পরিচ্ছেদঃ ২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... মুহাম্মদ ইবনু জুবায়ের ইবনু মুত্’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) এর নিকট কুরাইশ প্রতিনিধিদের সহিত তার উপস্থিতিতে সংবাদ পৌছলো যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) বর্ণনা করেন, অচিরেই কাহতান বংশীয় একজন বাদশাহর আবির্ভাব ঘটবে। ইহা শুনে মু’আবীয়া (রাঃ) ক্রোধান্বিত হয়ে খুত্বা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য হামদ ও সানার পর তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি, তোমাদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক লোক এমন সব কথাবার্তা বলতে শুরু করেছ যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্ণিত হয়নি। এরাই মূর্খ, এদের থেকে সাবধান থাক এবং এরূপ কাল্পনিক ধারনা হতে সতর্ক থাক যা এর পোষণকারীকে বিপথগামী করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি যে, যতদিন তারা দ্বীন কায়েমে নিয়োজিত থাকবে ততদিন খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা কুরাইশদের হাতেই থাকবে। এ বিষয়ে যে-ই তাদের সহিত শত্রুতা করবে আল্লাহ তাকে অধঃমুখে নিক্ষেপ করবেন (অর্থাৎ লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন)।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ كَانَ مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ يُحَدِّثُ أَنَّهُ بَلَغَ مُعَاوِيَةَ وَهْوَ عِنْدَهُ فِي وَفْدٍ مِنْ قُرَيْشٍ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَيَكُونُ مَلِكٌ مِنْ قَحْطَانَ، فَغَضِبَ مُعَاوِيَةُ، فَقَامَ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ بَلَغَنِي أَنَّ رِجَالاً مِنْكُمْ يَتَحَدَّثُونَ أَحَادِيثَ لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ، وَلاَ تُؤْثَرُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَأُولَئِكَ جُهَّالُكُمْ، فَإِيَّاكُمْ وَالأَمَانِيَّ الَّتِي تُضِلُّ أَهْلَهَا، فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ هَذَا الأَمْرَ فِي قُرَيْشٍ، لاَ يُعَادِيهِمْ أَحَدٌ إِلاَّ كَبَّهُ اللَّهُ عَلَى وَجْهِهِ، مَا أَقَامُوا الدِّينَ ".
Narrated Muhammad bin Jubair bin Mut`im:
That while he was with a delegation from Quraish to Muawiya, the latter heard the news that `Abdullah bin `Amr bin Al-`As said that there would be a king from the tribe of Qahtan. On that Muawiya became angry, got up and then praised Allah as He deserved, and said, "Now then, I have heard that some men amongst you narrate things which are neither in the Holy Book, nor have been told by Allah's Messenger (ﷺ). Those men are the ignorant amongst you. Beware of such hopes as make the people go astray, for I heard Allah's Messenger (ﷺ) saying, 'Authority of ruling will remain with Quraish, and whoever bears hostility to them, Allah will destroy him as long as they abide by the laws of the religion.' "
পরিচ্ছেদঃ ২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫২। আবূল ওলীদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ বিষয় (খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা) সর্বদাই কুরাইশদের হাতে ন্যাস্ত থাকবে, যতদিন তাদের দু’জন লোকও বেঁচে থাকবে।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لا يَزَالُ هَذَا الأَمْرُ فِي قُرَيْشٍ، مَا بَقِيَ مِنْهُمُ اثْنَانِ ".
Narrated Ibn `Umar:
The Prophet (ﷺ) said, "Authority of ruling will remain with Quraish, even if only two of them remained."
