লগইন করুন
১. রাবি বর্ণনা করার সময় বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন, অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যেমন ইমাম আহমদ ও নাসায়ি সহি সনদে বর্ণনা করেন:
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنهم عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمفِيمَا يَحْكِيهِ عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ: «أَيُّمَا عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي خَرَجَ مُجَاهِدًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي ضَمِنْتُ لَهُ أَنْ أَرْجِعَهُ إِنْ أَرْجَعْتُهُ بِمَا أَصَابَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ، وَإِنْ قَبَضْتُهُ غَفَرْتُ لَهُ وَرَحِمْتُهُ».
ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন[1], আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: “আমার বান্দাদের থেকে যে আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ হিসেবে বের হয়, আমি তার জিম্মাদার। যদি আমি তাকে ফিরিয়ে দেই, প্রতিদান অথবা গণিমতসহ ফিরিয়ে দেব। আর আমি যদি তাকে গ্রহণ করি, তাকে ক্ষমা করে দিব ও তার উপর রহম করব”।[2]
২. রাবি বর্ণনা করার সময় বলবেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: ..., অথবা রাবি বলবেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমাদের রব বলেছেন: ..., যেমন ইমাম বুখারি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণনা করেন:
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «قَالَ اللَّهُ: إِذَا أَحَبَّ عَبْدِي لِقَائِي أَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ، وَإِذَا كَرِهَ لِقَائِي كَرِهْتُ لِقَاءَهُ».
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: আমার বান্দা যখন আমার সাক্ষাত পছন্দ করে আমি তার সাক্ষাত পছন্দ করি। আর যখন সে আমার সাক্ষাত অপছন্দ করে আমি তার সাক্ষাত অপছন্দ করি”।[3]
৩. কখনো রাবি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন’, অতঃপর হাদিসে কুদসি উল্লেখ করেন, কিন্তু আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করেন না, যেমন বুখারি বর্ণনা করেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمقَالَ : «لَا يَأْتِ ابْنَ آدَمَ النَّذْرُ بِشَيْءٍ لَمْ يَكُنْ قَدْ قَدَّرْتُهُ، وَلَكِنْ يُلْقِيهِ الْقَدَرُ وَقَدْ قَدَّرْتُهُ لَهُ، أَسْتَخْرِجُ بِهِ مِنْ الْبَخِيلِ».
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: “বনু আদমের নিকট মান্নত এমন কিছু নিয়ে আসে না যা আমি তার জন্য নির্ধারণ করিনি। বস্তুত আমি তার জন্য তা নির্ধারণ করে রেখেছি, আর তকদীর তার সাথে সাক্ষাত করে। আমি মান্নত দ্বারা কৃপণ থেকে বের করি”।[4]
৪. কখনো কখনো হাদিসে কুদসিকে হাদিসে নববির অংশ হিসেবে বর্ণিত হয়, যদিও হাদিসে কুদসির অংশ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথক করেন না, তবে অগ্র-পশ্চাৎ থেকে আল্লাহর কথা স্পষ্ট হয়, যেমন ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ্ বর্ণনা করেন:
عن أَبَي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «انْتَدَبَ اللَّهُ لِمَنْ خَرَجَ فِي سَبِيلِهِ لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا إِيمَانٌ بِي وَتَصْدِيقٌ بِرُسُلِي أَنْ أُرْجِعَهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ أَوْ أُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ. وَلَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي مَا قَعَدْتُ خَلْفَ سَرِيَّةٍ، وَلَوَدِدْتُ أَنِّي أُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ»
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তাকে দ্রুত প্রতিদান প্রদান করেন, যে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছে, যাকে আমার প্রতি ঈমান ও আমার রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত কোন বস্তু বের করেনি। আমি অবশ্যই তাকে প্রত্যাবর্তন করাব তার প্রাপ্ত সাওয়াব অথবা গণিমতসহ, অথবা আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। যদি এমন না হত যে, আমি আমার উম্মতের উপর কঠিন করে ফেলব, কোনো যুদ্ধ থেকে আমি পশ্চাতে থাকতাম না। আমি অবশ্যই চাই যে, আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হই, অতঃপর আমাকে জীবিত করা হোক, অতঃপর আমি শহীদ হই, অতঃপর আমাকে জীবিত করা হোক, অতঃপর আমি শহীদ হই”। এ হাদিসে:
«لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا إِيمَانٌ بِي وَتَصْدِيقٌ بِرُسُلِي أَنْ أُرْجِعَهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ أَوْ أُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ»
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী নয়, বরং আল্লাহ তা‘আলার বাণী। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদিও পৃথক করে বলেননি, তবে অর্থ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট।
মোদ্দাকথা: একটি হাদিস কখনো সম্পূর্ণ রূপে হাদিসে কুদসি হয়, কখনো আংশিক হাদিসে কুদসি হয়। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো হাদিসে কুদসি স্পষ্ট বলেন, কখনো স্পষ্ট বলেন না, বরং বাক্য থেকে বুঝা যায়।
হাদিসে কুদসির হুকুম: হাদিসে কুদসি হাদিসে নববির ন্যায় সহি, হাসান ও দুর্বল বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়। অতএব হাদিসে কুদসি বলা কিংবা তার উপর আমল করার পূর্বে শুদ্ধাশুদ্ধ যাচাই করা জরুরি।
>উপরে এ বাক্যের ভাবার্থ করা হয়েছে, শাব্দিক অর্থ এরূপ: ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি তার রবের পক্ষ থেকে যা বর্ণনা করেন, তাতে রয়েছে; আল্লাহ্ বলেছেন:
[2] আহমদ: (২/৫৯৪১), নাসায়ি: (৬/১৮)
[3] বুখারি: (১৩/৪৬৬), হাদিস নং: (৭৫০৪)
[4] বুখারি: (১১/৪৯৯), হাদিস নং: (৬৬০৯)