ইয়ামন থেকে আগত ১৩ জনের এই প্রতিনিধি দলটি মদীনায় এসে খ্যাতনামা ছাহাবী মিক্বদাদ বিন ‘আমর (রাঃ)-এর বাসার সম্মুখে তাদের উট বসিয়ে দেয়। মিক্বদাদ (রাঃ) বাসায় তাদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা করার কথা বলে বেরিয়ে গিয়ে তাদের অভ্যর্থনা জানান। অতঃপর তাদের ঘরে এনে বসান এবং ‘হাইস’ (حَيْس) নামক উন্নত মানের খানা পরিবেশন করেন। ‘হাইস’ হ’ল খেজুর, ছাতু ও ঘি মিশ্রিত অত্যন্ত সুস্বাদু একপ্রকার খাদ্য। হযরত মিক্বদাদ (রাঃ) একটি পাত্রে করে উক্ত খাদ্যের কিছু অংশ রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য হাদিয়া পাঠান। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা থেকে কিছুটা খেয়ে পাত্রটি ফেরৎ পাঠিয়ে দেন। মিক্বদাদ (রাঃ) দু’বেলা ঐ পাত্রে করে মেহমানদের জন্য খানা পরিবেশন করেন। মেহমানগণ অত্যন্ত তৃপ্তির সাথে উক্ত খাদ্য খেতে থাকেন। একদিন আশ্চর্য হয়ে তারা মেযবানকে বললেন, আমরা শুনেছিলাম মদীনাবাসীর খাদ্য হ’ল ছাতু, যব ইত্যাদি। কিন্তু এখন দেখছি তার উল্টা। সবচাইতে মূল্যবান ও সুস্বাদু খাদ্য আমরা দু’বেলা খাচ্ছি। এরকম খাদ্য তো আমরা কখনো খাইনি’।
জওয়াবে মিক্বদাদ (রাঃ) বললেন, প্রিয় ভাইয়েরা! এসবই আমাদের প্রিয় রাসূল (ছাঃ)-এর বরকত। তিনি ঐ পাত্র থেকে কিছু খেয়ে ফেরত দিয়েছিলেন। আর তাতেই বরকত হয়ে তা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, শেষ হচ্ছে না। একথা শুনে প্রতিনিধি দল বলে উঠল, ‘নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহর রাসূল’। অতঃপর তারা মুসলমান হয়ে যান ও মদীনায় কিছু দিন অবস্থান করেন এবং পবিত্র কুরআন ও ইসলামের হুকুম-আহকাম শিখে ফিরে যান’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৫৭৩)।
[শিক্ষণীয় : অনেক সময় আল্লাহ পাক নবীগণের মু‘জেযার মাধ্যমে অথবা কোন প্রিয় বান্দার প্রতি কারামত প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্য বান্দাকে হেদায়াত দান করে থাকেন। এটা স্রেফ আল্লাহর এখতিয়ারাধীন বিষয়। তিনি যাকে খুশী তাকে দিয়ে এটা করাতে পারেন। এতে ব্যক্তির নিজস্ব কোন এখতিয়ার নেই। সেকারণ এটি শরী‘আতের কোন দলীল নয়।]