লগইন করুন
২১. দু‘আর সময় শাহাদত আঙ্গুলি দিয়ে ইশারা করা
দু‘আর সময় হাত উঠানোর অনুরূপ আরেকটি মাসনূন পদ্ধতি দু‘আর সময় ডান হাতের শাহাদত আঙ্গুলি উঠিয়ে কিবলার দিকে
রেখে ইশারা করা। সালাতের মধ্যে ও সালাতের বাইরে দু‘আর সময় এভাবে ইশারা করার বিষয়ে কতগুলি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদীসে ইবনু আব্বাস(রাঃ) বলেন,রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
الْمَسْأَلَةُ أَنْ تَرْفَعَ يَدَيْكَ حَذْوَ مَنْكِبَيْكَ أَوْ نَحْوِهِمَا وَالِاسْتِغْفَارُ أَنْ تُشِيرَ بِأُصْبُعٍ وَاحِدَةٍ وَالِابْتِهَالُ أَنْ تَمُدَّ يَدَيْكَ جَمِيعًا
“প্রার্থনা করা এই যে, তুমি তোমার দুই হাত তোমার দুই কাঁধ বরাবর বা কাছাকাছি উঠাবে। আর ইস্তিগফার এই যে, তুমি তোমার একটি আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করবে। আর ইবতিহাল বা কাকুতি মিনতি করে প্রার্থনা করা এই যে, তুমি তোমার দুই হাতই সামনে এগিয়ে দেবে।” হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য।[1]
এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। শুধু একটি আঙ্গুল, ডান হাতের শাহাদত আঙ্গুল দিয়ে কিবলার দিকে ইশারা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইশারার সময়, বিশেষত সালাতের মধ্যে দু‘আর সময় আঙ্গুলটি সোজা কিবলামুখী করে রাখতেন এবং নিজের দৃষ্টিকে আঙ্গুলের উপরে রাখতেন। তিনি এই সময় আঙ্গুল নাড়াতেন না।[2]
২২. দু‘আর সময় দৃষ্টি নত রাখা
দু‘আর মধ্যে বিনয়ের একটি দিক দৃষ্টি নত রাখা। বেয়াদবের মতো উপরের দিকে তাকিয়ে দু‘আ করতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। বিশেষত সালাতের মধ্যে দু‘আর সময় উপরের দিকে নজর করতে হাদীসে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
لَيَنْتَهِيَنَّ أَقْوَامٌ عَنْ رَفْعِهِمْ أَبْصَارَهُمْ عِنْدَ الدُّعَاءِ فِي الصَّلَاةِ إِلَى السَّمَاءِ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ
“যে সমস্ত মানুষেরা সালাতের মধ্যে দু‘আর সময় উপরের দিকে দৃষ্টি দেয় তারা যেন অবশ্যই এই কাজ বন্ধ করে, নাহলে তাদের দৃষ্টিশক্তি হরণ করা হবে।”[3] অন্য বর্ণনায় ‘সালাতের মধ্যে’ কথাটি নেই, সব দু‘আতেই দৃষ্টি ঊর্ধ্বে উঠাতে নিষেধ করা হয়েছে।[4]
২৩. দু‘আ কবুল হওয়ার সময়ের দিকে লক্ষ্য রাখা
(ক). রাত, বিশেষত শেষ রাত
মুমিন সর্বদা আল্লাহর কাছে দু‘আ করবেন। তবে হাদীস শরীফে কিছু কিছু সময়কে দু‘আ কবুলের জন্য বিশেষ করে চিহ্নিত করা হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বপ্রধান ও সর্বোত্তম সময় রাত। বিভিন্ন হাদীসের আলোকে আমরা জানতে পারি যে, রাত মুমিনের দু‘আ ও একান্ত ইবাদতের সময়। শরীয়তের পরিভাষায় মাগরিবের শুরু থেকে ফজরের ওয়াক্তের শুরু পর্যন্ত রাত। শীতের সময় ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে আমাদের দেশে রাত প্রায় ১২ ঘণ্টা থাকে (সন্ধ্যা ৫.৩০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত)। অপরদিকে জুন/জুলাই মাসে রাত প্রায় ৯ ঘণ্টা হয়ে যায় (সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ভোর ৩.৪৫ টা পর্যন্ত)। রাতের এই সময়টুকুকে হাদীসের আলোকে আমরা চারটি পর্যায়ে ভাগ করতে পারি :
