পরিচ্ছেদঃ ২২৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যাবত ফিতনা দূরিভুত না হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হয়। যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তবে জালিমদের ব্যতীত আর কাউকে আক্রমণ করা চলবে না।” (সূরাহ আল-বাক্বারা ২ঃ ১৯৩)

৪১৬১। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁর কাছে দুই ব্যাক্তি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ফিতনার সময় আগমন করল এবং বলল, লোকেরা সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর আপনি উমর (রাঃ) এর পুত্র এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী! কি কারণে আপনি বের হন না? তিনি উত্তর দিলেন আমাকে নিষেধ করেছে এ কথা নিশ্চই আল্লাহ তা’আলা আমার ভাইয়ের রক্ত হারাম করেছে। তারা দু’জন বললেন, আল্লাহ কি এ কথা বলেননি যে, তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর যাবত না ফিতনার অবসান ঘটে। তখন ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি যাবত না ফিতনার অবসান ঘটেছে এবং দ্বীনও আল্লাহর জন্য হয়ে গেছে। আর তোমরা ফিতনা প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করার ইচ্ছা করছ আর যেন আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য দ্বীন হয়ে গেছে।

উসমান ইবনু সালিহ ইবনু ওহাব (রহঃ) সূত্রে নাফে (রহঃ) থেকে কিছু বাড়িয়ে বলেন যে, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আবূ আবদুর রহমান! কি করণে আপনি এক বছর হাজ্জ (হজ্জ) করেন এবং এক বছর উমরা করেন অথচ আপনি আল্লাহর পথে জিহাদ পরিত্যাগ করেছেন? আপনি পরিজ্ঞাত আছেন যে, আল্লাহ এ বিষয়ে জিহাদ সম্পর্কে কিভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, হে ভাতিজা; ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে পাঁচটি বস্তুর উপরঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) প্রতিষ্ঠা, রমযানের রোযা পালন, যাকাত প্রদান এবং বায়তুল্লাহর হাজ্জ (হজ্জ) উদযাপন। তখন সে ব্যাক্তি বলল, হে আবূ আবদুর রহমান! আল্লাহ তা’আলা তাঁর কিতাবে কি বর্ণনা করেছেন তা কি আপনি শুনেননি?‏‏وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا‏)‏ ‏(‏إِلَى أَمْرِ اللَّهِ‏)‏ ‏(‏قَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ‏ অর্থাৎ মু’মিনদের দু’দল দ্বন্ধে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। এরপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে তোমরা আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষন না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে-তবে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করবে এবং সুবিচার করবে। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালবাসেন। (৪৯: ৯)

‏قَاتِلُو الاية(এ আয়াতগুলো শ্রবণ করার পর) ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আমরা এ কাজ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে করেছি এবং তখন ইসলামের অনুসারীর দল স্বল্পসংখ্যক ছিল। যদি কোন লোক দ্বীন সম্পর্কে ফিতনায় নিপতিত হতো তখন হয় তাকে হত্যা করা হত অথবা শাস্তি প্রদান করা হত। এভাবে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে গেল। তখন আর কোন ফিতনা রইল না। সে ব্যাক্তি বলল, আলী ও উসমান (রাঃ) সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেন, উসমান (রাঃ)-কে তো আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করেছেন অথচ তোমরা তাঁকে ক্ষমা করা পছন্দ করো না। আর আলী (রাঃ)-তিনি তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচাতো ভাই এবং তাঁর জামাতা। তিনি নিজ হাত দ্বারা ইশারা করে বলেন, এই তো তাঁর ঘর [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরের কাছে] যেমন তোমরা দেখতে পাচ্ছ।

হাদিস নং - ৪৫১৩, ৪৫১৪ ও ১৫১৫

باب قوله وقاتلوهم حتى لا تكون فتنة ويكون الدين لله فإن انتهوا فلا عدوان إلا على الظالمين

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَتَاهُ رَجُلاَنِ فِي فِتْنَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ فَقَالاَ إِنَّ النَّاسَ قَدْ ضُيِّعُوا، وَأَنْتَ ابْنُ عُمَرَ وَصَاحِبُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَمَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَخْرُجَ فَقَالَ يَمْنَعُنِي أَنَّ اللَّهَ حَرَّمَ دَمَ أَخِي‏.‏ فَقَالاَ أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ ‏(‏وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ ‏)‏ فَقَالَ قَاتَلْنَا حَتَّى لَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ، وَكَانَ الدِّينُ لِلَّهِ، وَأَنْتُمْ تُرِيدُونَ أَنْ تُقَاتِلُوا حَتَّى تَكُونَ فِتْنَةٌ، وَيَكُونَ الدِّينُ لِغَيْرِ اللَّهِ‏.‏ وَزَادَ عُثْمَانُ بْنُ صَالِحٍ عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي فُلاَنٌ، وَحَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو الْمَعَافِرِيِّ، أَنَّ بُكَيْرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَهُ عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَا حَمَلَكَ عَلَى أَنْ تَحُجَّ عَامًا وَتَعْتَمِرَ عَامًا، وَتَتْرُكَ الْجِهَادَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَقَدْ عَلِمْتَ مَا رَغَّبَ اللَّهُ فِيهِ قَالَ يَا ابْنَ أَخِي بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ إِيمَانٍ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَالصَّلاَةِ الْخَمْسِ، وَصِيَامِ رَمَضَانَ، وَأَدَاءِ الزَّكَاةِ، وَحَجِّ الْبَيْتِ‏.‏ قَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَلاَ تَسْمَعُ مَا ذَكَرَ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ ‏(‏وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا‏)‏ ‏(‏إِلَى أَمْرِ اللَّهِ‏)‏ ‏(‏قَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ‏)‏ قَالَ فَعَلْنَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الإِسْلاَمُ قَلِيلاً، فَكَانَ الرَّجُلُ يُفْتَنُ فِي دِينِهِ إِمَّا قَتَلُوهُ، وَإِمَّا يُعَذِّبُوهُ، حَتَّى كَثُرَ الإِسْلاَمُ فَلَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ‏.‏ قَالَ فَمَا قَوْلُكَ فِي عَلِيٍّ وَعُثْمَانَ قَالَ أَمَّا عُثْمَانُ فَكَأَنَّ اللَّهَ عَفَا عَنْهُ، وَأَمَّا أَنْتُمْ فَكَرِهْتُمْ أَنْ تَعْفُوا عَنْهُ، وَأَمَّا عَلِيٌّ فَابْنُ عَمِّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَخَتَنُهُ‏.‏ وَأَشَارَ بِيَدِهِ فَقَالَ هَذَا بَيْتُهُ حَيْثُ تَرَوْنَ‏.‏