পরিচ্ছেদঃ ২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৩। আবূ নু’য়াঈম ও ইয়া’কুব ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কুরাইশ, আনসার, জুহায়না, মুযায়না, আসলাম, আশজা’ ও গিফার গোত্রগুলো আমার সাহায্যকারী। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ব্যতীত তাঁদের সাহায্যকারী আর কেউ নেই।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَعْدٍ، ح قَالَ يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ هُرْمُزَ الأَعْرَجُ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " قُرَيْشٌ وَالأَنْصَارُ وَجُهَيْنَةُ وَمُزَيْنَةُ وَأَسْلَمُ وَأَشْجَعُ وَغِفَارُ مَوَالِيَّ لَيْسَ لَهُمْ مَوْلًى، دُونَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ".
Narrated Abu Huraira:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "The tribe of Quraish, the Ansar, the (people of the tribe of) Julhaina, Muzaina, Aslam, Ashja', and Ghifar are my disciples and have no protectors except Allah and His Apostle."
পরিচ্ছেদঃ ২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৪। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) ... জুবায়র ইবনু মুত’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং ’উসমান ইবনু আফ্ফান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে হাজির হলাম। ’উসমান (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি মুত্তালিবের সন্তানগণকে দান করলেন এবং আমাদেরকে বাদ দিলেন। অথচ তারা ও আমরা আপনার বংশগতভাবে সমপর্যায়ের। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বনূ হাশিম ও বনূ মুত্তালিব এক ও অভিন্ন।
লায়স ... ’উরওয়া ইবনু জুবায়র থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু জুবায়র (রাঃ) বনূ যুহরার কতিপয় লোকের সাথে আয়িশা (রাঃ) এর খেদমতে হাজির হলেন। আয়িশা (রাঃ) তাদের প্রতি অত্যন্ত নম্র ও দয়ার্দ্র ছিলেন। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাঁদের আত্মীয়তা ছিল।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، قَالَ مَشَيْتُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ،، فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعْطَيْتَ بَنِي الْمُطَّلِبِ وَتَرَكْتَنَا، وَإِنَّمَا نَحْنُ وَهُمْ مِنْكَ بِمَنْزِلَةٍ وَاحِدَةٍ. فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وَبَنُو الْمُطَّلِبِ شَىْءٌ وَاحِدٌ ".
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، مُحَمَّدٌ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ ذَهَبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ مَعَ أُنَاسٍ مِنْ بَنِي زُهْرَةَ إِلَى عَائِشَةَ، وَكَانَتْ أَرَقَّ شَىْءٍ لِقَرَابَتِهِمْ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم.
Narrated Jubair bin Mut`im:
`Uthman bin `Affan went (to the Prophet) and said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! You gave property to Bani Al-Muttalib and did not give us, although we and they are of the same degree of relationship to you." The Prophet (ﷺ) said, "Only Bani Hashim and Bani Al Muttalib are one thing (as regards family status).
Narrated `Urwa bin Az-Zubair:
`Abdullah bin Az-Zubair went with some women of the tribe of Bani Zuhra to `Aisha who used to treat them nicely because of their relation to Allah's Messenger (ﷺ).