(১) প্রথম তৃতীয়াংশ (প্রথম ৩/৪ ঘণ্টা) : এই সময়টির ফযীলত সম্পর্কে বিশেষ কোনো উল্লেখ নেই। তবে কোনো কোনো হাদীসে বলা হয়েছে, আল্লাহ রাতে দু‘আ কবুল করেন। জুবাইর ইবনু মুতয়িম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :
ينزل الله كل ليلة الى السماء الدنيا فيقول هل من سائل فأعطيه هل من مستغفر فأغفر له حتى يطلع الفجر
“আল্লাহ প্রত্যেক রাতে সর্বনিম্ন আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কোনো প্রার্থনাকারী বা যাচ্ঞাকারী কেউ কি আছে? যদি কেউ কিছু চায় তাহলে আমি তাকে তা প্রদান করব। ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে? যে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব। এভাবে তিনি ফজর শুরু হওয়া পর্যন্ত বলেন।” হাদীসটির সনদ সহীহ।[5]
এই হাদীসে রাত বলতে পুরো রাতই বুঝা যায়। এতে রাতের প্রথম অংশও ফযীলতের মধ্যে এসে যায়। তবে অন্যান্য বিভিন্ন হাদীসে এই ফযীলত রাতের পরবর্তী অংশগুলির জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে।
সহীহ মুসলিম গ্রন্থে সংকলিত অন্য হাদীসে জাবির (রাঃ) বলেছেন, আমি নবীজী (সা.)-কে বলতে শুনেছিঃ
إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ
“নিশ্চয় রাত্রের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যে সময় কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে পার্থিব, জাগতিক বা পারলৌকিক যে কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাকে তা অবশ্যই দিবেন। এভাবে প্রতি রাত্রেই।”[6]
রাতের এই সময়ও সারা রতের প্রথম মুহূর্ত থেকে সারা রাতের যে কোনো সময় হতে পারে। তবে অন্যান্য হাদীসের আলোকে এই সময় শেষ রাতে হবে বলেই বুঝা যায়।
(২) প্রথম তৃতীয়াংশের পর থেকে পরবর্তী মাঝ রাত পর্যন্ত, এবং পরবর্তী সারা রাত : শীতের সময় রাত ৯.৩০ টা বা ১০ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এবং গরমের সময় রাত ১০ টা থেকে প্রায় ১১.৩০ টা পর্যন্ত ; এবং এরপর বাকি রাত। এই সময়ে আল্লাহ দু‘আ কবুল করেন বলে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা (রাঃ) ও আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
لو لا أن أشق علي امتى لأخرة العشاء الأخرة الى ثلث الليل فإنه إذا مضى ثلث الليل الأول هبط الله عز وجل إلى السماء الدنيا فلم يزل بها حتى يطلع الفجر يقول الا تأتب ألاسائل يعطى ألا داع يجاب ألا مذنب يستغفر فيغفرله ألا سقيم يستشفى فيشفى
“আমার উম্মাতের কষ্ট না হলে ইশা’র সালাত রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ পর্যন্ত দেরি করতাম। কারণ রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিক্রান্ত হলে মহান প্রভু আল্লাহ সর্বনিম্ন আসমানে নেমে আসেন। প্রভাতের শুরু পর্যন্ত তিনি এভাবে থাকেন। তিনি বলেন: কেউ কি চাইবে যাকে দেওয়া হবে? কেউ কি ডাকবে যার ডাকে সাড়া দেওয়া হবে? কোনো পাপী কি আছে যে ক্ষমা চাইবে তাহলে তাকে ক্ষমা করা হবে? অসুস্থ কেউ আছে কি? যে রোগমুক্তি চাইবে ফলে তাকে সুস্থতা প্রদান করা হবে।”[7]
