পরিচ্ছেদঃ ৮১/১. সুস্থতা আর অবসর, আখিরাতের জীবনই সত্যিকারের জীবন।
৬৪১২. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন দু’টি নিয়ামত আছে, যে দু’টোতে অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর। ’আব্বাস আম্বরী (রহ.) .....সা’ঈদ ইবনু আবূ হিন্দ (রহ.) থেকে ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ রকমই হাদীস বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭০)
بَاب ما جاءَ في الصِّحَّةِ والفَراغِ وأنْ : « لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَةِ»
الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدٍ هُوَ ابْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنْ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ قَالَ عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ عَنْ أَبِيهِ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ.
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। যে কোনো মুসলিম ব্যক্তির উচিত সে, যেন তার ভালো স্বাস্থ্য এবং সচ্ছলতা প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা অনুযায়ী কল্যাণদায়ক এবং বৈধ ও হালাল রুজি উপার্জনের কাজে ব্যবহার করে।
২। যে কোনো মুসলিম ব্যক্তির উচিত সে, যখন রোগহীন শরীরের ভালো স্বাস্থ্য এবং আনন্দদায়ক সচ্ছলতার নেয়ামত লাভ করবে, তখন সে যেন মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞ ব্যক্তি হওয়ার নিদর্শন হলো: মহান আল্লাহর নির্দেশগুলি মেনে চলা, তাঁর বারণকৃত বিষয়গুলি হতে বিরত থাকা। আর এই বিষয়ে যে, ব্যক্তি অবহেলা করবে, সেই ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে ধোঁকায় পতিত হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩। প্রকৃতপক্ষে ধোঁকায় পতিত হওয়ার অর্থ হলো: হতাশ হওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং দুর্ভাগা হওয়া। সুতরাং যে ব্যক্তি রোগহীন শরীর ও ভালো স্বাস্থ্য পাবে এবং আনন্দদায়ক সচ্ছলতার মহানেয়ামত লাভ করবে। অতঃপর এই মহানেয়ামত নষ্ট করবে এবং তার দ্বারা উপকৃত হবে না। আর সেই মহানেয়ামত প্রাপ্ত হওয়ার কারণে মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না, সে নিজেই হতাশ হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রতারিত হয়ে দুর্ভাগা হবে।
Narrated Ibn `Abbas:
The Prophet (ﷺ) said, "There are two blessings which many people lose: (They are) Health and free time for doing good."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/১. সুস্থতা আর অবসর, আখিরাতের জীবনই সত্যিকারের জীবন।
৬৪১৩. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আয় আল্লাহ্! আখিরাতের জীবনই সত্যিকারের জীবন। কাজেই আপনি আনসার আর মুহাজিরদের কল্যাণ করুন। [২৮৩৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭১)
بَاب ما جاءَ في الصِّحَّةِ والفَراغِ وأنْ : « لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَةِ»
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ" اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَة، فَأَصْلِحِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَة ".
Narrated Anas:
The Prophet (ﷺ) said, "O Allah! There is no life worth living except the life of the Hereafter, so (please) make righteous the Ansar and the Emigrants."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/১. সুস্থতা আর অবসর, আখিরাতের জীবনই সত্যিকারের জীবন।
৬৪১৪. সাহল ইবনু সা’ঈদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খন্দকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি (মাটি) খনন করছিলেন এবং আমরা মাটি সরিয়ে দিচ্ছিলাম। তিনি আমাদের দেখছিলেন। তখন তিনি বলছিলেনঃ হে আল্লাহ্! আখিরাতের জীবনই সত্যিকারের জীবন। কাজেই আপনি আনসার ও মুহাজিরদেরকে ক্ষমা করুন।[1] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭২)
بَاب ما جاءَ في الصِّحَّةِ والفَراغِ وأنْ : « لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَةِ»
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ، حَدَّثَنَا الْفُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ السَّاعِدِيُّ، كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْخَنْدَقِ وَهْوَ يَحْفِرُ وَنَحْنُ نَنْقُلُ التُّرَابَ وَيَمُرُّ بِنَا فَقَالَ " اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَهْ، فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَهْ ". تَابَعَهُ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ.
Narrated Sahl bin Sa`d As-Sa`idi:
We were in the company of Allah's Messenger (ﷺ) in (the battle of) Al-Khandaq, and he was digging the trench while we were carrying the earth away. He looked at us and said, "O Allah! There is no life worth living except the life of the Hereafter, so (please) forgive the Ansar and the Emigrants."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/২. আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার উদাহরণ।
وَقَوْلِهِ تَعَالَى: (أَنَّمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَزِيْنَةٌ وَتَفَاخُرٌ بَيْنَكُمْ وَتَكَاثُرٌ فِي الْأَمْوَالِ وَالأَوْلَادِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُه” ثُمَّ يَهِيْجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُوْنُ حُطَامًا وَفِي الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِنْ اللهِ وَرِضْوَانٌ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُوْرِ)
আল্লাহর বাণীঃ ’’তোমরা জেনে রেখ, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার আর ধন-মাল ও সন্তানাদিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। তার উদাহরণ হল বৃষ্টি, আর তা হতে উৎপন্ন শষ্যাদি কৃষকের মনকে আনন্দে ভরে দেয়, তারপর তা পেকে যায়, তখন তুমি তাকে হলুদ বর্ণ দেখতে পাও, পরে তা খড় ভুষি হয়ে যায়। (আর আখিরাতের চিত্র অন্যরকম, পাপাচারীদের জন্য), আখিরাতে আছে কঠিন শাস্তি, (আর নেক্কারদের জন্য আছে) আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোঁকার বস্তু ছাড়া আর কিছুই না।’’ (সূরাহ আল-হাদীদ ৫৭/২০)
৬৪১৫. সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, জান্নাতের মাঝে এক চাবুক পরিমিত জায়গা দুনিয়া এবং তার মাঝে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। আর আল্লাহর পথে সকালের এক মুহূর্ত কিংবা বিকালের (সন্ধ্যা) এক মুহূর্ত দুনিয়া ও তার মাঝে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। [২৭৯৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৩)
بَاب مَثَلِ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ سَهْلٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَوْضِعُ سَوْطٍ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا وَلَغَدْوَةٌ فِي سَبِيلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِنْ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا.
