পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
অর্থাৎ, তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা ও যাকাত আদায় কর। (বাক্বারাহ ৪৩ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
وَمَا أُمِرُوا إِلاَّ لِيَعْبُدُوا الله مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلاَةَ وَيُؤتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ القَيِّمَةِ
অর্থাৎ, তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম। (বাইয়েনাহ ৫ আয়াত) তিনি অন্যত্র আরো বলেছেন,
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا
অর্থাৎ, তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদকাহ গ্রহণ কর, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত ক’রে দেবে। (সূরা তওবা ১০৩ আয়াত)
(৯০৭) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচটি ভিত্তির উপর দ্বীনে ইসলাম স্থাপিত। (১) এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রসূল। (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা। (৩) যাকাত আদায় করা। (৪) বায়তুল্লাহর (কা’বা গৃহের) হজ্জ করা এবং (৫) রমযানের রোযা পালন করা।
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ : شَهَادَةِ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَإقَامِ الصَّلاَةِ وَإيتَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ البَيْتِ وَصَوْمِ رَمَضَانَ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯০৮) ত্বালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন নাজদ (রিয়ায এলাকার) অধিবাসীদের একজন আলুলায়িত কেশী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হল। আমরা তার ভনভন্ শব্দ শুনছিলাম, আর তার কথাও বুঝতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসল এবং (তখন বুঝলাম,) সে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। (উত্তরে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ইসলাম হল,) দিবা-রাত্রিতে পাঁচ অক্তের নামায (প্রতিষ্ঠা করা)। সে বলল, তা ছাড়া আমার উপর অন্য নামায আছে কি? তিনি বললেন, না, কিন্তু যা কিছু তুমি নফল হিসাবে পড়বে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার বললেন, এবং রমযান মাসের রোযা। লোকটি বলল, তা ছাড়া আমার উপর অন্য রোযা আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি যা নফল হিসাবে করবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে যাকাতের কথা বললেন। সে বলল, তাছাড়া আমার উপর অন্য দান আছে কি? তিনি বললেন, না, তবে তুমি যা নফল হিসাবে করবে। তারপর লোকটি পিঠ ফিরিয়ে এ কথা বলতে বলতে যেতে লাগল, আল্লাহর কসম! আমি এর চাইতে বেশী কিছু করব না এবং এর চেয়ে কমও করব না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকটি সত্য বলে থাকলে পরিত্রাণ পেয়ে গেল।
وَعَن طَلْحَةَ بنِ عُبَيدِ اللهِ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرُ الرَّأسِ نَسْمَعُ دَوِيَّ صَوْتِهِ وَلاَ نَفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا مِنْ رَسُولِ اللهِ ﷺ فَإِذَا هُوَ يَسأَلُ عَن الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ خَمْسُ صَلَواتٍ في اليَوْمِ وَاللَّيْلَةِ قَالَ : هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُنَّ ؟ قَالَ لاَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَصِيامُ شَهْرِ رَمَضَانَ قَالَ : هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهُ ؟ قَالَ لاَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ قَالَ : وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ الزَّكَاةَ فَقَالَ : هَلْ عَلَيَّ غَيْرُهَا ؟ قَالَ لاَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ فَأدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ : وَاللهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯০৯) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুআয (রাঃ)-কে ইয়ামান পাঠাবার সময়ে (তাঁর উদ্দেশ্যে) বললেন, তাদের (ইয়ামানবাসীদেরকে সর্বপ্রথম) এই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আহবান জানাবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহর রসূল। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের উপর রাতদিনে পাঁচ ওয়াক্তের নামায ফরয করেছেন। অতঃপর যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন; যা তাদের মধ্যে যারা (নিসাব পরিমাণ) মালের অধিকারী তাদের নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের মাঝে তা বন্টন করে দেওয়া হবে।
وَعَن ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ بَعَثَ مُعاذاً إِلَى اليَمَنِ فَقَالَ ادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَأنِّي رَسُولُ اللهِ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ تَعَالَى افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَواتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১০) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের বিরুদ্ধে ততক্ষণ সংগ্রাম করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল। আর নামায কায়েম করবে ও (ধনের) যাকাত আদায় করবে। যখন তারা এগুলি বাস্তবায়ন করবে, তখন ইসলামী হক (অর্থদণ্ড ইত্যাদি) ছাড়া তারা নিজেদের জান-মাল আমার নিকট হতে সুরক্ষিত করে নেবে। আর (অন্তরের গভীরে কুফরী বা পাপ লুকানো থাকলে) তাদের হিসাব আল্লাহর যিম্মায়।
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ وَيُقِيمُوا الصَّلاةَ وَيُؤتُوا الزَّكَاةَ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّ الإِسْلاَمِ وَحِسَابُهُم عَلَى الله متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বিনা চাওয়ায় এবং বিনা লোভ-লালসায় যে মাল পাওয়া যাবে, তা নেওয়া জায়েয
(৯১১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলেন এবং আবূ বাকার (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হলেন। আর আরববাসীদের মধ্যে যার কাফের (মুরতাদ্দ) হবার ছিল সে কাফের (মুরতাদ্দ) হয়ে গেল, (এবং যারা সম্পূর্ণ ধর্মত্যাগ করেনি; বরং যাকাত দিতে অস্বীকার করছে মাত্র, তাদের বিরুদ্ধে আবূ বকর (রাঃ) সশস্ত্র সংগ্রামের সংকল্প প্রকাশ করলেন)।
তখন উমার (রাঃ) বললেন, ঐ (যাকাত দিতে নারাজ) লোকেদের বিরুদ্ধে কেমন করে যুদ্ধ করবেন অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, লোকেরা ’লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই) না বলা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। অতএব যে ব্যক্তি তা বলবে, সে ইসলামী অধিকার (অর্থদণ্ড ইত্যাদি) ছাড়া তার জান-মাল আমার নিকট থেকে নিরাপদ করে নেবে। আর তার (অন্তরের গভীরে কুফরী বা পাপ লুকানো থাকলে) হিসাব আল্লাহর যিম্মায়?
আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! যে ব্যক্তি নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, তার বিরুদ্ধে আমি লড়াই করব। কারণ, যাকাত মালের উপর আরোপিত হক। আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যে রশি আদায় করত, তা যদি আমাকে না দেয়, তাহলে তা না দেওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে আমি জিহাদ করবই। উমার (রাঃ) বললেন, ’আল্লাহর শপথ! অচিরেই আমি দেখলাম যে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ আবূ বকর (রাঃ) এর হৃদয়কে যুদ্ধের জন্য প্রশস্ত করেছেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারলাম যে, তাঁর সিদ্ধান্তই যথার্থ।