অন্য হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
ينزل الله إلى السماء الدنيا كل ليلة حين يمضى ثلث الليل فيقول أنا الملك أنا الملك من ذا الذي يدعوني فأستجيب له من ذا الذي يسألني فأعطيه من ذا الذي يستغفرني فأغفر له فلا يزال كذلك حتى يضيء الفجر
“মহান আল্লাহ প্রত্যেক রাতে, রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলে নিকটবর্তী আসমানে নেমে আসে এবং বলেনঃ আমিই বাদশাহ, আমিই মালিক। কে আছ আমাকে ডাকবে? ডাকলেই আমি তার ডাকে সাড়া দিব, কে আছ আমার কাছে চাইবে? চাইলেই আমি তাকে প্রদান করব। কে আছ আমার কাছে ক্ষমা চাইবে? চাইলেই আমি তাকে ক্ষমা করব। এভাবেই বলতে থাকেন প্রভাতের আলোর বিকীরণ হওয়া পর্যন্ত।”[8]
(৩) মধ্য রাত থেকে (রাত ১১.৩০ টা বা ১২ টা থেকে) রাতের শেষ তৃতীয়াংশের শুরু পর্যন্ত এবং বাকি রাত : উপরের হাদীসের আলোকে রাতের এই অংশ স্বভাবতই দু‘আ কবুলের সময়। এ ছাড়া এই অংশ সম্পর্কে বিশেষ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। উসমান ইবনু আবীল আস (রাঃ) বলেন, নবীয়ে মুসতাফা (সা.) বলেছেনঃ
تُفْتَحُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ نِصْفَ اللَّيْلِ فَيُنَادِي مُنَادٍ هَلْ مِنْ دَاعٍ فَيُسْتَجَابُ لَهُ هَلْ مِنْ سَائِلٍ فيَعُطَى هَلْ مِنْ مَكْرُوبٍ فَيُفَرَّجَ عَنْهُ فَلَا يَبْقَى مُسْلِمٌ يَدْعُو بِدَعْوَةٍ إِلَّا اسْتَجَابَ اللَّهُ لَهُ إِلَّا زَانِيَةً تَسْعَى بِفَرْجِهَا أَوْ عَشَّارًا
“মধ্য রাতে আসমানের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়। তখন একজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকেনঃ ‘কোনো প্রার্থনাকারী আছ কি? যদি কেউ প্রার্থনা করে তাহলে তা কবুল করা হবে। কোনো যাচ্ঞাকারী আছ কি? যদি কেউ কিছু চায় তাহলে তাকে তা দেওয়া হবে। কোনো বিপদগ্রস্ত আছ কি? বিপদ মুক্তি চাইলে তার বিপদ কাটানো হবে।’ এ সময়ে যে কোনো মুসলিম যে কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করুক, আল্লাহ তার প্রার্থনা কবুল করবেন। শুধুমাত্র দেহ ব্যবসায়ী ব্যভিচারিণী ও টোল আদায়কারী (নাগরিকদের কষ্ট দিয়ে যে টোল খাজনা ইত্যাদি আদায় করে) বাদে।” হাদীসটির সনদ সহীহ।[9]
(৪) রাতের সবচেয়ে মুবারক অংশ (রাত ১ টা বা ২ টা থেকে বাকি রাত) : যাকিরের সবচেয়ে বড় সম্পদ, প্রার্থনাকারীর সর্বশ্রেষ্ঠ সুযোগ, আল্লাহ প্রেমিকের জীবনের সর্বোত্তম ক্ষণ রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। রাত আনুমানিক ১টা বা ২ টা থেকে বাকি রাত। এই সময়ের ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে সংকলিত হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخَرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبُ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيهِ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرُ لَهُ
