লগইন করুন
যে বৈঠকের শেষে সালাম ফিরাতে হয়, তাকে শেষ বৈঠক বলে। এটি ফরয, যা না করলে ছালাত বাতিল হয়। তবে ১ম বৈঠকটি ওয়াজিব, যা ভুলক্রমে না করলে সিজদায়ে সহো ওয়াজিব হয়। ২য় রাক‘আত শেষে বৈঠকে বসবে। যদি ১ম বৈঠক হয়, তবে কেবল ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ে ৩য় রাক‘আতের জন্য উঠে যাবে। [141] আর যদি শেষ বৈঠক হয়, তবে ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো‘আয়ে মাছূরাহ এবং সম্ভব হ’লে অন্য দো‘আ পড়বে।[142] ১ম বৈঠকে বাম পা পেতে তার উপরে বসবে ও শেষ বৈঠকে ডান পায়ের তলা দিয়ে বাম পায়ের অগ্রভাগ বের করে দিয়ে বাম নিতম্বের উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এই সময় ডান পায়ের আঙ্গুলী সমূহের অগ্রভাগ ক্বিবলামুখী থাকবে।[143] জোড়-বেজোড় যেকোন ছালাতের সালামের বৈঠকে নারী-পুরুষ সকলকে এভাবেই বাম নিতম্বের উপর বসতে হয়। একে ‘তাওয়ার্রুক’ (التورك) বলা হয়।[144]
বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলো বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে[145] এবং ডান হাত ৫৩ -এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ থাকবে ও শাহাদাত অঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করবে।[146] বৈঠকের শুরু থেকে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত ইশারা করতে থাকবে।[147] ছাহেবে মির‘আত ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (১৯০৪-৯৪ খৃ:) বলেন, আঙ্গুল ইশারার মাধ্যমে আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেওয়া হয়।[148] দো‘আ পাঠের সময় আকাশের দিকে তাকানো নিষেধ।[149] ইশারার সময় আঙ্গুল দ্রুত নাড়ানো যাবে না, যা পাশের মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নেয়’। [150] ‘আশহাদু’ বলার সময় আঙ্গুল উঠাবে ও ইল্লাল্লা-হ’ বলার পর আঙ্গুল নামাবে’ বলে যে কথা চালু আছে তার কোন ভিত্তি নেই।[151] মুছল্লীর নযর ইশারার বাইরে যাবে না। [152] এই সময় নিম্নোক্ত দো‘আসমূহ পড়বে-
(ক) তাশাহহুদ* (আত্তাহিইয়া-তু) : (পুর্বে উল্লেখ হয়েছে)
নবীকে সম্বোধন:
তাশাহহুদ সম্পর্কিত সকল ছহীহ মরফূ হাদীছে রাসূল (ছাঃ)-কে সম্বোধন সূচক ‘আইয়ুহান্নাবী’ শব্দ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) প্রমুখ কতিপয় ছাহাবী ‘আইয়ুহান্নাবী’-এর পরিবর্তে ‘আলান্নাবী’ বলতে থাকেন। যেমন বুখারী ‘ইস্তীযা-ন’ অধ্যায়ে এবং অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। অথচ সকল ছাহাবী, তাবেঈন, মুহাদ্দেছীন, ফুক্বাহা পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ পড়েছেন। এই মতভেদের কারণ হ’ল এই যে, রাসূলের জীবদ্দশায় তাঁকে সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলা গেলেও তাঁর মৃত্যুর পরে তো আর তাঁকে ঐভাবে সম্বোধন করা যায় না। কেননা সরাসরি এরূপ গায়েবী সম্বোধন কেবল আল্লাহকেই করা যায়। মৃত্যুর পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে এভাবে সম্বোধন করলে তাঁকে আল্লাহ সাব্যস্ত করা হয়ে যায়। সেকারণ কিছু সংখ্যক ছাহাবী ‘আলান্নাবী’ অর্থাৎ ‘নবীর উপরে’ বলতে থাকেন।
পক্ষান্তরে অন্য সকল ছাহাবী পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতে থাকেন। ত্বীবী (মৃ: ৭৪৩ হিঃ) বলেন, এটা এজন্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁদেরকে উক্ত শব্দেই ‘তাশাহহুদ’ শিক্ষা দিয়েছিলেন। তার কোন অংশ তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবর্তন করতে বলে যাননি। অতএব ছাহাবায়ে কেরাম উক্ত শব্দ পরিবর্তনে রাযী হননি। ছাহেবে মির‘আত বলেন, জীবিত-মৃত কিংবা উপস্থিতি-অনুপস্থিতির বিষয়টি ধর্তব্য নয়। কেননা স্বীয় জীবদ্দশায়ও তিনি বহু সময় ছাহাবীদের থেকে দূরে সফরে বা জিহাদের ময়দানে থাকতেন। তবুও তারা তাশাহহুদে নবীকে উক্ত সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতেন। তারা তাঁর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে উক্ত সম্বোধনে কোন হেরফের করতেন না। তাছাড়া বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য ‘খাছ’ বিষয়াবলীর (من خصائصه) অন্তর্ভুক্ত। এটা স্রেফ তাশাহহুদের মধ্যেই পড়া যাবে, অন্য সময় নয়।