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ العَرَبِ فَقَالَ عُمَرُ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولوُا لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ فَمَنْ قَالَهَا فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى الله فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ : وَاللهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ المَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالاً كَانُوا يُؤدُّونَهُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ قَالَ عُمَرُ فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأيْتُ اللهَ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبي بَكْرٍ لِلقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الحَقُّ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১২) আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমাকে এমন একটি আমল বলুন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তিনি বললেন, আল্লাহর বন্দেগী করবে, আর তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখবে।
অন্য বর্ণনার শব্দাবলীতে আছে, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আমাকে এমন এক আমলের সন্ধান দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। সকলে বলল, আরে! কী হল, ওর কী হল? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওর কোন প্রয়োজন আছে। (অতঃপর ঐ লোকটির উদ্দেশ্যে বললেন,) তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তাঁর সাথে কাউকেও শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে। আর আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখবে।
وَعَنْ أَبيْ أيُّوبَ أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِيِّ ﷺ : أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الجَنَّةَ قَالَ تَعْبُدُ اللهَ وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصِلُ الرَّحِمَ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক বেদুঈন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে নিবেদন করল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন এক আমলের কথা বলে দিন, যার উপর আমল করলে, আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বললেন, আল্লাহর ইবাদত করবে ও তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, ফরয যাকাত আদায় করবে ও রমযানের রোযা পালন করবে। সে বলল, সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন আছে, আমি এর চেয়ে বেশী করব না। তারপর যখন সে লোকটা পিঠ ফিরে চলতে লাগল, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি জান্নাতবাসীদের কোন লোক দেখতে আগ্রহী, সে যেন এই লোকটিকে দেখে।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ أَعْرَابِياً أَتَى النَّبِيَّ ﷺ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الجَنَّةَ قَالَ تَعْبُدُ اللهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤتِي الزَّكَاةَ المَفْرُوضَةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ قَالَ : وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا فَلَمَّا وَلَّى قَالَ النَّبِيُّ ﷺمَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৪) জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে নামায কায়েম করার, যাকাত আদায় করার ও প্রতিটি মুসলিমের মঙ্গল কামনা করার বায়আত করেছি।
وَعَن جَرِيرِ بْنِ عَبدِ اللهِ قَالَ : بَايَعْتُ النَّبِيَ ﷺ عَلَى إقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৫) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক সোনা ও চাঁদির অধিকারী ব্যক্তি যে তার হক (যাকাত) আদায় করে না, যখন কিয়ামতের দিন আসবে, তখন তার জন্য ঐ সমুদয় সোনা-চাঁদিকে আগুনে দিয়ে বহু পাত তৈরী করা হবে। অতঃপর সেগুলোকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তার পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগা হবে। যখনই সে পাত ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, তখনই তা পুনরায় গরম করে অনুরূপ দাগার শাস্তি সেই দিনে চলতেই থাকবে, যার পরিমাণ হবে ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার পথ দেখতে পাবে; হয় জান্নাতের দিকে, না হয় জাহান্নামের দিকে।
জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রসূল! আর উটের ব্যাপারে কী হবে?’ তিনি বললেন, প্রত্যেক উঁটের মালিকও; যে তার হক (যাকাত) আদায় করবে না—আর তার অন্যতম হক এই যে, পানি পান করাবার দিন তাকে দোহন করা (এবং সে দুধ লোকেদের দান করা)- যখন কিয়ামতের দিন আসবে, তখন তাকে এক সমতল প্রশস্ত প্রান্তরে উপুড় করে ফেলা হবে। আর তার উট সকল পূর্ণ সংখ্যায় উপস্থিত হবে; ওদের মধ্যে একটি বাচ্চাকেও অনুপস্থিত দেখবে না। অতঃপর সেই উটদল তাদের খুর দ্বারা তাকে দলবে এবং মুখ দ্বারা তাকে কামড়াতে থাকবে। এইভাবে যখনই তাদের শেষ দল তাকে দলে অতিক্রম করে যাবে, তখনই পুনরায় প্রথম দলটি উপস্থিত হবে। তার এই শাস্তি সেদিন হবে, যার পরিমাণ হবে ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার শেষ পরিণাম দর্শন করবে; জান্নাতের অথবা জাহান্নামের।
জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের ব্যাপারে কী হবে? তিনি বললেন, আর প্রত্যেক গরু-ছাগলের মালিককেও; যে তার হক আদায় করবে না, যখন কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে, তখন তাদের সামনে তাকে এক সমতল প্রশস্ত ময়দানে উপুড় করে ফেলা হবে; যাদের একটিকেও সে অনুপস্থিত দেখবে না এবং তাদের কেউই শিং-বাঁকা, শিংবিহীন ও শিং-ভাঙ্গা থাকবে না। প্রত্যেকেই তার শিং দ্বারা তাকে আঘাত করতে থাকবে এবং খুর দ্বারা দলতে থাকবে। তাদের শেষ দলটি যখনই (ঢুস মেরে ও দলে) পার হয়ে যাবে তখনই প্রথম দলটি পুনরায় এসে উপস্থিত হবে। এই শাস্তি সেদিন হবে যার পরিমাণ ৫০ হাজার বছরের সমান; যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দাদের মাঝে বিচার-নিষ্পত্তি শেষ করা হয়েছে। অতঃপর সে তার রাস্তা ধরবে; জান্নাতের দিকে, নতুবা জাহান্নামের দিকে।
জিজ্ঞাসা করা হল, ’হে আল্লাহর রসূল! আর ঘোড়া সম্পর্কে কী হবে?’ তিনি বললেন, ঘোড়া হল তিন প্রকারের; ঘোড়া কারো পক্ষে পাপের বোঝা, কারো পক্ষে পর্দাস্বরূপ এবং কারো জন্য সওয়াবের বিষয়। যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে পাপের বোঝা তা হল সেই ব্যক্তির ঘোড়া, যে লোকপ্রদর্শন, গর্বপ্রকাশ এবং মুসলিমদের প্রতি শত্রুতার উদ্দেশ্যে পালন করেছে। এ ঘোড়া হল তার মালিকের জন্য পাপের বোঝা।
যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে পর্দাস্বরূপ, তা হল সেই ব্যক্তির ঘোড়া, যাকে সে আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের জন্য) প্রস্তুত রেখেছে। অতঃপর সে তার পিঠ ও গর্দানে আল্লাহর হক ভুলে যায়নি। তার যথার্থ প্রতিপালন করে জিহাদ করেছে। এ ঘোড়া হল তার মালিকের পক্ষে (দোযখ হতে অথবা ইজ্জত-সম্মানের জন্য) পর্দাস্বরূপ।
আর যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য সওয়াবের বিষয়, তা হল সেই ঘোড়া যাকে তার মালিক মুসলিমদের (প্রতিরক্ষার) উদ্দেশ্যে কোন চারণভূমি বা বাগানে প্রস্তুত রেখেছে। তখন সে ঘোড়া ঐ চারণভূমি বা বাগানের যা কিছু খাবে, তার খাওয়া ঐ (ঘাস-পাতা) পরিমাণ সওয়াব মালিকের জন্য লিপিবদ্ধ হবে। অনুরূপ লেখা হবে তার লাদ ও পেশাব পরিমাণ সওয়াব। সে ঘোড়া যখনই তার রশি ছিঁড়ে একটি অথবা দু’টি ময়দান অতিক্রম করবে, তখনই তার পদক্ষেপ ও লাদ পরিমাণ সওয়াব তার মালিকের জন্য লিখিত হবে। অনুরূপ তার মালিক যদি তাকে কোন নদীর কিনারায় নিয়ে যায়, অতঃপর সে সেই নদী হতে পানি পান করে অথচ মালিকের পান করানোর ইচ্ছা থাকে না, তবুও আল্লাহ তা’আলা তার পান করা পানির সমপরিমাণ সওয়াব মালিকের জন্য লিপিবদ্ধ করে দেবেন।
জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রসূল! আর গাধা সম্পর্কে কী হবে? তিনি বললেন, গাধার ব্যাপারে এই ব্যাপকার্থক একক আয়াতটি ছাড়া আমার উপর অন্য কিছু অবতীর্ণ হয়নি,
فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرّاً يَرَهُ
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি অণুপরিমাণ সৎকর্ম করবে সে তাও (কিয়ামতে) প্রত্যক্ষ করবে এবং যে ব্যক্তি অণুপরিমাণ অসৎকার্য করবে সে তাও (সেদিন) প্রত্যক্ষ করবে। (সূরা যিলযাল ৭-৮ আয়াত)