“আমাদের মহান মহিমান্বিত প্রভু প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে তখন নিকটবর্তী আসমানে নেমে আসেন এবং বলেনঃ কেউ যদি আমাকে ডাকে, তাহলে আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কেউ যদি আমার কাছে কিছু চায়, আমি তাকে তা প্রদান করব। কেউ যদি আমার কাছে ক্ষমা চায়, আমি তাকে ক্ষমা করব।”[10]
আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহকে (সা.) প্রশ্ন করা হলোঃ “কোন দু‘আ সবচেয়ে বেশি শোনা হয় বা কবুল করা হয়? তিনি উত্তরে বলেনঃ
جَوْفُ اللَّيْلِ الْآخِرُ وَدُبُرُ الصَّلَوَاتِ الْمَكْتُوبَاتِ
“রাত্রের শেষ অংশ ও ফরয সালাতের পরে (দু‘আ বেশি কবুল হয়)।” ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। এই অর্থে আরো অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।[11]
আমর ইবনু আম্বাসা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছিঃ
أقرب ما يكون العبد من ربه فى سجوده وإذا قام يصلى فى ثلث (جوف) الليل الأخر فإن استطعت أن تكون ممن يذكر الله فى تلك الساعة فكن
বান্দা তার প্রভুর সবচেয়ে নৈকট্য লাভ করে যখন সে সাজদায় থাকে এবং যখন সে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে [বা শেষাংশে] সালাত আদায়ের জন্য দাঁড়ায়। অতএব, রাতের ঐ সময়ে যারা আল্লাহর যিকর করেন, তুমি যদি তাদের অন্তর্ভুক্ত হতে পার, তাহলে তা হবে। হাদীসটি সহীহ।[12]
কেউ হয়ত মনে করতে পারেন যে, কোনো হাদীসে আমরা দেখছি রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পরে, কোনো হাদীসে দেখছি রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পরে মহান আল্লাহ প্রথম আসমানে আসেন। এখানে তো বৈপরীত্য দেখা দিল। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টিতে কোনো বৈপরীত্য নেই। আল্লাহর অবতরণ, আগমন এগুলির প্রকৃতি ও পদ্ধতি আমাদের বোধগম্য নয়। তাঁর হাবীব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) যেভাবে বলেছেন আমরা সেভাবেই বিশ্বাস স্থাপন করেছি। তবে আমরা এতটুকু দৃঢ়ভাবে বুঝতে পারি যে, আল্লাহ এই সময়ে তাঁর বান্দাদেরকে বিশেষ নৈকট্য প্রদান করেন, যা অন্যান্য নৈকট্য থেকে ভিন্ন ও মর্যাদাময়। আমাদের দায়িত্ব এই মহান সময়ের বরকতময় সুযোগ গ্রহণ করা। মহান রাব্বুল আলামীনের এগিয়ে দেওয়া রহমতের, বরকতের ও কবুলিয়্যতের খাঞ্চাকে অবহেলায় ফিরিয়ে না দেওয়া। বরং পরম আগ্রহে ও গভীর আবেগে এই দান গ্রহণ করা।
আমাদের চেষ্টা করতে হবে রাতের শেষ তৃতীয়াংশে ইবাদত ও দু‘আ করার চেষ্টা করা। যখন সকলেই ঘুমিয়ে থাকবেন তখন বান্দা তার মনের সকল আবেগ উজাড় করে তার প্রভুকে ডাকবে, তার মনের সকল বেদনা, আকুতি, কষ্ট ও আবেগ সে পেশ করবে তার প্রভুর দরবারে, যিনি সর্বোপরি ক্ষমতাবান মহাকরুণাময় পরম দয়ালু ও দাতা। তিনিই, শুধু তিনিই তো পারেন তাঁর আরজি পূরণ করতে। আনন্দ, বেদনা ও প্রেমের অশ্রু দিয়ে যাকির তার এই সময়ের ইবাদত ও দু‘আকে সুষমাময় করবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক প্রদান করুন।
এ সময়ে সম্ভব না হলে অন্তত রাতের একতৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পরে, রাত ১০/১১ টার দিকে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত কিছু সময় দু‘আয় কাটানো প্রয়োজন। অযু করে, কয়েক রাকাত নফল সালাতসহ বিতিরের সালাত আদায় করে এই সময়ে কিছু সময় যিকর ও দু‘আয় কাটানো খুবই প্রয়োজন।
