পরিচ্ছেদঃ ৫/৩৯. ‘ইশার সালাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।
৩৭২. ’আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’ইশার সালাত আদায় করতে বিলম্ব করলেন। এ হলো ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রসারের পূর্বের কথা। (সালাতের জন্য) তিনি বেরিয়ে আসেননি, এমন কি ’উমার (রাযি.) বললেন, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। অতঃপর তিনি বেরিয়ে এলেন এবং মসজিদের লোকদের লক্ষ্য করে বললেনঃ ’’তোমরা ব্যতীত যমীনের অধিবাসীদের কেউ ’ইশার সালাতের জন্য অপেক্ষায় নেই।
وقت العشاء وتأخيرها
حَدِيْثُ عَائِشَةَ قَالَتْ أَعْتَمَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَيْلَةً بِالْعِشَاءِ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يَفْشُوَ الإِسْلامُ فَلَمْ يَخْرُجْ حَتَّى قَالَ عُمَرُ نَامَ النِّسَاءُ وَالصِّبْيَانُ فَخَرَجَ فَقَالَ لِأَهْلِ الْمَسْجِدِ مَا يَنْتَظِرُهَا أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ غَيْرَكُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৫/৩৯. ‘ইশার সালাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।
৩৭৩. ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত, এক রাতে কর্মব্যস্ততার কারণে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’ইশার সালাত আদায়ে দেরী করলেন, এমন কি আমরা মসজিদে ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর জেগে উঠে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লাম। অতঃপর পুনরায় জেগে উঠলাম। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বেরিয়ে এলেন, অতঃপর বললেন, তোমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ এ সালাতের অপেক্ষা করছে না।
وقت العشاء وتأخيرها
حَدِيْثُ عَبْدِ اللهِ بْنُ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ شُغِلَ عَنْهَا لَيْلَةً فَأَخَّرَهَا حَتَّى رَقَدْنَا فِي الْمَسْجِدِ ثُمَّ اسْتَيْقَظْنَا ثُمَّ رَقَدْنَا ثُمَّ اسْتَيْقَظْنَا ثُمَّ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ ﷺ ثُمَّ قَالَ لَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ غَيْرُكُمْ
পরিচ্ছেদঃ ৫/৩৯. ‘ইশার সালাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।
৩৭৪. হুমাইদ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাযি.)-এর নিকট জিজ্ঞেস করা হয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আংটি পরেছেন কিনা? তিনি বললেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে এশার সালাত আদায়ে অর্ধরাত পর্যন্ত দেরী করেন। এরপর তিনি আমাদের মাঝে আসেন। আমি যেন তাঁর আংটির চমক দেখতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ লোকজন সালাত আদায় করে শুয়ে পড়েছে। আর যতক্ষণ থেকে তোমরা সালাতের অপেক্ষায় রয়েছ, ততক্ষণ তোমরা সালাতের মধ্যেই রয়েছ।
وقت العشاء وتأخيرها
حَدِيْثُ أَنَسٍ قَالَ حُمَيْدٌ سُئِلَ أَنَسٌ هَلْ اتَّخَذَ النَّبِيُّ ﷺ خَاتَمًا قَالَ أَخَّرَ لَيْلَةً صَلاَةَ الْعِشَاءِ إِلَى شَطْرِ اللَّيْلِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ خَاتَمِهِ قَالَ إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا وَنَامُوا وَإِنَّكُمْ لَمْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرْتُمُوهَا
পরিচ্ছেদঃ ৫/৩৯. ‘ইশার সালাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।
৩৭৫. আবূ মূসা (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আমার সাথিরা-যারা (আবিসিনিয়া হতে) জাহাজ মারফত আমার সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, বাকী’য়ে বুতহানের একটা মুক্ত এলাকায় বসবাসরত ছিলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থাকতেন মদীনায়। বুতহানের অধিবাসীরা পালাক্রমে একদল করে প্রতি রাতে ’ইশার সালাতের সময় আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে আসতেন। পালাক্রমে ’ইশার সালাতের সময় আমি ও আমার কতিপয় সঙ্গী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাযির হলাম। তখন তিনি কোনো কাজে খুব ব্যস্ত ছিলেন, ফলে সালাত আদায়ে বিলম্ব করলেন। এমন কি রাত অর্ধেক হয়ে গেলো। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এলেন এবং সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে বললেনঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে বসে যাও। তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি যে, আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের জন্য এটি এক নি’য়ামত যে, তোমরা ব্যতীত মানুষের মধ্যে কেউ এ মুহূর্তে সালাত আদায় করছে না। কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তোমরা ব্যতীত কোনো উম্মাত এ সময় সালাত আদায় করেনি। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন্ বাক্যটি বলেছিলেন বর্ণনাকারী তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। আবূ মূসা (রাযি.) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ কথা শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত মনে বাড়ি ফিরলাম।
