লগইন করুন
এ সময় একটি ঘটনা ঘটে যায়। আনছারদের পতাকা ছিল খাযরাজ নেতা সা‘দ বিন ওবাদাহ (রাঃ)-এর হাতে। তিনি ইতিপূর্বে ঐ স্থান অতিক্রম করার সময় আবু সুফিয়ানকে শুনিয়ে বলেন, الْيَوْمَ يَوْمُ الْمَلْحَمَةِ، الْيَوْمَ تُسْتَحَلُّ الْكَعْبَةُ ‘আজ হ’ল মারপিটের দিন। আজ কা‘বাকে হালাল করা হবে’। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) ঐ স্থান অতিক্রম করার সময় আবু সুফিয়ান বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি শুনেছেন সা‘দ কি বলেছে? জিজ্ঞেস করলেন কি বলেছে? তখন তাকে উক্ত কথা বলা হ’ল। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন,كَذَبَ سَعْدٌ، وَلَكِنْ هَذَا يَوْمٌ يُعَظِّمُ اللهُ فِيهِ الْكَعْبَةَ ‘সা‘দ মিথ্যা বলেছে। বরং আজ হ’ল সেই দিন যেদিন আল্লাহ তা‘আলা কা‘বাকে সম্মানিত করবেন’ (বুখারী হা/৪২৮০)। তখন হযরত ওছমান ও আব্দুর রহমান ইবনু ‘আওফ রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, আমরা সা‘দের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত নই। হয়ত সে কুরায়েশদের মারপিট শুরু করে দেবে’। একথা শুনে তিনি একজনকে পাঠিয়ে সা‘দের নিকট থেকে পতাকা নিয়ে তার পুত্র ক্বায়েসকে দিলেন। যাতে সে বুঝতে পারে যে, পতাকা তার হাত থেকে বাইরে যায়নি। তবে কেউ কেউ বলেন, পতাকাটি যুবায়ের (রাঃ)-কে প্রদান করা হয় (যাদুল মা‘আদ ৩/৩৫৬)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অতিক্রম করে যাওয়ার পর হযরত আববাস (রাঃ) আবু সুফিয়ানকে বললেন, النَّجَاءُ إلَى قَوْمِكَ ‘তোমার কওমের দিকে দৌড়াও’। আবু সুফিয়ান অতি দ্রুত মক্কায় গিয়ে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন,يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ هَذَا مُحَمَّدٌ قَدْ جَاءَكُمْ فِيْمَا لاَ قِبَلَ لَكُمْ بِهِ فَمَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِيْ سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ- ‘হে কুরায়েশগণ! মুহাম্মাদ এসে গেছেন, যার মুকাবিলা করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। অতএব যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ থাকবে’। এ ঘোষণা শুনে তার স্ত্রী হিন্দা এসে তার মোচ ধরে বলে ওঠেন, এই চর্বিওয়ালা শক্ত মাংসধারী মশকটাকে তোমরা মেরে ফেল। এরূপ দুঃসংবাদ দানকারীর মন্দ হৌক’! আবু সুফিয়ান বললেন, তোমরা সাবধান হও! এই মহিলা যেন তোমাদের ধোঁকায় না ফেলে। লোকেরা বলল, হে আবু সুফিয়ান! আপনার গৃহে কয়জনের স্থান হবে? তিনি বললেন, مَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَهُوَ آمِنٌ ‘যে ব্যক্তি তার নিজের ঘরের দরজা বন্ধ রাখবে, সে নিরাপদ থাকবে এবং যে ব্যক্তি মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে, সেও নিরাপদ থাকবে’ (ছহীহাহ হা/৩৩৪১)। একথা শোনার পর লোকেরা স্ব স্ব গৃহ এবং বায়তুল্লাহর দিকে দৌঁড়াতে শুরু করল। কিন্তু কিছু সংখ্যক নির্বোধ লোক ইকরিমা বিন আবু জাহল, ছাফওয়ান বিন উমাইয়া, সোহায়েল বিন আমর প্রমুখের নেতৃত্বে মক্কার ‘খান্দামা’ (الْخَنْدَمَة) পাহাড়ের কাছে গিয়ে জমা হ’ল মুসলিম বাহিনীকে বাধা দেওয়ার জন্য। এদের মধ্যে কুরায়েশ মিত্র বনু বকরের জনৈক বীর হিমাস বিন ক্বায়েস (حِمَاسُ بنُ قَيْس) ছিল। যে ব্যক্তি মুসলমানদের মুকাবিলার জন্য ধারালো অস্ত্র শান দিয়েছিল এবং মুসলমানদের ধরে এনে তার স্ত্রীর গোলাম বানাবার অহংকার প্রদর্শন করে স্ত্রীর সামনে কবিতা পাঠ করেছিল’।[1]