Narrated Sahl:
I heard the Prophet (ﷺ) saying, "A (small) place equal to an area occupied by a whip in Paradise is better than the (whole) world and whatever is in it; and an undertaking (journey) in the forenoon or in the afternoon for Allah's Cause, is better than the whole world and whatever is in it."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৩. নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাণীঃ দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী।
৬৪১৬. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমার দু’ কাঁধ ধরে বললেনঃ তুমি দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী।
আর ইবনু ’উমার (রাঃ) বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের আর অপেক্ষা করো না এবং সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার আর অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার সময় তোমার পীড়িত অবস্থার জন্য প্রস্তুতি লও। আর তোমার জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি লও। [1] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৬৮, ই.ফা ৫৯৭৪)
بَاب قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَبُو المُنْذِرِ الطُّفَاوِيُّ عَنْ سُلَيْمَانَ الأَعْمَشِ قَالَ حَدَّثَنِي مُجَاهِدٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بِمَنْكِبِي فَقَالَ كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَقُولُ إِذَا أَمْسَيْتَ فَلاَ تَنْتَظِرْ الصَّبَاحَ وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تَنْتَظِرْ الْمَسَاءَ وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ.
হাদীসটি থেকে শিক্ষণীয় :
(১) শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষা বা উপদেশ দেয়ার সময় মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য ছাত্রের কোন অঙ্গ ধরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাউকে আকৃষ্ট করার জন্য এমন করা হয় ।
(২) একজনকে সম্বোধন করা হলেও সবাইকে উদ্দেশ্য নেয়া।
(৩) উম্মতের কল্যাণ হবে এমন প্রত্যেক কাজের প্রতি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র আগ্রহ।
(৪) দুনিয়াদারী ত্যাগ করা এবং যা অপরিহার্য তার প্রতি সীমাবদ্ধ থাকার উৎসাহ প্রদান।
(ফাতহুল বারী)
Narrated Mujahid:
`Abdullah bin `Umar said, "Allah's Messenger (ﷺ) took hold of my shoulder and said, 'Be in this world as if you were a stranger or a traveler." The sub-narrator added: Ibn `Umar used to say, "If you survive till the evening, do not expect to be alive in the morning, and if you survive till the morning, do not expect to be alive in the evening, and take from your health for your sickness, and (take) from your life for your death."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৪. আশা এবং এর দৈর্ঘ্য।
وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: (فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُورِ)، (ذَرْهُمْ يَأْكُلُوا وَيَتَمَتَّعُوا وَيُلْهِهِمُ الأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ).
وَقَالَ عَلِيٌّ ارْتَحَلَتِ الدُّنْيَا مُدْبِرَةً، وَارْتَحَلَتِ الآخِرَةُ مُقْبِلَةً، وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا بَنُونَ، فَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الآخِرَةِ، وَلاَ تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا، فَإِنَّ الْيَوْمَ عَمَلٌ وَلاَ حِسَابَ، وَغَدًا حِسَابٌ وَلاَ عَمَلَ.
(بِمُزَحْزِحِهِ) بِمُبَاعِدِهِ.