وقت العشاء وتأخيرها
حَدِيْثُ أَبِي مُوسَى قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَصْحَابِي الَّذِينَ قَدِمُوا مَعِي فِي السَّفِينَةِ نُزُولًا فِي بَقِيعِ بُطْحَانَ وَالنَّبِيُّ ﷺ بِالْمَدِينَةِ فَكَانَ يَتَنَاوَبُ النَّبِيَّ ﷺ عِنْدَ صَلاَةِ الْعِشَاءِ كُلَّ لَيْلَةٍ نَفَرٌ مِنْهُمْ فَوَافَقْنَا النَّبِيَّ ﷺ أَنَا وَأَصْحَابِي وَلَهُ بَعْضُ الشُّغْلِ فِي بَعْضِ أَمْرِهِ فَأَعْتَمَ بِالصَّلاَةِ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ ثُمَّ خَرَجَ النَّبِيُّ ﷺ فَصَلَّى بِهِمْ فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ قَالَ لِمَنْ حَضَرَهُ عَلَى رِسْلِكُمْ أَبْشِرُوا إِنَّ مِنْ نِعْمَةِ اللهِ عَلَيْكُمْ أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنْ النَّاسِ يُصَلِّي هَذِهِ السَّاعَةَ غَيْرُكُمْ أَوْ قَالَ مَا صَلَّى هَذِهِ السَّاعَةَ أَحَدٌ غَيْرُكُمْ لاَ يَدْرِي أَيَّ الْكَلِمَتَيْنِ قَالَ قَالَ أَبُو مُوسَى فَرَجَعْنَا فَفَرِحْنَا بِمَا سَمِعْنَا مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ
পরিচ্ছেদঃ ৫/৩৯. ‘ইশার সালাতের সময় এবং তা বিলম্ব করা।
৩৭৬. ইবনু ’আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করেছিলেন, এমন কি লোকজন একবার ঘুমিয়ে জেগে উঠল, আবার ঘুমিয়ে পড়ে জাগ্রত হলো। তখন ’উমার ইবনু খাত্তাব (রাযি.) উঠে গিয়ে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, ’আস-সালাত’। অতঃপর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এলেন- যেন এখনো আমি তাঁকে দেখছি, তাঁর মাথা হতে পানি টপকে পড়ছিলো এবং তাঁর হাত মাথার উপর ছিলো। তিনি এসে বললেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবে (বিলম্ব করে) ’ইশার সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম।
ইবনু জুরাইজ (রহ.) (অত্র হাদীসের এক রাবী) বলেন, ইবনু ’আব্বাস (রাযি.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে মাথায় হাত রেখেছিলেন তা কিভাবে রেখেছিলেন, বিষয়টি সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করার জন্য আতা (রহ.)-কে বললাম। আতা (রহ.) তাঁর আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁক করলেন, অতঃপর সেগুলোর অগ্রভাগ সম্মুখ দিক হতে (চুলের অভ্যন্তরে) প্রবেশ করালেন। অতঃপর আঙ্গুলগুলো একত্রিত করে মাথার উপর দিয়ে এভাবে টেনে নিলেন যে, তার বৃদ্ধাঙ্গুল কানের সে পার্শ্বকে স্পর্শ করে গেলো যা মুখমণ্ডল সংলগ্ন চোয়ালের হাড্ডির উপর শ্মশ্রুর পাশে অবস্থিত। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চুলের পানি ঝরাতে কিংবা চুল চাপড়াতে এরূপই করতেন। এবং তিনি বলেছিলেনঃ যদি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এভাবেই (বিলম্ব করে) সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতাম।
وقت العشاء وتأخيرها
حَدِيْثُ ابْنُ عَبَّاسٍ أَعْتَمَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَيْلَةً بِالْعِشَاءِ حَتَّى رَقَدَ النَّاسُ وَاسْتَيْقَظُوا وَرَقَدُوا وَاسْتَيْقَظُوا فَقَامَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ الصَّلاَةَ فَخَرَجَ نَبِيُّ اللهِ ﷺ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ الْآنَ يَقْطُرُ رَأْسُهُ مَاءً وَاضِعًا يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ فَقَالَ لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُصَلُّوهَا هَكَذَا (قَالَ بن جريج الراوي عن عطاء الراوي عن بن عباس) فَاسْتَثْبَتُّ عَطَاءً كَيْفَ وَضَعَ النَّبِيُّ ﷺ عَلَى رَأْسِهِ يَدَهُ كَمَا أَنْبَأَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ فَبَدَّدَ لِي عَطَاءٌ بَيْنَ أَصَابِعِهِ شَيْئًا مِنْ تَبْدِيدٍ ثُمَّ وَضَعَ أَطْرَافَ أَصَابِعِهِ عَلَى قَرْنِ الرَّأْسِ ثُمَّ ضَمَّهَا يُمِرُّهَا كَذَلِكَ عَلَى الرَّأْسِ حَتَّى مَسَّتْ إِبْهَامُهُ طَرَفَ الْأُذُنِ مِمَّا يَلِي الْوَجْهَ عَلَى الصُّدْغِ وَنَاحِيَةِ اللِّحْيَةِ لاَ يُقَصِّرُ وَلاَ يَبْطُشُ إِلاَّ كَذَلِكَ وَقَالَ لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لَأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُصَلُّوا هَكَذَا