লগইন করুন
রোম সম্রাটের ব্যাপক যুদ্ধ প্রস্ত্ততির খবর মদীনায় পৌঁছে গেলে মুসলমানদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ভীতির সঞ্চার হয়। বিশেষ করে মুনাফিকদের অতিমাত্রায় অপপ্রচারের ফলে সাধারণ ও দুর্বলমনা মুসলমানদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
রোমকভীতি মুসলমানদের মধ্যে কেমন প্রভাব বিস্তার করেছিল, নিম্নের ঘটনা দ্বারা কিছুটা বুঝা যায়।-
ওমর ফারূক (রাঃ) বলেন, আমার একজন আনছার বন্ধু ছিলেন। যখন আমি রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে হাযির না থাকতাম, তখন তিনি আমার নিকটে সংবাদাদি পৌঁছে দিতেন। আর তিনি যখন উপস্থিত না থাকতেন, তখন আমি তার নিকটে তা পৌঁছে দিতাম। তাঁরা উভয়ে প্রতিবেশী ছিলেন এবং মদীনার পূর্বদিকে উচ্চভূমিতে(عَوَالِي الْمَدِينَةِ) বসবাস করতেন। তারা পালাক্রমে রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত থাকতেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই গাসসানী সম্রাটকে ভয় করতাম। কেননা আমাদের বলা হয়েছিল যে, সত্বর তারা আমাদের উপরে হামলা করবে। ফলে আমাদের অন্তরগুলি সর্বদা তাদের ভয়ে ভীত থাকত।
একদিন রাতে হঠাৎ আমার ঐ আনছার বন্ধু দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বললেন,افْتَحِ، افْتَحْ দরজা খুলুন, দরজা খুলুন! আমি ভয়ে বলে উঠলাম,جَاءَ الْغَسَّانِىُّ؟ ‘গাসসানী এসে গেছে কি?’ তিনি বললেন, না, বরং তার চেয়ে কঠিন। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তার স্ত্রীদের থেকে পৃথক হয়ে গেছেন’।[1] অর্থাৎ তিনি স্ত্রীদের সঙ্গে ‘ঈলা’ (الإِيلاَء) করেছেন। ৯ম হিজরীর প্রথমভাগের এই সময় স্ত্রীদের উপরে অসন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাদের থেকে পৃথক থাকার শপথ নেন এবং একমাসের জন্য ‘ঈলা’ করেন। অতঃপর তাদের থেকে পৃথক হয়ে একটি নির্জন কক্ষে অবস্থান করেন। কিন্তু ছাহাবায়ে কেরাম বিষয়টি বুঝতে না পেরে একে তালাক ভেবেছিলেন। অবশ্য ঈলার মেয়াদ চার মাস অতিক্রম করলে তখন তালাকের প্রশ্ন চলে আসে।
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর উপরোক্ত ভয় থেকে সহজে অনুমান করা চলে যে, ঐ সময় রোমকভীতি মুসলমানদের কিভাবে গ্রাস করেছিল।