লগইন করুন
পুরুষের বায়‘আত শেষ হ’লে মহিলাদের বায়‘আত শুরু হয় (আল-বিদায়াহ ৪/৩১৯)। এসময় আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ বিনতে উৎবাহ উপস্থিত হন। তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,يَا رَسُولَ اللهِ مَا كَانَ مِمَّا عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ أَهْلُ خِبَاءٍ أَحَبَّ إِلَىَّ أَنْ يَذِلُّوا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ- ثُمَّ مَا أَصْبَحَ الْيَوْمَ أَهْلُ خِبَاءٍ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ يَعِزُّوا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কসম! আপনার পরিবারের চাইতে অন্য কোন পরিবারের ব্যাপারে আমি আকাংখা করতাম না যে, তারা লাঞ্ছিত হৌক। কিন্তু এখন যমীনের বুকে আপনার পরিবারের ব্যাপারেই আমি সবচেয়ে বেশী আকাংখী যে, তারা সম্মানিত হৌন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার জীবন, (তুমি যা বলছ) সেটাই ঠিক। অতঃপর হিন্দা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আবূ সুফিয়ান কৃপণ স্বভাবের মানুষ। আমি যদি তার বিনা অনুমতিতে তার পরিবার-পরিজনের জন্য তার সম্পদ থেকে খরচ করি, এতে কি আমার কোন দোষ হবে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, ন্যায়নিষ্ঠার সাথে ব্যয় করলে কোন দোষ নেই।[1]
এখানে প্রসিদ্ধ আছে যে, বায়‘আত গ্রহণের এক পর্যায়ে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ বিনতে উৎবাহ ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। যাতে রাসূল (ছাঃ) তাকে চিনতে না পারেন। অতঃপর বায়‘আতের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মহিলাদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। ‘তোমরা চুরি করবে না’। একথা শুনে হিন্দা বলে উঠলেন, আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি যদি তার মাল থেকে কিছু নেই, তাহ’লে? সেখানে উপস্থিত আবু সুফিয়ান বললেন, তুমি যা নিবে, সব তোমার জন্য হালাল হবে’। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে চিনতে পেরে হেসে উঠে বললেন, ‘তাহ’লে তুমি হিন্দা’? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, হে আল্লাহর নবী! পিছনে যা ঘটে গেছে সেজন্য আমাকে ক্ষমা করে দিন’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ক্ষমা করে দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তারা যেন ব্যভিচার না করে’। হিন্দা বলে উঠলেন, أَوَ تَزْنِي الْحُرَّةُ؟ ‘কোন স্বাধীনা নারী কি যেনা করে’? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তারা যেন নিজ সন্তানদের হত্যা না করে’। হিন্দা বললেন, ‘আমরা শৈশবে তাদের লালন-পালন করেছি, আপনারা যৌবনে তাদের হত্যা করেছেন। এখন এ বিষয়ে আপনারা ও তারাই ভাল জানেন’। উল্লেখ্য যে, তার পুত্র হানযালা বিন আবু সুফিয়ান বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের হাতে নিহত হয়েছিল। হিন্দার একথা শুনে ওমর (রাঃ) হেসে চিৎ হয়ে পড়ে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মৃদু হাসলেন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তারা যেন কাউকে মিথ্যা অপবাদ না দেয়’। হিন্দা বললেন, আল্লাহর কসম! অপবাদ অত্যন্ত জঘন্য কাজ (لأمر قبيح)। আপনি আমাদেরকে বাস্তবিকই সুপথ ও উত্তম চরিত্রের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তারা কোন সৎকর্মে রাসূল (ছাঃ)-এর অবাধ্য হবে না’। হিন্দা বললেন, আল্লাহর কসম! আপনার অবাধ্য হব এরূপ মনোভাব নিয়ে আমরা মজলিসে বসিনি’। অতঃপর হিন্দা বাড়ী ফিরে গিয়ে নিজ হাতে বাড়ীতে রক্ষিত মূর্তিটি ভেঙ্গে ফেলেন এবং বলেন, ‘আমরা তোর ব্যাপারে এতদিন ধোঁকার মধ্যে ছিলাম’ (আর-রাহীক্ব ৪০৯ পৃঃ; ওয়াক্বেদী, মাগাযী ২/৮৭১; ত্বাবারী ৩/৬১-৬৩)। বর্ণনাটি যঈফ (মুসনাদে আবী ইয়া‘লা হা/৪৭৫৪, সনদ যঈফ)।