নাসাঈর এক বর্ণনায় আছে যে, যে ব্যক্তিই তার ধন-মালের যাকাত আদায় করবে না সেই ব্যক্তিরই ধন-মাল সেদিন আগুনের সাপরূপে উপস্থিত হবে এবং তদ্দ্বারা তার কপাল, পাঁজর ও পিঠকে দাগা হবে; যে দিনটি হবে ৫০ হাজার বছরের সমান। এমন আযাব তার ততক্ষণ পর্যন্ত হতে থাকবে; যতক্ষণ পর্যন্ত সকল বান্দার বিচার-নিষ্পত্তি শেষ না হয়েছে।
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ صَاحِبِ ذَهَبٍ وَلاَ فِضَّةٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَومُ القِيَامَةِ صُفِّحَتْ لَهُ صَفَائِحُ مِنْ نَارٍ فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا في نَارِ جَهَنَّمَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ وَجَبِينُهُ وَظَهْرُهُ كُلَّمَا بَرَدَتْ أُعِيدَتْ لَهُ في يَومٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ العِبَادِ فَيَرَى سَبيلَهُ إِمَّا إِلَى الجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ قِيلَ : يَا رَسُولَ اللهِ فَالإِبِلُ ؟ قَالَ وَلاَ صَاحِبِ إِبِلٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا وَمِنْ حَقِّهَا حَلْبُهَا يَومَ وِرْدِهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَومُ القِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بِقَاعٍ قَرْقَرٍ أَوْفَرَ مَا كَانَتْ لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا فَصِيلاً وَاحِداً تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا وَتَعَضُّهُ بِأفْوَاهِهَا كُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَةٍ حَتَّى يُقْضى بَيْنَ العِبَادِ فَيَرَى سَبِيلَهُ إمَّا إِلَى الجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ قِيلَ : يَا رَسُولَ اللهِ فَالبَقَرُ وَالغَنَمُ ؟ قَالَ وَلاَ صَاحِبِ بَقَرٍ وَلاَ غَنَمٍ لاَ يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا إِلاَّ إِذَا كَانَ يَوْمُ القِيَامَةِ بُطِحَ لَهَا بقَاعٍ قَرْقَرٍ لاَ يَفْقِدُ مِنْهَا شَيْئاً لَيْسَ فِيهَا عَقْصَاءُ وَلاَ جَلْحَاءُ وَلاَ عَضْبَاءُ تَنْطَحُهُ بقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَظْلاَفِهَا كُلَّمَا مرَّ عَلَيْهِ أُولاَهَا رُدَّ عَلَيْهِ أُخْرَاهَا فِي يَومٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ ألْفَ سَنَة حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ العِبَادِ فَيَرَى سَبيِلَهُ إِمَّا إِلَى الجَنَّةِ وَإِمَّا إِلَى النَّارِ قِيلَ : يَا رَسُولَ اللهِ فَالخَيْلُ ؟ قَالَ الخَيلُ ثَلاَثَةٌ : هِيَ لِرَجُلٍ وِزْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ سِتْرٌ وَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ فَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ وِزْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا رِيَاءً وَفَخْراً وَنِوَاءً عَلَى أَهْلِ الإِسْلاَمِ فَهِيَ لَهُ وِزْرٌ وَأَمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبيلِ اللهِ ثُمَّ لَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِي ظُهُورِهَا وَلاَ رِقَابِهَا فَهِيَ لَهُ سِتْرٌ وَأمَّا الَّتِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِي سَبيلِ اللهِ لأَهْلِ الإِسْلاَمِ فِي مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ فَمَا أكَلَتْ مِنْ ذَلِكَ المَرْجِ أَوْ الرَّوْضَةِ مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ كُتِبَ لَهُ عَدَدَ مَا أَكَلَتْ حَسَنَات وكُتِبَ لَهُ عَدَدَ أَرْوَاثِهَا وَأَبْوَالِهَا حَسَنَات وَلاَ تَقْطَعُ طِوَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفاً أَوْ شَرَفَيْنِ إِلاَّ كَتَبَ اللهُ لَهُ عَدَدَ آثَارِهَا وَأَرْوَاثِهَا حَسَنَاتٍ وَلاَ مَرَّ بِهَا صَاحِبُهَا عَلَى نَهْرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلاَ يُرِيدُ أَنْ يَسْقِيهَا إِلاَّ كَتَبَ اللهُ لَهُ عَدَدَ مَا شَرِبَتْ حَسَنَاتٍ قِيلَ : يَا رَسُولَ اللهِ فَالْحُمُرُ ؟ قَالَ مَا أُنْزِلَ عَلَيَّ في الحُمُرِ شَيْءٌ إِلاَّ هَذِهِ الآيَةُ الفَاذَّةُ الجَامِعَةُ فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرّاً يَرَهُ متفقٌ عَلَيْهِ وهذا لفظ مسلم
