কোন ভুল থাকলে সেটি রিপোর্ট করার জন্য অনুগ্রহ করে লগইন করুন।
লগইন করুন
লগইন করুন
নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ওহোদ যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ- ৯. রাসূল (ছাঃ)-এর দান্দান মুবারক শহীদ হ’ল (أصيبت رباعية الرسول صـ)
ত্বালহা ও সা‘দ ব্যতীত যখন রাসূল (ছাঃ)-এর পাশে কেউ নেই,[1] তখন এই সুযোগে তাঁকে হত্যা করার জন্য কাফেররা তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে। প্রথমে সা‘দ বিন আবু ওয়াকক্বাছের ভাই উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ রাসূল (ছাঃ)-এর চেহারা লক্ষ্য করে সজোরে পাথর নিক্ষেপ করে। তাতে রাসূল (ছাঃ)-এর ডান দিকের নীচের রুবাঈ দাঁতটি ভেঙ্গে যায় ও নীচের ঠোটটি আহত হয়। এরপর আব্দুল্লাহ ইবনে শিহাব যুহরী এগিয়ে এসে তাঁর ললাটে তরবারির আঘাত করে যখম করে দেয়। এরপর আব্দুল্লাহ বিন ক্বামিআহ নামক এক দুর্ধর্ষ অশ্বারোহী এসে তার কাঁধের উপরে ভীষণ জোরে তরবারির আঘাত করে। যা তাঁর লৌহবর্ম ভেদ করতে না পারলেও তার ব্যথা ও কষ্ট তিনি এক মাসের অধিক সময় অনুভব করেন। তারপর সে দ্বিতীয় বার আঘাত করে। যাতে তাঁর শিরস্ত্রাণের দু’টি কড়া তাঁর চোখের নীচের হাড়ের মধ্যে ঢুকে থেকে যায়’।[2]
[1]. বুখারী হা/৪০৬০ ‘যুদ্ধ বিগ্রহ’ অধ্যায় ১৮ অনুচ্ছেদ।
[2]. ফাৎহুল বারী হা/৪০৬৮-এর আলোচনা; আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ; ইবনু হিশাম ২/৮০; যাদুল মা‘আদ ৩/১৭৬।
আঘাতকারী তিন জনের পরিণতি : (১) মুবারকপুরী রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে হামলাকারীদের পরিণতি হিসাবে বর্ণনা করেন যে, প্রথম হামলাকারী উৎবাহ বিন আবু ওয়াক্ক্বাছ যার নিক্ষিপ্ত পাথরে রাসূল (ছাঃ)-এর দান্দান মুবারক শহীদ হয়। তার ভাই সা‘দ বিন আবু ওয়াকক্বাছ (রাঃ) তার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ তার পিছে ধাওয়া করে এক আঘাতেই তার মস্তক দেহচ্যুত করে ফেলেন এবং তার ঘোড়া ও তরবারি দখল করে নেন’ (আর-রাহীক্ব ২৭১-৭২ পৃঃ)।
বর্ণনাটি সঠিক নয়। কেননা হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ ওহোদ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বরং তিনি বদর যুদ্ধে যোগদান করেন এবং হোদায়বিয়ার সন্ধিকালে উপস্থিত ছিলেন’ (আল-ইছাবাহ, হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ ক্রমিক ১৫৪০)। উৎবাকে তিনি মেরেছিলেন বলে হাকেম যে বর্ণনা করেছেন, তা আদৌ সঠিক নয় বলে ইবনু হাজার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সঠিক কথা এই যে, তিনি আরও এক বছর বেঁচে থেকে কুফরী হালতে মৃত্যুবরণ করেন’ (আল-ইছাবাহ, উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ ক্রমিক ৬৭৫৫)।
