লগইন করুন
وَما بِسَمْعِ كُلِّ راوٍ يَتَّصِلْ ।إسْنادُهُ لِلْمُصْطَفَى فَالْمُتَّصِلْ
“আর যে হাদিসের সনদ প্রত্যেক রাবির শ্রুতি দ্বারা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সংযুক্ত তাই মুত্তাসিল”। অত্র কবিতায় বর্ণিত ক্রমানুসারে হাদিসের সপ্তম প্রকার মুত্তাসিল।
متَّصِلْ এর আভিধানিক অর্থ মিলিত। এক বস্তুর সাথে মিলিত অপর বস্তুকে মুত্তাসিল বলা হয়।
মুত্তাসিলের পারিভাষিক সংজ্ঞা প্রসঙ্গে লেখক বলেন: “যে হাদিসের সনদ প্রত্যেক রাবির শ্রুতি দ্বারা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত মিলিত তাই মুত্তাসিল। লেখক মুত্তাসিলের দু’টি শর্ত বলেছেন: ১. প্রত্যেক রাবির শ্রবণ করা। ২. নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সনদ সংযুক্ত হওয়া।
১. লেখক রাহিমাহুল্লাহর সংজ্ঞানুসারে মুত্তাসিল হাদিসে প্রত্যেক রাবির স্বীয় শায়খ থেকে শ্রবণ করা জরুরি। অতএব সনদের কোনো স্তরের রাবি যদি তার শায়খ থেকে শ্রবণ করেছে স্পষ্ট না বলে, বা শ্রবণ করেছে বুঝায় এমন শব্দ প্রয়োগ না করে, তাহলে হাদিস মুত্তাসিল হবে না।
মুত্তাসিলের জন্য নির্দিষ্ট হাদিস শায়খ থেকে শ্রবণ করেছে প্রমাণিত হওয়া জরুরি নয়, বরং কতক হাদিস শ্রবণ করেছে প্রমাণিত হলে সকল হাদিস মুত্তাসিল হবে। কারো সম্পর্কে যদি জানা যায় যে, তিনি অমুক শায়খ থেকে শুধু একটি হাদিস শ্রবণ করেছেন, অথবা অমুক অমুক হাদিস শ্রবণ করেছেন, সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট হাদিস ব্যতীত অন্যান্য হাদিস মুত্তাসিল হবে না।
রাবি ও তার শায়খের মাঝে ইত্তেসাল জানার পদ্ধতি আমরা সহি হাদিসের প্রথম শর্তে আলোচনা করেছি।
২. মুত্তাসিলের দ্বিতীয় শর্ত সনদের পরম্পরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত মিলিত থাকা। অতএব মাওকুফ ও মাকতু‘ লেখকের নিকট মুত্তাসিল নয়। অনুরূপ মারফূ‘ হাদিসের সনদে বিচ্ছেদ হলে মুত্তাসিল নয়।
জ্ঞাতব্য: লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ মুত্তাসিল হওয়ার জন্য মারফূ‘ হওয়ার শর্তারোপ করেছেন, তাই মাওকুফ ও মাকতু‘র সনদ মুত্তাসিল হলেও মুত্তাসিল হবে না। এ শর্তারোপ করে লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ মুসনাদ ও মুত্তাসিল এক করে ফেলেছেন, উভয় সংজ্ঞায় কোনো পার্থক্য করেননি, তাই এতে তার বিচ্যুতি ঘটেছে। শায়খ আব্দুস সাত্তার আবু গুদ্দাহ তার পঙক্তির শুদ্ধরূপ দিয়েছেন এভাবে:
وما بسمع كل راو يتصل = إسناده للمنتهى فالمتصل
“আর যে হাদিসের সনদ প্রত্যেক রাবির শ্রুতি দ্বারা শেষ পর্যন্ত মিলিত তাই মুত্তাসিল”। এ সংজ্ঞা মোতাবেক মাওকুফ ও মাকতু‘ মুত্তাসিল, যদি সনদে ইনকিতা‘ না থাকে। অতএব সকল প্রকার মুনকাতি‘ মুত্তাসিলের সংজ্ঞা থেকে খারিজ হল। সনদের শেষ দ্বারা উদ্দেশ্য মারফূ‘ ও মাওকুফের শেষ প্রান্ত। এ দু’প্রকার মুত্তাসিল হয়, মাকতু‘ মুত্তাসিল হয় না, মুত্তাসিল হলেও আহলে ইলম তাকে মুত্তাসিল বলেন না, তবে একান্ত প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট করে বলেন:"متصل الإسناد إلى الزهري" ‘যুহরি পর্যন্ত সনদ মুত্তাসিল’। কিন্তু নির্দিষ্ট করা ব্যতীত "مقطوع متصل" কেউ বলেন না, কারণ মাকতু‘ অর্থ বিচ্ছিন্ন, মুত্তাসিল অর্থ মিলিত, এক হাদিসকে মাকতু‘ মুত্তাসিল বলা হলে দুই বিপরীত বস্তুকে একস্থানে একত্র করা হয়, যা ভাষাগত দিক থেকে দোষণীয়। এ সম্পর্কে মাকতু‘র স্থানে আলোচনা করেছি।