(খ) পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের পর
আমরা উপরে আবু উমামা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে এর বিবরণ দেখেছি। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ (সা.) সালাতের পরে পালন করার জন্য অনেক যিকর ও দু‘আ শিক্ষা দিয়েছেন। যা আমরা পরে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ।
(গ) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়
দু‘আ কবুলের অন্যতম সময় আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়, আযানের সময় ও ইকামতের সময়। বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, এ সময়ের দু‘আ আল্লাহ কবুল করেন। সুন্নাতের নির্দেশ আযানের সময় মুয়াযযিন যা বলেন তা বলতে হবে (হাইয়া আলা-র সময় লা হাওলা ..)। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য সালাত (দরুদ) পাঠ করতে হবে। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য আল্লাহর কাছে ওসীলা ও মর্যাদা চাইতে হবে। এরপর মুমিন নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের প্রয়োজন আল্লাহর কাছে চাইবেন।
আনাস (রাঃ) বলেন , রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
الدعوة (الدعاء) بين الأذان والإقامة لا ترد فادعوا
“আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দু‘আ ফেরত দেওয়া হয় না। অতএব, তোমরা এই সময়ে প্রার্থনা করবে।” হাদীসটি সহীহ।[13] অন্য হাদীসে সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
اثنتان لا تردان أو قل ما تردان الدعاء عند النداء (حين تقام الصلاة) عند البأس (عند الصف فى سبيل الله) حين يلتحم بعضهم بعضا
“দুটি দু‘আ কখনো ফেরত দেওয়া হয় না, বা খুব কমই ফেরত দেয়া হয় : আযানের সময় দু‘আ [দ্বিতীয় রেওয়ায়াতে, ইকামতের সময় দু‘আ] এবং আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের সময় দু‘আ, যখন (মুসলিম ও কাফির) উভয়পক্ষ যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখী হয় এবং একে অপরের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি যুদ্ধে মিশে যায়।” হাদীসটি সহীহ।[14]
অন্য হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, মুয়াযযিনগণ তো আমাদের উপরে উঠে গেলেন ও আমাদের চেয়ে বেশি মর্যাদা অর্জন করে নিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ
قل ما يقولون فإذا انتهيت فسل تعطه
“মুয়াযযিনগণ যা বলে তুমি তা বল। যখন (আযানের জবাব দেওয়া) শেষ করবে, তখন আল্লাহর কাছে চাইবে বা দু‘আ করবে। এই সময়ে তুমি যা চাইবে তোমাকে তা দেওয়া হবে।” হাদীসটির সনদ হাসান।[15]
(ঘ). জিহাদের ময়দানে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে
উপরের হাদীসে আমরা দেখেছি যে, এই সময় দু‘আ কবুল হয়।
(ঙ) দু‘আ কবুলের অন্যান্য সময়
দু‘আ কবুলের অন্যান্য বিশেষ সময় : রমযান মাস, ফরয বা নফল সিয়াম অবস্থায়, ইফতারের সময়, যমযমের পানি পান করার সময়, ইত্যাদি।