উল্লেখ্য যে, এই সম্বোধনের মধ্যে কবর পূজারীদের জন্য কোন সুযোগ নেই। তারা এই হাদীছের দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-কে সর্বত্র হাযির-নাযির প্রমাণ করতে চায় [153] ও মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য তাঁকে ‘অসীলা’ হিসাবে গ্রহণ করতে চায়। এটা পরিষ্কারভাবে ‘শিরকে আকবর’ বা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
এরপর দরূদ পাঠ করবে।
(খ) দরূদ : (পুর্বে উল্লেখ হয়েছে)
জ্ঞাতব্য : দরূদে মুহাম্মাদ (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারকে ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর পরিবারের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এর ফলে মুহাম্মাদ (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে বলে মনে হ’লেও প্রকৃত অর্থে তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কেননা মুহাম্মাদ (ছাঃ) স্বয়ং ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধর এবং মানব জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও সর্বশেষ রাসূল। পিতা ইবরাহীমের সাথে সন্তান হিসাবে তাঁর তুলনা মোটেই অমর্যাদাকর নয়। দ্বিতীয়ত: ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশে হাযার হাযার নবী ছিলেন। কিন্তু মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পরিবারবর্গের মধ্যে কোন নবী না থাকা সত্ত্বেও তাঁদেরকে অগণিত নবী-রাসূল সমৃদ্ধ মহা সম্মানিত ইবরাহীমী বংশের সাথে তুলনা করার মাধ্যমে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পরিবারের মর্যাদা নিঃসন্দেহে বৃদ্ধি করা হয়েছে।[154]
দরূদ -এর ফযীলত : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيْئَاتٍ وَ رُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ، رواه النسائيُّ-
‘যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার উপরে দশটি রহমত নাযিল করেন। তার আমলনামা হ’তে দশটি গুনাহ ঝরে পড়ে ও তার সম্মানের স্তর আল্লাহর নিকটে দশগুণ বৃদ্ধি পায়’।[155]
অতঃপর নিম্নের দো‘আ পাঠ করবে, যা ‘দো‘আয়ে মাছূরাহ’ নামে পরিচিত। এতদ্ব্যতীত জানা মত অন্যান্য দো‘আ পড়বে। এই সময় কুরআনী দো‘আও পড়া যাবে।
(গ) দো‘আয়ে মাছূরাহ [الأدعية المأثورة) [156) [পুর্বে উল্লেখ হয়েছে]
এর পর অন্যান্য দো‘আ সমূহ পড়তে পারে।
তাশাহহুদের শেষে নিম্নোক্ত দো‘আটি পাঠ করার জন্য বিশেষভাবে তাকীদ এসেছে -
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ -
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন্ ‘আযা-বি জাহান্নামা ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ‘আযা-বিল ক্বাব্রে, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-লি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিৎনাতিল মাহ্ইয়া ওয়াল মামা-তি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করছি জাহান্নামের আযাব হ’তে, কবরের আযাব হ’তে, দাজ্জালের ফিৎনা হ’তে এবং জীবন ও মৃত্যুকালীন ফিৎনা হ’তে’। [157]
তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যেকার দো‘আ সমূহের শেষে আললাহর রাসূল (ছাঃ) নিম্নের দো‘আ পড়তেন :
اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِيْ مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّيْ أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لآ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
(১) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখখারতু, অমা আসরারতু অমা আ‘লানতু, অমা আসরাফতু, অমা আনতা আ‘লামু বিহী মিন্নী; আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখখিরু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা’ ।
অনুবাদ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বাপর গোপন ও প্রকাশ্য সকল গোনাহ মাফ কর (এবং মাফ কর ঐসব গোনাহ) যাতে আমি বাড়াবাড়ি করেছি এবং ঐসব গোনাহ যে বিষয়ে তুমি আমার চাইতে বেশী জানো। তুমি অগ্র-পশ্চাতের মালিক। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই’।[158]
(২) اَللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনান্না-র’ (হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ চাচ্ছি)।[159]
তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে দো‘আ বিষয়ে জ্ঞাতব্য:
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন দো‘আ পড়তেন।[160] ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত তাশাহহুদে (অর্থাৎ আত্তাহিইয়াতু)-এর শেষে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ثُمَّ لِيَتَخَيَّرْ مِنَ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فَيَدْعُوْهُ- ‘অতঃপর দো‘আ সমূহের মধ্যে যে দো‘আ সে পসন্দ করে, তা করবে’।[161] এ কথার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণের মধ্যে একদল বলেছেন, এ সময় গোনাহ নেই এবং আদবের খেলাফ নয়, দুনিয়া ও আখেরাতের এমন সকল প্রকার দো‘আ করা যাবে। পক্ষান্তরে অন্যদল বলেছেন, কুরআন-হাদীছে বর্ণিত দো‘আ সমূহের মাধ্যমেই কেবল প্রার্থনা করতে হবে। কেননা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমাদের এই ছালাতে মানুষের সাধারণ কথা-বার্তা বলা চলে না। এটি কেবল তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠ মাত্র’।[162]
বর্ণিত উভয় হাদীছের মধ্যে সামঞ্জস্য এটাই হ’তে পারে যে, অন্যের উদ্দেশ্যে নয় এবং আদবের খেলাফ নয়, আল্লাহর নিকট এমন সকল দো‘আ করা যাবে। তবে ছালাতের পুরা অনুষ্ঠানটিই যেহেতু আরবী ভাষায়, সেহেতু অনারবদের জন্য নিজেদের তৈরী করা আরবীতে প্রার্থনা করা নিরাপদ নয়। দ্বিতীয়ত: সর্বাবস্থায় সকলের জন্য হাদীছের দো‘আ পাঠ করাই উত্তম। কিন্তু যখন দো‘আ জানা থাকে না, তখন তার জন্য সবচেয়ে উত্তম হবে প্রচলিত দো‘আয়ে মাছূরাহ (আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু...) শেষে নিম্নের দো‘আটির ন্যায় যে কোন একটি সারগর্ভ দো‘আ পাঠ করা, যা দুনিয়া ও আখেরাতের সকল প্রয়োজনকে শামিল করে। আনাস (রাঃ) বলেন, এ দো‘আটি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ সময় পড়তেন।-
اَللَّهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ، أو اَللَّهُمَّ آتِنَا فِى الدُّنْيَا...
আল্লা-হুম্মা রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আ-খিরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা-বান্না-র’ । অথবা আল্লা-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া ..।
‘হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দাও ও আখেরাতে মঙ্গল দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও’। [163] এ সময় দুনিয়াবী চাহিদার বিষয়গুলি নিয়তের মধ্যে শামিল করবে। কেননা আল্লাহ বান্দার অন্তরের খবর রাখেন ও তার হৃদয়ের কান্না শোনেন’।[164] দো‘আর সময় নির্দিষ্টভাবে কোন বিষয়ে নাম না করাই ভাল। কেননা ভবিষ্যতে বান্দার কিসে মঙ্গল আছে, সেটা আল্লাহ ভাল জানেন।[165]
(ঘ) সালাম : দো‘আয়ে মাছূরাহ ও অন্যান্য দো‘আ শেষে ডাইনে ও বামে ‘আস্সালা-মু আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লা-হ’ বলবে।[166] কেবল ডাইনে সালামের শেষদিকে ‘ওয়া বারাকা-তুহূ’ বৃদ্ধি করা যাবে। [167] দু’দিকে নয়।[168] অতঃপর একবার সরবে ‘আল্লা-হু আকবার’[169] এবং তিনবার ‘আসতাগ্ফিরুল্লা-হ’ ও একবার‘আল্লা-হুম্মা আনতাস সালা-মু ওয়া মিনকাস সালা-মু, তাবা-রক্তা ইয়া যাল জালা-লে ওয়াল ইকরা-ম’ বলবে। এটুকু পড়েই উঠে যেতে পারে।[170] অতঃপর ডাইনে অথবা বামে ঘুরে সরাসরি মুক্তাদীগণের দিকে ফিরে বসবে। [171] ডান দিক দিয়ে ফেরার সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কখনো পড়েছেন, رَبِّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ ‘রবেব ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ইবা-দাকা’ (হে আমার প্রতিপালক! তোমার আযাব হ’তে আমাকে বাঁচাও! যেদিন তোমার বান্দাদের তুমি পুনরুত্থান ঘটাবে)।[172]
[142] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৯; মির‘আত ১/৭০৪; ঐ, পৃঃ ৩/২৯৪-৯৫, হা/৯৪৭, ৯৪৯।
[143] . বুখারী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৭৯২,৮০১; নায়ল ৩/১৪৩-৪৫ ‘তাশাহহুদে বসার নিয়ম’ অনুচ্ছেদ।