প্রসিদ্ধ আছে যে, এ সময় রাসূল (ছাঃ) উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ-এর বিরুদ্ধে বদদো‘আ করে বলেন, اللَّهمَّ لا يحول عَلَيْهِ الْحَوْلَ حَتَّى يَمُوتَ كَافِرًا فَمَا حَالَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ حَتَّى مَاتَ كَافِرًا إِلَى النَّارِ ‘হে আল্লাহ! তুমি একে এক বছরও যেতে দিয়োনা, যেন সে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। অতঃপর এক বছরের মধ্যেই সে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে ও জাহান্নামে চলে যায়’ কথাটি প্রমাণিত নয় (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৯৬৪৯; সনদ ‘মুরসাল’ ও মুনকাত্বি‘; মা শা-‘আ ১৩৯ পৃঃ)।
(২) দ্বিতীয় আঘাতকারী আব্দুল্লাহ বিন শিহাব যুহরী, যিনি খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু শিহাব যুহরী (৫০-১২৪ হিঃ)-এর দাদা ছিলেন। তিনি পরে ইসলাম কবুল করেন এবং বালাযুরীর বর্ণনা মতে ওছমান (রাঃ)-এর খিলাফতকালে (২৩-৩৫ হিঃ) মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন (আল-ইছাবাহ ক্রমিক ৪৭৫৫)।
(৩) তৃতীয় আঘাতকারী আব্দুল্লাহ বিন ক্বামিআহ, যার তরবারির আঘাতে রাসূল (ছাঃ)-এর শিরস্ত্রাণের দু’টি কড়া তাঁর চক্ষুর নীচের হাড়ের মধ্যে ঢুকে যায়। প্রসিদ্ধ আছে যে, ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে তাচ্ছিল্য করে আব্দুল্লাহ বলেছিল, خُذْهَا وَأَنَا بنُ قَمِئَةَ ‘এটা নাও। আমি ক্বামিআহর (টুকরাকারিণীর) বেটা’। জবাবে রাসূল (ছাঃ) মুখের রক্ত মুছতে মুছতে তাকে বদ দো‘আ করে বলেন, أَقَمْأَكَ اللهُ ‘আল্লাহ তোকে টুকরা টুকরা করুন!’ (আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ)। বর্ণনাটি যঈফ (আর-রাহীক্ব, তা‘লীক্ব ১৪৬ পৃঃ)। তার পরিণতি হিসাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর রাসূল-এর দো‘আ কবুল করেন এবং তার উপরে তার বকরীদের বিজয়ী করে দেন। ঘটনা ছিল এই যে, যুদ্ধ থেকে মক্কায় ফিরে সে তার বকরী পালের খোঁজে পাহাড়ের দিকে যায় এবং তার বকরীগুলিকে পাহাড়ের চূড়ায় দেখতে পায়। অতঃপর সে সেখানে উঠে বকরী খেদিয়ে আনতে গেলে হঠাৎ শক্তিশালী পাঁঠা ছাগলটি শিংয়ের প্রচন্ড গুঁতা মেরে তাকে ফেলে দেয়। অতঃপর তাকে পাহাড় থেকে নীচে ফেলতে ফেলতে এবং শিংয়ের গুঁতা মারতে মারতে টুকরা টুকরা করে ফেলে’ (আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ)। ঘটনাটির সনদ যঈফ’ (ঐ, তা‘লীক্ব ১৪৬ পৃঃ)।
[2]. ফাৎহুল বারী হা/৪০৬৮-এর আলোচনা; আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ; ইবনু হিশাম ২/৮০; যাদুল মা‘আদ ৩/১৭৬।
আঘাতকারী তিন জনের পরিণতি : (১) মুবারকপুরী রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে হামলাকারীদের পরিণতি হিসাবে বর্ণনা করেন যে, প্রথম হামলাকারী উৎবাহ বিন আবু ওয়াক্ক্বাছ যার নিক্ষিপ্ত পাথরে রাসূল (ছাঃ)-এর দান্দান মুবারক শহীদ হয়। তার ভাই সা‘দ বিন আবু ওয়াকক্বাছ (রাঃ) তার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ তার পিছে ধাওয়া করে এক আঘাতেই তার মস্তক দেহচ্যুত করে ফেলেন এবং তার ঘোড়া ও তরবারি দখল করে নেন’ (আর-রাহীক্ব ২৭১-৭২ পৃঃ)।