(চ) সালাতের মধ্যে দু‘আ
সালাত মহান প্রভুর সাথে বান্দার সর্বোচ্চ সংযোগ। সালাত মহান প্রতিপালকের সাথে বান্দার ‘মুনাজাত’। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো সময়টাই মূলত দু‘আর সময়। আল্লাহর প্রশংসা করা, স্তুতি গাওয়া ও প্রার্থনা করা, এই তো সালাত।
সালাতের পুরো সময়েই রাসূলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত আবেগী ও সুন্দর ভাষায় দু‘আ করতেন। সালাত শুরু করেই, তাকবীরে তাহরীমার পরেই তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাক্য ব্যবহার করে দু‘আ করতেন। সূরা ফাতিহা মানব ইতিহাসের মহোত্তম প্রার্থনা। এরপর কুরআন তিলাওয়াতের সময় থেমে থেমে তিনি দু‘আ করতেন। রুকুতে তাসবীহের পাশাপাশি দু‘আ করতেন মাঝে মাঝে।
সালাতের মধ্যে দু‘আর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময় সাজদার সময়। সাজদা সালাতের মধ্যে মহান প্রভুর কাছে বান্দার সমর্পণের চূড়ান্ত পর্যায়। সাজদা আল্লাহর সাথে বান্দার চূড়ান্ত সংযোগ। মানব জীবনে দু‘আ কবুলের অন্যতম সময় সাজদার সময়। রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে এ কথাই শিখিয়েছেন। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
أقربُ مَا يَكونُ العبْدُ مِن ربِّهِ وَهَو ساجدٌ
“বান্দা যখন সাজদায় রত থাকে তখন সে তার প্রভুর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়, কাজেই তোমরা এই সময়ে বেশি বেশি দুআ করবে।”
অন্য হাদীসে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) (ওফাত দিবসের ফজরের সময়) তাঁর ঘরের পর্দা তুলে দেখলেন সাহাবীগণ আবু বকরের (রাঃ) পিছে কাতারবদ্ধ হয়ে সালাত আদায় করছেন। তখন তিনি বললেনঃ
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَمْ يَبْقَ مِنْ مُبَشِّرَاتِ النُّبُوَّةِ إِلَّا الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ يَرَاهَا الْمُسْلِمُ أَوْ تُرَى لَهُ أَلَا وَإِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَقْرَأَ الْقُرْآنَ رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا فَأَمَّا الرُّكُوعُ فَعَظِّمُوا فِيهِ الرَّبَّ عَزَّ وَجَلَّ وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي الدُّعَاءِ فَقَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ
“হে মানুষেরা, নবুয়্যতের আর কিছুই বাকি থাকল না, শুধুমাত্র নেক স্বপ্ন ছাড়া, যা মুসলিম দেখে। শুনে রাখ, আমাকে রুকু ও সাজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। রুকু অবস্থায় তোমরা তোমাদের মহান প্রভুর মর্যাদা-বাচক স্তুতি পাঠ করবে। আর সাজদা রত অবস্থায় তোমরা খুব বেশি করে দু‘আ করবে, কারণ এই সময়ে তোমাদের দু‘আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।”[16]
সাজাদার সময় বেশি বেশি দু‘আর নির্দেশনায় অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে এ সময়ে বেশি বেশি দু‘আ করতেন। এখানে দুটি দু‘আ লিখছিঃ
যিকর নং ২৪ : সাজদার দু‘আ-১
