লগইন করুন
৫৩. গাযওয়া ওয়াদিল ক্বোরা(غزوة وادي القرى) : ৭ম হিজরীর মুহাররম মাস। খায়বর যুদ্ধের পর রাসূল (ছাঃ) এখানকার ইহূদীদের প্রতি গমন করেন। দিনভর যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে রাসূল (ছাঃ)-এর একজন গোলাম এবং ইহূদী পক্ষে ১১ জন নিহত হয়। বিপুল গণীমত লাভ হয়। ইহূদীরা সন্ধি করে এবং চাষের জমিগুলি তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় উৎপন্ন ফসলের অর্ধাংশ দেওয়ার শর্তে, যেভাবে খায়বরে করা হয়েছিল। ফাদাক ও তায়মার ইহূদীরা বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে ও সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করে।[1]
৫৪. সারিইয়া আবান বিন সাঈদ(سرية أبان بن سعيد) : ৭ম হিজরীর ছফর মাস। মদীনার আশপাশের লুটেরা বেদুঈনদের ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আবান বিন সাঈদের নেতৃত্বে নাজদের দিকে এই অভিযান প্রেরিত হয় এবং যথাসময়ে তারা অভিযান সফল করে ফিরে আসেন এবং খায়বরে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে মিলিত হন।[2]
৫৫. গাযওয়া যাতুর রিক্বা‘(غزوة ذات الرقاع) : ৭ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাস। এই যুদ্ধে মদীনার আমীর নিযুক্ত হন আবু যার গিফারী (রাঃ)। মতান্তরে ওছমান বিন ‘আফফান (রাঃ)। ইবনু হিশাম, ইবনুল ক্বাইয়িমসহ প্রায় সকল জীবনীকার এই যুদ্ধকে ৪র্থ হিজরীর ঘটনা বলেছেন। কিন্তু আবু মূসা আশ‘আরী ও আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর অংশগ্রহণের কারণে সর্বাধিক ধারণা মতে এটি ৭ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে সংঘটিত হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়। কেননা তারা ৭ম হিজরীর মুহাররম-ছফর মাসে সংঘটিত খায়বর যুদ্ধের সময় মুসলমান হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খায়বরে সর্বপ্রথম সাক্ষাৎ করেন। এই যুদ্ধকে গাযওয়া নাজদ, গাযওয়া বনু মুহারিব ও বনু ছা‘লাবাহ বিন গাত্বফানও বলা হয়ে থাকে (সীরাহ ছহীহাহ ২/৪৬২)।
খন্দকের যুদ্ধে শত্রুদের তিনটি প্রধান পক্ষের দু’টি অর্থাৎ কুরায়েশ ও ইহূদী পক্ষকে দমন করার পর তৃতীয় শক্তি নাজদের বনু গাত্বফানের দিকে এই অভিযান প্রেরিত হয়। যারা প্রায়ই মদীনার উপকণ্ঠে ডাকাতি ও লুটতরাজ করত। এদের কোন স্থায়ী জনপদ বা দুর্গ ছিল না। এরা ছিল সুযোগসন্ধানী ডাকাত দল। তাই মক্কা ও খায়বরবাসীদের ন্যায় এদের দমন করা সহজ ছিল না। ফলে এদের বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসমূহ প্রতিহত করার জন্য অনুরূপ আকস্মিক হামলাসমূহ পরিচালনা করার প্রয়োজন ছিল। সেমতে খায়বর বিজয় সম্পন্ন করার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ৪০০ অথবা ৭০০ সাথী নিয়ে এদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। আনমার অথবা বনু গাত্বফানের ছা‘লাবাহ ও মুহারিব গোত্রের লোকেরা একত্রিত হয়ে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নিচ্ছে মর্মে সংবাদ পেয়ে তিনি অগ্রসর হন এবং নাখল (نَخْل) নামক স্থানে তাদের মুখোমুখি হন। কিন্তু তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। আবু মূসা আশ‘আরী বলেন, আমাদের ৬ জনের জন্য মাত্র একটি উট ছিল, যা আমরা পালাক্রমে সওয়ার হচ্ছিলাম। এ কারণে আমাদের পা সমূহ আহত হয় ও আমার নখ ঝরে পড়ে। ফলে আমরা ছেঁড়া কাপড় দিয়ে পায়ে পট্টি বাঁধি। এ কারণ এ যুদ্ধের নাম হয় যাতুর রিক্বা‘ বা ছেঁড়া পট্টির যুদ্ধ।[3]
[2]. আর-রাহীক্ব ৩৮০ পৃঃ; বুখারী হা/৪২৩৮; মানছূরপুরী এটা ধরেননি।
[3]. বুখারী হা/৪১২৮; মুসলিম হা/১৮১৬।