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৬) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী; যদি কোন ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে দেয়? উত্তরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে দেয়, সে ব্যক্তির নিকট থেকে তার অনিষ্ট দূর হয়ে যায়।
عَن جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِذَا أَدَّى الرجل زَكَاةَ مَالِهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَدَّى زَكَاةَ مَالِهِ فَقَدْ ذَهَبَ عَنهُ شَرُّهُ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তিকে আল্লাহ ধন-মাল দান করেছেন; কিন্তু সে ব্যক্তি তার সেই ধন-মালের যাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন (আযাবের) জন্য তার সমস্ত ধন-মালকে একটি মাথায় টাক পড়া (অতি বিষাক্ত) সাপের আকৃতি দান করা হবে; যার চোখের উপর দু’টি কালো দাগ থাকবে। সেই সাপকে বেড়ির মত তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। অতঃপর সে তার উভয় কশে ধারণ (দংশন) করে বলবে, আমি তোমার মাল, আমি তোমার সেই সঞ্চিত ধনভাণ্ডার। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াত পাঠ করলেন,
وَلاَ يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَا آتَاهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَّهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ سَيُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
অর্থাৎ, আল্লাহর দানকৃত অনুগ্রহে (ধন-মালে) যারা কৃপণতা করে, সে কার্পণ্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পণ্য করে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে বেড়ি বানিয়ে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় পরানো হবে। (সূরা আ-লি ইমরান ১৮০ আয়াত)
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ آتَاهُ اللهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ يَعَني بِشِدْقَيْهِ يَقُولُ أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ ثُمَّ تَلَا هَذِهِ الْآيَةَ وَلَا يَحْسِبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمْ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ إِلَى آخِرِ الْآيَةِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৮) মাসরূক (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেছেন, সূদখোর, সূদদাতা, সূদের কারবার জেনেও তার দুই সাক্ষ্যদাতা, কোন অঙ্গ দেগে নকশা করে দেয় এবং করায় এমন মহিলা, যাকাত আদায়ে অনিচ্ছুক ও টালবাহানাকারী ব্যক্তি এবং হিজরতের পর মরুবাসী হয়ে ধর্মত্যাগী ব্যক্তি কিয়ামতের দিন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখে অভিশপ্ত।
عَن مَسْرُوقٍ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنهُ : آكِلُ الرِّبَا وَمُؤْكِلُهُ وَشَاهِدَاهُ إِذَا عَلِمَاهُ وَالْوَاشِمَةُ وَالْمُؤْتَشِمَةُ وَلاَوِى الصَّدَقَةِ وَالْمُرْتَدُّ أَعْرَابِيًّا بَعْدَ الْهِجْرَةِ مَلْعُونُونَ عَلَى لِسَانِ مُحَمَّدٍ ﷺ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯১৯) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যাকাত আদায় করে না এমন ব্যক্তি কিয়ামতের দিন জাহান্নামে যাবে।
عَن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَانِعُ الزَّكَاةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯২০) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে জাতিই যাকাত প্রদানে বিরত থেকেছে, সে জাতিকেই আল্লাহ দুর্ভিক্ষ দ্বারা আক্রান্ত করেছেন।
عَن بُرَيْدَةَ رضي الله عَنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا مَنَعَ قَوْمٌ الزَّكَاةَ إِلَّا ابْتَلَاهُمُ اللَّهُ بِالسِّنِينَ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯২১) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে মুহাজিরদল! পাঁচটি কর্ম এমন রয়েছে যাতে তোমরা লিপ্ত হয়ে পড়লে (উপযুক্ত শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করবে)। আমি আল্লাহর নিকট পানাহ চাই, যাতে তোমরা তা প্রত্যক্ষ না কর।