আল্লাহর বাণীঃ যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা হল এবং জান্নাতে দাখিল করা হল, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হল, কেননা পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।- (সূরাহ আলে ’ইমরান ৩/১৮৫)। ছেড়ে দাও ওদেরকে, ওরা খেতে থাক আর ভোগ করতে থাক, আর (মিথ্যে) আশা ওদেরকে উদাসীনতায় ডুবিয়ে রাখুক, শীঘ্রই ওরা (ওদের ’আমলের পরিণতি) জানতে পারবে। (সূরাহ আল-হিজর ১৫/৩)। ’আলী (রাঃ) বলেন, এ দুনিয়া পেছনের দিকে যাচ্ছে, আর আখিরাত সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। এ দু’টির প্রতিটির আছে সন্তানাদি। অতএব তোমরা আখিরাতের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হও। দুনিয়ার সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। কারণ, আজ ’আমলের দিন, অতএব হিসাব নেই। আর আগামীকাল হিসাব, কোন ’আমল নেই। [1]
৬৪১৭. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি চতুর্ভুজ আঁকলেন এবং এর মধ্যখানে একটি রেখা টানলেন, যা তাত্থেকে বের হয়ে গেল। তারপর দু’পাশ দিয়ে মধ্যের রেখার সঙ্গে ভেতরের দিকে কয়েকটা ছোট ছোট রেখা মিলালেন এবং বললেন, এ মাঝের রেখাটা হলো মানুষ। আর এ চতুর্ভুজটি হলো তার আয়ু, যা বেষ্টন করে আছে। আর বাইরে বেরিয়ে যাওয়া রেখাটি হলো তার আশা। আর এ ছোট ছোট রেখাগুলো বাধা-বন্ধন। যদি সে এর একটা এড়িয়ে যায়, তবে আরেকটা তাকে দংশন করে। আর আরেকটি যদি এড়িয়ে যায় তবে আরেকটি তাকে দংশন করে। (আধুনিক প্রকাশনী-৫৯৬৯ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৫)
بَاب فِي الأَمَلِ وَطُولِهِ
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ مُنْذِرٍ عَنْ رَبِيعِ بْنِ خُثَيْمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ خَطَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَطًّا مُرَبَّعًا وَخَطَّ خَطًّا فِي الْوَسَطِ خَارِجًا مِنْهُ وَخَطَّ خُطَطًا صِغَارًا إِلَى هَذَا الَّذِي فِي الْوَسَطِ مِنْ جَانِبِهِ الَّذِي فِي الْوَسَطِ وَقَالَ هَذَا الإِنْسَانُ وَهَذَا أَجَلُهُ مُحِيطٌ بِهِ أَوْ قَدْ أَحَاطَ بِهِ وَهَذَا الَّذِي هُوَ خَارِجٌ أَمَلُهُ وَهَذِهِ الْخُطَطُ الصِّغَارُ الأَعْرَاضُ فَإِنْ أَخْطَأَهُ هَذَا نَهَشَهُ هَذَا وَإِنْ أَخْطَأَهُ هَذَا نَهَشَهُ هَذَا.
Narrated `Abdullah:
The Prophet (ﷺ) drew a square and then drew a line in the middle of it and let it extend outside the square and then drew several small lines attached to that central line, and said, "This is the human being, and this, (the square) in his lease of life, encircles him from all sides (or has encircled him), and this (line), which is outside (the square), is his hope, and these small lines are the calamities and troubles (which may befall him), and if one misses him, an-other will snap (i.e. overtake) him, and if the other misses him, a third will snap (i.e. overtake) him."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৪. আশা এবং এর দৈর্ঘ্য।
৬৪১৮. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি রেখা টানলেন এবং বললেন, এটা আশা আর এটা তার আয়ু। মানুষ যখন এ অবস্থার মাঝে থাকে হঠাৎ নিকটবর্তী রেখা (মৃত্যু) এসে যায়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৬)
بَاب فِي الأَمَلِ وَطُولِهِ
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ خَطَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خُطُوطًا فَقَالَ هَذَا الأَمَلُ وَهَذَا أَجَلُهُ فَبَيْنَمَا هُوَ كَذَلِكَ إِذْ جَاءَهُ الْخَطُّ الأَقْرَبُ.
Narrated Anas bin Malik:
The Prophet (ﷺ) drew a few lines and said, "This is (man's) hope, and this is the instant of his death, and while he is in this state (of hope), the nearer line (death) comes to Him."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৫. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ্ তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।
لِقَوْلِهِ: (أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَنْ تَذَكَّرَ وَجَاءَكُمُ النَّذِيرُ)
আল্লাহর বাণীঃ আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি যে, তখন কেউ নাসীহাত গ্রহণ করতে চাইলে নাসীহাত গ্রহণ করতে পারতে? আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিল.....। (সূরাহ ফাতির ৩৫/৩৭)
৬৪১৯. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ যার আয়ু দীর্ঘ করেছেন, এমনকি তাকে ষাট বছরে পৌঁছে দিয়েছেন তার ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৭)
ইবনু আজলান মুকবেরী হতেও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
بَاب مَنْ بَلَغَ سِتِّينَ سَنَةً فَقَدْ أَعْذَرَ اللهُ إِلَيْهِ فِي الْعُمُرِ لِقَوْلِهِ
عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ مُطَهَّرٍ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ عَنْ مَعْنِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْغِفَارِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَعْذَرَ اللهُ إِلَى امْرِئٍ أَخَّرَ أَجَلَهُ حَتَّى بَلَّغَهُ سِتِّينَ سَنَةً تَابَعَهُ أَبُو حَازِمٍ وَابْنُ عَجْلاَنَ عَنْ الْمَقْبُرِيِّ.
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said, "Allah will not accept the excuse of any person whose instant of death is delayed till he is sixty years of age."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৫. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ্ তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।
৬৪২০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দু’টি ব্যাপারে সর্বদা যুবক থাকে। দুনিয়ার প্রতি ভালবাসার ব্যাপারে আর দীর্ঘ আশার ব্যাপারে। আরেকটি হল উচ্চাকাঙ্ক্ষা। লায়স (রহ.) ..... সা’ঈদ ও আবূ সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। [মুসলিম ১২/৩৮, হাঃ ১০৪৬, আহমাদ ১০৫১৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৮)
بَاب مَنْ بَلَغَ سِتِّينَ سَنَةً فَقَدْ أَعْذَرَ اللهُ إِلَيْهِ فِي الْعُمُرِ لِقَوْلِهِ
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَبُو صَفْوَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَزَالُ قَلْبُ الْكَبِيرِ شَابًّا فِي اثْنَتَيْنِ فِي حُبِّ الدُّنْيَا وَطُولِ الأَمَلِ قَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ وَابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدٌ وَأَبُو سَلَمَةَ.