[144] . ছহীহ ইবনু হিববান হা/১৮৬২,৬৭,৭৩; বুখারী হা/৮২৮, আবুদাঊদ হা/৭৩০; ঐ, মিশকাত হা/৭৯১, ৮০১।
[145] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯০৭ ‘তাশাহহুদ’ অনুচ্ছেদ-১৫।
[146] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯০৬, ৯০৮। ৫৩ -এর ন্যায় অর্থ কনিষ্ঠা, অনামিকা ও মধ্যমা অঙ্গুলী মুষ্টিবদ্ধ করা ও বৃদ্ধাঙ্গুলীকে তাদের সাথে মিলানো এবং শাহাদাত অঙ্গুলীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া।
[147] . মির‘আত ৩/২২৯; আলবানী, মিশকাত হা/৯০৬ -এর টীকা।
[148] . মির‘আত ৩/২২৯ পৃঃ।
[149] . নাসাঈ হা/১২৭৬; মুসলিম, মিশকাত হা/৯৮৩, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-১৯।
[150] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৭৫৭ ‘সতর’ অনুচ্ছেদ-৮ ; মির‘আত হা/৭৬৩, ১/৬৬৯ পৃঃ, ঐ, ২/৪৭৩ পৃঃ।
[151] . আলবানী, মিশকাত হা/৯০৬-এর টীকা-২ দ্রষ্টব্য; ঐ, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী, পৃঃ ১৪০; মির‘আত ৩/২২৯।
[152] . আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৯১৭, ৯১১; আবুদাঊদ হা/৯৯০; নাসাঈ হা/১২৭৫; মিশকাত হা/৯১২।
* ক্বাযী ‘আয়ায (৪৭৬-৫৪৪ হিঃ) বলেন, আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য এবং শেষনবীর রিসালাতের সাক্ষ্য শামিল থাকায় অন্য দো‘আ সমূহের উপর প্রাধান্যের কারণে যিকরের এই বিশেষ অনুষ্ঠানটিকে সামষ্টিক ভাবে তাশাহহুদ বলা হয়’। -মির‘আত ৩/২২৭।
[153] . মির‘আত ১/৬৬৪-৬৫; ঐ, ৩/২৩৩-৩৪, হা/৯১৫ -এর ভাষ্য দ্রঃ।
[154] . মির‘আত ১/৬৭৮-৬৮০; ঐ, ৩/২৫৩-৫৫।
[155] . নাসাঈ, মিশকাত হা/৯২২, ‘নবীর উপরে দরূদ ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৬।
[156] . ‘মাছূরাহ’ অর্থ ‘হাদীছে বর্ণিত’। সেই হিসাবে হাদীছে বর্ণিত সকল দো‘আই মাছূরাহ। কেবলমাত্র অত্র দো‘আটি নয়। তবে এ দো‘আটিই এদেশে ‘দো‘আয়ে মাছূরাহ’ হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। -লেখক।
[157] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৪০-৪১।
[158] . মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘তাকবীরের পরে কি পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১।
[159] . আবুদাঊদ হা/৭৯৩, ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-১২৮; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৮৬৫।
[160] . মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩ ‘তাকবীরের পর যা পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১; নববী, রিয়াযুছ ছালেহীন ‘যিকর’ অধ্যায় হা/১৪২৪।
[161] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯০৯; মির‘আত হা/৯১৫, ৩/২৩৫।
[162] . মুসলিম, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৭৮ ‘ছালাতের মাঝে যে সকল কাজ অসিদ্ধ এবং যা সিদ্ধ’ অনুচ্ছেদ-১৯ ; মির‘আত হা/৯৮৫, ৩/৩৩৯-৪০ পৃঃ।
[163] . বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; বাক্বারাহ ২/২০১; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৮৭ ‘দো‘আসমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘সারগর্ভ দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-৯।
[164] . আলে ইমরান ৩/১১৯, ৩৮; ইবরাহীম ১৪/৩৯; গাফির/মুমিন ৪০/১৯।
[165] . বাক্বারাহ ২/২১৬।
[166] . আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৯৫০, ‘তাশাহহুদে দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-১৭।
[167] . আবুদাঊদ, ইবনু খুযায়মা, ছিফাত, পৃঃ ১৬৮।
[168] . আলবানী, তামামুল মিন্নাহ ১৭১ পৃঃ।
[169] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৫৯; বুখারী ফাৎহসহ হা/৮৪১-৪২।
[170] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬০, ‘ছালাত পরবর্তী যিকর’ অনুচ্ছেদ-১৮।
[171] . বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৯৪৪-৪৬; মির‘আত হা/৯৫১-৫৪ -এর ব্যাখ্যা, ৩/৩০০-০৪।
[172] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৪৭ ‘তাশাহহুদে দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-১৭।