৪. ১০. ১. মিথ্যাবাদী ও সন্দেহভাজনদের পরিচয় সংকলন
হাদীসের নামে মিথ্যা চিহ্নিত করার জন্য অন্যতম পদক্ষেপ ছিল মিথ্যাবাদীদের জালিয়াতি পৃথকভাবে সংকলন করা। এক্ষেত্রে প্রথম পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারীদের বিষয়ে সংকলিত গ্রন্থগুলো।
ইসলামের প্রথম শতাব্দীগুলো ছিল ইসলামী জ্ঞান ও বিশেষত হাদীস চর্চার স্বর্ণযুগ। হাজার হাজার শিক্ষার্থী হাদীস শিক্ষা করতেন। শত শত মুহাদ্দিস, ইমাম সমাজে বিদ্যমান। সবাই সনদসহ হাদীস শুনতেন ও শেখাতেন। সনদের মধ্যে উল্লিখিত কোনো ব্যক্তির পরিচয় জানা না থাকলে জেনে নিতেন। সে যুগে মিথ্যাবাদী রাবীদের নাম ও পরিচয় জানা থাকলেই তাদের মিথ্যা ও জালিয়াতী থেকে আত্মরক্ষা করা সম্ভব ছিল। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ হিজরী শতাব্দীতে সংকলিত অনেক হাদীস গ্রন্থই বিষয়ভিত্তিক না সাজিয়ে বর্ণনাকারী রাবী বা সাহাবীর নামের ভিত্তিতে সাজানো হতো। কারণ রাবীর ভিত্তিতেই হাদীসের গ্রহণযোগ্যতা। এছাড়া সবাই সকল হাদীস পড়তেন। শুধুমাত্র নিদিষ্ট বিষয়ের হাদীস পড়ার প্রবণতা তখন ছিল না।
এজন্য আমরা দেখতে পাই যে, দ্বিতীয় হিজরী থেকে ৬ষ্ঠ হিজরী পর্যন্ত ৪ শতাব্দী যাবৎ হাদীসের নামে প্রচারিত ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত মিথ্যা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম কর্ম ছিল দুর্বল ও মিথ্যাবাদী রাবীদের বিষয়ে পৃথক গ্রন্থ রচনা করা। এসকল গ্রন্থে এ শ্রেণীর রাবীদের নাম, পরিচয়, তাদের বর্ণিত কিছু ভুল বা মিথ্যা ‘হাদীস’, তাদের বিষয়ে মুহাদ্দিসগণের তুলনামূলক নিরীক্ষার ফলাফল ও মতামত সংকলিত করা হতো।