Narrated Abu Huraira:
I heard Allah's Messenger (ﷺ) saying, "The heart of an old man remains young in two respects, i.e., his love for the world (its wealth, amusements and luxuries) and his incessant hope."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৫. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ্ তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।
৬৪২১. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম সন্তানের বয়স বাড়ে আর তার সঙ্গে দু’টি জিনিসও বাড়ে; ধন-মালের প্রতি ভালবাসা আর দীর্ঘ বয়সের আশা। [মুসলিম ১২/৩৮, হাঃ ১০৪৭, আহমাদ ১২১৪৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৭৯)
শু’বাহ (রহঃ) কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
بَاب مَنْ بَلَغَ سِتِّينَ سَنَةً فَقَدْ أَعْذَرَ اللهُ إِلَيْهِ فِي الْعُمُرِ لِقَوْلِهِ
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَكْبَرُ ابْنُ آدَمَ وَيَكْبَرُ مَعَهُ اثْنَانِ حُبُّ الْمَالِ وَطُولُ الْعُمُرِ رَوَاهُ شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। প্রকৃত ইসলাম ধর্মে মালের মহা মর্যাদা রয়েছ এবং মহান আল্লাহ এমন কতকগুলি ইবাদত উপাসনা নির্ধারিত করেছেন, যেই ইবাদত উপাসনাগুলি নির্ভর করে মালের উপর, যেমন:- উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে: জাকাত প্রদান করা, হজ্জ পালন করা এবং মহান আল্লাহর পথে জেহাদ করা ইত্যাদি। এবং সমস্ত মানুষের জীবনধারণের উপায় এবং তাদের জীবনরক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিস অর্জন করার মাধ্যম হলো মাল। এই কারণেই প্রকৃত ইসলাম ধর্ম মাল বর্জন করার উপদেশ প্রদান করে নি, কিন্তু মালের প্রতি সম্মোহিত হয়ে আল্লাহর ইবাদত উপাসনা থেকে বিমুখ হওয়া থেকে সতর্ক করেছে। অনুরূপভাবে প্রকৃত ইসলাম ধর্ম মালের প্রতি অত্যধিক লোভ করা এবং মালের প্রতি ভীষণ আকৃষ্ট হওয়া ঘৃণা করেছে।
২। মহান আল্লাহর ইবাদত উপাসনাতে মানুষের বয়স যতো লম্বা হবে, ততোই সে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে পারবে। এবং পরকালে তার মর্যাদা অতি উচ্চ হবে। কেননা বশি লম্বা বয়স ধরে সৎ কর্ম সম্পাদন করলে সেই সৎ কর্মের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়।
৩। সৎ কর্ম ছাড়া শুধু লম্বা বয়স মানুষের জন্য কল্যাণদায়ক হয় না। তবে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা মেনে চলার সাথে সাথে লম্বা বয়স মানুষের জন্য কল্যাণদায়ক হয়। তাই সৎ কর্ম ছাড়া শুধু লম্বা বয়স প্রাপ্ত হওয়ার বিষয়টিকে প্রকৃত ইসলাম ধর্ম ঘৃণা করেছে। কিন্তু যে ব্যক্তি সৎ কর্ম সম্পাদন করার উদ্দেশ্যে লম্বা বয়স প্রাপ্ত হওয়ার আশা করবে এবং নিজের জীবনকে সৎ কর্মে, মঙ্গলদায়ক কাজে নিয়োজিত করবে আর মানুষের উপকার করার জন্য নিজেকে নিবেদিত করবে, তার লম্বা বয়স প্রাপ্ত হওয়ার আশা করার বিষয়টি উত্তম কর্ম হিসেবেই গণ্য করা হবে।
Narrated Anas bin Malik:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "The son of Adam (i.e. man) grows old and so also two (desires) grow old with him, i.e., love for wealth and (a wish for) a long life."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৬. যে ‘আমলের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়।
৬৪২২. মাহমুদ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা তিনি স্মরণ করেন। আর তিনি বলেন, তাদের ঘরের পানির বালতি থেকে পানি মুখে নিয়ে তিনি তার মুখে ছিটিয়েছিলেন তাও তিনি স্মরণ করেন। [৭৭] (আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮০)
بَاب الْعَمَلِ الَّذِي يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللهِ فِيهِ سَعْدٌ
مُعَاذُ بْنُ أَسَدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ وَزَعَمَ مَحْمُودٌ أَنَّهُ عَقَلَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَقَالَ وَعَقَلَ مَجَّةً مَجَّهَا مِنْ دَلْوٍ كَانَتْ فِي دَارِهِمْ.
Narrated Mahmud bin Ar-Rabi'a:
I remember that the Allah's Messenger (ﷺ) took water from a bucket (which was in our home used for getting water out of well) with his mouth (and threw it on my face).
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৬. যে ‘আমলের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়।
৬৪২৩. তিনি বলেন, ইতবান ইবনু মালিক আনসারীকে, অতঃপর বানী সালিমের এক লোককে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে আমার নিকট এলেন এবং বললেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় যে ব্যক্তি ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলবে এবং এ বিশ্বাস সহকারে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে, আল্লাহ্ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।[1] [৪২৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮০)
بَاب الْعَمَلِ الَّذِي يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللهِ فِيهِ سَعْدٌ
قَالَ سَمِعْتُ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ، ثُمَّ أَحَدَ بَنِي سَالِمٍ قَالَ غَدَا عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " لَنْ يُوَافِيَ عَبْدٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. يَبْتَغِي بِهِ وَجْهَ اللَّهِ، إِلاَّ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ النَّارَ ".