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) সাজদার মধ্যে বলতেনঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلَانِيَتَهُ وَسِرَّهُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগ্ ফির লী যাম্বী কুল্লাহু, দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু, ওয়া আউআলাহু ওয়া আ-খিরাহু, ওয়া ‘আলা-নিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমা করুন আমার সকল পাপ, ছোট পাপ, বড় পাপ, প্রথম পাপ, শেষ পাপ, প্রকাশ্য পাপ, গোপন পাপ।[17]
যিকর নং ২৫ : সাজদার দু’আ-২
(২). আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বিছানায় পেলাম না। (অন্ধকারে) আমি তাকে খুঁজলাম। তখন আমার হাত তার পায়ের তালুতে লাগল। তিনি তখন সাজদায় ছিলেন ও পা দুটি খাড়া ছিল। তিনি বলছিলেনঃ
اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা, আ’ঊযু বিরিদা-কা মিন সাখাতিক, ওয়া বি মু’আ-ফা-তিকা মিন ‘উকূবাতিকা, ওয়া আ’ঊযু বিকা মিনকা, লা- উহসী সানা-আন ‘আলাইকা। আনতা কামা- আসনাইতা ‘আলা- নাফসিকা।
অর্থঃ “হে আল্লাহ, আমি আপনার ক্রোধ থেকে আপনার সন্তুষ্টির আশ্রয় প্রাথনা করছি এবং আপনার শাস্তি থেকে আপনার ক্ষমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এবং আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আপনার কাছে আপনার থেকে। আমি আপনার প্রশংসা করে শেষ করতে পারি না। আপনি ঠিক তেমনি যেমন আপনি আপনার নিজের প্রশংসা করেছেন।”[18]
আমাদের দেশে অনেকে অজ্ঞতাবশত বলেন, আমাদের মাযহাবে সাজদার সময় দু‘আ করা যাবে না বা উচিত নয়। ধারণাটি সঠিক নয়। আমরা আগেই দেখেছি ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সালাতের মধ্যে কুরআন পাঠের সময় দু‘আ করে করে পাঠ করতে বলেছেন। তবে তাঁর মতে, ফরয সালাত যথাসম্ভব নির্ধরিত যিকর আযকার ও দু‘আর মাধ্যমে আদায় করতে হবে। আর বাকি সকল সুন্নাত, নফল, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি সালাতের শুরুতে, তিলাওয়াতের সময়ে, রুকুতে, সাজদায় ও শেষে তাশাহহুদের পরে বেশি বেশি করে দু‘আ করতে হবে। তাঁর এই মতটি সুন্নাতের আলোকে জোরদার। কারণ আমরা অধিকাংশ হাদীসেই দেখতে পাই যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) অতিরিক্ত দু‘আ সাধারণত তাহাজ্জুদ ইত্যাদি সুন্নাত বা নফল সালাতের মধ্যে বলতেন। প্রত্যেক মুমিনের জন্য তাঁর মনের সকল আবেগ, আকুতি, বেদনা ও প্রার্থনা মহান প্রভুর দরবাবে পেশের সর্বোত্তম সুযোগ হলে সালাত, বিশেষত সাজদার অবস্থায়। পৃথিবীর কোনো নেতা যদি আমাদের বলতেন, অমুক সময় আমার কাছে আবেদন করলে আমি তা কবুল করব, তাহলে আমরা সেই সময়টিকে সদ্ব্যবহার করতে প্রাণপণে চেষ্টা করতাম। কিন্তু আফসোস! মহান রাব্বুল আলামীনের এই মহান সুযোগ আমরা অবহেলা করে এড়িয়ে চলছি। আমাদের সকলেরই উচিত, যথাসম্ভব মাসনূন দু‘আ মুখস্থ করে সেগুলি দিয়ে সাজদায় দু‘আ করা।
সালাতের মধ্যে দু‘আর আরেকটি বিশেষ সময় তাশাহহুদের পরে সালামের পূর্বে। এই সময়ে দু‘আ করা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিয়মিত কর্ম ও বিশেষ নির্দেশ। তিনি তাঁর উম্মতকে তাশাহহুদ শিক্ষা দান করে বলেছেনঃ
