লগইন করুন
(ক) উমাইয়া বিন খালাফের ভাই উবাই বিন খালাফ ছিল আরেক দুরাচার। সে যখন শুনতে পেল যে, তার সাথী ওক্ববা বিন আবু মু‘আইত্ব রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে বসে কিছু আল্লাহর বাণী শুনেছে, তখন ভীষণ ক্ষেপে গিয়ে ওক্ববাকে বাধ্য করল যাতে সে তৎক্ষণাৎ গিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর মুখে থুথু নিক্ষেপ করে আসে। ওক্ববা তাই-ই করল’। এ প্রসঙ্গে নাযিল হয়,وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلاً (27) يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلاَنًا خَلِيلاً (28) لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولاً- (الفرقان 27-29) ‘যালেম সেদিন নিজের দু’হাত কামড়ে বলবে, হায়! যদি (দুনিয়াতে) রাসূলের পথ অবলম্বন করতাম’। ‘হায় দুর্ভোগ আমার! যদি আমি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম’। ‘আমার কাছে উপদেশ (কুরআন) আসার পর সে আমাকে পথভ্রষ্ট করেছিল। বস্ত্ততঃ শয়তান মানুষের জন্য পথভ্রষ্টকারী’ (ফুরক্বান ২৫/২৭-২৯)।[1]
(খ) অনুরূপ এক ঘটনায় একদিন আবু লাহাবের পুত্র উতাইবা বিন আবু লাহাব এসে রাসূল (ছাঃ)-কে বলল, আমি সূরা নাজমের ১ ও ৮ আয়াত(وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَى...ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى) দু’টিকে অস্বীকার করি, বলেই সে হেঁচকা টানে রাসূল (ছাঃ)-এর গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলল এবং তাঁর মুখে থুথু নিক্ষেপ করল। অথচ এই হতভাগা ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর জামাতা। যে তার পিতার কথা মত রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা উম্মে কুলছূমকে তালাক দেয়। তার ভাই উৎবা একইভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর অপর কন্যা রুক্বাইয়াকে তালাক দেয়। পরে যার বিয়ে হযরত ওছমান (রাঃ)-এর সাথে হয়। তাঁর মৃত্যুর পরে উম্মে কুলছূমের সাথে ওছমান (রাঃ)-এর বিবাহ হয়। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তখন তাকে বদ দো‘আ করে বললেন,اللهُمَّ سَلِّطْ عَلَيْهِ كَلْبًا مِنْ كِلاَبِكَ ‘হে আল্লাহ! তুমি এর উপরে তোমার কোন একটি কুকুরকে বিজয়ী করে দাও’।[2]
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে কবি হাসসান বিন ছাবিত (রাঃ) কবিতা রচনা করেন। কিছুদিন পরে উতাইবা সিরিয়ায় ব্যবসায়িক সফরে গেলে সেখানে যারক্বা (الزرقاء) নামক স্থানে রাত্রি যাপন করে। এমন সময় হঠাৎ একটা বাঘকে সে তাদের চারপাশে ঘুরতে দেখে ভয়ে বলে উঠে,هَذَا وَاللهِ آكِلِي كَمَا قَالَ مُحَمَّدٌ، قَاتِلِي ابْنُ أَبِي كَبْشَةَ وَهُوَ بِمَكَّةَ وَأَنَا بِالشَّامِ ‘আল্লাহর কসম! এ আমাকে খেয়ে ফেলবে। এভাবেই তো মুহাম্মাদ আমার বিরুদ্ধে বদ দো‘আ করেছিল। সে আমাকে হত্যাকারী। অথচ সে মক্কায় আর আমি শামে’। অতঃপর বাঘ এসে সবার মধ্য থেকে তাকে ধরে নিয়ে ঘাড় মটকে হত্যা করল’।[3]
[2]. আর-রাহীক্ব পৃঃ ৯৮; হাকেম হা/৩৯৮৪, হাকেম ছহীহ বলেছেন, যাহাবী তা সমর্থন করেছেন।
[3]. কুরতুবী হা/৫৬৯০; আবু নু‘আইম ইছফাহানী, দালায়েলুন নবুঅত হা/৩৮১; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/৯৮২০; কুরতুবীর মুহাক্কিক বলেন, হাদীছটি একদল তাবেঈ কর্তৃক ‘মুরসাল’ সূত্রে বর্ণিত। তবে এগুলির সমষ্টি বর্ণনাটিকে শক্তিশালী করে’ (দ্রঃ কুরতুবী, তাফসীর সূরা নাজম ১ আয়াত)।