মক্কা নগরীর লোকেরা আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা হিসাবে মানলেও তিনিই যে একমাত্র ইলাহ, যাবতীয় ইবাদাত বন্দেগী লাভের একমাত্র মাবূদ (উপাস্য), সকল ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারী, আইন দাতা, বুদ্ধিদাতা, বিপদে উদ্ধারকর্তা, একমাত্র হুকুম-বিধান দাতা এটা তারা স্বীকার করত না। তারা নানান দেবদেবীর পূজা করত এবং বিশ্ব পরিচালনায় সে সব দেবদেবীকে আল্লাহর অংশীদার মনে করত। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁর নাবীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন, যারা আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ বলে স্বীকার করে নিবে এবং এ বিশ্বাসের উপর অটল থেকে শির্কমুক্ত অবস্থায় মারা যাবে, জাহান্নাম তাদের জন্য হারাম করে দেয়া হবে। নবুয়তের প্রাথমিক অবস্থায় সালাত, সওম, হজ্জ, যাকাত কিছুই ফরয করা হয়নি। সে সময়ে আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ হিসাবে বিশ্বাস করে নেয়াই ছিল বড় কঠিন ব্যাপার। তাই তখন তাওহীদের প্রতি ঈমান আনাই জান্নাতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। অতঃপর যখন উক্ত ইবাদাতগুলো ফরয হিসাবে বিধিবদ্ধ করা হল, তখন শুধুমাত্র ‘আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন মাবূদ নেই’ এর স্বীকৃতি প্রদানই জান্নাতে প্রবেশের জন্য আর যথেষ্ট থাকল না। অতএব এখন আল্লাহর তাওহীদে বিশ্বাস করার অর্থই হল তাঁর যাবতীয় নির্দেশকে মান্য করা। তবে বর্তমানে কেউ যদি নতুনভাবে ইসলাম কবূল করে কোন ফরয ইবাদাত কার্যকর করার আগেই তার মৃত্যু হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এ হাদীস প্রযোজ্য হবে। তাওহীদে বিশ্বাসী কোন লোক যদি এমন অবস্থা ও পরিবেশে বাস করেন যেখানে কোন ফরয এবাদত করা একেবারেই অসম্ভব তবে সেক্ষেত্রেও এ হাদীস প্রযোজ্য হতে পারে। আল্লাহই ভাল জানেন।
Narrated `Utban bin Malik Al-Ansari:
who was one of the men of the tribe of Bani Salim: Allah's Messenger (ﷺ) came to me and said, "If anybody comes on the Day of Resurrection who has said: La ilaha illal-lah, sincerely, with the intention to win Allah's Pleasure, Allah will make the Hell-Fire forbidden for him."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৬. যে ‘আমলের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়।
৬৪২৪. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ বলেন, আমি যখন আমার মু’মিন বান্দার কোন প্রিয়বস্তু দুনিয়া হতে উঠিয়ে নেই আর সে ধৈর্য ধারণ করে, আমার কাছে তার জন্য জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু (প্রতিদান) নেই। [1] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮১)
بَاب الْعَمَلِ الَّذِي يُبْتَغَى بِهِ وَجْهُ اللهِ فِيهِ سَعْدٌ
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ عَمْرٍو عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ يَقُولُ اللهُ تَعَالَى مَا لِعَبْدِي الْمُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ إِذَا قَبَضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبَهُ إِلاَّ الْجَنَّةُ
Narrated Abu Huraira:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "Allah says, 'I have nothing to give but Paradise as a reward to my believer slave, who, if I cause his dear friend (or relative) to die, remains patient (and hopes for Allah's Reward).
