ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন সময়ের দো‘আ সমূহ (الدعوات فى الأوقات) ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
১, ২ ও ৩. (শুভ কাজের শুরুতে)

(ক) খানাপিনা সহ সকল শুভ কাজের শুরুতে বলবে- بِسْمِ اللهِ ‘বিসমিল্লা-হ’ (আল্লাহর নামে শুরু করছি)।[15]
(খ) শেষে বলবে- اَلْحَمْدُ ِللهِ ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।[16]

(গ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা বিসমিল্লাহ বল, যখন তোমরা দরজা-জানালা বন্ধ কর অথবা কোন খাদ্য ও পানীয়ের পাত্রে ঢাকনা দাও। যদি ঢাকনা দেওয়ার কিছু না পাও, তাহ’লে পাত্রের উপর কোন কাঠি বা কাষ্ঠখন্ড রেখে দাও। যার ফলে তা অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ থাকবে। [17]

উল্লেখ্য যে, কোন অন্যায় কাজের শুরুতে ও শেষে ‘বিসমিল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ বলা যাবে না বা আল্লাহর সাহায্য চাওয়া যাবে না। কেননা এগুলি শয়তানের কাজ। আর আল্লাহর অনুগ্রহ কেবল ন্যায় ও সৎ কাজের সাথে থাকে।

২.
(ক)
মঙ্গলজনক কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে,اَلْحَمْدُ ِللهِ‘আলহামদুলিল্লা-হ’
(খ) পসন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে,اَلْحَمْدُ ِللهِ الَّذِيْ بِنِعْمَتِهِ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ ‘আলহামদুলিল্লা-হিল্লাযী বিনি‘মাতিহি তাতিম্মুছ ছা-লিহা-ত’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যার অনুগ্রহে সকল শুভ কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে)।
(গ) অপছন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, اَلْحَمْدُ للهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ ‘আলহামদুলিল্লা-হি ‘আলা কুল্লে হা-ল’ (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)।[18]
(ঘ) বিস্ময়কর কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, سُبْحَانَ اللهِ ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ (মহাপবিত্র তুমি হে আল্লাহ!)। অথবা বলবে,اَللهُ أَكْبَرُ ‘আল্লা-হু আকবার’ (আল্লাহ সবার চেয়ে বড়)।[19]
(ঙ) ভয়ের কারণ ঘটলে বলবে, لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ (আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই)।[20] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন যে, سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ ِللهِ ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদুলিল্লা-হ’ এ দু’টি বাক্য আসমান ও যমীনের মধ্যের ফাঁকা স্থানকে ছওয়াবে পূর্ণ করে দেয়। اَلْحَمْدُ ِِللهِ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ মীযানের পাল্লাকে ছওয়াবে পরিপূর্ণ করে দেয়। [21]

৩. দুঃখজনক কিছু দেখলে, ঘটলে বা শুনলে বলবে,
(ক) إِنَّا ِللهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ ‘ইন্না লিল্লা-হে ওয়া ইন্না ইলাইহে রা-জে’উন’ (আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী)।

(খ) অতঃপর নিজের ব্যাপারে হ’লে বলবে, اَللَّهُمَّ أَجِرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِيْ وَأَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا-

‘আল্লা-হুম্মা আজিরনী ফী মুছীবাতী ওয়া আখলিফলী খায়রাম মিনহা’ (হে আল্লাহ! এই বিপদে তুমি আমাকে আশ্রয় দাও এবং আমাকে এর উত্তম বিনিময় দান কর)।[22] যদি বিপদ সর্বাত্মক হয়, তাহ’লে ‘নী’ (نِىْ)-এর স্থলে ‘না’ (نَا) বলবে।

[15] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১৫৯, ৬১; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪২০২। উল্লেখ্য যে, ঔষধ সেবনের সময় ‘আল্লাহ শাফী, আল্লাহ কাফী’ বলা ভিত্তিহীন। ডাক্তার খানায় বা মেডিকেলে এগুলো লেখা দেখা যায়। যা বর্জনীয়।

[16] . বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১৯৯, ৪২০০, ‘খাদ্য সমূহ’ অধ্যায়-২১, পরিচ্ছেদ-১।

[17] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪২৯৪-৯৬, ‘খাদ্য সমূহ’ অধ্যায়-২১, অনুচ্ছেদ-৫।

[18] . ইবনু মাজাহ হা/৩৮০৩, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-৩৩, অনুচ্ছেদ-৫৫; হাকেম, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৫।

[19] . বুখারী হা/৬২১৮-১৯, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-৭৮, ১২১ অনুচ্ছেদ; ঐ, হা/৪৭৪১, ‘তাফসীর’ অধ্যায় সূরা হজ্জ (২২), অনুচ্ছেদ-১।

[20] . বুখারী হা/৩৫৯৮, ‘মর্যাদা সমূহ’ অধ্যায়-৬১, ‘নবুঅতের আলামত সমূহ’ অনুচ্ছেদ-২৫।

[21] . মুসলিম, মিশকাত হা/২৮১, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, পরিচ্ছেদ-১।

[22] . মুসলিম, মিশকাত হা/১৬১৮, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৩।