যখনই কোন জাতির মধ্যে অশ্লীলতা (ব্যভিচার) প্রকাশ্যভাবে ব্যাপক হবে, তখনই সেই জাতির মধ্যে প্লেগ এবং এমন মহামারী ব্যাপক হবে যা তাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে ছিল না।
যে জাতিই মাপ ও ওজনে কম দেবে, সে জাতিই দুর্ভিক্ষ, কঠিন খাদ্য-সংকট এবং শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচারের শিকার হবে।
যে জাতিই তার মালের যাকাত দেওয়া বন্ধ করবে, সে জাতির জন্যই আকাশ হতে বৃষ্টি বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি অন্যান্য প্রাণীকুল না থাকত, তাহলে তাদের জন্য আদৌ বৃষ্টি হত না।
যে জাতি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, সে জাতির উপরেই তাদের বিজাতীয় শত্রুদলকে ক্ষমতাসীন করা হবে; যারা তাদের মালিকানা-ভুক্ত বহু ধন-সম্পদ নিজেদের কুক্ষিগত করবে।
আর যে জাতির শাসকগোষ্ঠী যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর কিতাব (বিধান) অনুযায়ী দেশ শাসন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি তাদের মাঝে গৃহদ্বন্দ্ব অবস্থায় রাখবেন।
عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: أَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ وَأَعُوذُ بِاللهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِى قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِى لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِى أَسْلاَفِهِمُ الِّذِينَ مَضَوْا وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ إِلاَّ أُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَشِدَّةِ الْمَؤُنَةِ وَجَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ إِلاَّ مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا وَلَمْ يَنْقُضُوا عَهْدَ اللهِ وَعَهْدَ رَسُولِهِ إِلاَّ سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِى أَيْدِيهِمْ وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللهِ وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ إِلاَّ جَعَلَ اللهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯২২) ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পাঁচটির প্রতিফল পাঁচটি। জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রসূল! পাঁচটির প্রতিফল পাঁচটি কী কী? তিনি বললেন, যে জাতিই (আল্লাহর) প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, সেই জাতির উপরেই তাদের শত্রুকে ক্ষমতাসীন করা হবে। যে জাতিই আল্লাহর অবতীর্ণকৃত সংবিধান ছাড়া অন্য দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, সেই জাতির মাঝেই দরিদ্রতা ব্যাপক হবে। যে জাতির মাঝে অশ্লীলতা (ব্যভিচার) প্রকাশ পাবে, সে জাতির মাঝেই মৃত্যু ব্যাপক হবে। যে জাতিই যাকাত দেওয়া বন্ধ করবে, সেই জাতির জন্যই বৃষ্টি বন্ধ করে দেওয়া হবে। যে জাতি দাঁড়ি-মারা শুরু করবে, সে জাতি ফসল থেকে বঞ্চিত হবে এবং দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হবে।
عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِي اللهُ تَعَالَى عَنهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ (خَمْسٌ بِخَمْسٍ) قَالُوْا: يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا خَمْسٌ بِخَمْسٍ؟ قَالَ مَا نَقَضَ قَوْمٌ الْعَهْدَ إِلا سُلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوُّهُمْ وَمَا حَكَمُوا بِغَيْرِ مَا أَنْزَلَ اللهُ إِلا فَشَا فِيهِمُ الْفَقْرُ وَلا ظَهَرَتْ فِيهِمُ الْفَاحِشَةُ إِلا فَشَا فِيهِمُ الْمَوْتُ وَلا طفَّفُوا الْمِكْيَالَ إِلا مُنِعُوا النَّبَاتَ وَأُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَلا مَنَعُوا الزَّكَاةَ إِلا حُبِسَ عَنهُمُ الْقَطْرُ