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪২৫. ’আমর ইবনু ’আওফ (রাঃ), তিনি বানী ’আমর ইবনু লুওয়াই-এর সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বদরের যুদ্ধেও অংশ গ্রহণ করেন। তিনি বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ ’উবাইদাহ ইবনু জাররাহকে জিযিয়া আদায় করার উদ্দেশে বাহরাইনে প্রেরণ করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহরাইনের অধিবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করেছিলেন এবং তাদের জন্য আলা ইবনু হাযরামী (রাঃ)-কে ’আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। আবূ ’উবাইদাহ (রাঃ) বাহরাইন হতে ধনসম্পদ নিয়ে আসেন, আনসারগণ তাঁর আগমনের সংবাদ শুনলেন এবং ফজরের সালাতে রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে শরীক হলেন। সালাত শেষ হলে তাঁরা তাঁর সামনে এলেন।
তখন তিনি তাঁদের দেখে হেসে দিলেন এবং বললেনঃ আমি মনে করি তোমরা আবূ ’উবাইদাহ (রাঃ)-এর আগমনের খবর শুনেছ এবং তিনি যে মাল নিয়ে এসেছেন তাও (শুনেছ)। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! হাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তোমরা আশা পোষণ কর, যা তোমাদের খুশী করবে। তবে, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের জন্য দারিদ্রের ভয় করছি না বরং ভয় করছি যে, তোমাদের উপর দুনিয়া প্রশস্ত করে দেয়া হবে তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের উপর যেমন দুনিয়া প্রশস্ত করে দেয়া হয়েছিল। আর তোমরা তা পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করবে যেমন তারা তা পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করেছিল। আর তা তোমাদেরকে আখিরাত বিমুখ করে ফেলবে, যেমন তাদেরকে আখিরাত বিমুখ করেছিল।[1] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮২)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عُقْبَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَمْرَو بْنَ عَوْفٍ وَهُوَ حَلِيفٌ لِبَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ كَانَ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ إِلَى الْبَحْرَيْنِ يَأْتِي بِجِزْيَتِهَا وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم هُوَ صَالَحَ أَهْلَ الْبَحْرَيْنِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ الْعَلاَءَ بْنَ الْحَضْرَمِيِّ فَقَدِمَ أَبُو عُبَيْدَةَ بِمَالٍ مِنْ الْبَحْرَيْنِ فَسَمِعَتْ الأَنْصَارُ بِقُدُومِهِ فَوَافَتْهُ صَلاَةَ الصُّبْحِ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا انْصَرَفَ تَعَرَّضُوا لَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم حِينَ رَآهُمْ وَقَالَ أَظُنُّكُمْ سَمِعْتُمْ بِقُدُومِ أَبِي عُبَيْدَةَ وَأَنَّهُ جَاءَ بِشَيْءٍ قَالُوا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَأَبْشِرُوا وَأَمِّلُوا مَا يَسُرُّكُمْ فَوَاللهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ وَلَكِنْ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُبْسَطَ عَلَيْكُمْ الدُّنْيَا كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا وَتُلْهِيَكُمْ كَمَا أَلْهَتْهُمْ.
Narrated `Amr bin `Auf:
(An ally of the tribe of Bani 'Amir bin Lu'ai and one of those who had witnessed the battle of Badr with Allah's Messenger (ﷺ)) Allah's Messenger (ﷺ) sent Abu 'Ubaida bin AlJarrah to Bahrain to collect the Jizya tax. Allah's Messenger (ﷺ) had concluded a peace treaty with the people of Bahrain and appointed Al 'Ala bin Al-Hadrami as their chief; Abu Ubaida arrived from Bahrain with the money. The Ansar heard of Abu 'Ubaida's arrival which coincided with the Fajr (morning) prayer led by Allah's Messenger (ﷺ). When the Prophet (ﷺ) finished the prayer, they came to him. Allah's Messenger (ﷺ) smiled when he saw them and said, "I think you have heard of the arrival of Abu 'Ubaida and that he has brought something." They replied, "Yes, O Allah's Messenger (ﷺ)! " He said, "Have the good news, and hope for what will please you. By Allah, I am not afraid that you will become poor, but I am afraid that worldly wealth will be given to you in abundance as it was given to those (nations) before you, and you will start competing each other for it as the previous nations competed for it, and then it will divert you (from good) as it diverted them." '
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪২৬. ’উকবাহ ইবনু আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, একদিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং উহুদের শহীদদের জন্য সালাত আদায় করলেন, যেমন তিনি মৃতদের জন্য সালাত আদায় করতেন। তারপর মিম্বরে ফিরে এসে বললেনঃ আমি তোমাদের অগ্রবর্তী। আমি তোমাদের সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি এখন আমার ’হাওয্’কে দেখছি। আমাকে তো দুনিয়ার ধনাগারের চাবিসমূহ অথবা দুনিয়ার চাবিসমূহ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের ব্যাপারে এ আশংকা করছি না যে, তোমরা আমার পরে শির্কে লিপ্ত হবে, তবে আমি আশংকা করছি যে, তোমরা দুনিয়ার সম্পদ লাভের জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে। [১৩৪৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৩)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمًا فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ صَلاَتَهُ عَلَى الْمَيِّتِ، ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ " إِنِّي فَرَطُكُمْ وَأَنَا شَهِيدٌ عَلَيْكُمْ، وَإِنِّي وَاللَّهِ لأَنْظُرُ إِلَى حَوْضِي الآنَ، وَإِنِّي قَدْ أُعْطِيتُ مَفَاتِيحَ خَزَائِنِ الأَرْضِ ـ أَوْ مَفَاتِيحَ الأَرْضِ ـ وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا بَعْدِي، وَلَكِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنَافَسُوا فِيهَا ".