ثم يتخير من المسألة ما يشاء/ ثم يتخير من الدعاء أعجبه إليه فيدعو
“তাশাহহুদের পর মুসল্লী তার পছন্দ অনুসারে দু‘আ বেছে নিয়ে দু‘আ করবে।”[19]
অন্য হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা যখন শেষ তাশাহহুদ শেষ করবে, তখন চারটি বিষয়
থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবেঃ জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জাগতিক জীবনের ও মৃত্যুর ফিতনা (পরীক্ষা বা বিপদ) থেকে এবং দাজ্জালের অমঙ্গল থেকে।”[20]
[2] বিস্তারিত দেখুনঃ মুসনাদু আবী উওয়ানাহ ১/১/৫৩৯, মুসতদারক হাকিম ১/৭১৯, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৬৭-১৬৮, আউনুল মা’বুদ ২/৩০৫, ৪/২৫২, মানাবী, ফাইদুল কাদীর ১/১৮৪।
[3] সহীহ মুসলিম ১/৩২১, নং ৪২৯।
[4] মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৬৭-১৬৮।
[5] মুসনাদ আহমাদ ৪/৮১, মুসনাদু আবী ইয়ালা ১৩/১৬৭-১৬৮।
[6] সহীহ মুসলিম ১/৫২১, নং ৭৫৭।
[7] মুসনাদ আহমাদ ১/১২০, ২/৫০৯, মুসনাদু আবী ইয়ালা ১১/৪৪৭-৪৪৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৫৪।
[8] সহীহ মুসলিম ১/৫২২, নং ৭৫৮।
[9] তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৯/৫৯, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৫২। আরো দেখুনঃ সহীহ মুসলিম ১/৫২২, নং ৭৫৮।
[10] সহীহ বুখারী ১/৩৮৪, নং ১০৯৪, ৫/২৩৩০, নং ৫৯৬২, ৬/২৭২৩, নং ৭০৫৬, সহীহ মুসলিম ১/৫২১, নং ৭৫৮।
[11] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫২৬, নং ৩৪৯৯, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/৩২, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪৮৬, ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ১১/১৩৪, যাইলায়ী, নাসবুর রাইয়াহ ২/২৩৫, জামিউল উসূল ৪,১৪১-১৪২।
[12] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৬৯, নং ৩৫৭৯ (৩৫৭৪), মুসতাদরাক হাকিম ১/৪৫৩, সহীহ ইবনু খুযাইমা ২/১৮২, জামিউল উসূল ৪/১৪৩-১৪৪।
[13] সুনানু আবী দাউদ ১/১৪৪, নং ৫২১, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ ১/২২২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪/৫৯৪, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৩৩৪, মাওয়ারিদুয যামআন ১/৪৪৬-৪৪৭, সহীহুত তারগীব ১/১৮০।
[14] সুনানু আবী দাউদ ৩/২১, নং ২৫৪০, মুসতাদরাক হাকিম ১/৩১৩, ২/১২৪, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ ১/২১৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫/৬০, সহীহুত তারগীব ১/১৮০, মাওয়ারিদুয যামআন ১/১৭৭, ১৮১।
[15] সুনানু আবী দাউদ ১/১৪৪, নং ৫২৪, মুসনাদ আহমাদ ২/১৭২, সহীহ ইবনু হিব্বান, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১৬, মাওয়ারিদুয যামআন ১/৪৪৫-৪৪৬, সহীহুত তারগীব ১/১৭৭, ১৮১।
[16] সহীহ মুসলিম ১/৩৪৮, নং ৪৭৯।
[17] সহীহ মুসলিম ১/৩৫০, নং ৪৮২, ৪৮৩।
[18] সহীহ মুসলিম ১/৩৫২, নং ৪৮৬।
[19] সহীহ বুখারী ১/২৮৭, নং ৮০০, ৫/২৩০১, নং ৫৮৭৬, সহীহ মুসলিম ১/৩০১, নং ৪০২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ থেকে।
[20] সহীহ মুসলিম ১/৪১২, নং ৫৮৮।