পরিচ্ছেদঃ যাকাতের অপরিহার্যতা এবং তার ফযীলত
(৯২৩) বুরাইদাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখনই কোন ব্যক্তি কিছু সাদকা বের করে, তখনই সে ৭০টি শয়তানের চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেয়। অর্থাৎ, যাকাত ও সাদকা বের করার সময় মানুষ শয়তান কর্তৃক চরমভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
عَن بُرَيْدَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا يُخْرِجُ رَجُلٌ شَيْئًا مِنْ الصَّدَقَةِ حَتَّى يَفُكَّ عَنهَا لَحْيَيْ سَبْعِينَ شَيْطَانًا
পরিচ্ছেদঃ দানশীলতা এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে পুণ্য কাজে ব্যয় করার বিবরণ
মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَا أنْفَقْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهُ
অর্থাৎ, তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন। (সূরা সাবা’ ৩৯ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ فَلأنْفُسِكُمْ وَمَا تُنْفِقُونَ إِلاَّ ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللهِ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأنْتُمْ لاَ تُظْلَمُونَ
অর্থাৎ, তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারের জন্যই। আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমরা দান করো না। আর তোমরা যা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না। (সূরা বাক্বারাহ ২৭২ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেন,
وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ فإنَّ اللهَ بِهِ عَلِيمٌ
অর্থাৎ, আর তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। (সূরা বাকারাহ ২৭৩)
(৯২৪) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেবলমাত্র দু’টি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায় (১) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে হক পথে অকাতরে দান করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং (২) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ হিকমত দান করেছেন, অতঃপর সে তার দ্বারা ফায়সালা করে ও তা শিক্ষা দেয়।
وعَن ابنِ مَسْعُوْدٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لا حَسَدَ إِلاَّ في اثْنَتَيْنِ : رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ في الحَقّ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ حِكْمَةً فَهُوَ يَقْضِي بِهَا ويُعَلِّمُهَا متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ দানশীলতা এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে পুণ্য কাজে ব্যয় করার বিবরণ
(৯২৫) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে আছে, যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার ওয়ারেসের সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে? তাঁরা জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের মাঝে এমন কোন ব্যক্তি কেউ নেই, যে তার নিজের সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে না। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তাই, যা সে আগে পাঠিয়েছে। আর এ ছাড়া যে মাল বাকী থাকবে, তা হল ওয়ারেসের মাল।
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺأيُّكُم مَالُ وَارِثِهِ أحبُّ إِلَيْهِ مِنْ مَالِهِ ؟ قَالُوْا: يَا رَسُولَ اللهِ مَا مِنَّا أحَدٌ إِلاَّ مَالُهُ أحَبُّ إِلَيْهِ قَالَ فإنَّ مَالَهُ مَا قَدَّمَ وَمَالَ وَارِثِهِ مَا أخَّرَ رواه البخاري
পরিচ্ছেদঃ দানশীলতা এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে পুণ্য কাজে ব্যয় করার বিবরণ
(৯২৬) আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ করে হয়! (যদি এক টুকরা খেজুরও না পাও, তবে উত্তম কথা বলে।)
عَن عَدِي بنِ حَاتِمٍ قَالَ : سَمِعْتُ النَّبيَّ ﷺ يَقُولُ اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ مُتَّفَقٌ عليه