Narrated `Uqba bin 'Amir:
The Prophet (ﷺ) went out and offered the funeral prayer for the martyrs of the (battle of) Uhud and then ascended the pulpit and said, "I am your predecessor and I am a witness against you. By Allah, I am now looking at my Tank-lake (Al-Kauthar) and I have been given the keys of the treasures of the earth (or the keys of the earth). By Allah! I am not afraid that after me you will worship others besides Allah, but I am afraid that you will start competing for (the pleasures of) this world."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪২৭. আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ ব্যাপারেই সর্বাধিক আশংকা করছি যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য যমীনের বারাকাতসমূহ প্রকাশিত করে দেবেন। জিজ্ঞেস করা হলো, যমীনের বারাকাতসমূহ কী? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার চাকচিক্য। তখন এক ব্যক্তি তাঁর কাছে বললেন, কল্যাণ কি অকল্যাণ নিয়ে আসবে? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন, যাতে আমরা ধারণা করলাম যে, তাঁর উপর ওয়াহী নাযিল হচ্ছে। এরপর তিনি তাঁর কপাল থেকে ঘাম মুছে জিজ্ঞেস করলেন, প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, যখন এটি প্রকাশ পেল, তখন আমরা প্রশ্নকারীর প্রশংসা করলাম।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কল্যাণ কেবল কল্যাণই বয়ে আনে। নিশ্চয়ই এ ধনদৌলত সবুজ সুমিষ্ট। অবশ্য বসন্ত যে সবজি উৎপাদন করে, তা ভক্ষণকারী পশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় অথবা মৃত্যুর নিকটবর্তী করে, তবে যে প্রাণী পেট ভরে খেয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে জাবর কাটে, মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং আবার খায় (এর অবস্থা ভিন্ন)। এ পৃথিবীর ধনদৌলত তেমন সুমিষ্ট। যে ব্যক্তি তা সৎভাবে গ্রহণ করবে এবং সৎভাবে ব্যয় করবে, তা তার খুবই উপকারী হবে। আর যে তা অন্যায়ভাবে গ্রহণ করবে, সে ঐ ব্যক্তির মত যে খেতে থাকে কিন্তু পরিতৃপ্ত হয় না।[1] [৯২১; মুসলিম ১২/৪১, হাঃ ১০৫২, আহমাদ ১১১৫৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৪)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَكْثَرَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ مَا يُخْرِجُ اللَّهُ لَكُمْ مِنْ بَرَكَاتِ الأَرْضِ ". قِيلَ وَمَا بَرَكَاتُ الأَرْضِ قَالَ " زَهْرَةُ الدُّنْيَا ". فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ هَلْ يَأْتِي الْخَيْرُ بِالشَّرِّ فَصَمَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ يُنْزَلُ عَلَيْهِ، ثُمَّ جَعَلَ يَمْسَحُ عَنْ جَبِينِهِ فَقَالَ " أَيْنَ السَّائِلُ ". قَالَ أَنَا. قَالَ أَبُو سَعِيدٍ لَقَدْ حَمِدْنَاهُ حِينَ طَلَعَ ذَلِكَ. قَالَ " لاَ يَأْتِي الْخَيْرُ إِلاَّ بِالْخَيْرِ، إِنَّ هَذَا الْمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ، وَإِنَّ كُلَّ مَا أَنْبَتَ الرَّبِيعُ يَقْتُلُ حَبَطًا أَوْ يُلِمُّ، إِلاَّ آكِلَةَ الْخَضِرَةِ، أَكَلَتْ حَتَّى إِذَا امْتَدَّتْ خَاصِرَتَاهَا اسْتَقْبَلَتِ الشَّمْسَ، فَاجْتَرَّتْ وَثَلَطَتْ وَبَالَتْ، ثُمَّ عَادَتْ فَأَكَلَتْ، وَإِنَّ هَذَا الْمَالَ حُلْوَةٌ، مَنْ أَخَذَهُ بِحَقِّهِ وَوَضَعَهُ فِي حَقِّهِ، فَنِعْمَ الْمَعُونَةُ هُوَ، وَمَنْ أَخَذَهُ بِغَيْرِ حَقِّهِ، كَانَ الَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ ".
(১) বক্তার চারপাশে শ্রোতাদের বসা এবং পার্থিব কোন বিষয়ের প্রতিযোগিতা থেকে ভীতি প্রদর্শন।
(২) জটিল কোন বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা এবং বিরোধ নিরসনের জন্য প্রমাণ চাওয়া।
(৩) রাসূল (সাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি তার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য ওয়াহীর অপেক্ষা করতেন।
(৪) যদি কোন বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার প্রয়োজন হয় তবে সে ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে উত্তর দেয়া পরিহার করা। (ফাতহুল বারী)
Narrated Abu Sa`id Al-Khudri:
Allah's Messenger (ﷺ) said, "The thing I am afraid of most for your sake, is the worldly blessings which Allah will bring forth to you." It was said, "What are the blessings of this world?" The Prophet (ﷺ) said, "The pleasures of the world." A man said, "Can the good bring forth evil?" The Prophet (ﷺ) kept quiet for a while till we thought that he was being inspired divinely. Then he started removing the sweat from his forehead and said," Where is the questioner?" That man said, "I (am present)." Abu Sa`id added: We thanked the man when the result (of his question) was such. The Prophet (ﷺ) said, "Good never brings forth but good. This wealth (of the world) is (like) green and sweet (fruit), and all the vegetation which grows on the bank of a stream either kills or nearly kills the animal that eats too much of it, except the animal that eats the Khadira (a kind of vegetation). Such an animal eats till its stomach is full and then it faces the sun and starts ruminating and then it passes out dung and urine and goes to eat again. This worldly wealth is (like) sweet (fruit), and if a person earns it (the wealth) in a legal way and spends it properly, then it is an excellent helper, and whoever earns it in an illegal way, he will be like the one who eats but is never satisfied."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪২৮. ’ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম। তারপর এর পরবর্তী যুগের লোকেরা। তারপর এর পরবর্তী যুগের লোকেরা। ’ইমরান (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দু’বার কি তিনবার বললেন, তা আমার স্মরণ নেই- তারপর এমন লোকেরা আসবে যে, তারা সাক্ষ্য দিবে, অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা খিয়ানতকারী হবে। তাদের নিকট আমানত রাখা হবে না। তারা মানত করে তা পূরণ করবে না। তারা দেখতে মোটা তাজা হবে।[1] [২৬৫১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৫)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جَمْرَةَ قَالَ حَدَّثَنِي زَهْدَمُ بْنُ مُضَرِّبٍ قَالَ سَمِعْتُ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَيْرُكُمْ قَرْنِي ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ قَالَ عِمْرَانُ فَمَا أَدْرِي قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ قَوْلِهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ يَكُونُ بَعْدَهُمْ قَوْمٌ يَشْهَدُونَ وَلاَ يُسْتَشْهَدُونَ وَيَخُونُونَ وَلاَ يُؤْتَمَنُونَ وَيَنْذُرُونَ وَلاَ يَفُونَ وَيَظْهَرُ فِيهِمْ السِّمَنُ.
