লগইন করুন
মক্কা থেকে আগত মুহাজিরগণ মদীনায় এসে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতেন। অতঃপর মসজিদে নববী নির্মাণ শেষে তার পিছনে একটি ছাপড়া দেওয়া হয়। যেখানে নিরাশ্রয় মুহাজিরগণ এসে বসবাস করতেন। ‘ছুফফাহ’ অর্থ ছাপড়া। যা দিয়ে ছায়া করা হয়। এভাবে মুহাজিরগণই ছিলেন আহলে ছুফফার প্রথম দল। যাঁদেরকেصُفَّةُ الْمُهَاجِرِينَ বলা হ’ত (আবুদাঊদ হা/৪০০৩)। এছাড়া অন্যান্য স্থান হ’তেও অসহায় মুসলমানরা এসে এখানে সাময়িকভাবে আশ্রয় নিতেন (আহমাদ হা/১৬০৩১)। পরবর্তীতে কোন ব্যবস্থা হয়ে গেলে তারা সেখানে চলে যেতেন। এখানে সাময়িক আশ্রয় গ্রহণকারীগণ ইতিহাসে ‘আহলে ছুফফাহ’ বা ’আছহাবে ছুফফাহ’ নামে খ্যাতি লাভ করেন। বিখ্যাত হাদীছবেত্তা ছাহাবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) এখানকার অন্যতম সদস্য ও দায়িত্বশীল ছিলেন। যিনি ওমর (রাঃ)-এর যুগে বাহরায়েন এবং মু‘আবিয়া (রাঃ) ও মারওয়ানের সময় একাধিকবার মদীনার গবর্ণর নিযুক্ত হন। তিনি ৫৭ হিজরীতে ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[1]
অনেক সময় মদীনার ছাহাবীগণও ‘যুহ্দ’ ও দুনিয়াত্যাগী জীবন যাপনের জন্য তাদের মধ্যে এসে বসবাস করতেন। যেমন কা‘ব বিন মালেক আনছারী, হানযালা বিন আবু ‘আমের ‘গাসীলুল মালায়েকাহ’, হারেছাহ বিন নু‘মান আনছারী প্রমুখ। চাতালটি যথেষ্ট বড় ছিল। কেননা এখানে যয়নব বিনতে জাহশের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিবাহের ওয়ালীমা খানায় প্রায় তিনশ’র মত মানুষ(كَانُوا زُهَاءَ ثَلاثِمِائَةٍ) জমা হয়েছিলেন।[2] তাদের সংখ্যা কম-বেশী হ’ত। তবে সাধারণতঃ সর্বদা ৭০ জনের মত থাকতেন। কখনো অনেক বেড়ে যেত। খাযরাজ নেতা সা‘দ বিন ওবাদাহ (রাঃ) একবার তাদের মধ্যে থেকে একাই আশি জনকে মেহমানদারী করেছিলেন।
উল্লেখ্য যে, আবু হুরায়রা (রাঃ) ছিলেন সর্বাধিক হাদীছবেত্তা ছাহাবী। অতএব ফাৎওয়া দেওয়ার অধিকার তাঁরই সবচেয়ে বেশী হওয়া উচিত। তিনি ছিলেন হাদীছ মুখস্থ করা বিষয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ দো‘আ প্রাপ্ত ছাহাবী (বুখারী হা/১১৯)। যাঁর মুখস্থকৃত হাদীছের সংখ্যা ছিল ৫৩৭৪। তিনি সহ ৭জন শ্রেষ্ঠ হাদীছ বর্ণনাকারী ছাহাবী হ’লেন যথাক্রমে আব্দুল্লাহ বিন ওমর ২৬৩০, আনাস বিন মালিক ২২৮৬, আয়েশা (রাঃ) ২২১০, আব্দুল্লাহ বিন আববাস ১৬৬০, জাবের বিন আব্দুল্লাহ ১৫৪০ এবং আবু সাঈদ খুদরী ১১৭০। বাকী ছাহাবীগণ এরপরের।
[2]. ইবনু আবী হাতেম হা/১৭৭৫৯, তাফসীর সূরা আহযাব ৫৩-৫৪ আয়াত; ইবনু কাছীর, তাফসীর ঐ।