পরিচ্ছেদঃ ৩৬/২০. মেহমানের জন্য তার সাথে অন্য এমন লোককে নিয়ে যাওয়া বৈধ যার ব্যাপারে সে নিশ্চিত যে বাড়িওয়ালা এতে সন্তুষ্ট থাকবে এবং যথাযথ মূল্যায়ন করবে।
১৩২২. জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন পরিখা খনন করা হচ্ছিল তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন আমি আমার স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কাছে কোন কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দারুন ক্ষুধার্ত দেখেছি। তিনি একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা’ পরিমাণ যব বের করে দিলেন। আমার বাড়ীতে একটা বকরীর বাচ্চা ছিল। আমি সেটি যবেহ করলাম। আর সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল । আমি আমার কাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে সেও তার কাজ শেষ করল এবং মাংস কেটে কেটে ডেকচিতে ভরলাম।
এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ফিরে চললাম। তখন সে (স্ত্রী) বলল, আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের নিকট লজ্জিত করবেন না। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে চুপে চুপে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আমাদের একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি এবং আমাদের পরে এক সা’ যব ছিল। তা আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে সবাইকে বললেন, হে পরিখা খননকারীরা! জাবির খানার ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সকলেই চল।
এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার আসার পূর্বে তোমাদের ডেকচি নামবে না এবং খামির থেকে রুটিও তৈরি করবে না। আমি (বাড়ীতে) আসলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবা-ই-কিরামসহ তাশরীফ আনলেন । এরপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট আসলে সে বলল, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। আমি বললাম, তুমি যা বলেছ আমি তাই করেছি। এরপর সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে আটার খামির বের করে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন এবং বরকতের জন্য দুআ করলেন।
এরপর তিনি ডেকচির কাছে এগিয়ে গেলেন এবং তাতে মুখের লালা মিশিয়ে এর জন্য বরকতের দুআ করলেন। তারপর বললেন, রুটি প্রস্তুতকারিণীকে ডাক। সে আমার কাছে বসে রুটি প্রস্তুত করুক এবং ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে মাংস বেড়ে দিক। তবে (উনুন হতে) ডেকচি নামাবে না। তাঁরা ছিলেন সংখ্যায় এক হাজার। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, তারা সকলেই তৃপ্তি সহকারে খেয়ে বাকী খাদ্য রেখে চলে গেলেন। অথচ আমাদের ডেকচি আগের মতই টগবগ করছিল আর আমাদের আটার খামির থেকেও আগের মতই রুটি তৈরি হচ্ছিল।
جواز استتباعه غيره إلى دار من يثق برضاه بذلك ويتحققه تحققًا تامًا، واستحباب الاجتماع على الطعام
حديث جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: لَمَّا حُفِرَ الْخَنْدَقُ، رَأَيْتُ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَمَصًا شَدِيدًا، فَانْكَفَأْتُ إِلَى امْرَأَتِي، فَقُلْتُ: هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ فَإِنِّي رَأَيْتُ بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَمَصًا شَدِيدًا فَأَخْرَجَتْ إِلَيَّ جِرَابًا، فِيهِ صَاعٌ مِنْ شَعِيرٍ، وَلَنَا بُهَيْمَةٌ دَاجِنٌ، فَذَبَحْتُهَا، وَطَحَنَتِ الشَّعِيرَ فَفَرَغَتْ إِلَى فَرَاغِي وَقَطّعْتُهَا فِي بُرْمَتِهَا، ثُمَّ وَلَّيْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: لاَ تَفْضَحْنِي بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَبِمَنْ مَعَهُ فَجِئْتُهُ فَسَارَرْتُهُ؛ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ ذَبَحْنَا بُهَيْمَةً لَنَا، وَطَحَنَّا صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، كَانَ عِنْدَنَا، فَتَعَالَ أَنْتَ وَنَفَرٌ مَعَكَ فَصَاحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا أَهْلَ الْخَنْدَقِ إِنَّ جَابِرًا قَدْ صَنَعَ سُورًا، فَحَيَّ هَلاً بِكُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تُنْزِلُنَّ بُرْمَتَكُمْ، وَلاَ تَخْبِزُنَّ عَجِينَكُمْ حَتَّى أَجِيءَ فَجِئْتُ، وَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقْدُمُ النَّاسَ، حَتَّى جِئْتُ امْرأَتِي فَقَالَتْ: بِكَ وَبِكَ فَقُلْتُ: قَدْ فَعَلْتُ الَّذِي قُلْتِ فَأَخْرَجَتْ لَهُ عَجِينًا، فَبَصَقَ فِيهِ وَبَارَكَ ثُمَّ عَمَدَ إِلَى بُرْمَتِنَا فَبَصَقَ وَبَارَكَ ثُمَّ قَالَ: ادْعُ خَابِزَةً فَلْتَخْبِزْ مَعِي، وَاقْدَحِي مِنْ بُرْمَتِكُمْ وَلاَ تُنْزِلُوهَا وَهُمْ أَلْفٌ فَأَقْسِمُ بِاللهِ لقَدْ أَكَلُوا حَتَّى تَرَكُوهُ وَانْحَرفُوا، وَإِنَّ بُرْمَتَنَا لَتَعِطُّ كَمَا هِيَ، وَإِنَّ عَجِينَنَا لَيخْبَزُ كَمَا هُوَ
পরিচ্ছেদঃ ৩৬/২০. মেহমানের জন্য তার সাথে অন্য এমন লোককে নিয়ে যাওয়া বৈধ যার ব্যাপারে সে নিশ্চিত যে বাড়িওয়ালা এতে সন্তুষ্ট থাকবে এবং যথাযথ মূল্যায়ন করবে।
