লগইন করুন
আর যে সব মালামাল ব্যবসার উদ্দেশ্যে সঞ্চয় করা হয়, তা বছর শেষে মূল্য নির্ধারণ করে চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসেবে বের করতে হবে। চাই তার মূল্য স্বর্ণ ও চাঁদির সমপরিমাণ হোক বা না হোক অথবা অধিক হোক। এর প্রমাণ সামুরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন,
«أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُنَا أَنْ نُخْرِجَ الصَّدَقَةَ مِنَ الَّذِي نُعِدُّ لِلْبَيْعِ»
“অতঃপর, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যে সম্পদ ব্যবসার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত রাখা হত, তা থেকে যাকাত বের করার আদেশ দিতেন”।[1]
ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করা যমীন, গাড়ি, বাড়ি, পানির মেশিন ইত্যাদি ব্যবসায়িক পণ্যের অন্তর্ভুক্ত। বছর শেষে মূল্য হিসাব করে এ সব সম্পদের যাকাত অবশ্যই দিতে হবে। যে সব ঘর-বাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে, বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ভাড়ার টাকার ওপর একবছর পূর্ণ হলে অবশ্যই যাকাত দিতে হবে; কিন্তু মূল বাড়ি-ঘরের ওপর যাকাত দিতে হবে না। কারণ, তা ব্যবসার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়নি।
অনুরূপভাবে ভাড়ার গাড়ি ও ব্যবহারিক গাড়ি যদি তা ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করা না হয়, বরং ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ক্রয় করা হয়, তাতে যাকাত দিতে হবে না। আর যদি গাড়ি ভাড়ার টাকা নিসাব পরিমাণ হয় এবং তার ওপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে অবশ্যই তাকে যাকাত দিতে হবে। আর যদি কোনো ব্যক্তি যমীন ক্রয়, বিবাহ, ঋণ পরিশোধ ও খরচা করা ইত্যাদি যে কোনো উদ্দেশ্যে টাকা সঞ্চয় করার পর তা যদি তা নিসাব পরিমাণ হয় এবং তার ওপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই যাকাত দিতে হবে। কারণ, শরী‘আতের দলীলসমূহ এ ধরনের সম্পদের ওপর যাকাত ওয়াজিব হওয়া বিষয়ে ব্যাপক।
অনুরূপভাবে ইয়াতীম ও পাগলের মাল যদি নিসাব পরিমাণ পৌঁছে এবং তার ওপর এক বছর অতিবাহিত হয়, বছর শেষে জমহুর আলেমদের মতে অভিভাবকদের ওপর তাদের পক্ষ থেকে যাকাত দেওয়া ওয়াজিব। যাকাত বিষয়ক দলীলসমূহের ব্যাপকতা এর প্রমাণ। যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে যখন ইয়ামেনের দিকে প্রেরণ করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বলেন,
فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ فِي فُقَرَائِهِمْ،
“তুমি তাদের জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন। যা তাদের ধনীদের থেকে নেওয়া হবে এবং তাদের গরীবদের মধ্যে বণ্টন করা হবে”।[2]
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং১৩৯৫; সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৯