লা-তাহযান [হতাশ হবেন না] লা-তাহযান - অনুচ্ছেদ সূচি ড. আয়িদ আল করনী
৩০৩. প্রতিশোধ গ্রহণের মোহ বিষ বিশেষ, যা রুগ্ন আত্মায় প্রবাহিত হয়

“ইতিহাসে যারা শূলে চড়েছেন (The Cruified Ones in History) (المصلوبون فى التاريخ) নামক বইটি সে সব প্রতিশোধ গ্রহণেচ্ছুদের গল্পে ভরা যারা তাদের শক্রদেরকে কঠোর শাস্তি দিয়েছে। বইটি যখন কেউ পড়ে তখন বুঝতে পারে যে, শক্রদেরকে হত্যা করাই প্রতিশোধ গ্রহণের তৃঞ্চা মিটাতে যথেষ্ট নয়। (সম্ভবত গ্রন্থকারও আমাদেরকে একথাই বুঝাতে চেয়েছেন।) গ্রন্থকার যে প্রচ্ছন্ন বিদ্রুপ করেছেন তা হলো ক্রশবিদ্ধ লোকের দেহ থেকে আত্মা বের হয়ে যাবার পর সে আর যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে না। অথচ প্রতিশোধ গ্রহণেচ্ছু হত্যাকারী কখনও সুখ-শান্তি পাবে না, একারণে যে, প্রতিশোধ গ্রহণের আগুন তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে বা তার সর্বসত্তাকে দখল করে ফেলেছে।

এ পুস্তকে আব্বাস গোত্রের কিছু নেতার জীবনী বর্ণনা করা হয়েছে। তারা উমাইয়া গোত্রের মধ্য থেকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিশোধ গ্রহণের সুযোগ পায়নি শুধুমাত্র এ কারণে যে, আব্বাস গোত্র ক্ষমতা দখলের পূর্বেই উমাইয়া গোত্রের প্রতিপক্ষরা মারা গিয়েছিল। (এতেও তাদের রাগ কমেনি) তখনও ক্রুদ্ধ এমন একজন তার শক্রকে কবর থেকে তুলে চাবুক মেরে শুলে চড়িয়ে শেষে আগুনে জ্বলিয়ে দিয়েছে। অতএব, একথা বুঝুন- প্রতিশোধ গ্রহণেচ্ছু সর্বদাই তার প্রতিপক্ষ থেকে বেশি দুঃখ-কষ্ট ভোগ করবে; কারণ, সে শান্তি ও সৌমতা উভয়ই হারিয়েছে।

একজন আরবী কবি বলেন-

لَا يَبْلُغُ الْاَعْدَاءُ مِنْ جَاهِلٍ ٭ مَا يَبْلُغُ الْجَاهِلُ مِنْ نَّفْسِه

ভাবাৰ্থঃ “মূর্খ নিজে তার যতটা ক্ষতি করে- শক্ররা তার ততটা ক্ষতি করতে পারে না।”

“আর যখন তারা তোমাদের সাথে সাক্ষাত করে তখন (তারা) বলে, আমরা ঈমানদার! আর যখন একাকী থাকে বা নিভৃতে মিলিত হয় তখন তারা ক্ৰোধে আঙ্গুলের ডগা কামড়ান। আপনি বলুন, তোমাদের ক্রোধে তোমরাই মর।” (৩-সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১১৯)