১৩২৩. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু তালহা উম্মু সুলায়মকে বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কণ্ঠস্বর দুর্বল শুনেছি। আমি তার মধ্যে ক্ষুধা বুঝতে পেরেছি। তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ আছে। এই বলে তিনি কয়েকটা যবের রুটি বের করলেন। অতঃপর তাঁর একখানা ওড়না বের করে এর কিয়দংশ দিয়ে রুটিগুলো মুড়ে আমার হাতে গোপন করে রেখে দিলেন ও ওড়নার অপর অংশ আমার শরীরে জড়িয়ে দিলেন এবং আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠালেন। রাবী আনাস বলেন, আমি তাঁর নিকট গেলাম। ঐ সময় তিনি কতক লোকসহ মসজিদে ছিলেন। আমি গিয়ে তাদের সামনে দাঁড়ালাম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখে বললেন, তোমাকে আবূ ত্বলহা পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি, হ্যাঁ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি-হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সঙ্গীদেরকে বললেন, চল, আবূ ত্বলহা আমাকে দাওয়াত করেছে। আমি তাদের আগেই চলে গিয়ে আবূ ত্বলহা (রাঃ)-কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের কথা শুনলাম। এতদশ্রবণে আর ত্বলহা (রাঃ) বলেন, হে উম্ম সুলাইম! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসছেন। তাঁদেরকে খাওয়ানোর মত কিছু আমাদের নিকট নেই। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।
আবূ ত্বলহা তাদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য বাড়ি হতে কিছুদূর এগুলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে দেখা করলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ ত্বলহা (রাঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে তার ঘরে আসলেন, আর বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! তোমার নিকট যা কিছু আছে নিয়ে এসো। তিনি যবের ঐ রুটিগুলি হাযির করলেন এবং তাঁর নির্দেশে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করা হল। উম্মু সুলায়ম ঘিয়ের পাত্র ঝেড়ে কিছু ঘি বের করে তরকারী হিসেবে উপস্থিত করলেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করে তাতে ফুঁ দিলেন অতঃপর দশজনকে নিয়ে আসতে বললেন। তাঁরা দশজন আসলেন এবং রুটি খেয়ে তৃপ্ত হয়ে চলে গেলেন। অতঃপর আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তারা আসলেন এবং তৃপ্তি সহকারে রুটি খেয়ে চলে গেলেন। আবার আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তারাও আসলেন এবং পেটপুরে খেয়ে নিলেন। ঐভাবে উপস্থিত সকলেই রুটি খেয়ে তৃপ্ত হলেন। সর্বমোট সত্তর বা আশিজন লোক ছিলেন।
جواز استتباعه غيره إلى دار من يثق برضاه بذلك ويتحققه تحققًا تامًا، واستحباب الاجتماع على الطعام
حديث أَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ أَبو طَلْحَة لأُمِّ سُلَيْمٍ: لَقَدْ سَمِعْتُ صَوْتَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَعِيفًا، أَعْرِفُ فِيهِ الْجُوعَ، فَهَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَتْ: نَعَمْ فَأَخْرَجَتْ أَقْرَاصًا مِنْ شَعِيرٍ، ثُمَّ أَخْرَجَتْ خِمَارًا لَهَا، فَلَفَّتِ الْخُبزَ بِبَعْضِهِ، ثُمَّ دَستْهُ تَحْتَ يَدِي وَلاَثَتْنِي بِبَعْضِهِ ثُمَّ أَرْسَلَتْنِي إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَذَهَبْتُ بِهِ، فَوَجَدْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ، وَمَعَهُ النَّاسُ، فَقُمْتُ عَلَيْهِمْ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: آرْسَلَكَ أَبُو طَلْحَةَ فَقُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: بِطَعَامٍ فَقُلْتُ: نَعَمْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، لِمَنْ مَعَهُ قُومُوا فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقْتُ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ حَتَّى جِئْتُ أَبا طَلْحَةَ فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: يَا أُمَّ سُلَيْمٍ قَدْ جَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالنَّاسِ، لَيْسَ عَنْدَنَا مَا نُطْعِمُهُمْ، فَقَالَتْ: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَانْطَلَقَ أَبُو طَلْحَةَ حَتَّى لَقِيَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَقْبَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبُو طَلْحَةَ مَعَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هَلُمِّي يَا أُمَّ سُلَيْمٍ مَا عِنْدَكِ فَأَتَتْ بِذلِكَ الْخبْزِ، فَأَمَرَ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَفُتَّ، وَعَصَرَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ عُكَّةً فَأَدَمَتْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهِ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَقُولَ ثُمَّ قَالَ: ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ، فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا ثُمَّ قَالَ: ائْذَنْ
لِعَشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا ثُمَّ قَالَ: ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَذِنَ لَهُمْ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا ثُمَّ خَرَجُوا ثُمَّ قَالَ: ائْذَنْ لِعَشَرَةٍ فَأَكَلَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ وَشَبِعُوا، وَالْقَوْمُ سَبْعُونَ أَوْ ثَمَانُونَ رَجُلاً