পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
৭৪২. সা’আব ইবনু জাস্সামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি (সা’আব ইবনু জাসসামা), রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য একটি বন্য গাধা হাদিয়া পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আবওয়া কিংবা ওয়াদ্দান নামক স্থানে ছিলেন। তিনি হাদিয়া ফেরত পাঠালেন। পরে তার বিষন্ন মুখ দেখে বললেন, শুন! আমরা ইহরাম অবস্থায় না থাকলে তোমার হাদিয়া ফেরত দিতাম না।
تحريم الصيد للمحرم
حديث الصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ اللَّيْثِيِّ، أَنَّهُ أَهْدَى لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، حِمَارًا وَحْشِيًّا، وَهُوَ بِالأَبْوَاءِ، أَوْ بِوَدَّانَ، فَرَدَّهُ عَلَيْهِ فَلَمَّا رَأَى مَا فِي وَجْهِهِ، قَالَ: إِنَّا لَمْ نَرُدَّهُ إِلاَّ أَنَّا حُرُمٌ
পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
৭৪৩. আবু কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনাহ হতে তিন মারহালা দূরে অবস্থিত কাহা নামক স্থানে আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আমাদের কেউ ইহরামধারী ছিলেন আর কেউ ছিলেন ইহরামবিহীন। এ সময় আমি আমার সাথী সাহাবীদেরকে দেখলাম তারা একে অন্যকে কিছু দেখাচ্ছেন। আমি তাকাতেই একটি বন্য গাধা দেখতে পেলাম। (রাবী বলেন) এ সময় তার চাবুকটি পড়ে গেল। (তিনি আনিয়ে দেয়ার কথা বললে)। সকলেই বললেন, আমরা মুহরিম। তাই এ কাজে আমরা তোমাকে সাহায্য করতে পারব না। অবশেষে আমি নিজেই তা উঠিয়ে নিলাম, এরপর টিলার পিছন দিক হতে গাধাটির কাছে এসে তা শিকার করে সাহাবীদের কাছে নিয়ে আসলাম। তাদের কেউ বললেন, খাও, আবার কেউ বললেন, খেয়ো না। সুতরাং গাধাটি আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিয়ে আসলাম। তিনি আমাদের সকলের আগে ছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ খাও, এতো হালাল।
تحريم الصيد للمحرم
حديث أَبِي قَتَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْقَاحَةِ، وَمِنَّا الْمُحْرِمُ وَمِنَّا غَيْرُ الْمُحْرِمِ، فَرَأَيْتُ أَصْحَابِي يَتَرَاءَوْنَ شَيْئًا، فَنَظَرْتُ فَإِذَا حِمَارُ وَحْشٍ، يَعْنِي؛ فَوَقَعَ سَوْطُهُ، فَقَالُوا لاَ نُعِينُكَ عَلَيْهِ بِشَيْءٍ إِنَّا مُحْرِمُونَ، فَتَنَاوَلْتُهُ فَأَخَذْتُهُ، ثُمَّ أَتَيْتُ الْحِمَارَ مِنْ وَرَاءِ أَكَمَةٍ فَعَقَرْتُهُ، فَأَتَيْتُ بِهِ أَصْحَابِي، فَقَالَ بَعْضُهُمْ: كُلُوا وَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ تَأْكُلُوا فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ أَمَامَنَا فَسَأَلْتُهُ، فَقَالَ: كُلُوهُ، حَلاَلٌ
পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
৭৪৪. আবদুল্লাহ ইবনু আবূ কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা হুদাইবিয়ার বছর (শত্রুদের তথ্য অনুসন্ধানের জন্য) বের হলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ ইহরাম বাঁধলেন কিন্তু তিনি ইহরাম বাধলেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলা হল, একটি শত্রুদল তাঁর সাথে যুদ্ধ করতে চায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে অগ্রসর হতে লাগলেন। এ সময় আমি তার সাহাবীদের সাথে ছিলাম। হঠাৎ দেখি যে, তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করছে। আমি তাকাতেই একটি বন্য গাধা দেখতে পেলাম। অমনিই আমি বর্শা দিয়ে আক্রমণ করে তাকে ধরাশায়ী করে ফেলি। সঙ্গীদের নিকট সহযোগিতা কামনা করলে সকলে আমাকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করল। এরপর আমরা সকলেই ঐ বন্য গাধার মাংস খেলাম। এতে আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আশঙ্কা করলাম।
তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সন্ধানে আমার ঘােড়াটিকে কখনো দ্রুত কখনো আস্তে চালাচ্ছিলাম। মাঝ রাতের দিকে গিফার গোত্রের এক লোকের সাথে সাক্ষাৎ হলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কোথায় রেখে এসেছ? সে বললো, তাহিন নামক স্থানে আমি তাকে রেখে এসেছি। এখন তিনি সুকয়া নামক স্থানে কায়লূলায় (দুপুরের বিশ্রামে) আছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাহাবীগণ আপনার প্রতি সালাম পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহর রহমত কামনা করেছেন। তাঁরা আপনার হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাই আপনি তাদের জন্য অপেক্ষা করুন। অতঃপর আমি পুনরায় বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি বন্য গাধা শিকার করেছি। এখনাে তার বাকী অংশটুকু আমার নিকট রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাওমের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা খাও। অথচ তারা সকলেই তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন।
تحريم الصيد للمحرم
حديث أَبِي قَتَادَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ: انْطَلَقَ أَبِي، عَامَ الحُدَيْبِيَةِ، فَأَحْرَمَ أَصْحَابُهُ وَلَمْ يُحْرِمْ وَحُدِّثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّ عَدُوًّا يَغْزُوهُ، فَانْطَلَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؛ فَبَيْنَمَا أَنَا مَعَ أَصْحَابِهِ، تَضَحَّكَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ، فَنَظَرْتُ فَإِذَا أَنَا بِحِمَارِ وَحْشٍ فَحَمَلْتُ عَلَيْهِ فَطَعَنْتُهُ فَأَثْبَتُّهُ، وَاسْتَعَنْتُ بِهِمْ، فَأَبَوْا أَنْ يُعِينُوني، فَأَكَلْنَا مِنْ لَحْمِهِ، وَخَشِينَا أَنْ نُقْتَطَعَ، فَطَلَبْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْفَعُ فَرَسِي شَأْوًا وَأَسِيرُ شَأْوًا، فَلَقِيت رَجُلاً مِنْ بَنِي غِفَارٍ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ؛ قُلْتُ: أَيْنَ تَرَكْتَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: تَرَكْتُهُ بِتَعْهنَ، وَهُوَ قَايِلٌ السُّقْيَا فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ أَهْلَكَ يَقْرَءُونَ عَلَيْكَ السَّلاَمَ وَرَحْمَةَ اللهِ، إِنَّهُمْ قَدْ خَشُوا أَنْ يُقْتَطَعُوا دُونَكَ فَانْتَظِرْهُمْ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ أَصَبْتُ حِمَارَ وَحْشٍ وَعِنْدِي مِنْهُ فَاضِلَةٌ، فَقَالَ لِلْقَوْمِ: كُلُوا وَهُمْ مُحْرِمُونَ
পরিচ্ছেদঃ ১৫/৮. মুহরিম ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম।
৭৪৫. আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্জে যাত্রা করলে তারাও সকলে যাত্রা করলেন। তাঁদের হতে একটি দলকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য পথে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের মধ্যে আবু কাতাদাহ্ (রাঃ)-ও ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা সমুদ্র তীরের রাস্তা ধরে অগ্রসর হবে আমাদের পরস্পর সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত। তাই তারা সকলেই সমুদ্র তীরের পথ ধরে চলতে থাকেন। ফিরার পথে তারা সবাই ইহরাম বাধলেন কিন্তু আবূ কাতাদাহ্ ইহরাম বাধলেন না। পথ চলতে চলতে হঠাৎ তারা কতগুলো বন্য গাধা দেখতে পেলেন। আবূ কাতাদাহ্ (রাঃ) গাধাগুলোর উপর হামলা করে একটি মাদী গাধাকে হত্যা করে ফেললেন। এরপর এক স্থানে অবতরণ করে তাঁরা সকলেই এর মাংস খেলেন। অতঃপর বললেন, আমরা তো মুহরিম, এ অবস্থায় আমরা কি শিকার্য জন্তুর মাংস খেতে পারি?
