إِلاَّ فِرَارًا مِنْهُ
পরিচ্ছেদঃ ৩৯/৩২. মহামারী, তায়েরাহ (পাখি উড়িয়ে) অশুভ ফল নেয়া ও গণনা করে ভবিষ্যদ্বাণী করা ইত্যাদির বর্ণনা।
১৪৩৪. আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়ার দিকে যাত্রা করেছিলেন। অবশেষে তিনি যখন সারগ এলাকায় গেলেন, তখন তাঁর সঙ্গে সৈন্য বাহিনীর প্রধানগণ তথা আবূ ’উবাইদাহ ইবনু জাররাহ ও তার সঙ্গীগণ সাক্ষাৎ করেন। তারা তাকে অবহিত করেন যে, সিরিয়া এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন ’উমার (রাঃ) বলেনঃ আমার নিকট প্রবীণ মুহাজিরদের ডেকে আন। তখন তিনি তাদের ডেকে আনলেন। ’উমার (রাঃ) তাদের সিরিয়ার প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটার কথা অবহিত করে তাদের কাছে পরামর্শ চাইলেন। তখন তাদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল। কেউ বললেনঃ আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বের হয়েছেন। কাজেই তা থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা পছন্দ করি না। আবার কেউ কেউ বললেনঃ আপনার সঙ্গে রয়েছেন শেষ অবশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ, কাজেই আমাদের কাছে ভাল মনে হয় না যে, আপনি তাদের এই প্লেগের মধ্যে ঠেলে দিবেন। উমার (রাঃ) বললেনঃ তোমরা আমার নিকট থেকে চলে যাও।
এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনসারদের ডেকে আন। আমি তাদের ডেকে আনলাম। তিনি তাদের কাছে পরামর্শ চাইলে তারাও মুহাজিরদের পথ অবলম্বন করলেন এবং তাঁদের ন্যায় মতভেদ করলেন। ’উমার (রাঃ) বললেনঃ তোমরা উঠে যাও। এরপর আমাকে বললেনঃ এখানে যে সকল বয়োজ্যেষ্ঠ কুরাইশী আছেন, যাঁরা মক্কাহ বিজয়ের বছর হিজরত করেছিলেন, তাদের ডেকে আন। আমি তাদের ডেকে আনলাম, তখন তারা পরস্পরে কোন মতপার্থক্য করেননি। তাঁরা বললেনঃ আপনার লোকজনকে নিয়ে ফিরে যাওয়া এবং তাদের প্লেগের কবলে আপনার ঢেলে না দেয়াই আমাদের কাছে ভাল মনে হয়। তখন ’উমার (রাঃ) লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আমি ভােরে সাওয়ারীর পিঠে আরোহণ করব (ফিরে যাওয়ার জন্য)। এরপর ভােরে সকলে এভাবে প্রস্তুতি নিল।
আবু ’উবাইদাহ (রাঃ) বললেনঃ আপনি কি আল্লাহর নির্ধারণকৃত তাকদীর থেকে পলায়ন করার জন্য ফিরে যাচ্ছেন? উমার (রাঃ) বললেনঃ হে আবু ’উবাইদাহ! যদি তুমি ব্যতীত অন্য কেউ কথাটি বলত! হ্যাঁ, আমরা আল্লাহর এক তাকদীর থেকে আল্লাহর অন্য একটি তাকদীরের দিকে ফিরে যাচ্ছি। তুমি বলত, তোমার কিছু উটকে যদি তুমি এমন কোন উপত্যকায় নিয়ে যাও আর সেখানে আছে, দু’টি মাঠ। তন্মধ্যে একটি হল সবুজ শ্যামল, আর অন্যটি হল শুষ্ক ও ধূসর। এবার বল ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, যদি তুমি সবুজ মাঠে চরাও তাহলে তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাও, তাহলে তাও আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ।
বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) আসলেন। তিনি এতক্ষণ যাবৎ তাঁর কোন প্রয়োজনের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে আমার নিকট একটি তথ্য আছে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা যখন কোন এলাকায় (প্লেগের) প্রাদুর্ভাবের কথা শোন, তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাক, তাহলে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। বর্ণনাকারী বলেন এরপর ’উমার (রাঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন, তারপর প্রত্যাবর্তন করলেন।
الطاعون والطيرة والكهانة وغيرها
حديث عَبْدِ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضي الله عنه، خَرَجَ إِلَى الشَّامِ، حَتَّى إِذَا كَانَ بِسَرْغَ، لَقِيَهُ أُمَرَاءُ الأَجْنَادِ، أَبُو عُبَيْدَةَ [ص: 69] بْنُ الْجَرَّاحِ وَأَصْحَابُهُ، فَأَخْبَرُوهُ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِأَرْضِ الشَّامِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَقَالَ عُمَرُ: ادْعُ لِي الْمُهَاجِرِينَ الأَوَّلِينَ فَدَعَاهُمْ فَاسْتَشَارَهُمْ وَأَخْبَرَهُمْ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِالشَّامِ، فَاخْتَلَفُوا فَقَالَ بَعْضهُمْ: قَدْ خَرَجْتَ لأَمْرٍ، وَلاَ نَرَى أَنْ تَرْجِعَ عَنْهُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ: مَعَكَ بَقِيَّةُ النَّاسِ وَأَصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلاَ نَرَى أَنْ تُقْدِمَهُمْ عَلَى هذَا الْوَبَاءِ فَقَالَ: ارْتَفِعُوا عَنِّي ثُمَّ قَالَ: ادْعُوا لِي الأَنْصَارَ فَدَعَوْتُهُمْ، فَاسْتَشَارَهُمْ فَسَلَكُوا سَبِيلَ الْمُهَاجِرِينَ، وَاخْتَلَفُوا كَاخْتِلاَفِهِمْ فَقَالَ: ارْتَفِعُوا عَنِّي ثُمَّ قَالَ: ادْعُ لِي مَنْ كَانَ ههُنَا مِنْ مَشْيَخَةِ قُرَيْشٍ مِنْ مُهَاجِرَةِ الْفَتْحِ فَدَعَوْتُهُمْ، فَلَمْ يَخْتَلِفْ مِنْهُمْ عَلَيْهِ رَجُلاَنِ فَقَالُوا: نَرَى أَنْ تَرْجِعَ بِالنَّاسِ وَلاَ تقْدِمَهُمْ عَلَى هذَا الْوَبَاءِ فَنَادَى عُمَرُ، فِي النَّاسِ: إِنِّي مُصْبِحٌ عَلَى ظَهْرٍ فَأَصْبَحُوا عَلَيْهِ قَالَ أَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ: أَفِرَارًا مِنْ قَدَرِ اللهِ فَقَالَ عُمَرُ: لَوْ غَيْرُكَ قَالَهَا يَا أَبَا عُبَيْدَةَ نَعَمْ، نَفِرُّ مِنْ قَدَرِ اللهِ إِلَى قَدَرِ اللهِ، أَرَأَيْتَ لَوْ كَانَ لَكَ إِبِلٌ هَبَطَتْ وَادِيًا لَهُ عُدْوَتَانِ، إِحْدَاهُمَا خَصِبَةٌ وَالأُخْرَى جَدْبَةٌ، أَلَيْسَ إِنْ رَعَيْتَ الْخَصِبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ، وَاِنْ رَعَيْتَ الْجَدْبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ قَالَ: فَجَاءَ عَبْدُ الرَّحْمنِ بْنُ عَوْفٍ وَكَانَ مُتَغَيِّبًا فِي بَعْضِ حَاجَتِهِ، فَقَالَ: إِنَّ عِنْدِي فِي هذَا عِلْمًا سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: إِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بَأَرْضٍ [ص: 70] فَلاَ تَقْدَمُوا عَلَيْهِ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا فِرَارًا مِنْهُ قَالَ: فَحَمِدَ اللهَ عُمَرُ، ثُمَّ انْصَرَفَ