حدثنا محمد بن بشار، حدثنا عبد الوهاب، حدثنا عبيد الله، عن نافع، عن ابن عمر ـ رضى الله عنهما ـ اتاه رجلان في فتنة ابن الزبير فقالا ان الناس قد ضيعوا، وانت ابن عمر وصاحب النبي صلى الله عليه وسلم فما يمنعك ان تخرج فقال يمنعني ان الله حرم دم اخي‏.‏ فقالا الم يقل الله ‏(‏وقاتلوهم حتى لا تكون فتنة ‏)‏ فقال قاتلنا حتى لم تكن فتنة، وكان الدين لله، وانتم تريدون ان تقاتلوا حتى تكون فتنة، ويكون الدين لغير الله‏.‏ وزاد عثمان بن صالح عن ابن وهب، قال اخبرني فلان، وحيوة بن شريح، عن بكر بن عمرو المعافري، ان بكير بن عبد الله، حدثه عن نافع، ان رجلا، اتى ابن عمر فقال يا ابا عبد الرحمن ما حملك على ان تحج عاما وتعتمر عاما، وتترك الجهاد في سبيل الله عز وجل، وقد علمت ما رغب الله فيه قال يا ابن اخي بني الاسلام على خمس ايمان بالله ورسوله، والصلاة الخمس، وصيام رمضان، واداء الزكاة، وحج البيت‏.‏ قال يا ابا عبد الرحمن، الا تسمع ما ذكر الله في كتابه ‏(‏وان طاىفتان من المومنين اقتتلوا فاصلحوا بينهما‏)‏ ‏(‏الى امر الله‏)‏ ‏(‏قاتلوهم حتى لا تكون فتنة‏)‏ قال فعلنا على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم وكان الاسلام قليلا، فكان الرجل يفتن في دينه اما قتلوه، واما يعذبوه، حتى كثر الاسلام فلم تكن فتنة‏.‏ قال فما قولك في علي وعثمان قال اما عثمان فكان الله عفا عنه، واما انتم فكرهتم ان تعفوا عنه، واما علي فابن عم رسول الله صلى الله عليه وسلم وختنه‏.‏ واشار بيده فقال هذا بيته حيث ترون‏.‏


Narrated Nafi`:

During the affliction of Ibn Az-Zubair, two men came to Ibn `Umar and said, "The people are lost, and you are the son of `Umar, and the companion of the Prophet, so what forbids you from coming out?" He said, "What forbids me is that Allah has prohibited the shedding of my brother's blood." They both said, "Didn't Allah say, 'And fight then until there is no more affliction?" He said "We fought until there was no more affliction and the worship is for Allah (Alone while you want to fight until there is affliction and until the worship become for other than Allah." Narrated Nafi` (through another group of sub-narrators): A man came to Ibn `Umar and said, "O Abu `Abdur Rahman! What made you perform Hajj in one year and Umra in another year and leave the Jihad for Allah' Cause though you know how much Allah recommends it?" Ibn `Umar replied, "O son of my brother! Islam is founded on five principles, i.e. believe in Allah and His Apostle, the five compulsory prayers, the fasting of the month of Ramadan, the payment of Zakat, and the Hajj to the House (of Allah)." The man said, "O Abu `Abdur Rahman! Won't you listen to why Allah has mentioned in His Book: 'If two groups of believers fight each other, then make peace between them, but if one of then transgresses beyond bounds against the other, then you all fight against the one that transgresses. (49.9) and:--"And fight them till there is no more affliction (i.e. no more worshiping of others along with Allah)." Ibn `Umar said, "We did it, during the lifetime of Allah's Messenger (ﷺ) when Islam had only a few followers. A man would be put to trial because of his religion; he would either be killed or tortured. But when the Muslims increased, there was no more afflictions or oppressions." The man said, "What is your opinion about `Uthman and `Ali?" Ibn `Umar said, "As for `Uthman, it seems that Allah has forgiven him, but you people dislike that he should be forgiven. And as for `Ali, he is the cousin of Allah's Messenger (ﷺ) and his son-in-law." Then he pointed with his hand and said, "That is his house which you see."


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫২/ তাফসীর (كتاب تفسير) 52/ Prophetic Commentary on the Qur'an (Tafseer of the Prophet [pbuh] )