পরিচ্ছেদঃ ২০৫৩. কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা
৩২৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... ’উর্ওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এর পর আয়িশা (রাঃ) এর নিকট সকল লোকদের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় পাত্র ছিলেন এবং তিনি সকল লোকদের মধ্যে আয়িশা (রাঃ)-এর সবচেয়ে বেশী সদাচারী ছিলেন। আয়িশা (রাঃ) এর নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক স্বরূপ যা কিছু আস্ত তা জমা না রেখে সাদকা করে দিতেন। এতে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) বললেন, অধিক দান খয়রাত করা থেকে তাকে বারণ করা উচিত। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমাকে দান করা থেকে বারণ করা হবে? আমি যদি তার সাথে কথা বলি, তাহলে আমাকে কাফ্ফারা দিতে হবে এবং আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) তাঁর নিকট কুরাইশের কতিপয় লোক, বিশেষ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাতৃবংশের কিছু লোক দ্বারা সুপারিশ করালেন। তবুও তিনি তাঁর সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাতৃবংশ বনী যুহরার কতিপয় বিশিষ্ট লোক যাদের মধ্যে আবদুর রহমান ইবনু আস্ওয়াদ এবং মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) ছিলেন তার বললেন, আমরা যখন আয়িশা (রাঃ)-এর গৃহে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করব তখন তুমি পর্দার ভিতরে ঢুকে পড়বে। তিনি তাই করলেন। পরে ইবনু যুবায়র (রাঃ) কাফ্ফারা আদায়ের জন্য তার কাছে দশটি ক্রীতদাস পাঠিয়ে দিলেন। আয়িশা (রাঃ) তাদের সকলকে আযাদ করে দিলেন। এরপর তিনি বরাবর আযাদ করতে থাকলেন। এমনকি তার সংখ্যা চল্লিশে পৌছে। আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি যখন কোন কাজ করার শপথ করি, তখন আমার সংকল্প থাকে যে আমি যেন সে কাজটা করে দায়িত্ব মুক্ত হয়ে যাই এবং তিনি আরো বলেন, আমি যখন কোন কার্য সম্পাদনের শপথ করি উহা যথাযথ পূরণের ইচ্ছা রাখি।
باب مَنَاقِبِ قُرَيْشٍ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الزُّبَيْرِ أَحَبَّ الْبَشَرِ إِلَى عَائِشَةَ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ، وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِهَا، وَكَانَتْ لاَ تُمْسِكُ شَيْئًا مِمَّا جَاءَهَا مِنْ رِزْقِ اللَّهِ (إِلاَّ) تَصَدَّقَتْ. فَقَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ يَنْبَغِي أَنْ يُؤْخَذَ عَلَى يَدَيْهَا. فَقَالَتْ أَيُؤْخَذُ عَلَى يَدَىَّ عَلَىَّ نَذْرٌ إِنْ كَلَّمْتُهُ. فَاسْتَشْفَعَ إِلَيْهَا بِرِجَالٍ مِنْ قُرَيْشٍ، وَبِأَخْوَالِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً فَامْتَنَعَتْ، فَقَالَ لَهُ الزُّهْرِيُّونَ أَخْوَالُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ وَالْمِسْوَرُ بْنُ مَخْرَمَةَ إِذَا اسْتَأْذَنَّا فَاقْتَحِمِ الْحِجَابَ. فَفَعَلَ، فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا بِعَشْرِ رِقَابٍ، فَأَعْتَقَتْهُمْ، ثُمَّ لَمْ تَزَلْ تُعْتِقُهُمْ حَتَّى بَلَغَتْ أَرْبَعِينَ. فَقَالَتْ وَدِدْتُ أَنِّي جَعَلْتُ حِينَ حَلَفْتُ عَمَلاً أَعْمَلُهُ فَأَفْرُغَ مِنْهُ.
Narrated `Urwa bin Az-Zubair:
`Abdullah bin Az-Zubair was the most beloved person to `Aisha excluding the Prophet (ﷺ) and Abu Bakr, and he in his turn, was the most devoted to her, `Aisha used not to withhold the money given to her by Allah, but she used to spend it in charity. (`Abdullah) bin AzZubair said, " `Aisha should be stopped from doing so." (When `Aisha heard this), she said protestingly, "Shall I be stopped from doing so? I vow that I will never talk to `Abdullah bin Az-Zubair." On that, Ibn Az-Zubair asked some people from Quraish and particularly the two uncles of Allah's Messenger (ﷺ) to intercede with her, but she refused (to talk to him). Az-Zuhriyun, the uncles of the Prophet, including `Abdur-Rahman bin Al-Aswad bin `Abd Yaghuth and Al-Miswar bin Makhrama said to him, "When we ask for the permission to visit her, enter her house along with us (without taking her leave)." He did accordingly (and she accepted their intercession). He sent her ten slaves whom she manumitted as an expiation for (not keeping) her vow. `Aisha manumitted more slaves for the same purpose till she manumitted forty slaves. She said, "I wish I had specified what I would have done in case of not fulfilling my vow when I made the vow, so that I might have done it easily."