তাই আমরা গাধাটির অবশিষ্ট মাংস উঠিয়ে নিলাম। তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট পৌছে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ইহরাম বেঁধেছিলাম কিন্তু আবূ কাতাদাহ (রাঃ) ইহরাম বাঁধেননি। এ সময় আমরা কতকগুলো বন্য গাধা দেখতে পেলাম। আবূ কাতাদাহ (রাঃ) এগুলোর উপর আক্রমণ করে একটি মাদী গাধা হত্যা করে ফেললেন। এক স্থানে অবতরণ করে আমরা সকলেই এর মাংস খেয়ে নিই। এরপর বললাম, আমরা তো মুহরিম, এ অবস্থায় আমরা কি শিকারকৃত জানােয়ারের মাংস খেতে পারি? এখন আমরা এর অবশিষ্ট মাংস নিয়ে এসেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের কেউ কি এর উপর আক্রমণ করতে তাকে আদেশ বা ইঙ্গিত করেছ? তারা বললেন, না, আমরা তা করিনি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে বাকী মাংস তোমরা খেয়ে নাও।
تحريم الصيد للمحرم
حديث أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ حَاجًّا، فَخَرَجُوا مَعَهُ، فَصَرَفَ طَائِفَةً مِنْهُمْ، فِيهِمْ أَبُو قَتَادَةَ؛ فَقَالَ: خُذُوا سَاحِلَ الْبَحْرِ حَتَّى نَلْتَقِيَ فَأَخَذُوا سَاحِلَ الْبَحْرِ، فَلَمَّا انْصَرَفُوا أَحْرَمُوا كُلُّهُمْ، إِلاَّ أَبُو قَتَادَةَ لَمْ يُحْرِمْ؛ فَبَيْنَمَا هُمْ يَسِيرُونَ إِذْ رَأَوْا حُمُرَ وَحْشٍ، فَحَمَلَ أَبُو قَتَادَةَ عَلَى الْحُمُرِ فَعَقَرَ مِنْهَا أَتَانًا، فَنَزَلُوا فأَكَلُوا مِنْ لَحْمِهَا، وَقَالُوا: أَنَأْكُلُ لَحْمَ صَيْدٍ وَنَحْنُ مُحْرِمُونَ فَحَمَلْنَا مَا بَقِيَ مِنْ لَحْمِ الأَتَانِ، فَلَمَّا أَتَوْا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا أَحْرَمْنَا، وَقَدْ كَانَ أبُو قَتَادَةَ لَمْ يُحْرِمْ، فَرَأَيْنَا حُمُرَ وَحْشٍ، فَحَمَلَ عَلَيْهَا أَبُو قَتَادَةَ، فَعَقَرَ مِنْهَا أَتَانًا، فَنَزَلْنَا فَأَكَلْنَا مِنْ لَحْمِهَا، ثُمَّ قُلْنَا: أَنَأْكُلُ لَحْمَ صَيْدٍ وَنَحْنُ مُحْرِمُونَ فَحَمَلْنَا مَا بَقي مِنْ لَحْمِهَا، قَالَ: مِنْكُمْ أَحَدٌ أَمَرَهُ أَنْ يَحْمِلَ عَلَيْهَا أَوْ أَشَارَ إِلَيْهَا قَالُوا: لاَ قَالَ: فَكُلُوا مَا بَقِيَ مِنْ لَحْمِهَا