Narrated Zahdam bin Mudarrib:
`Imran bin Husain said: The Prophet (ﷺ) said, "The best people are my contemporaries (i.e., the present (my) generation) and then those who come after them (i.e., the next generation)." `Imran added: I am not sure whether the Prophet (ﷺ) repeated the statement twice after his first saying. The Prophet (ﷺ) added, "And after them there will come people who will bear witness, though they will not be asked to give their witness; and they will be treacherous and nobody will trust them, and they will make vows, but will not fulfill them, and fatness will appear among them."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪২৯. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বোত্তম হল আমার যুগের লোকেরা। তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যুগের লোকেরা, তারপর উত্তম হল তাদের পরবর্তী যুগের লোকেরা, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যাদের সাক্ষ্য হবে কসমের পূর্বে, আর কসম হবে সাক্ষ্যের পূর্বে। [২৬৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৬)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ مِنْ بَعْدِهِمْ قَوْمٌ تَسْبِقُ شَهَادَتُهُمْ أَيْمَانَهُمْ وَأَيْمَانُهُمْ شَهَادَتَهُمْ ".
Narrated `Abdullah:
The Prophet (ﷺ) said, "The best people are those of my generation, and then those who will come after them (the next generation), and then those who will come after them (i.e. the next generation), and then after them, there will come people whose witness will precede their oaths, and whose oaths will precede their witness."
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪৩০. কায়স (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খাব্বাব (রাঃ) তার পেটে সাতটি উত্তপ্ত লোহার দাগ নেয়ার পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, যদি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু কামনা করা নিষিদ্ধ না করতেন, তাহলে আমি মৃত্যু কামনা করতাম। নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবার অনেকেই (দুনিয়া থেকে কিছু না নিয়েই) চলে গেছেন। অথচ দুনিয়া তাঁদের (আখিরাতের) কোনই ক্ষতি করতে পারেনি। আর আমরা দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, তাই মাটি ব্যতীত আর কোন জায়গা পাচ্ছি না। [৫৬৭২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৭)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
يَحْيَى بْنُ مُوسَى حَدَّثَنَا وَكِيعٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ خَبَّابًا وَقَدْ اكْتَوَى يَوْمَئِذٍ سَبْعًا فِي بَطْنِهِ وَقَالَ لَوْلاَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم نَهَانَا أَنْ نَدْعُوَ بِالْمَوْتِ لَدَعَوْتُ بِالْمَوْتِ إِنَّ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم مَضَوْا وَلَمْ تَنْقُصْهُمْ الدُّنْيَا بِشَيْءٍ وَإِنَّا أَصَبْنَا مِنْ الدُّنْيَا مَا لاَ نَجِدُ لَهُ مَوْضِعًا إِلاَّ التُّرَابَ.
Narrated Qais:
I heard Khabbab, who had branded his `Abdomen with seven brands, saying, "Had Allah's Messenger (ﷺ) not forbidden us to invoke Allah for death, I would have invoked Allah for death. The companions of Muhammad have left this world without taking anything of their reward in it (i.e., they will have perfect reward in the Hereafter), but we have collected of the worldly wealth what we cannot spend but on earth (i.e. on building houses).
পরিচ্ছেদঃ ৮১/৭. দুনিয়ার শোভা ও তার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৬৪৩১. কায়স (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার খাব্বাব (রাঃ)-এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটা দেয়াল তৈরি করছিলেন। তখন তিনি বললেন, আমাদের যেসব সঙ্গীরা দুনিয়া হতে চলে গেছেন, দুনিয়া তাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আর আমরা তাদের পর দুনিয়ার মালধন জোগাড় করেছি, যেগুলোর জন্য আমরা মাটি ভিন্ন আর কোন জায়গা পাচ্ছি না। [৫৬৭২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৯৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৯৮৮)
بَاب مَا يُحْذَرُ مِنْ زَهَرَةِ الدُّنْيَا وَالتَّنَافُسِ فِيهَا
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيلَ قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسٌ قَالَ أَتَيْتُ خَبَّابًا وَهُوَ يَبْنِي حَائِطًا لَهُ فَقَالَ إِنَّ أَصْحَابَنَا الَّذِينَ مَضَوْا لَمْ تَنْقُصْهُمْ الدُّنْيَا شَيْئًا وَإِنَّا أَصَبْنَا مِنْ بَعْدِهِمْ شَيْئًا لاَ نَجِدُ لَهُ مَوْضِعًا إِلاَّ التُّرَابَ.
Narrated Qais:
I came to Khabbab while he was building a wall, and he (Khabbab) said, "Our companions who have left this world, did not enjoy anything of their reward therein, while we have collected after them, much wealth that we cannot spend but on earth (i.e., on building).