বর্ণনাটি সঠিক নয়। কেননা হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ ওহোদ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বরং তিনি বদর যুদ্ধে যোগদান করেন এবং হোদায়বিয়ার সন্ধিকালে উপস্থিত ছিলেন’ (আল-ইছাবাহ, হাতেব বিন আবু বালতা‘আহ ক্রমিক ১৫৪০)। উৎবাকে তিনি মেরেছিলেন বলে হাকেম যে বর্ণনা করেছেন, তা আদৌ সঠিক নয় বলে ইবনু হাজার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সঠিক কথা এই যে, তিনি আরও এক বছর বেঁচে থেকে কুফরী হালতে মৃত্যুবরণ করেন’ (আল-ইছাবাহ, উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ ক্রমিক ৬৭৫৫)।
প্রসিদ্ধ আছে যে, এ সময় রাসূল (ছাঃ) উৎবাহ বিন আবু ওয়াকক্বাছ-এর বিরুদ্ধে বদদো‘আ করে বলেন, اللَّهمَّ لا يحول عَلَيْهِ الْحَوْلَ حَتَّى يَمُوتَ كَافِرًا فَمَا حَالَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ حَتَّى مَاتَ كَافِرًا إِلَى النَّارِ ‘হে আল্লাহ! তুমি একে এক বছরও যেতে দিয়োনা, যেন সে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। অতঃপর এক বছরের মধ্যেই সে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে ও জাহান্নামে চলে যায়’ কথাটি প্রমাণিত নয় (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৯৬৪৯; সনদ ‘মুরসাল’ ও মুনকাত্বি‘; মা শা-‘আ ১৩৯ পৃঃ)।
(২) দ্বিতীয় আঘাতকারী আব্দুল্লাহ বিন শিহাব যুহরী, যিনি খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু শিহাব যুহরী (৫০-১২৪ হিঃ)-এর দাদা ছিলেন। তিনি পরে ইসলাম কবুল করেন এবং বালাযুরীর বর্ণনা মতে ওছমান (রাঃ)-এর খিলাফতকালে (২৩-৩৫ হিঃ) মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন (আল-ইছাবাহ ক্রমিক ৪৭৫৫)।
(৩) তৃতীয় আঘাতকারী আব্দুল্লাহ বিন ক্বামিআহ, যার তরবারির আঘাতে রাসূল (ছাঃ)-এর শিরস্ত্রাণের দু’টি কড়া তাঁর চক্ষুর নীচের হাড়ের মধ্যে ঢুকে যায়। প্রসিদ্ধ আছে যে, ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে তাচ্ছিল্য করে আব্দুল্লাহ বলেছিল, خُذْهَا وَأَنَا بنُ قَمِئَةَ ‘এটা নাও। আমি ক্বামিআহর (টুকরাকারিণীর) বেটা’। জবাবে রাসূল (ছাঃ) মুখের রক্ত মুছতে মুছতে তাকে বদ দো‘আ করে বলেন, أَقَمْأَكَ اللهُ ‘আল্লাহ তোকে টুকরা টুকরা করুন!’ (আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ)। বর্ণনাটি যঈফ (আর-রাহীক্ব, তা‘লীক্ব ১৪৬ পৃঃ)। তার পরিণতি হিসাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর রাসূল-এর দো‘আ কবুল করেন এবং তার উপরে তার বকরীদের বিজয়ী করে দেন। ঘটনা ছিল এই যে, যুদ্ধ থেকে মক্কায় ফিরে সে তার বকরী পালের খোঁজে পাহাড়ের দিকে যায় এবং তার বকরীগুলিকে পাহাড়ের চূড়ায় দেখতে পায়। অতঃপর সে সেখানে উঠে বকরী খেদিয়ে আনতে গেলে হঠাৎ শক্তিশালী পাঁঠা ছাগলটি শিংয়ের প্রচন্ড গুঁতা মেরে তাকে ফেলে দেয়। অতঃপর তাকে পাহাড় থেকে নীচে ফেলতে ফেলতে এবং শিংয়ের গুঁতা মারতে মারতে টুকরা টুকরা করে ফেলে’ (আর-রাহীক্ব ২৬৮ পৃঃ)। ঘটনাটির সনদ যঈফ’ (ঐ, তা‘লীক্ব ১৪৬ পৃঃ)।