লগইন করুন
দুই- সাওম সম্পর্কিয় আরও যে সব বিষয়ের বিধান কতক মানুষের নিকট অস্পষ্ট তা হলো, একজন সাওম পালনকারী আঘাত পেয়ে জখম হলো, তার নাক দিয়ে রক্ত বের হলো, বমি করল, অনিচ্ছাকৃতভাবে তার পেটে পানি চলে গেল ইত্যাদি। এগুলো কোনো কিছুই তার সাওমকে ভঙ্গ করবে না। কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করে বমি করে, তাহলে তার সাওম ভেঙ্গে যাবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ ذَرَعَهُ قَيْءٌ، وَهُوَ صَائِمٌ، فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ، وَإِنْ اسْتَقَاءَ فَلْيَقْضِ»
“সাওম পালন অবস্থায় যার অনিচ্ছায় বমি হয়, তার সাওম ভাঙবে না, আর যে ইচ্ছাকৃত বমি করে তাকে সাওমের কাযা করতে হবে”।[1]
তিন- অনুরূপভাবে যদি কোনো সাওম পালনকারীর গোসল ফরয হওয়ার পর ফরয গোসল করতে সূর্য উদয় পর্যন্ত দেরি করে তবে তারা সাওম ভঙ্গ হবে না। অনুরূপ যদি কোনো ঋতুবতী বা প্রসূতি নারী ফযরের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বে পবিত্র হওয়া সত্বেও সে গোসল না করে এবং সূর্য উদয়ের পর গোসল করে, তাকে অবশ্যই সাওম পালন করতে হবে। গোসল করতে সূর্য উদয় পর্যন্ত দেরি করা সাওম রাখার জন্য কোনো বাধা নয়; কিন্তু তার জন্য এ ধরনের দেরি করা কোন ক্রমেই উচিত নয়। তারপর ওপর ফরয হলো, সূর্যোদয়ের পূর্বে গোসল করে পবিত্র হয়ে ফজরের সালাত আদায় করা। অনুরূপভাবে নাপাক ব্যক্তির জন্য গোসল দেরিতে করা উচিৎ নয়। তার ওপরও ফরয হলো, সূর্য উদয়ের পূর্বে গোসল করা এবং ফজরের সালাত সময় মতো আদায় করা। এ বিষয়ে অলসতা করা কোনো ক্রমেই উচিৎ নয় বরং উচিৎ হলো, গোসল করতে তাড়াহুড়া করা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পবিত্র হয়ে যাওয়া, যাতে ফজরের সালাত জামা‘আতের সাথে আদায় করতে পারে।
চার- অনুরূপভাবে আরও যে সব কারণগুলো সাওম নষ্ট করে না তা হলো, রক্তদান করা, ইনজেকশন দেওয়া যদি তা খাদ্য জাতীয় না হয়। তবে ইনজেকশনকে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেওয়া উত্তম, যদি দেরি করা সম্ভব হয় এবং তাতে কোনো অসুবিধা দেখা না দেয়। অন্যথায় দিনের বেলা দেওয়াতে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ، فَإِنَّ الصِّدْقَ طُمَأْنِينَةٌ، وَإِنَّ الكَذِبَ رِيبَةٌ»
“তুমি সংশয়যুক্ত বিষয় ছেড়ে এমন বিষয় গ্রহণ করো যাতে সন্দেহ ও সংশয় নেই । কারণ, সত্য প্রশান্তি আর মিথ্যা সংশয়”।[2]
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরও বলেন,
فَمَنِ اتَّقَى المُشَبَّهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِه
“যে ব্যক্তি সংশয়যুক্ত বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকল, সে তার দীন ও সম্ভ্রমের সংরক্ষণ করল”।[3]
[2] তিরমিযি, হাদীস নং ২৫১৮
[3] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫২